সুশাসন-দুর্নীতি তদন্তে স্বচ্ছতা চাই by বদিউল আলম মজুমদার
দুর্নীতির অভিযোগে রেলমন্ত্রী হিসেবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পদত্যাগ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তদন্ত হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি এবং এসব তদন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আমরা আশা করি, যদিও সে ব্যাপারে অনেক নাগরিকেরই সন্দেহ রয়েছে। তবে তিনি এখন দফতরবিহীন মন্ত্রী।
যেহেতু সাংবিধানিকভাবে মন্ত্রিসভা সংসদের কাছে দায়বদ্ধ, তাই বর্তমান পদে তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদের অধীনে সংসদের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি
প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মতে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয় ধামাচাপা দিতে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ইস্যুটি সৃষ্টি করা হয়েছে। শুধু ব্যারিস্টার হকই নন, বাংলাদেশের অনেক নাগরিকও তা বিশ্বাস করেন। উদাহরণস্বরূপ, গত ২৩ এপ্রিল ২০১২ তারিখের প্রথম আলোর অনলাইন জরিপে অংশগ্রহণকারী ১১ হাজার ২৮৪ জন উত্তরদাতার মধ্যে ৮০ শতাংশই ব্যারিস্টার হকের মতামতের প্রতি সমর্থন প্রদান করেন। একই ইস্যুতে যুগান্তরের একই দিনের অনলাইন জরিপে ৭৪ শতাংশ উত্তরদাতা একই মতামত ব্যক্ত করেন।
আমরা জানি না, ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পেছনে সরকারের কোনো হাত রয়েছে কি-না এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সরকার তা করেছে কি-না। যদিও তা ভাবতেই কষ্ট হয়, তবে সংবাদপত্রের অনলাইন জরিপের ফলাফল থেকে মনে হয়, যেন দেশের অধিকাংশ সচেতন নাগরিকের কাছে সরকারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগটি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কারণ সত্য হোক, মিথ্যা হোক; তারা বিশ্বাস করে ফেলছে যে, জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর লক্ষ্যেই সরকার তা করেছে। কিন্তু সুরঞ্জিতের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার কোনোরূপ সুযোগ নেই। বিশেষ করে যদি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক বলে আমরা আমাদের দাবি অব্যাহত রাখতে চাই।
গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার মূলকথা হলো জবাবদিহিতা_ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগকারীদের জবাবদিহিতা। যে সরকার ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত দায়বদ্ধতার কোনো বিধান থাকে না, তা রাজতন্ত্র বা সামন্ততন্ত্র হতে পারে; তা কোনোভাবেই গণতন্ত্র নয়। আর দায়বদ্ধতার বিধান থাকলেই হবে না, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কার্যকারিতার জন্য তার চর্চাও থাকতে হবে। তাই গণতন্ত্রের খাতিরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দায়বদ্ধ করা আমাদের জন্য আজ জরুরি।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আমাদের রেলমন্ত্রী ছিলেন। তার এপিএস এবং রেলের পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজারের যোগসাজশে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি 'সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের খাতিরে' পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করেছেন, যার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে যদিও গুরুতর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বর্তমানে রেলমন্ত্রী নন, কিন্তু এখনও মন্ত্রী। আমাদের সংবিধানের ৫৫ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, 'মন্ত্রিসভা যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকিবেন।' অর্থাৎ সুরঞ্জিত বাবু মন্ত্রিপরিষদের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে সংসদের নিকট দায়বদ্ধ। প্রশ্ন হলো :সংসদ কি তাকে দায়বদ্ধতার কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে? যদি তা না করে, সংসদ কি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে বলে দাবি করা যাবে? আর সংসদীয় পদ্ধতিতে সংসদ তার দায়িত্ব পালন না করলে বা অকার্যকর হলে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও অকার্যকর হতে বাধ্য।
প্রসঙ্গত, মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য কি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন যে, তাদের একজন সহকর্মী দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেও মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন? এসব অতি সম্মানিত ব্যক্তি কি একেবারেই নৈতিকতা-বিবর্জিত হয়ে পড়েছেন?
মন্ত্রিসভার সদস্য ছাড়াও সুরঞ্জিত বাবুর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সত্তা রয়েছে। তিনি একজন মাননীয় সংসদ সদস্য। সংসদ সদস্য হিসেবেও আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থায় তার জন্য একটি দায়বদ্ধতার কাঠামো বিরাজমান। আমাদের সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদে নিজের 'কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ, কার্যপরিচালনা ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব' সংসদের ওপর ন্যস্ত এবং সংসদে প্রদত্ত বক্তব্য সম্পর্কে সংসদ সদস্যগণকে দায়মুক্তি প্রদান করা হয়েছে। এসব নিরঙ্কুশ অধিকার ও ক্ষমতা প্রয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানেই সংসদীয় 'বিশেষ-অধিকার কমিটি' গঠনের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে (অনুচ্ছেদ ৭৬)। আর সংসদ যাতে নিজ কার্যপ্রণালি নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে পারে, তার জন্য আমাদের সংসদ একটি 'জাতীয় সংসদ কার্যপ্রণালী-বিধি' প্রণয়ন করেছে।
বলাবাহুল্য, সংসদীয় বিশেষ অধিকার সংসদ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কিত নয়। এগুলো সংসদ সদস্যরা যেন স্বাধীন ও নির্ভয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন সে লক্ষ্যে সাধারণ নাগরিকদের প্রদত্ত অধিকারের থেকে অতিরিক্ত অধিকার। এসব অধিকারের কতগুলো ব্যক্তি সংসদ সদস্যের জন্য প্রযোজ্য, আবার কতগুলো পুরো সংসদের জন্য প্রাসঙ্গিক। ব্যক্তি সদস্যের বেলায় প্রযোজ্য অধিকারগুলো হলো : ক. বাকস্বাধীনতা; খ. দেওয়ানি মামলায় গ্রেফতার থেকে অব্যাহতি; গ. জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি; ঘ. সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হওয়া থেকে অব্যাহতি ইত্যাদি। এগুলো মূলত দায়মুক্তি সম্পর্কিত অধিকার, যা ব্যক্তি সংসদ সদস্যকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি-বিধির ১৭২-১৭৬ ধারায় এসব বিষয় সম্পর্কিত বিধান রয়েছে।
পুরো সংসদের ক্ষেত্রে অধিকার ও ক্ষমতাগুলো হলো : ক. শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার অধিকার। কোনো ব্যক্তিকে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন করার বা সংসদ অবমাননার জন্য শাস্তি প্রদান এ অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। সংসদের এ ধরনের অধিকারকে শাস্তিমূলক ক্ষমতা বলা হয়; খ. সংসদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ব্যবস্থাপনা ও কার্যপদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত ক্ষমতা; গ. সংসদ সদস্যদের উপস্থিতি ও সংসদের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার ক্ষমতা; ঘ. তদন্ত করার, সাক্ষী এবং রেকর্ডপত্র তলব করার ক্ষমতা। আমাদের জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি-বিধির ২০১-২০৩ ধারায় এ সম্পর্কিত বিধান রয়েছে; ঙ. সাক্ষীদের শপথ প্রদানের ক্ষমতা। আমাদের কার্যপ্রণালি-বিধির ২০৪-২০৫ ধারা এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক; চ. অন্যথায় মানহানিকর বিষয় প্রকাশ করার ক্ষমতা।
সংসদের অধিকার ক্ষুণ্ন বা সংসদ অবমাননা হয় দু'ভাবে। কোনো সাধারণ নাগরিক সংসদের তলবে সাড়া না দিলে বা কোনো দলিল-দস্তাবেজ দাখিল না করলে সংসদের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শন করা হয়, যা সংসদ অবমাননার শামিল। অনেকেরই স্মরণ আছে যে, ২০০৯ সালে বর্তমান সংসদের 'সরকারি প্রতিষ্ঠান' সম্পর্কিত কমিটি তৎকালীন দুদক চেয়ারম্যান জেনারেল (অব.) হাসান মশহুদ চৌধূরীকে তলব করেছিল, যদিও সে তলব হালে পানি পায়নি। কারণ দুদক হলো সে কমিটির এখতিয়ারবহির্ভূত একটি প্রতিষ্ঠান।
সংসদ সদস্যদের নিজেদের অপকর্মের কারণেও সংসদ অবমাননা হয়। এসব সম্মানিত ব্যক্তির অসদাচারণ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমূলক কার্যক্রম জনগণের দৃষ্টিতে সংসদকে হেয় প্রতিপন্ন করে। যার ফলে সংসদকে অবমাননা করা হয়। প্রসঙ্গত, অনেক পাঠকেরই মনে থাকার কথা যে, নবম সংসদের প্রথম অধিবেশনে মাননীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়ার নেতৃত্বে সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার ও সাবেক চিফ হুইপ প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে একটি বিশেষ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পায় এবং সংসদ অবমাননার দায়ে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারকে_ খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বতর্মান সংসদের সদস্য ছিলেন না_ সংসদ থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবও সংসদে উত্থাপন করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত, সংসদ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বিষয়টি দুদকে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়, তিন বছর পরও যার কোনো সুরাহা হয়নি।
ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার পেছনে মূলত দুটি অজুহাত দেখানো হয়েছিল। প্রথমত, সংসদ ও সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার সম্পর্কে আমাদের কোনো আইন নেই। দ্বিতীয়ত, সংসদ থেকে বহিষ্কারের কোনো নজির আমাদের দেশে নেই।
সংসদ ও সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার সম্পর্কে আমাদের কোনো আইন নেই_ এ দাবি আংশিক সত্য। আমাদের সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদে বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি সম্পর্কে একটি আইন প্রণয়ন করার কথা বলা আছে, যে আইন সঙ্গত কারণেই সংসদ সদস্যদের নিজেদের স্বার্থেই স্বাধীনতার ৪১ বছর পরও প্রণয়ন করা হয়নি। তবে কার্যপ্রণালি-বিধিও সংসদ অনুমোদিত একটি আইন, যেখানে বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত বিধান রয়েছে, যা ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেত।
এ ছাড়া গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকলেও সংসদ তার নিজ কার্যপরিধি নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার অধিকার রাখে, যে অধিকার সব দেশেই রুটিনভাবে ব্যবহার করা হয়। বস্তুত এটি সংসদের 'ইনহারেন্ট' বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা। উপরন্তু আমাদের সংবিধানে আরও বিধান রয়েছে, যেখানে আইন প্রণয়নের কথা বলা আছে। যেমন, ১১৮ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ _ যে বিষয়ে অদ্যাবধি কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি। যদিও তা নিয়মিতভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী ভারতেও বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত কোনো আইন নেই, কিন্তু অপকর্মের জন্য এ পর্যন্ত সেখানকার বহু লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যেমন, ২০০৫ সালে ভারতে ১১ জন সদস্যকে একসঙ্গে বহিষ্কার করা হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও অতীতে এ ক্ষমতা বহুবার ব্যবহার করা হয়েছে।
আর কোটারি স্বার্থে নিজেদের সহকর্মীদের শাস্তি দেওয়া হয় না বলেই এমন নজির আমাদের দেশে এখনও সৃষ্টি হয়নি। এ ছাড়াও নজিরের কারণে নয়, প্রয়োজনের তাগিদেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অতীতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলেই আমাদের অনেক সংসদ সদস্য বর্তমানে অনেক অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, যা আমাদের সংসদকে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সহায়তা করছে।
পরিশেষে, যদি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ন্যক্কারজনক ঘটনাটি সরকার ঘটিয়েও থাকে, তবুও সুরঞ্জিতের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। বিশেষ করে যদি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং তা আমাদের দেশে কার্যকর করার প্রতি আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে থাকি। দুর্নীতির অভিযোগে রেলমন্ত্রী হিসেবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পদত্যাগ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তদন্ত হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি এবং এসব তদন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আমরা আশা করি, যদিও সে ব্যাপারে অনেক নাগরিকেরই সন্দেহ রয়েছে। তবে তিনি এখন দফতরবিহীন মন্ত্রী। যেহেতু সাংবিধানিকভাবে মন্ত্রিসভা সংসদের কাছে দায়বদ্ধ, তাই বর্তমান পদে তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদের অধীনে সংসদের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। উপরন্তু দুর্নীতিমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে সংসদ অবমাননার অভিযোগে সংসদ সদস্য হিসেবে তার বিরুদ্ধে সংসদীয় বিশেষ অধিকার কমিটিরও তদন্ত শুরু করা জরুরি। বস্তুত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দায়বদ্ধ করার মাধ্যমেই আমাদের সংসদীয় পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রদর্শিত হতে পারে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার :সম্পাদক সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক
প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মতে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয় ধামাচাপা দিতে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ইস্যুটি সৃষ্টি করা হয়েছে। শুধু ব্যারিস্টার হকই নন, বাংলাদেশের অনেক নাগরিকও তা বিশ্বাস করেন। উদাহরণস্বরূপ, গত ২৩ এপ্রিল ২০১২ তারিখের প্রথম আলোর অনলাইন জরিপে অংশগ্রহণকারী ১১ হাজার ২৮৪ জন উত্তরদাতার মধ্যে ৮০ শতাংশই ব্যারিস্টার হকের মতামতের প্রতি সমর্থন প্রদান করেন। একই ইস্যুতে যুগান্তরের একই দিনের অনলাইন জরিপে ৭৪ শতাংশ উত্তরদাতা একই মতামত ব্যক্ত করেন।
আমরা জানি না, ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পেছনে সরকারের কোনো হাত রয়েছে কি-না এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সরকার তা করেছে কি-না। যদিও তা ভাবতেই কষ্ট হয়, তবে সংবাদপত্রের অনলাইন জরিপের ফলাফল থেকে মনে হয়, যেন দেশের অধিকাংশ সচেতন নাগরিকের কাছে সরকারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগটি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কারণ সত্য হোক, মিথ্যা হোক; তারা বিশ্বাস করে ফেলছে যে, জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর লক্ষ্যেই সরকার তা করেছে। কিন্তু সুরঞ্জিতের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার কোনোরূপ সুযোগ নেই। বিশেষ করে যদি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক বলে আমরা আমাদের দাবি অব্যাহত রাখতে চাই।
গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার মূলকথা হলো জবাবদিহিতা_ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগকারীদের জবাবদিহিতা। যে সরকার ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত দায়বদ্ধতার কোনো বিধান থাকে না, তা রাজতন্ত্র বা সামন্ততন্ত্র হতে পারে; তা কোনোভাবেই গণতন্ত্র নয়। আর দায়বদ্ধতার বিধান থাকলেই হবে না, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কার্যকারিতার জন্য তার চর্চাও থাকতে হবে। তাই গণতন্ত্রের খাতিরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দায়বদ্ধ করা আমাদের জন্য আজ জরুরি।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আমাদের রেলমন্ত্রী ছিলেন। তার এপিএস এবং রেলের পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজারের যোগসাজশে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি 'সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের খাতিরে' পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করেছেন, যার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে যদিও গুরুতর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বর্তমানে রেলমন্ত্রী নন, কিন্তু এখনও মন্ত্রী। আমাদের সংবিধানের ৫৫ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, 'মন্ত্রিসভা যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকিবেন।' অর্থাৎ সুরঞ্জিত বাবু মন্ত্রিপরিষদের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে সংসদের নিকট দায়বদ্ধ। প্রশ্ন হলো :সংসদ কি তাকে দায়বদ্ধতার কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে? যদি তা না করে, সংসদ কি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে বলে দাবি করা যাবে? আর সংসদীয় পদ্ধতিতে সংসদ তার দায়িত্ব পালন না করলে বা অকার্যকর হলে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও অকার্যকর হতে বাধ্য।
প্রসঙ্গত, মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য কি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন যে, তাদের একজন সহকর্মী দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেও মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন? এসব অতি সম্মানিত ব্যক্তি কি একেবারেই নৈতিকতা-বিবর্জিত হয়ে পড়েছেন?
মন্ত্রিসভার সদস্য ছাড়াও সুরঞ্জিত বাবুর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সত্তা রয়েছে। তিনি একজন মাননীয় সংসদ সদস্য। সংসদ সদস্য হিসেবেও আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থায় তার জন্য একটি দায়বদ্ধতার কাঠামো বিরাজমান। আমাদের সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদে নিজের 'কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ, কার্যপরিচালনা ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব' সংসদের ওপর ন্যস্ত এবং সংসদে প্রদত্ত বক্তব্য সম্পর্কে সংসদ সদস্যগণকে দায়মুক্তি প্রদান করা হয়েছে। এসব নিরঙ্কুশ অধিকার ও ক্ষমতা প্রয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানেই সংসদীয় 'বিশেষ-অধিকার কমিটি' গঠনের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে (অনুচ্ছেদ ৭৬)। আর সংসদ যাতে নিজ কার্যপ্রণালি নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে পারে, তার জন্য আমাদের সংসদ একটি 'জাতীয় সংসদ কার্যপ্রণালী-বিধি' প্রণয়ন করেছে।
বলাবাহুল্য, সংসদীয় বিশেষ অধিকার সংসদ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কিত নয়। এগুলো সংসদ সদস্যরা যেন স্বাধীন ও নির্ভয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন সে লক্ষ্যে সাধারণ নাগরিকদের প্রদত্ত অধিকারের থেকে অতিরিক্ত অধিকার। এসব অধিকারের কতগুলো ব্যক্তি সংসদ সদস্যের জন্য প্রযোজ্য, আবার কতগুলো পুরো সংসদের জন্য প্রাসঙ্গিক। ব্যক্তি সদস্যের বেলায় প্রযোজ্য অধিকারগুলো হলো : ক. বাকস্বাধীনতা; খ. দেওয়ানি মামলায় গ্রেফতার থেকে অব্যাহতি; গ. জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি; ঘ. সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হওয়া থেকে অব্যাহতি ইত্যাদি। এগুলো মূলত দায়মুক্তি সম্পর্কিত অধিকার, যা ব্যক্তি সংসদ সদস্যকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি-বিধির ১৭২-১৭৬ ধারায় এসব বিষয় সম্পর্কিত বিধান রয়েছে।
পুরো সংসদের ক্ষেত্রে অধিকার ও ক্ষমতাগুলো হলো : ক. শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার অধিকার। কোনো ব্যক্তিকে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন করার বা সংসদ অবমাননার জন্য শাস্তি প্রদান এ অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। সংসদের এ ধরনের অধিকারকে শাস্তিমূলক ক্ষমতা বলা হয়; খ. সংসদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ব্যবস্থাপনা ও কার্যপদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত ক্ষমতা; গ. সংসদ সদস্যদের উপস্থিতি ও সংসদের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার ক্ষমতা; ঘ. তদন্ত করার, সাক্ষী এবং রেকর্ডপত্র তলব করার ক্ষমতা। আমাদের জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি-বিধির ২০১-২০৩ ধারায় এ সম্পর্কিত বিধান রয়েছে; ঙ. সাক্ষীদের শপথ প্রদানের ক্ষমতা। আমাদের কার্যপ্রণালি-বিধির ২০৪-২০৫ ধারা এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক; চ. অন্যথায় মানহানিকর বিষয় প্রকাশ করার ক্ষমতা।
সংসদের অধিকার ক্ষুণ্ন বা সংসদ অবমাননা হয় দু'ভাবে। কোনো সাধারণ নাগরিক সংসদের তলবে সাড়া না দিলে বা কোনো দলিল-দস্তাবেজ দাখিল না করলে সংসদের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শন করা হয়, যা সংসদ অবমাননার শামিল। অনেকেরই স্মরণ আছে যে, ২০০৯ সালে বর্তমান সংসদের 'সরকারি প্রতিষ্ঠান' সম্পর্কিত কমিটি তৎকালীন দুদক চেয়ারম্যান জেনারেল (অব.) হাসান মশহুদ চৌধূরীকে তলব করেছিল, যদিও সে তলব হালে পানি পায়নি। কারণ দুদক হলো সে কমিটির এখতিয়ারবহির্ভূত একটি প্রতিষ্ঠান।
সংসদ সদস্যদের নিজেদের অপকর্মের কারণেও সংসদ অবমাননা হয়। এসব সম্মানিত ব্যক্তির অসদাচারণ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমূলক কার্যক্রম জনগণের দৃষ্টিতে সংসদকে হেয় প্রতিপন্ন করে। যার ফলে সংসদকে অবমাননা করা হয়। প্রসঙ্গত, অনেক পাঠকেরই মনে থাকার কথা যে, নবম সংসদের প্রথম অধিবেশনে মাননীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়ার নেতৃত্বে সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার ও সাবেক চিফ হুইপ প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে একটি বিশেষ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পায় এবং সংসদ অবমাননার দায়ে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারকে_ খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বতর্মান সংসদের সদস্য ছিলেন না_ সংসদ থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবও সংসদে উত্থাপন করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত, সংসদ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বিষয়টি দুদকে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়, তিন বছর পরও যার কোনো সুরাহা হয়নি।
ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার পেছনে মূলত দুটি অজুহাত দেখানো হয়েছিল। প্রথমত, সংসদ ও সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার সম্পর্কে আমাদের কোনো আইন নেই। দ্বিতীয়ত, সংসদ থেকে বহিষ্কারের কোনো নজির আমাদের দেশে নেই।
সংসদ ও সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার সম্পর্কে আমাদের কোনো আইন নেই_ এ দাবি আংশিক সত্য। আমাদের সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদে বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি সম্পর্কে একটি আইন প্রণয়ন করার কথা বলা আছে, যে আইন সঙ্গত কারণেই সংসদ সদস্যদের নিজেদের স্বার্থেই স্বাধীনতার ৪১ বছর পরও প্রণয়ন করা হয়নি। তবে কার্যপ্রণালি-বিধিও সংসদ অনুমোদিত একটি আইন, যেখানে বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত বিধান রয়েছে, যা ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেত।
এ ছাড়া গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট কোনো আইন না থাকলেও সংসদ তার নিজ কার্যপরিধি নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার অধিকার রাখে, যে অধিকার সব দেশেই রুটিনভাবে ব্যবহার করা হয়। বস্তুত এটি সংসদের 'ইনহারেন্ট' বা অন্তর্নিহিত ক্ষমতা। উপরন্তু আমাদের সংবিধানে আরও বিধান রয়েছে, যেখানে আইন প্রণয়নের কথা বলা আছে। যেমন, ১১৮ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ _ যে বিষয়ে অদ্যাবধি কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি। যদিও তা নিয়মিতভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী ভারতেও বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত কোনো আইন নেই, কিন্তু অপকর্মের জন্য এ পর্যন্ত সেখানকার বহু লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যেমন, ২০০৫ সালে ভারতে ১১ জন সদস্যকে একসঙ্গে বহিষ্কার করা হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও অতীতে এ ক্ষমতা বহুবার ব্যবহার করা হয়েছে।
আর কোটারি স্বার্থে নিজেদের সহকর্মীদের শাস্তি দেওয়া হয় না বলেই এমন নজির আমাদের দেশে এখনও সৃষ্টি হয়নি। এ ছাড়াও নজিরের কারণে নয়, প্রয়োজনের তাগিদেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অতীতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলেই আমাদের অনেক সংসদ সদস্য বর্তমানে অনেক অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, যা আমাদের সংসদকে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সহায়তা করছে।
পরিশেষে, যদি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ন্যক্কারজনক ঘটনাটি সরকার ঘটিয়েও থাকে, তবুও সুরঞ্জিতের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। বিশেষ করে যদি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং তা আমাদের দেশে কার্যকর করার প্রতি আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে থাকি। দুর্নীতির অভিযোগে রেলমন্ত্রী হিসেবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পদত্যাগ করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তদন্ত হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি এবং এসব তদন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে আমরা আশা করি, যদিও সে ব্যাপারে অনেক নাগরিকেরই সন্দেহ রয়েছে। তবে তিনি এখন দফতরবিহীন মন্ত্রী। যেহেতু সাংবিধানিকভাবে মন্ত্রিসভা সংসদের কাছে দায়বদ্ধ, তাই বর্তমান পদে তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদের অধীনে সংসদের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। উপরন্তু দুর্নীতিমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে সংসদ অবমাননার অভিযোগে সংসদ সদস্য হিসেবে তার বিরুদ্ধে সংসদীয় বিশেষ অধিকার কমিটিরও তদন্ত শুরু করা জরুরি। বস্তুত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দায়বদ্ধ করার মাধ্যমেই আমাদের সংসদীয় পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রদর্শিত হতে পারে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার :সম্পাদক সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক
No comments