সিনেমা এবং বাস্তবতা by নাসিফ চৌধুরী
সিনেমা নায়িকা ভিলেন দ্বারা আক্রান্ত, সম্ভ্রম যায়-যায় অবস্থা। নায়কের আগমন, তারপর ভিলেনদের পিটিয়ে ফার্নিচার...! কোনো বিশেষ কারণে নায়িকার মন খারাপ। অতঃপর ঠাস করে দরজা বন্ধ করে ধপাস করে বিছানায় শুয়ে বালিশ জড়িয়ে গলা ফাটিয়ে কান্না!
নায়িকার সঙ্গে নায়কের হালকা ধাক্কা। নায়িকার হাত থেকে পড়ে গেল বই। বই তুলতে গিয়ে চোখাচোখি... প্রেম...কী জাদু করেছ বলো না... (গান)!
সিনেমায় বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন কারণে মাথায় লাঠির বাড়ি খায়। সে ক্ষেত্রে...
১ম বাড়ির পর: স্মৃতিশক্তি ফিউজ!
২য় বাড়ির পর: স্মৃতিশক্তি ফেরত আসে।
জনৈক কোটিপতি ব্যবসায়ী পড়েছেন গুন্ডাদের কবলে। তাই দেখে নায়ক ‘ইয়া আলি ঢিশুয়া’ বলে গুন্ডাদের ওপর দিলেন ঝাঁপ। গুন্ডারা খেল উচ্চপর্যায়ের পিটুনি আর পুরস্কার হিসেবে নায়ক পেলেন চাকরি।
(শেষ দৃশ্য) নায়ক ও ভিলেন পার্টির মধ্যে ব্যাপক হাঙ্গামা, গোলাগুলি, নায়কের প্রতি গুলিতে ভিলেন পার্টির পাঁচজন করে নিহত, দ্রুত পুলিশের আগমন ও অবশিষ্ট ভিলেন আটক।
সারা বছর নায়কের লাফাঙ্গামি, অতঃপর রেজাল্ট। মায়ের স্নেহভরা আশীর্বাদ, বেঁচে থাকো বাবা। আজ যদি তোর বাবা বেঁচে থাকতেন, কতই না খুশি হতেন।
ধনী নায়িকার গাড়ির ধাক্কায় নায়ক গুরুতর আহত। নায়ককে নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নায়িকার সেবা-শুশ্রূষা, নায়কের আঘাতমোচন, দুজনার প্রেম!
নায়িকার বাবা গুলি খেয়ে মৃত্যুশয্যায়। নিজের মেয়ের হাত বেকার নায়কের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, আমার মেয়েকে তোমার হাতে তুলে দিলাম, বাবা। ওকে তুমি সুখে রেখো...! আ আ আ...আহ্!
ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া দুই ভাই। ঘটনাচক্রে ছোটবেলার ছবি দেখে দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন। এক ভাই আরেক ভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বললেন, তুই-ই আমার হারিয়ে যাওয়া ভাই রতন? আয় ভাই, আমার বুকে আয়।
বাস্তবতা
নায়িকা ভিলেন দ্বারা আক্রান্ত, সম্ভ্রম যায়-যায় দশা। নায়কের আগমন, দুটি গুলি! পরের দিনের পত্রিকার পাতায় শিরোনাম—‘দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে যুবক খুন’।
বিশেষ কারণে নায়িকার মন খারাপ। অতঃপর ফেসবুকে লগইন করে স্ট্যাটাস: mon khub khaৎap; manush keno emon koৎe? তারপর মিনিট ঘুরতেই ৫৭ লাইক, ২১টা কমেন্ট! নায়িকার মুখে হাসি!
নায়িকার সঙ্গে নায়কের হালকা ধাক্কা। তারপর শুরু হলো নায়িকা ও তার বান্ধবী মহলের হাউকাউ! ইভ টিজিং ইভ টিজিং!! ইভ টিজিংয়ের অপরাধে শাস্তি। ঘরে বাপের হুংকার—ওই কুলাঙ্গার, বাইর হ আমার বাড়ি থাইকা...!
বাস্তবেও আমরা বিভিন্ন কারণে মাথায় লাঠির বাড়ি খেতে পারি! সে ক্ষেত্রে—
১ম বাড়ির পর: এক্স-রে, ব্যান্ডেজ, সিটিস্ক্যান...
২য় বাড়ির পর: কর্তব্যরত চিকিৎসক কর্তৃক মৃত ঘোষিত!
কোটিপতি পড়েছেন গুন্ডাদের কবলে। নায়কও দিলেন ঝাঁপ। পরিণামে গুন্ডা কর্তৃক ভারী প্যাদানি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি, ৯৮টা সেলাই, অবশেষে ছিনতাইকারীর সহযোগী সন্দেহে গ্রেপ্তার, তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর...
নায়ক ও ভিলেন পার্টির মধ্যে ব্যাপক হাঙ্গামা। ভিলেন পার্টি সরকারবিরোধী দলের হলে পুলিশের ধীরেসুস্থে আগমন ও সব ভিলেন গ্রেপ্তার। তবে ভিলেন পার্টি সরকারদলীয় হলে পুলিশের দ্রুত আগমন ও নায়ককে গ্রেপ্তার!
সারা বছর লাফাঙ্গামি, অতঃপর রেজাল্ট।
বাসায় মায়ের হুংকার—ওরে কুলাঙ্গার, আইজ খালি তোর বাপ বাঁইচা নাই, থাকলে পিডায়া তোর ঠ্যাং ভাঙত। যা, দূর হ আমার চউক্ষের সামনে থাইকা!
নায়িকার গাড়ির ধাক্কায় নায়ক গুরুতর আহত। বিক্ষুব্ধ জনতার গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ। ফলে ঘটনাস্থলেই নায়ক নিহত। পত্রিকার শিরোনাম—‘বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মেধাবী ছাত্রের অকালমৃত্যু’। অতঃপর নায়িকার লেটেস্ট মডেলের নতুন গাড়ি ক্রয়।
নায়িকার বাবা মৃত্যুশয্যায়। পাশে থাকা ‘বেকার’ নায়ককে বললেন, আমার মেয়েকে তুমি নিজের বোনের মতো দেখো, বাবা। ভালো চাকরি করে এমন কোনো ছেলে পেলে বিয়ে দিয়ে দিয়ো...। আ আ আ...আহ্!
ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া দুই ভাই। ফেসবুকে দেওয়া ছোটবেলার প্রোফাইল পিকচার দেখে এক ভাই আরেক ভাইকে কান্নার দুটো ইমোসহ মেসেজ দিলেন, তুই-ই আমার হারিয়ে যাওয়া ভাই রতন? আয় ভাই, অনলাইনে আয়...চ্যাট করি।’
সিনেমায় বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন কারণে মাথায় লাঠির বাড়ি খায়। সে ক্ষেত্রে...
১ম বাড়ির পর: স্মৃতিশক্তি ফিউজ!
২য় বাড়ির পর: স্মৃতিশক্তি ফেরত আসে।
জনৈক কোটিপতি ব্যবসায়ী পড়েছেন গুন্ডাদের কবলে। তাই দেখে নায়ক ‘ইয়া আলি ঢিশুয়া’ বলে গুন্ডাদের ওপর দিলেন ঝাঁপ। গুন্ডারা খেল উচ্চপর্যায়ের পিটুনি আর পুরস্কার হিসেবে নায়ক পেলেন চাকরি।
(শেষ দৃশ্য) নায়ক ও ভিলেন পার্টির মধ্যে ব্যাপক হাঙ্গামা, গোলাগুলি, নায়কের প্রতি গুলিতে ভিলেন পার্টির পাঁচজন করে নিহত, দ্রুত পুলিশের আগমন ও অবশিষ্ট ভিলেন আটক।
সারা বছর নায়কের লাফাঙ্গামি, অতঃপর রেজাল্ট। মায়ের স্নেহভরা আশীর্বাদ, বেঁচে থাকো বাবা। আজ যদি তোর বাবা বেঁচে থাকতেন, কতই না খুশি হতেন।
ধনী নায়িকার গাড়ির ধাক্কায় নায়ক গুরুতর আহত। নায়ককে নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নায়িকার সেবা-শুশ্রূষা, নায়কের আঘাতমোচন, দুজনার প্রেম!
নায়িকার বাবা গুলি খেয়ে মৃত্যুশয্যায়। নিজের মেয়ের হাত বেকার নায়কের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, আমার মেয়েকে তোমার হাতে তুলে দিলাম, বাবা। ওকে তুমি সুখে রেখো...! আ আ আ...আহ্!
ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া দুই ভাই। ঘটনাচক্রে ছোটবেলার ছবি দেখে দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন। এক ভাই আরেক ভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বললেন, তুই-ই আমার হারিয়ে যাওয়া ভাই রতন? আয় ভাই, আমার বুকে আয়।
বাস্তবতা
নায়িকা ভিলেন দ্বারা আক্রান্ত, সম্ভ্রম যায়-যায় দশা। নায়কের আগমন, দুটি গুলি! পরের দিনের পত্রিকার পাতায় শিরোনাম—‘দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে যুবক খুন’।
বিশেষ কারণে নায়িকার মন খারাপ। অতঃপর ফেসবুকে লগইন করে স্ট্যাটাস: mon khub khaৎap; manush keno emon koৎe? তারপর মিনিট ঘুরতেই ৫৭ লাইক, ২১টা কমেন্ট! নায়িকার মুখে হাসি!
নায়িকার সঙ্গে নায়কের হালকা ধাক্কা। তারপর শুরু হলো নায়িকা ও তার বান্ধবী মহলের হাউকাউ! ইভ টিজিং ইভ টিজিং!! ইভ টিজিংয়ের অপরাধে শাস্তি। ঘরে বাপের হুংকার—ওই কুলাঙ্গার, বাইর হ আমার বাড়ি থাইকা...!
বাস্তবেও আমরা বিভিন্ন কারণে মাথায় লাঠির বাড়ি খেতে পারি! সে ক্ষেত্রে—
১ম বাড়ির পর: এক্স-রে, ব্যান্ডেজ, সিটিস্ক্যান...
২য় বাড়ির পর: কর্তব্যরত চিকিৎসক কর্তৃক মৃত ঘোষিত!
কোটিপতি পড়েছেন গুন্ডাদের কবলে। নায়কও দিলেন ঝাঁপ। পরিণামে গুন্ডা কর্তৃক ভারী প্যাদানি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি, ৯৮টা সেলাই, অবশেষে ছিনতাইকারীর সহযোগী সন্দেহে গ্রেপ্তার, তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর...
নায়ক ও ভিলেন পার্টির মধ্যে ব্যাপক হাঙ্গামা। ভিলেন পার্টি সরকারবিরোধী দলের হলে পুলিশের ধীরেসুস্থে আগমন ও সব ভিলেন গ্রেপ্তার। তবে ভিলেন পার্টি সরকারদলীয় হলে পুলিশের দ্রুত আগমন ও নায়ককে গ্রেপ্তার!
সারা বছর লাফাঙ্গামি, অতঃপর রেজাল্ট।
বাসায় মায়ের হুংকার—ওরে কুলাঙ্গার, আইজ খালি তোর বাপ বাঁইচা নাই, থাকলে পিডায়া তোর ঠ্যাং ভাঙত। যা, দূর হ আমার চউক্ষের সামনে থাইকা!
নায়িকার গাড়ির ধাক্কায় নায়ক গুরুতর আহত। বিক্ষুব্ধ জনতার গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ। ফলে ঘটনাস্থলেই নায়ক নিহত। পত্রিকার শিরোনাম—‘বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মেধাবী ছাত্রের অকালমৃত্যু’। অতঃপর নায়িকার লেটেস্ট মডেলের নতুন গাড়ি ক্রয়।
নায়িকার বাবা মৃত্যুশয্যায়। পাশে থাকা ‘বেকার’ নায়ককে বললেন, আমার মেয়েকে তুমি নিজের বোনের মতো দেখো, বাবা। ভালো চাকরি করে এমন কোনো ছেলে পেলে বিয়ে দিয়ে দিয়ো...। আ আ আ...আহ্!
ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া দুই ভাই। ফেসবুকে দেওয়া ছোটবেলার প্রোফাইল পিকচার দেখে এক ভাই আরেক ভাইকে কান্নার দুটো ইমোসহ মেসেজ দিলেন, তুই-ই আমার হারিয়ে যাওয়া ভাই রতন? আয় ভাই, অনলাইনে আয়...চ্যাট করি।’
No comments