সংঘাতের মহড়ায় উদ্বিগ্ন দেশবাসী-নির্বাচনী রাজনীতি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট এখন মুখোমুখি অবস্থানে। সরকারি দল বলছে, সংবিধান সংশোধনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অস্তিত্ব নেই। বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। বিরোধী দল বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না, নির্বাচন করতেও দেবে না।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লংমার্চের পর সরকারের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সরকারি দলের পক্ষ থেকে তার জবাবও দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, নির্বাচনই হবে ফাইনাল খেলা। দুই-আড়াই বছর আগে থেকে নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের জবাব-পাল্টা জবাবের মহড়ায় দেশবাসী উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত।
কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই নির্বাচন নিয়ে এত দীর্ঘ সময় ধরে বিতর্ক হয় না। নব্বইয়ে গণ-অভ্যুত্থানে সামরিক স্বৈরশাসকের বিদায়ের পর আশা করা গিয়েছিল, গণতান্ত্রিক আমলে সামরিক শাসনের দুষ্টক্ষতগুলো আমরা ঝেড়ে-মুছে ফেলতে পারব। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। সামরিক শাসকেরা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসেন এবং গায়ের জোরেই টিকে থাকেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনার মতো বিরোধী দলের সঙ্গে আচরণেও সরকারের গণতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। তেমনি বিরোধী দলও গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে—এটাই সবার প্রত্যাশা ছিল।
কিন্তু গত দুই দশকের গণতান্ত্রিক শাসন দেশবাসীকে যারপরনাই হতাশ করেছে। যেখানে গণতন্ত্রের মূল কথা আলোচনা ও সহযোগিতা, সেখানে তারা বৈরিতাই জিইয়ে রাখছে। সরকারি দলের মনোভাব সবকিছু দখলে রাখার। বিরোধী দলের চিন্তা সব কাজে সরকারের বিরোধিতা করা। এমনকি জাতীয় নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, সে ব্যাপারেও তারা কখনোই একমত হতে পারেনি। আজ যাঁরা সংসদে আইন পাস করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছেন, তাঁরাই এই দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন করেছেন। আবার এখন যাঁরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবেন না বলে জিহাদ ঘোষণা করছেন, ক্ষমতায় থাকতে তাঁরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা মানতে চাননি। আরও দুঃখজনক হলো, যার অধীনেই নির্বাচন হোক না কেন, পরাজিত পক্ষ কখনোই ফল মেনে নেয় না।
এই চরম নেতিবাচক রাজনীতিই দেশকে বারবার সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনকি ১/১১-এর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনেও ছিল নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ। বাংলাদেশের মতো সমস্যাসংকুল ও দুর্বল অর্থনীতির দেশে সরকারি ও বিরোধী দলের একযোগে কাজ করার কথা থাকলেও বাস্তবে আমরা এর বিপরীতই দেখে আসছি। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর একগুঁয়েমি বজায় থাকলেও দেশ ও দেশের মানুষকে বড় ধরনের কাফফারা দিতে হয়েছে।
ক্ষমতাসীন ও বিরোধী উভয় পক্ষের উচিত এই বৈরিতা থেকে বেরিয়ে আসা। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ যেকোনো সমস্যাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশবাসী তার বাস্তবায়নই দেখতে চাইবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সে ক্ষেত্রে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনই হতে পারে রাজনৈতিক বৈরিতা ও সংঘাত অবসানের প্রাথমিক পদক্ষেপ।
কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই নির্বাচন নিয়ে এত দীর্ঘ সময় ধরে বিতর্ক হয় না। নব্বইয়ে গণ-অভ্যুত্থানে সামরিক স্বৈরশাসকের বিদায়ের পর আশা করা গিয়েছিল, গণতান্ত্রিক আমলে সামরিক শাসনের দুষ্টক্ষতগুলো আমরা ঝেড়ে-মুছে ফেলতে পারব। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। সামরিক শাসকেরা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসেন এবং গায়ের জোরেই টিকে থাকেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনার মতো বিরোধী দলের সঙ্গে আচরণেও সরকারের গণতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। তেমনি বিরোধী দলও গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে—এটাই সবার প্রত্যাশা ছিল।
কিন্তু গত দুই দশকের গণতান্ত্রিক শাসন দেশবাসীকে যারপরনাই হতাশ করেছে। যেখানে গণতন্ত্রের মূল কথা আলোচনা ও সহযোগিতা, সেখানে তারা বৈরিতাই জিইয়ে রাখছে। সরকারি দলের মনোভাব সবকিছু দখলে রাখার। বিরোধী দলের চিন্তা সব কাজে সরকারের বিরোধিতা করা। এমনকি জাতীয় নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, সে ব্যাপারেও তারা কখনোই একমত হতে পারেনি। আজ যাঁরা সংসদে আইন পাস করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছেন, তাঁরাই এই দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন করেছেন। আবার এখন যাঁরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবেন না বলে জিহাদ ঘোষণা করছেন, ক্ষমতায় থাকতে তাঁরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা মানতে চাননি। আরও দুঃখজনক হলো, যার অধীনেই নির্বাচন হোক না কেন, পরাজিত পক্ষ কখনোই ফল মেনে নেয় না।
এই চরম নেতিবাচক রাজনীতিই দেশকে বারবার সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনকি ১/১১-এর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনেও ছিল নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ। বাংলাদেশের মতো সমস্যাসংকুল ও দুর্বল অর্থনীতির দেশে সরকারি ও বিরোধী দলের একযোগে কাজ করার কথা থাকলেও বাস্তবে আমরা এর বিপরীতই দেখে আসছি। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর একগুঁয়েমি বজায় থাকলেও দেশ ও দেশের মানুষকে বড় ধরনের কাফফারা দিতে হয়েছে।
ক্ষমতাসীন ও বিরোধী উভয় পক্ষের উচিত এই বৈরিতা থেকে বেরিয়ে আসা। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ যেকোনো সমস্যাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশবাসী তার বাস্তবায়নই দেখতে চাইবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সে ক্ষেত্রে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনই হতে পারে রাজনৈতিক বৈরিতা ও সংঘাত অবসানের প্রাথমিক পদক্ষেপ।
No comments