ফলোআপ-সেই অনুপ এসএসসি দিচ্ছে by ইমাম হাসান
সকাল ১০টা। ঢং ঢং বেজে উঠল ঘণ্টা। আর সেই ঘণ্টার শব্দ স্কুলগেটের বাইরে থাকা মা অপর্ণার বুকের কম্পন যেন বাড়িয়ে দিচ্ছে বড্ড। এই শুরু হলো পরীক্ষা। ‘পারবে তো ছেলেটা?’ মনে উত্থাপিত এমন প্রশ্নের উত্তর আবার নিজেই দিচ্ছেন নিজেকে, ‘অবশ্যই পারবে। অনুপকে যে পারতেই হবে। সারা দেশের মানুষের ভালোবাসাই এগিয়ে নেবে তাকে।
ঠিক যেমন করে ক্যানসার প্রতিরোধ করে অনুপকে বাঁচানোর স্বপ্ন দেখিয়েছে এ দেশের মানুষ।’ নিজের এই অনুভূতির কথা বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন অপর্ণা ভট্টাচার্য।
২০০৫ সালে ছোট্ট অনুপ ভট্টাচার্যের শরীরে ধরা পড়ে ঘাতক ব্যাধি ক্যানসার। কেড়ে নিয়েছে তার একটি চোখ। কিছু টাকা জোগাড় হয়। কিন্তু সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় অনুপের বাবা। দিশেহারা হয়ে পড়েন অপর্ণা। কীভাবে বাঁচবে সন্তান। অসুস্থ সন্তান আঁকড়ে ধরে মাকে বলে, ‘মা, তুমিও কি আমারে ছাইড়া চইলা যাইবা?’ সন্তানকে বোঝান মা, ‘তোকে ছেড়ে আমি কই যাব, মানিক। তোর কিচ্ছু হবে না।’ সন্তানকে সুস্থ করতে লড়াই শুরু করেন মা। ২৯ মার্চ ২০০৬ সালে প্রথম আলোর নারীমঞ্চের পাতায় ছাপা হয় খবরটি। প্রথম আলোর পাঠকেরা সাহায্যের হাত বাড়ান অনুপের জন্য। অনুপের চিকিৎসা চলতে থাকে ভারতে। ৯ মে ২০০৭ সালে নারীমঞ্চে আবার ছাপা হয়: ‘মা, আমি মইরা গেলে, তুমি বাবাকে ক্ষমা করবা না’। অনুপকে বাঁচাতে আরও টাকা দরকার। প্রথম আলোর পাঠকেরা আবার অনুপের পাশে দাঁড়ান। অনুপের জন্য নাটক করে লোক নাট্যদল। নাটকের টিকিট বিক্রির সব টাকা তুলে দেওয়া হয় মা অপর্ণার হাতে। একই বছরের ৭ নভেম্বর আবার ছাপা হয় ফলোআপ ‘অনুপ অবশ্যই বাঁচবে’। সুস্থ হতে থাকে অনুপ। চলতে থাকে মায়ের সংগ্রাম। সন্তানকে শুধু সুস্থ করে তোলা নয়, তাকে শিখতে হবে লেখাপড়া। মানুষ হতে হবে। নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে একটার পর একটা শ্রেণী টপকাতে থাকে অনুপ। শিক্ষকেরা, বন্ধুরা যে যেভাবে পারে পড়াশোনায় সাহায্য করে অনুপকে। এদিকে ঘাতক ব্যাধি ক্যানসার প্রতিহত করে অনুপ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। তবে এখনো প্রতি মাসে রক্ত পরীক্ষা করতে হয় অনুপের, ফের যেন অনুপের কাছে ঘেঁষতে না পারে ক্যানসার। অনুপ এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নবাবপুরের নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে। মায়ের হাত ধরেই পরীক্ষা দিতে আসে অনুপ। রাতে সন্তান পড়ে, আর মা জেগে থাকেন তার পাশে। মা অপর্ণা বলেন, ‘এখনো অনুপের লেখাপড়ায় সাহায্য করছেন কয়েকজন। সন্তানকে নিয়ে আমার পৃথিবী এখন নতুন করে গড়ে উঠছে। এ কারণে আমি কৃতজ্ঞ সবার কাছে। কৃতজ্ঞ প্রথম আলোর কাছে। আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন আপনারা।’ লেখাপড়া করে কী হতে চায় অনুপ? তার সাফ কথা, ‘আমি শুধু একজন সৎ মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই, যাতে আমাকে কেউ বাবার মতো না বলে। মায়ের সুখই আমার সুখ।’ মায়ের মুখ ঝলমলে। কারণ, অনুপের পরীক্ষা ভালো হচ্ছে। মায়ের চাওয়া—সন্তানের নষ্ট চোখটায় একটা লেন্স লাগুক। এগিয়ে যাক অনুপ সবার ভালোবাসা নিয়ে।
২০০৫ সালে ছোট্ট অনুপ ভট্টাচার্যের শরীরে ধরা পড়ে ঘাতক ব্যাধি ক্যানসার। কেড়ে নিয়েছে তার একটি চোখ। কিছু টাকা জোগাড় হয়। কিন্তু সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় অনুপের বাবা। দিশেহারা হয়ে পড়েন অপর্ণা। কীভাবে বাঁচবে সন্তান। অসুস্থ সন্তান আঁকড়ে ধরে মাকে বলে, ‘মা, তুমিও কি আমারে ছাইড়া চইলা যাইবা?’ সন্তানকে বোঝান মা, ‘তোকে ছেড়ে আমি কই যাব, মানিক। তোর কিচ্ছু হবে না।’ সন্তানকে সুস্থ করতে লড়াই শুরু করেন মা। ২৯ মার্চ ২০০৬ সালে প্রথম আলোর নারীমঞ্চের পাতায় ছাপা হয় খবরটি। প্রথম আলোর পাঠকেরা সাহায্যের হাত বাড়ান অনুপের জন্য। অনুপের চিকিৎসা চলতে থাকে ভারতে। ৯ মে ২০০৭ সালে নারীমঞ্চে আবার ছাপা হয়: ‘মা, আমি মইরা গেলে, তুমি বাবাকে ক্ষমা করবা না’। অনুপকে বাঁচাতে আরও টাকা দরকার। প্রথম আলোর পাঠকেরা আবার অনুপের পাশে দাঁড়ান। অনুপের জন্য নাটক করে লোক নাট্যদল। নাটকের টিকিট বিক্রির সব টাকা তুলে দেওয়া হয় মা অপর্ণার হাতে। একই বছরের ৭ নভেম্বর আবার ছাপা হয় ফলোআপ ‘অনুপ অবশ্যই বাঁচবে’। সুস্থ হতে থাকে অনুপ। চলতে থাকে মায়ের সংগ্রাম। সন্তানকে শুধু সুস্থ করে তোলা নয়, তাকে শিখতে হবে লেখাপড়া। মানুষ হতে হবে। নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে একটার পর একটা শ্রেণী টপকাতে থাকে অনুপ। শিক্ষকেরা, বন্ধুরা যে যেভাবে পারে পড়াশোনায় সাহায্য করে অনুপকে। এদিকে ঘাতক ব্যাধি ক্যানসার প্রতিহত করে অনুপ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। তবে এখনো প্রতি মাসে রক্ত পরীক্ষা করতে হয় অনুপের, ফের যেন অনুপের কাছে ঘেঁষতে না পারে ক্যানসার। অনুপ এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নবাবপুরের নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে। মায়ের হাত ধরেই পরীক্ষা দিতে আসে অনুপ। রাতে সন্তান পড়ে, আর মা জেগে থাকেন তার পাশে। মা অপর্ণা বলেন, ‘এখনো অনুপের লেখাপড়ায় সাহায্য করছেন কয়েকজন। সন্তানকে নিয়ে আমার পৃথিবী এখন নতুন করে গড়ে উঠছে। এ কারণে আমি কৃতজ্ঞ সবার কাছে। কৃতজ্ঞ প্রথম আলোর কাছে। আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন আপনারা।’ লেখাপড়া করে কী হতে চায় অনুপ? তার সাফ কথা, ‘আমি শুধু একজন সৎ মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই, যাতে আমাকে কেউ বাবার মতো না বলে। মায়ের সুখই আমার সুখ।’ মায়ের মুখ ঝলমলে। কারণ, অনুপের পরীক্ষা ভালো হচ্ছে। মায়ের চাওয়া—সন্তানের নষ্ট চোখটায় একটা লেন্স লাগুক। এগিয়ে যাক অনুপ সবার ভালোবাসা নিয়ে।
No comments