ফিরে দেখা ২০১১-কঠিন এক বছর পার করল আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজার by এ টি এম ইসহাক

যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিলে বিশ্বজুড়ে বড় বড় শেয়ারবাজার কঠিন এক বছর পার করল। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে সংকটের কারণে বিদায়ী ২০১১ সালে অধিকাংশ শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বেশ পড়ে যায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারের মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে আলোচ্য বছর শেষ করে। বিশ্লেষকেরা বলেছেন যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই মূলত ২০১১ সালে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে ব্যাপক হারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।


বিদায়ী বছরে ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ, জার্মানির ড্যাক্স সূচক ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমে। জোনাথন সুদারিয়া নামের ব্রোকারেজ ক্যাপিটাল স্প্রেডসের একজন ডিলার বলেন, ইউরোপ ও এশিয়ার অধিকাংশ শেয়ারবাজারের মূল্যসূচকে দুই অঙ্কের পতন দেখেই বিনিয়োগকারীরা ২০১১ সালকে বিদায় দিলেন।
এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি জাপানের শেয়ারবাজারে বিদায়ী বছরে ১৭ শতাংশ পতন ঘটে। গত শুক্রবার জাপানের নিক্কি সূচক কমে আট হাজার ৪২৫ পয়েন্টে নেমে আসে।
১৯৮২ সালের পর আর কখনোই জাপানের শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক এতটা নিচে নেমে বছর শেষ করেনি। বিশেষ করে বছরের প্রথম দিকে মার্চে দেশটিতে ভয়াবহতম সুনামির কারণে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের মতো শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ওই সুনামিতে জাপানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যায়।
বিদায়ী বছরে চীনের সাংহাই সমন্বিত সূচক ২২ শতাংশ কমেছে। ভারতের শেয়ারবাজারে আলোচ্য বছরে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন লক্ষ করা গেছে। বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সেনসেক্স মূল্যসূচক ২৪ শতাংশ কমে প্রায় ১৫ হাজার ৫৪৪ পয়েন্টে নেমে আসে। এ বছরে ভারতের মুদ্রা রুপির বিনিময় হার মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১৬ শতাংশ কমে।
সাইপ্রাসের শেয়ারবাজারে ভয়াবহ পতন ঘটে ২০১১ সালে। এ বছরে দেশটির শেয়ারবাজারে পতনের হার দাঁড়ায় ৭২ শতাংশ। এটাই হলো বিশ্ব-শেয়ারবাজারে আলোচ্য বছরের সর্বোচ্চ পতন। শেয়ারবাজারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ পতন দেখা যায় ইউরোপের মন্দাকবলিত দেশ গ্রিসে।
বিদায়ী ২০১১ সালে বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশের শেয়ারবাজারে উত্থানও অবশ্য লক্ষ করা যায়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৯ শতাংশ দাম বাড়ে ভেনেজুয়েলার শেয়ারবাজারে। উত্থানের দিন থেকে এর পরই রয়েছে মঙ্গোলিয়া ও জাম্বিয়া।
এদিকে লিবিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে অভ্যুত্থান-বিপ্লব ও রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে বছরের প্রথম দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। আলোচ্য বছরে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরোও যেন বিনিময় হারের মর্যাদা ও টিকে থাকার লড়াইয়ে বছরজুড়ে হিমশিম খায়। ইউরোর বিনিময় হার ১৫ মাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বছর শেষ করে। বিবিসি অবলম্বনে।

No comments

Powered by Blogger.