২০১১: আলোচনায় ছিলেন গাদ্দাফি, লাদেন ও মোবারক

লে গেল আরও একটি বছর। আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে ঘটনাবহুল ছিল বছরটি। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘আরব বসন্ত’। আরব বসন্তের ঢেউ আর মানুষের মুখে মুখে থাকা কিছু ঘটনা তুলে ধরা হলো: তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্টের পলায়ন
প্রায় ২৩ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত ১৪ জানুয়ারি আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেন আলী। আরব বসন্তের প্রথম শিকার তিনি। পুলিশের হাতে নির্যাতিত হয়ে এর প্রতিবাদ জানাতে ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর


নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মাহুতি দেন দেশটির সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ বুয়াজিজি। বুয়াজিজির প্রতিবাদ থেকেই ‘আরব বসন্ত’ নামে গণজাগরণের সূচনা। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেন আলী। এরপর এই গণজাগরণের জোয়ার একে একে মিসর, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া ও বাহরাইনে ছড়িয়ে পড়ে।
হোসনি মোবারকের পদত্যাগ
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন আরব বিশ্বের দ্বিতীয় নেতা মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক। ১৮ দিন টানা আন্দোলনের পর ১১ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী লাখো মানুষের বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন মোবারক। অবসান ঘটে দীর্ঘ ৩০ বছরের শাসনের। মোবারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মিসরে স্বৈরশাসন চালিয়েছেন দীর্ঘ ৩০ বছর।
গাদ্দাফির মৃত্যু
৪২ বছর দেশ শাসনের পর ২০ অক্টোবর বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হন লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি। ক্ষমতা ছাড়তে রাজি না হওয়ায় এ বছরের ২০ মার্চ গাদ্দাফি-শাসিত লিবিয়ায় হামলা চালায় ন্যাটো বাহিনী। তবে পিছু না হটে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘আমি যোদ্ধা, লড়তে লড়তে যুদ্ধ ক্ষেত্রেই মরতে চাই।’ শেষ পর্যন্ত যুদ্ধরত অবস্থায়ই মারা যান তিনি।
সমঝোতায় বাধ্য প্রেসিডেন্ট সালেহ
ইয়েমেনে প্রায় ৩৩ বছর ধরে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ। তাঁকে হটানোর দাবিতে গত জানুয়ারিতে আন্দোলন শুরু হয়। গত ২৩ নভেম্বর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যস্থতায় শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হন প্রেসিডেন্ট সালেহ। চুক্তি অনুযায়ী দেশটিতে সম্প্রতি জাতীয় মতৈক্যের সরকার গঠিত হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে বিদায় নেবেন সালেহ।
গৃহযুদ্ধের হুমকিতে সিরিয়া
জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রায় আট মাস ধরে চলা এই আসাদবিরোধী আন্দোলনে সরকারি বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সিরিয়ায় অধিকার প্রতিষ্ঠার এ আন্দোলন দেশটিতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে।
ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু
গত ২ মে পাকিস্তানে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল মাত্র ৪০ মিনিটের অভিযানে হত্যা করে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনকে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ৬০ কিলোমিটার উত্তরে অ্যাবোটাবাদের একটি বাড়িতে বসবাস করতেন তিনি। ২ মে পাকিস্তানের স্থানীয় সময় রাত পৌনে দুইটার দিকে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় মার্কিন কমান্ডোরা। একপর্যায়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান লাদেন।
জাপানে সুনামি
১১ মার্চ আঘাত হানা প্রচণ্ড ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট সুনামি ছিল জাপানের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগ। প্রায় ৩৩ ফুট উচ্চতার ঢেউয়ে তছনছ হয়ে যায় উপকূলীয় অঞ্চল। ফুকুশিমা এলাকায় একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। মারা যায় প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.