কর্নেল তাহেরের বিচার অবৈধ by জাহীদ রেজা নূর
দেশদ্রোহীর স্ত্রী হিসেবে আখ্যা পেয়েছিলেন লুৎফা তাহের। ১৯৭৬ সাল থেকে এটাই ছিল তাঁর ললাটলিখন। সামরিক ট্রাইব্যুনালে তাঁর স্বামী লে. কর্নেল এম এ তাহেরের গোপন বিচার হয়েছিল। ২০১১ সালের ২২ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসের চার দিন আগে হাইকোর্ট সেই বিচারকে অবৈধ ও বেআইনি বলে ঘোষণা করলেন। কর্নেল তাহেরকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে, আদালতের রায়ে সে কথাও বলা হয়েছে। লুৎফা তাহের এত দিন এই রায়ের প্রত্যাশাই করছিলেন।
এই দিন থেকে দেশদ্রোহের কলঙ্কমুক্ত হলেন কর্নেল তাহের। লুৎফা তাহেরও এত দিনের লজ্জা-অপমান-অপবাদের হাত থেকে রেহাই পেলেন।
কর্নেল তাহেরকে ১৯৭৫ সালের ২৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁর ফাঁসি হয়। আদালত তাহেরের বিচার ও হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করেন। কর্নেল তাহেরকে শহীদের মর্যাদা দেওয়ার পাশাপাশি ওই সামরিক আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করারও নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৭৬ সালে যেভাবে কর্নেল তাহেরের বিচার ও বিচারের রায় কার্যকর করা হয়, তা ছিল স্বেচ্ছাচারিতার চূড়ান্ত। তাহেরসহ এই ট্রাইব্যুনালে সাজা পাওয়া অন্যরা ছিলেন জিয়াউর রহমানের ক্ষোভের শিকার। কর্নেল তাহেরকে যে আইনে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সে আইনে তখন পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডের কোনো বিধানই ছিল না। ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই কার্যকর হয় ফাঁসির আদেশ, আর ৩১ জুলাই ওই আইনে ফাঁসির বিধান যুক্ত করা হয়। বিচারের সময় আদালতের সামনে কোনো নথিপত্র ছিল না। আসামিরা জানতেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ সুযোগ পাননি। তাই এটাকে বিচার না বলে ঠান্ডা মাথায় হত্যাকাণ্ড বলাই সংগত।
রায় ঘোষণার পর লুৎফা তাহের প্রথম অনুভূতি প্রকাশ করেন এভাবে: ‘৩৫ বছর ধরে তাহেরকে দেশদ্রোহী কলঙ্কে কলঙ্কিত করা হতো। তাঁর স্ত্রী হিসেবে আমিও সেই কলঙ্ক বয়ে বেড়িয়েছি। আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, তিনি একজন মহান দেশপ্রেমিক ও সম্মানিত মানুষ ছিলেন।’
মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল তাহের। ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তিনি সিপাহি-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। সে বছরের ২৪ নভেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে গোপন বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কর্নেল তাহেরের ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের এবং সামরিক আদালতের বিচারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আবু ইউসুফ খানের স্ত্রী ফাতেমা ইউসুফ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ২৩ আগস্ট আদালত তাহেরের বিচারের জন্য সামরিক আইনের মাধ্যমে জারি করা আদেশ এবং এর আওতায় গোপন বিচার ও ফাঁসি কার্যকর করাকে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ ছাড়া সে বছরই গোপন বিচারের মুখোমুখি হওয়া আরও ছয়জন ব্যক্তি হাইকোর্টে পৃথক তিনটি রিট করেন।
উল্লেখ্য, কর্নেল তাহেরের বিতর্কিত বিচার নিয়ে মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুল্জ অনেকগুলো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখেন। আদালত তাঁরও সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
কর্নেল তাহেরকে ১৯৭৫ সালের ২৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁর ফাঁসি হয়। আদালত তাহেরের বিচার ও হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করেন। কর্নেল তাহেরকে শহীদের মর্যাদা দেওয়ার পাশাপাশি ওই সামরিক আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করারও নির্দেশ দেন আদালত।
১৯৭৬ সালে যেভাবে কর্নেল তাহেরের বিচার ও বিচারের রায় কার্যকর করা হয়, তা ছিল স্বেচ্ছাচারিতার চূড়ান্ত। তাহেরসহ এই ট্রাইব্যুনালে সাজা পাওয়া অন্যরা ছিলেন জিয়াউর রহমানের ক্ষোভের শিকার। কর্নেল তাহেরকে যে আইনে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সে আইনে তখন পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডের কোনো বিধানই ছিল না। ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই কার্যকর হয় ফাঁসির আদেশ, আর ৩১ জুলাই ওই আইনে ফাঁসির বিধান যুক্ত করা হয়। বিচারের সময় আদালতের সামনে কোনো নথিপত্র ছিল না। আসামিরা জানতেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ সুযোগ পাননি। তাই এটাকে বিচার না বলে ঠান্ডা মাথায় হত্যাকাণ্ড বলাই সংগত।
রায় ঘোষণার পর লুৎফা তাহের প্রথম অনুভূতি প্রকাশ করেন এভাবে: ‘৩৫ বছর ধরে তাহেরকে দেশদ্রোহী কলঙ্কে কলঙ্কিত করা হতো। তাঁর স্ত্রী হিসেবে আমিও সেই কলঙ্ক বয়ে বেড়িয়েছি। আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, তিনি একজন মহান দেশপ্রেমিক ও সম্মানিত মানুষ ছিলেন।’
মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল তাহের। ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর তিনি সিপাহি-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। সে বছরের ২৪ নভেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে গোপন বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কর্নেল তাহেরের ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের এবং সামরিক আদালতের বিচারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আবু ইউসুফ খানের স্ত্রী ফাতেমা ইউসুফ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ২৩ আগস্ট আদালত তাহেরের বিচারের জন্য সামরিক আইনের মাধ্যমে জারি করা আদেশ এবং এর আওতায় গোপন বিচার ও ফাঁসি কার্যকর করাকে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ ছাড়া সে বছরই গোপন বিচারের মুখোমুখি হওয়া আরও ছয়জন ব্যক্তি হাইকোর্টে পৃথক তিনটি রিট করেন।
উল্লেখ্য, কর্নেল তাহেরের বিতর্কিত বিচার নিয়ে মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুল্জ অনেকগুলো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখেন। আদালত তাঁরও সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
No comments