আরব বসন্তের স্থায়িত্বে গুরুত্ব দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে গণতন্ত্র অর্জনের আন্দোলনে আরব বিশ্বের মানুষকে সহযোগিতা করতে চান বান কি মুন। আজ ১ জানুয়ারি থেকে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে পাঁচ বছরের দায়িত্ব শুরু হচ্ছে। গতকাল শনিবার নিউইয়র্কে বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে বান কি মুন বলেছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁর কাজে অগ্রাধিকার পাবে আরবে গণতন্ত্র অর্জন এবং তা স্থায়ী করতে আরব দেশগুলোর মানুষের উত্থানকে এগিয়ে নেওয়া। একই সঙ্গে তরুণসমাজ ও নারীদের জন্য


আরও বেশি কিছু করা এবং ধনী-দরিদ্রের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য হ্রাস ও হতাশা দূর করতে চান জাতিসংঘের মহাসচিব।
বান কি মুন বলেন, ‘এটা ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সময়। এ সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে এবং তাদের সহযোগিতা করতে হবে।’
বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয়ে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জাতিসংঘের মহাসচিবের নেই। এ ক্ষমতা আছে সংস্থার ১৯৩ সদস্যরাষ্ট্রের এবং আরও সুনির্দিষ্টভাবে স্থায়ী পরিষদের ১৫ সদস্যের। তার পরও মহাসচিবের পদটি গুরুত্বপূর্ণ। কূটনীতিকেরা বলছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে বান কি মুন নিজের ওপর কম চাপ অনুভব করবেন এবং সদস্য সব রাষ্ট্রের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে আরও সরব হবেন ও সরাসরি কথা বলবেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাজুড়ে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া অভ্যুত্থান এবং এতে অনুপ্রাণিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ ছিল দমন-পীড়ন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মের বিদ্রোহ ও গণতন্ত্রের জন্য তাদের আকুল আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ।
তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়া, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশের আন্দোলন-বিক্ষোভকারীদের সপক্ষে আগেভাগে কথা বলে এবং বিক্ষোভের বিষয়টি আমলে নেওয়ার জন্য ওই সব দেশের শাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
বান কি মুন বলেছেন, ‘আজ আমরা আরব বিশ্বে যা দেখছি, পঞ্চাশের দশকে বা এর পরবর্তী সময়ে স্নায়ুযুদ্ধ শেষে নব্বইয়ের দশকে পূর্ব ইউরোপ এবং এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু কিছু দেশে দেখেছি। তখন একের পর এক দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে কমিউনিজম।’
বান কি মুন বলেন, ‘আর এখন আরও ২০ বছর বা এক প্রজন্ম পর আমরা আরব বিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য সেই ব্যাকুলতা দেখছি।’
নিউইয়র্ক থেকে শুরু হওয়া ‘ওয়াল স্ট্রিট দখল করো’ আন্দোলন এবং পরে উন্নত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া সেই আন্দোলনের জোয়ার ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ও তাদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ।

No comments

Powered by Blogger.