ফিরে দেখা ২০১১: জা তী য়-বিক্ষত-বিকৃত শেয়ারবাজার by আসজাদুল কিবরিয়া
২০১১ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল পুঁজিবাজার। বলা যায়, বিক্ষত-বিকৃত পুঁজিবাজার। দুই বছরের কম সময়ের ব্যবধানে কৃত্রিমভাবে ফুলে-ফেঁপে ওঠা শেয়ারবাজারে বিরাট ধস নামে ২০১১ সালের একদম প্রথম দিকেই। বড় ধরনের মূল্য সংশোধন আরও আগে অনিবার্য হয়ে উঠলেও সুবিধাভোগী বিভিন্ন মহলের তৎপরতায় বাজারকে জোর করে উঁচুতে ধরে রাখার প্রয়াস টেকেনি বেশি দিন। বাজারের বড় ধরনের পতন হাজার হাজার
বিনিয়োগকারীকে পুঁজিহারা করে। দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা তৈরি করে। সরকার পুঁজিবাজারের বিপর্যয় অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে। কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এতে বাজারের অস্বাভাবিক স্ফীতি ও ধসের বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করা হয়, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয় এবং পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে তদন্ত প্রতিবেদনকে অসার প্রমাণের জোর তৎপরতা শুরু হয়। অভিযোগের আঙুল যাঁদের দিকে উঠেছিল, তাঁরাই নেপথ্যে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করে শুধু দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ওএসডি করে রাখা, অভিযুক্ত না হয়েও এসইসির দুই সদস্যকে অনেকটা জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা এবং এসইসির অভিযুক্ত একজন নির্বাহী পরিচালককে এখনো চাকরিতে বহাল রাখার মধ্য দিয়ে সরকার, বিশেষত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এসইসিতে নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ দেওয়া হলেও রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পায়।
বাজারের কারসাজিতে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ততার অভিযোগের পরও সালমান এফ রহমান ও রকিবুর রহমানকে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তৎপর হতে দেখা গেছে। আরও অনুসন্ধানের দিকে সরকার অগ্রসর হয়নি। হয়নি কোনো মামলা। পুঁজিবাজারের মূলধনি মুনাফা করের আওতায় আসেনি, বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব খোলার জন্য টিআইএন বাধ্যতামূলক হয়নি; বরং বছরের শেষভাগে এসে আরেক দফা ধসের কবলে পড়ার পর খোদ প্রধানমন্ত্রী বাজার পুনরুদ্ধারের জন্য সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। বাজারের জন্য নানা ধরনের ছাড় ও প্রণোদনা দেওয়া হয়। আর বছরের বিভিন্ন সময়ে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী ও কারবারির রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ-মিছিল এমনকি ভাঙচুর করার ঘটনা ছিল নিয়মিত বিষয়। এমনকি অভিযুক্ত কারও নামে মামলা করা যাবে না, এমন দাবিতেও রাস্তায় নামার ঘটনা ঘটেছে।
বাজারের কারসাজিতে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ততার অভিযোগের পরও সালমান এফ রহমান ও রকিবুর রহমানকে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তৎপর হতে দেখা গেছে। আরও অনুসন্ধানের দিকে সরকার অগ্রসর হয়নি। হয়নি কোনো মামলা। পুঁজিবাজারের মূলধনি মুনাফা করের আওতায় আসেনি, বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব খোলার জন্য টিআইএন বাধ্যতামূলক হয়নি; বরং বছরের শেষভাগে এসে আরেক দফা ধসের কবলে পড়ার পর খোদ প্রধানমন্ত্রী বাজার পুনরুদ্ধারের জন্য সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। বাজারের জন্য নানা ধরনের ছাড় ও প্রণোদনা দেওয়া হয়। আর বছরের বিভিন্ন সময়ে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী ও কারবারির রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ-মিছিল এমনকি ভাঙচুর করার ঘটনা ছিল নিয়মিত বিষয়। এমনকি অভিযুক্ত কারও নামে মামলা করা যাবে না, এমন দাবিতেও রাস্তায় নামার ঘটনা ঘটেছে।
No comments