দলের সরকার, না তত্ত্বাবধায়ক by আব্দুল কাইয়ুম
বছরের একটি আলোচিত ঘটনা ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান বাতিল করে বলা হয়েছিল, বাস্তবতা বিবেচনায় সংসদ আগামী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে। এ অবস্থায় সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি কয়েকবার বৈঠক করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মতামতও আসতে থাকে।
বেশির ভাগ মত ছিল কিছু সংস্কার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গত ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যবস্থাটা বাতিল করা হয়।
নতুন বিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী তিন মাস নির্বাচনের সময় দেশে থাকবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে, তবে তারা মূলত দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করবে। সংসদ থাকলেও অধিবেশন হবে না। নির্বাচনের মূল দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন, তবে তা রাষ্ট্রপতির পরামর্শে। নির্বাচনের সময় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের সব বিভাগ কমিশনের অধীনে চলবে। অর্থাৎ সরকারের মেয়াদ শেষের তিন মাস নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনভাবে কাজ করার পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে।
যদিও আদালতের রায়কে সামনে রাখা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চাচ্ছেন না বলেই তা বাতিল করতে হয়েছে। তিনি মুখে যুক্তি দেন যে অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকলে বারবার এক-এগারোর মতো অবস্থা হবে, সংবিধানবহির্ভূত শক্তি সহজে ক্ষমতা নিয়ে নেবে। তাই নির্বাচিত সরকারের ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। এখন তিনি এটা বলছেন, কিন্তু ১৯৯৬ সালে মূলত তাঁর নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দেশব্যাপী গণ-আন্দোলন। সেদিন আওয়ামী লীগ-জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলনের ফলে ১২ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর দেড় মাস না যেতেই বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। শেখ হাসিনা বিগত প্রায় দেড় দশক ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের পুরো কৃতিত্ব দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু এখন ঠিক বিপরীত অবস্থানে চলে গেছেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ও সাধারণভাবে মানুষ মনে করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এবং দলীয় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঘটবে। ফলে নির্বাচনের ফল বিশ্বাসযোগ্য হবে না, গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। এটা আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ধরে রাখার একটি অপকৌশল বলে সবাই মনে করে।
এ অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুটি দেশের রাজনীতিতে একটি মেয়াদি বোমা হয়ে উঠেছে। ২০১৩ সালের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন যত কাছে আসবে, এই ইস্যুতে দেশের রাজনীতি তত বেশি সংঘাতময় হয়ে উঠবে। বিএনপি ও চারদলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে দিয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন রাজনীতিতে স্থায়ী অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।
নতুন বিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী তিন মাস নির্বাচনের সময় দেশে থাকবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে, তবে তারা মূলত দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করবে। সংসদ থাকলেও অধিবেশন হবে না। নির্বাচনের মূল দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন, তবে তা রাষ্ট্রপতির পরামর্শে। নির্বাচনের সময় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের সব বিভাগ কমিশনের অধীনে চলবে। অর্থাৎ সরকারের মেয়াদ শেষের তিন মাস নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনভাবে কাজ করার পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে।
যদিও আদালতের রায়কে সামনে রাখা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চাচ্ছেন না বলেই তা বাতিল করতে হয়েছে। তিনি মুখে যুক্তি দেন যে অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকলে বারবার এক-এগারোর মতো অবস্থা হবে, সংবিধানবহির্ভূত শক্তি সহজে ক্ষমতা নিয়ে নেবে। তাই নির্বাচিত সরকারের ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। এখন তিনি এটা বলছেন, কিন্তু ১৯৯৬ সালে মূলত তাঁর নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দেশব্যাপী গণ-আন্দোলন। সেদিন আওয়ামী লীগ-জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলনের ফলে ১২ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর দেড় মাস না যেতেই বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। শেখ হাসিনা বিগত প্রায় দেড় দশক ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের পুরো কৃতিত্ব দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু এখন ঠিক বিপরীত অবস্থানে চলে গেছেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ও সাধারণভাবে মানুষ মনে করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এবং দলীয় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঘটবে। ফলে নির্বাচনের ফল বিশ্বাসযোগ্য হবে না, গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। এটা আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ধরে রাখার একটি অপকৌশল বলে সবাই মনে করে।
এ অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুটি দেশের রাজনীতিতে একটি মেয়াদি বোমা হয়ে উঠেছে। ২০১৩ সালের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন যত কাছে আসবে, এই ইস্যুতে দেশের রাজনীতি তত বেশি সংঘাতময় হয়ে উঠবে। বিএনপি ও চারদলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে দিয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন রাজনীতিতে স্থায়ী অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।
No comments