পাহাড় ও ফসলি জমির মাটি ৫০ ইটভাটায় by বুদ্ধজ্যোতি চাকমা
বান্দরবানে পাহাড় ও ফসলি জমির মাটি কেটে ইট তৈরি করা হয়েছে। সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার পরও প্রায় অর্ধশত ইটভাটায় এভাবে ইট তৈরির জন্য বনের কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ইটভাটার অধিকাংশই লোকালয় ও বিদ্যালয়ের পাশে স্থাপন করা হয়েছে। মাটি কাটা, ইট পোড়ানোর জন্য বন উজাড় এবং লোকালয় ও বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা স্থাপন করায় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। ইট পোড়ানো (নিয়ন্ত্রণ) সংশোধন আইন-২০০১ অনুযায়ী বনাঞ্চলের
তিন কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা ও ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। স্থানীয় ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন, বান্দরবানে দুটি বৈধ ও ৪৮টি অবৈধ ইটভাটায় প্রতিদিন ১৫ হাজার মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ইটভাটার কারণে লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে প্রায় ৩০০ একর জমিতে সৃজন করা বন ইতিমধ্যে উজাড় হয়ে গেছে।
পাহাড় ও ফসলি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ: সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার চেমি ডলুপাড়া এলাকা, লামার ফাইতং ইউনিয়নের শিবাতলী এলাকা, ফাইস্যাখালী ইউনিয়নের হারগাছা, রইঙ্গাঝিড়ি চাপেরঘেরা, রোয়াংছড়ি ছ্লাপাক্ষ্যংসহ বিভিন্ন এলাকার পাহাড় ও ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন ভাটায় এসব মাটি ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা: সদর উপজেলার গুংগুরু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেডম্যানপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। গুংগুরু খিয়াংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় এবিসি ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী চিংথুই খিয়াং, পাইক্লাউ খিয়াং বলে, ইটভাটার চুল্লির কালো ধোঁয়া আর ভারী ট্রাকের বিকট শব্দে শ্রেণীকক্ষে থাকা যায় না। এ জন্য ইটভাটার কাজ শুরু হলে লেখাপড়াও করতে পারি না।
লোকালয়ে ইটভাটা: সদর উপজেলার সোয়ালক ইউনিয়নে আমতলী পাড়ায় সাংগু ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। রোয়াংছড়ি উপজেলার তাড়াছা ইউনিয়নের সাইঙ্গা এলাকায় এবিএম ব্রিকস ও আরবিএম ব্রিকস নামের ভাটা স্থাপন করা হয়েছে।
ইটভাটা আইনে সংরক্ষিত বন ও লোকালয়ের তিন কিলোমিটারের মধ্যে ভাটা স্থাপন করা যাবে না। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কেন ভাটা করেছেন, জানতে চাইলে এবিসির ব্রিকসের মালিক মো. ইসলাম বলেন, তিনি ২০০৪ সালে ইটভাটা করেছেন। তখন কেউ কিছু বলেনি। গত মাসে (নভেম্বরে) ভাটার মেয়াদ শেষ হয়েছে। আগামী বছর তিনি বন্ধ করে দেবেন।
ভাটায় পুড়ছে কাঠ: অনুমতিপত্র বা লাইসেন্স নেওয়া হয়নি, এ রকম লামার ফাইতং ইউনিয়নে ১৪টিসহ আরও বেশ কয়েকটি ইটভাটা আছে। এসব ভাটায় নির্বিঘ্নে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
রোয়াংছড়ি উপজেলার জামছড়ি-হানসামা এলাকায় এফবিএম ব্রিকসে গিয়ে দেখা যায়, জ্বালানি কাঠের বিশাল স্তূপ। ইটভাটার শ্রমিক রফিকুল ইসলাম জানান, পুরোদমে চুল্লি চালু করলে প্রতিদিন ৪০০ মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন। মাঝেমধ্যে অর্ধেক বা অর্ধেকের বেশি চালু থাকে বলে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ ও ফাইতং ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মীর কাশেম জানান, ৩২০ একর বনভূমির মধ্যে এখন মাত্র ৩০ একর রয়েছে। গাছ পাচার, জুমের আগুনে পুড়ে যাওয়া, গাছ কেটে কাঠ ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণে ২৯০ একর বনভূমির উজাড় হয়ে গেছে।
ফাসিয়াখালী এইচডিবি ইটভাটার মালিক নূর হোসেন ও ফাইতংয়ের ইটভাটার মালিক সমিতির সভাপতি ফকরুল ইসলাম বলেন, সব ইটভাটায়ই কম-বেশি জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এখন কাঠ না পাওয়ায় তাঁরা কয়লা ব্যবহার করছেন।
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, ইটভাটাগুলোতে যেকোনো সময় অভিযান চালানো হবে। এ জন্য নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে তিনটি দল প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। উন্নয়নকাজে ইটের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় নিয়ে আগে কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। এবার এলাকার লোকজন না চাইলে ইটভাটাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জাফর আলম জানান, পার্বত্য অঞ্চলে ইটভাটা চালানোর কোনো বৈধতা নেই। তারা বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে পরিবেশের ক্ষতিকর ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য অভিযান শুরু করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে বান্দরবানেও অভিযান চালানো হতে পারে।
পাহাড় ও ফসলি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ: সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার চেমি ডলুপাড়া এলাকা, লামার ফাইতং ইউনিয়নের শিবাতলী এলাকা, ফাইস্যাখালী ইউনিয়নের হারগাছা, রইঙ্গাঝিড়ি চাপেরঘেরা, রোয়াংছড়ি ছ্লাপাক্ষ্যংসহ বিভিন্ন এলাকার পাহাড় ও ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন ভাটায় এসব মাটি ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা: সদর উপজেলার গুংগুরু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেডম্যানপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। গুংগুরু খিয়াংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় এবিসি ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী চিংথুই খিয়াং, পাইক্লাউ খিয়াং বলে, ইটভাটার চুল্লির কালো ধোঁয়া আর ভারী ট্রাকের বিকট শব্দে শ্রেণীকক্ষে থাকা যায় না। এ জন্য ইটভাটার কাজ শুরু হলে লেখাপড়াও করতে পারি না।
লোকালয়ে ইটভাটা: সদর উপজেলার সোয়ালক ইউনিয়নে আমতলী পাড়ায় সাংগু ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। রোয়াংছড়ি উপজেলার তাড়াছা ইউনিয়নের সাইঙ্গা এলাকায় এবিএম ব্রিকস ও আরবিএম ব্রিকস নামের ভাটা স্থাপন করা হয়েছে।
ইটভাটা আইনে সংরক্ষিত বন ও লোকালয়ের তিন কিলোমিটারের মধ্যে ভাটা স্থাপন করা যাবে না। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কেন ভাটা করেছেন, জানতে চাইলে এবিসির ব্রিকসের মালিক মো. ইসলাম বলেন, তিনি ২০০৪ সালে ইটভাটা করেছেন। তখন কেউ কিছু বলেনি। গত মাসে (নভেম্বরে) ভাটার মেয়াদ শেষ হয়েছে। আগামী বছর তিনি বন্ধ করে দেবেন।
ভাটায় পুড়ছে কাঠ: অনুমতিপত্র বা লাইসেন্স নেওয়া হয়নি, এ রকম লামার ফাইতং ইউনিয়নে ১৪টিসহ আরও বেশ কয়েকটি ইটভাটা আছে। এসব ভাটায় নির্বিঘ্নে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
রোয়াংছড়ি উপজেলার জামছড়ি-হানসামা এলাকায় এফবিএম ব্রিকসে গিয়ে দেখা যায়, জ্বালানি কাঠের বিশাল স্তূপ। ইটভাটার শ্রমিক রফিকুল ইসলাম জানান, পুরোদমে চুল্লি চালু করলে প্রতিদিন ৪০০ মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন। মাঝেমধ্যে অর্ধেক বা অর্ধেকের বেশি চালু থাকে বলে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হারুন-উর রশিদ ও ফাইতং ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মীর কাশেম জানান, ৩২০ একর বনভূমির মধ্যে এখন মাত্র ৩০ একর রয়েছে। গাছ পাচার, জুমের আগুনে পুড়ে যাওয়া, গাছ কেটে কাঠ ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণে ২৯০ একর বনভূমির উজাড় হয়ে গেছে।
ফাসিয়াখালী এইচডিবি ইটভাটার মালিক নূর হোসেন ও ফাইতংয়ের ইটভাটার মালিক সমিতির সভাপতি ফকরুল ইসলাম বলেন, সব ইটভাটায়ই কম-বেশি জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এখন কাঠ না পাওয়ায় তাঁরা কয়লা ব্যবহার করছেন।
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, ইটভাটাগুলোতে যেকোনো সময় অভিযান চালানো হবে। এ জন্য নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে তিনটি দল প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। উন্নয়নকাজে ইটের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় নিয়ে আগে কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। এবার এলাকার লোকজন না চাইলে ইটভাটাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জাফর আলম জানান, পার্বত্য অঞ্চলে ইটভাটা চালানোর কোনো বৈধতা নেই। তারা বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে পরিবেশের ক্ষতিকর ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য অভিযান শুরু করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে বান্দরবানেও অভিযান চালানো হতে পারে।
No comments