লিমন: পায়ের বিনিময়ে দুটি মামলা by টিপু সুলতান
‘আমার একটাই দুঃখ। যারা আমাকে গুলি করে পঙ্গু করে দিল, আজ পর্যন্ত ওই সব র্যাব সদস্যের কাউকে সাসপেন্ড পর্যন্ত করা হয়নি। উল্টো একটা পা হারিয়ে র্যাবের কাছ থেকে দুটি মামলা পেলাম।’ পঙ্গু হওয়ার নয় মাস পর এভাবে আক্ষেপ জানাল র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হওয়া কলেজছাত্র লিমন হোসেন (১৭)। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটা বড় উদাহরণ হিসেবে ২০১১ সালে দেশব্যাপী আলোচিত ছিল ঝালকাঠির রাজাপুর
উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের লিমন। তবে পঙ্গুত্ববরণের পরও দমে থাকেনি এই কিশোর। সে এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার। তার ইচ্ছা, নামকরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করা।
এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল লিমনের। ছুটির দিনে ইটখোলায় কাজ করে, গ্রামে টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাত সে। পরীক্ষার অল্প কদিন আগে র্যাবের নিষ্ঠুরতার শিকার হওয়ায় সে আর পরীক্ষা দিতে পারেনি। গত ২৩ মার্চ বাড়ির পাশে র্যাবের গুলিতে আহত হয় লিমন। তার অভিযোগ, মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র্যাবের সদস্যরা তাকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। র্যাবের দাবি খুব স্বাভাবিকভাবেই ভিন্ন। তারা বলেছে, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার অভিযানে বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে লিমন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এরপর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দুটি মামলাও করে র্যাব। এ অবস্থায় এগিয়ে এসেছিল লিমনের গ্রামের লোকজন। তারাই চাঁদা তুলে লিমনের চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়। বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে লিমন ভর্তি হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। লিমনের জীবন বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত তার বাঁ পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়।
র্যাবের গুলিবর্ষণের এই ঘটনার ১২ দিন পর ৬ এপ্রিল প্রথম আলোতে ‘চরম নিষ্ঠুরতা’ শিরোনামে প্রথম লিমনের খবরটি ছাপা হয়। এ ঘটনা দেশের মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষের মনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। লিমনের চিকিৎসায় ও আইনগত সহায়তা দিতে অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান তার পাশে দাঁড়ায়।
সবাই যখন এমন নিষ্ঠুরতায় ক্ষুব্ধ ও বিচলিত, তখন লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের চেষ্টায় একের পর এক নানা কাহিনি সাজানোর চেষ্টায় মেতে ওঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনকি লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের চেষ্টায় তৎপর হন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকও। গত ১৯ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে লিমন ও তার বাবাকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টার বক্তব্যকে সরকারের বক্তব্য হিসেবেও স্বীকৃতি দেন। সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের কর্মকর্তারাও আনুষ্ঠানিকভাবে লিমন, তার মা-বাবা ও কলেজপড়ুয়া বোন—সবাইকে সন্ত্রাসী বলে দাবি করেন।
লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা অস্ত্র মামলায় পুলিশ রাতারাতি অভিযোগপত্র দিলেও গুলিবর্ষণকারী র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমের করা মামলা নিয়ে গড়িমসি করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা নিলেও তদন্তে অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন হেনোয়ারা বেগম। পা হারানো লিমন দুটি মামলার বোঝা কাঁধে নিয়ে এখন পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল লিমনের। ছুটির দিনে ইটখোলায় কাজ করে, গ্রামে টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাত সে। পরীক্ষার অল্প কদিন আগে র্যাবের নিষ্ঠুরতার শিকার হওয়ায় সে আর পরীক্ষা দিতে পারেনি। গত ২৩ মার্চ বাড়ির পাশে র্যাবের গুলিতে আহত হয় লিমন। তার অভিযোগ, মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র্যাবের সদস্যরা তাকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। র্যাবের দাবি খুব স্বাভাবিকভাবেই ভিন্ন। তারা বলেছে, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার অভিযানে বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে লিমন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এরপর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দুটি মামলাও করে র্যাব। এ অবস্থায় এগিয়ে এসেছিল লিমনের গ্রামের লোকজন। তারাই চাঁদা তুলে লিমনের চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়। বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে লিমন ভর্তি হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। লিমনের জীবন বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত তার বাঁ পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়।
র্যাবের গুলিবর্ষণের এই ঘটনার ১২ দিন পর ৬ এপ্রিল প্রথম আলোতে ‘চরম নিষ্ঠুরতা’ শিরোনামে প্রথম লিমনের খবরটি ছাপা হয়। এ ঘটনা দেশের মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষের মনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। লিমনের চিকিৎসায় ও আইনগত সহায়তা দিতে অনেক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান তার পাশে দাঁড়ায়।
সবাই যখন এমন নিষ্ঠুরতায় ক্ষুব্ধ ও বিচলিত, তখন লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের চেষ্টায় একের পর এক নানা কাহিনি সাজানোর চেষ্টায় মেতে ওঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনকি লিমনকে সন্ত্রাসী প্রমাণের চেষ্টায় তৎপর হন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকও। গত ১৯ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে লিমন ও তার বাবাকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টার বক্তব্যকে সরকারের বক্তব্য হিসেবেও স্বীকৃতি দেন। সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের কর্মকর্তারাও আনুষ্ঠানিকভাবে লিমন, তার মা-বাবা ও কলেজপড়ুয়া বোন—সবাইকে সন্ত্রাসী বলে দাবি করেন।
লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা অস্ত্র মামলায় পুলিশ রাতারাতি অভিযোগপত্র দিলেও গুলিবর্ষণকারী র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমের করা মামলা নিয়ে গড়িমসি করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা নিলেও তদন্তে অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন হেনোয়ারা বেগম। পা হারানো লিমন দুটি মামলার বোঝা কাঁধে নিয়ে এখন পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
No comments