পাটমন্ত্রীর ক্ষোভ-আমরা হাওয়ায় ভেসে এসেছি?’
মুহিত ভাইকে বলছেন মুক্তিযোদ্ধা, আর আমরা কি হাওয়ায় ভেসে এসেছি? সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে অবজ্ঞা করার এত সাহস পেলেন কোথায়? ডেকে এনে মর্যাদা দেবেন না, ভুল উপস্থাপনা করবেন, আর তা মেনে নিতে হবে?’অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে এভাবেই ক্ষোভ ঝাড়লেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। ক্যাটালিস্টের আয়োজনে গতকাল শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে পাট ও বাংলাদেশের অর্থনীতি বিষয়ে এক
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পাটমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী ছিলেন প্রধান অতিথি। সঞ্চালক ছিলেন সাংবাদিক জাহিদুজ্জামান ফারুক। কর্মশালায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পক্ষ থেকে দুটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। জাহিদুজ্জামান ফারুক অর্থমন্ত্রী ও পাটমন্ত্রীকে সম্বোধন করে বক্তব্য দেওয়ার পরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন লতিফ সিদ্দিকী।
জাহিদুজ্জামান ফারুক শুরু করেন এভাবে, ‘অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং অর্থনীতিবিদ। পাট নিয়ে কর্মশালার কথা শুনেই তিনি উপস্থিত হতে সম্মতি দেন। এ ছাড়া উপস্থিত আছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।’ এরপর ক্যাটালিস্ট কর্মকর্তা শাহরোজ জলিলের স্বাগত বক্তব্য শেষে হঠাৎ কথা বলা শুরু করেন লতিফ সিদ্দিকী। সঞ্চালককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এ যে দেখছি কাবাবের মাঝে হাড্ডি। আপনি যেভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, তাতে এই সরকার ও মন্ত্রিসভাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।’
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ক্যাটালিস্টকে চিনি না। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে আমি আসি না। যদি জানতাম যে ক্যাটালিস্ট বা সিপিডির আয়োজন, আমি আসতাম না। তবে বুয়েটের হলে আসতাম।’
জাহিদুজ্জামান এ সময় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ইচ্ছা করে আপনাকে ছোট করার কোনো চেষ্টা করিনি। আপনি আমাদের ঘরের মানুষ। কে না চেনে আপনাকে?’
৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনের প্রসঙ্গ টেনে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘অপমান করে দুঃখিত হয়ে কী লাভ! মতলবি করবেন আর তা মেনে নিতে হবে?’ জাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি লজ্জিত।’ লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘লজ্জা পেলে এমন করতেন না।’
এ সময় বেশ কয়েকবার অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার ভঙ্গি করেন লতিফ সিদ্দিকী। একপর্যায়ে ক্যাটালিস্টের গ্রুপ ম্যানেজার তামান্না শারমীন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইলে শান্ত হন এবং অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থাকেন তিনি।
এরপর অর্থমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে পরিস্থিতিটা বোঝানোর চেষ্টা করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অর্থমন্ত্রী হিসেবে এখানে এসেছি। কিন্তু অনুষ্ঠানটা মূলত পাট মন্ত্রণালয়ের। পাটশিল্পের উন্নয়নে আমার সহকর্মী অনন্য অবদান রাখছেন। একটু বয়োজ্যেষ্ঠ বলে আমাকে হয়তো প্রধান অতিথি করা হয়েছে, আর কিছু নয়।’
এরপর আবার কথা বলতে শুরু করেন লতিফ সিদ্দিকী। গণমাধ্যম, অর্থমন্ত্রী, ড. ইউনূস ও দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সম্পর্কে কটূক্তি করেন পাটমন্ত্রী।
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘মুহিত ভাইকে মুক্তিযোদ্ধা বলছেন। আমরা কি হাওয়ায় ভেসে এসেছি? মুহিত ভাই পাট খাতের জন্য যা করেছেন, অন্য কোনো অর্থমন্ত্রী তা করেননি। প্রধানমন্ত্রী ও তিনি মিলে তিন হাজার কোটি টাকা মওকুফ করে দিয়েছেন। আমি তাঁকে কেন সম্মান করব না?’ তিনি বলেন, ‘পাটকলের যন্ত্রপাতির আধুনিকীকরণ হবে। এটা খেলা নাকি? ৭০ বছর বয়সী যন্ত্রপাতির আবার আধুনিকীকরণ কী? কোনো সুযোগ নেই।’
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ব্যবসায়ী বন্ধুরা সমস্যার কথা বলেন। কিন্তু যে রাজনীতির ওপর দাঁড়িয়ে সবকিছু, তা যখন কলুষিত হয়ে পড়ে, অশুভ শক্তির দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন তাঁরা কোনো কথা বলেন না। তখন যেন তাঁদের কোনো দায়িত্ব নেই।’
এভাবে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট পর শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। প্রতিবেদনের অনুলিপি আনুষ্ঠানিকভাবে পাটমন্ত্রীকে দিতে গেলে তিনি প্রথমে তা অর্থমন্ত্রীকে দিতে বলেন। দেওয়াও হয় তাই। এরপর আরেকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা বলে লতিফ সিদ্দিকীর আগেই বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ১৯৭২ সালে পাটকলগুলোর জাতীয়করণ ছিল অনিবার্য বিষয়, ১৯৮৩ সালে যা বিরাষ্ট্রীয়করণ হয়। পাটমন্ত্রীকে নিয়ে হাস্যচ্ছলে তিনি বলেন, প্রায়ই তিনি নিয়মকানুন মানেন না।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন অর্থমন্ত্রী। বিশেষ অতিথির আনুষ্ঠানিক বক্তব্য লতিফ সিদ্দিকী শুরুই করেন অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে। বলেন, ‘ওনার দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বব্যাংকীয়। আমারটা জাতীয়। তাঁর সঙ্গে পিরিত হওয়ার দরকার নেই। উনি যেটা ভাবেন, আমি তা ভাবি না।’
পাট খাতের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা না পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকের আদরের পুত্র ইউনূসের আবদার রক্ষা করতে পারিনি। তাই দুনিয়াজুড়ে ঝগড়া বাধিয়েছেন তিনি। আমি ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নই। ব্যক্তিগতভাবে উনি আমার সম্বন্ধী হন। কিন্তু ৭০ বছর বয়সে উনি এমন সব আবদার করছেন, যা মানা যায় না। শুনলাম, এই বয়সে এসে জনশক্তি রপ্তানিরও লাইসেন্স চেয়েছিলেন তিনি।’
পাটের ওপর সিপিডির এই প্রতিবেদনটি সিপিডির কোনো প্রতিবেদন হিসেবে প্রথমবারের মতো তাঁকে আপ্লুত করেছে বলে স্বীকার করেন মন্ত্রী। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নাম বিকৃত করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দেবতার প্রিয় যখন কিছু বলেন, তখন কিন্তু আপ্লুত হতে পারি না।’
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘গোলাম আযমের সাক্ষাৎকার প্রচার করে আকৃষ্ট করতে চাইছে একটি টেলিভিশন। এ ধরনের গণমাধ্যমে আমি যাই না, তাদের প্রচারও আমি চাই না। আর যেসব পত্রিকা বিজ্ঞাপনের জন্য নীতি বিসর্জন দেয়, তাদের কোনো নীতিই নেই।’
জাহিদুজ্জামান ফারুক শুরু করেন এভাবে, ‘অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং অর্থনীতিবিদ। পাট নিয়ে কর্মশালার কথা শুনেই তিনি উপস্থিত হতে সম্মতি দেন। এ ছাড়া উপস্থিত আছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।’ এরপর ক্যাটালিস্ট কর্মকর্তা শাহরোজ জলিলের স্বাগত বক্তব্য শেষে হঠাৎ কথা বলা শুরু করেন লতিফ সিদ্দিকী। সঞ্চালককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এ যে দেখছি কাবাবের মাঝে হাড্ডি। আপনি যেভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, তাতে এই সরকার ও মন্ত্রিসভাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।’
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ক্যাটালিস্টকে চিনি না। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে আমি আসি না। যদি জানতাম যে ক্যাটালিস্ট বা সিপিডির আয়োজন, আমি আসতাম না। তবে বুয়েটের হলে আসতাম।’
জাহিদুজ্জামান এ সময় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ইচ্ছা করে আপনাকে ছোট করার কোনো চেষ্টা করিনি। আপনি আমাদের ঘরের মানুষ। কে না চেনে আপনাকে?’
৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনের প্রসঙ্গ টেনে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘অপমান করে দুঃখিত হয়ে কী লাভ! মতলবি করবেন আর তা মেনে নিতে হবে?’ জাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি লজ্জিত।’ লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘লজ্জা পেলে এমন করতেন না।’
এ সময় বেশ কয়েকবার অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার ভঙ্গি করেন লতিফ সিদ্দিকী। একপর্যায়ে ক্যাটালিস্টের গ্রুপ ম্যানেজার তামান্না শারমীন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইলে শান্ত হন এবং অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থাকেন তিনি।
এরপর অর্থমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে পরিস্থিতিটা বোঝানোর চেষ্টা করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অর্থমন্ত্রী হিসেবে এখানে এসেছি। কিন্তু অনুষ্ঠানটা মূলত পাট মন্ত্রণালয়ের। পাটশিল্পের উন্নয়নে আমার সহকর্মী অনন্য অবদান রাখছেন। একটু বয়োজ্যেষ্ঠ বলে আমাকে হয়তো প্রধান অতিথি করা হয়েছে, আর কিছু নয়।’
এরপর আবার কথা বলতে শুরু করেন লতিফ সিদ্দিকী। গণমাধ্যম, অর্থমন্ত্রী, ড. ইউনূস ও দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সম্পর্কে কটূক্তি করেন পাটমন্ত্রী।
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘মুহিত ভাইকে মুক্তিযোদ্ধা বলছেন। আমরা কি হাওয়ায় ভেসে এসেছি? মুহিত ভাই পাট খাতের জন্য যা করেছেন, অন্য কোনো অর্থমন্ত্রী তা করেননি। প্রধানমন্ত্রী ও তিনি মিলে তিন হাজার কোটি টাকা মওকুফ করে দিয়েছেন। আমি তাঁকে কেন সম্মান করব না?’ তিনি বলেন, ‘পাটকলের যন্ত্রপাতির আধুনিকীকরণ হবে। এটা খেলা নাকি? ৭০ বছর বয়সী যন্ত্রপাতির আবার আধুনিকীকরণ কী? কোনো সুযোগ নেই।’
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ব্যবসায়ী বন্ধুরা সমস্যার কথা বলেন। কিন্তু যে রাজনীতির ওপর দাঁড়িয়ে সবকিছু, তা যখন কলুষিত হয়ে পড়ে, অশুভ শক্তির দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন তাঁরা কোনো কথা বলেন না। তখন যেন তাঁদের কোনো দায়িত্ব নেই।’
এভাবে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট পর শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। প্রতিবেদনের অনুলিপি আনুষ্ঠানিকভাবে পাটমন্ত্রীকে দিতে গেলে তিনি প্রথমে তা অর্থমন্ত্রীকে দিতে বলেন। দেওয়াও হয় তাই। এরপর আরেকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা বলে লতিফ সিদ্দিকীর আগেই বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ১৯৭২ সালে পাটকলগুলোর জাতীয়করণ ছিল অনিবার্য বিষয়, ১৯৮৩ সালে যা বিরাষ্ট্রীয়করণ হয়। পাটমন্ত্রীকে নিয়ে হাস্যচ্ছলে তিনি বলেন, প্রায়ই তিনি নিয়মকানুন মানেন না।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন অর্থমন্ত্রী। বিশেষ অতিথির আনুষ্ঠানিক বক্তব্য লতিফ সিদ্দিকী শুরুই করেন অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে। বলেন, ‘ওনার দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বব্যাংকীয়। আমারটা জাতীয়। তাঁর সঙ্গে পিরিত হওয়ার দরকার নেই। উনি যেটা ভাবেন, আমি তা ভাবি না।’
পাট খাতের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা না পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকের আদরের পুত্র ইউনূসের আবদার রক্ষা করতে পারিনি। তাই দুনিয়াজুড়ে ঝগড়া বাধিয়েছেন তিনি। আমি ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নই। ব্যক্তিগতভাবে উনি আমার সম্বন্ধী হন। কিন্তু ৭০ বছর বয়সে উনি এমন সব আবদার করছেন, যা মানা যায় না। শুনলাম, এই বয়সে এসে জনশক্তি রপ্তানিরও লাইসেন্স চেয়েছিলেন তিনি।’
পাটের ওপর সিপিডির এই প্রতিবেদনটি সিপিডির কোনো প্রতিবেদন হিসেবে প্রথমবারের মতো তাঁকে আপ্লুত করেছে বলে স্বীকার করেন মন্ত্রী। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নাম বিকৃত করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দেবতার প্রিয় যখন কিছু বলেন, তখন কিন্তু আপ্লুত হতে পারি না।’
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘গোলাম আযমের সাক্ষাৎকার প্রচার করে আকৃষ্ট করতে চাইছে একটি টেলিভিশন। এ ধরনের গণমাধ্যমে আমি যাই না, তাদের প্রচারও আমি চাই না। আর যেসব পত্রিকা বিজ্ঞাপনের জন্য নীতি বিসর্জন দেয়, তাদের কোনো নীতিই নেই।’
No comments