ওয়াসার পানিতে ময়লা-জনস্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা
ঢাকা ওয়াসার পাইপলাইনে ফের ময়লা পানি সরবরাহ করা হচ্ছে বলে শনিবার সমকালের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় এক আতঙ্কজনক সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে। এতে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের তেমন হেলদোল নেই। ময়লা পানি ব্যবহার করে অনেকে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন_ তেমন আশঙ্কাকেও তারা আমলে নিচ্ছেন বলে মনে হয় না। যদি জনস্বাস্থ্যের প্রতি ওয়াসা কর্মকর্তাদের সামান্যতম দায়বোধও থেকে থাকত, তাহলে তারা ময়লা পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে
তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিকারের ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু তারা তা করেননি। বরং ঢাকা ওয়াসার মডস জোন-১ (সায়েদাবাদ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী আজিজুল হক খান এ ধরনের অভিযোগ প্রতি বছরই আসে বলে দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছেন। এক কর্মকর্তা পানিতে ময়লা পাওয়া যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বুড়িগঙ্গার পানিতে দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেন। অথচ, এই বুড়িগঙ্গার পরিশোধনকৃত পানিই রাজধানীবাসীর পানির চাহিদার ১৩ শতাংশ পূরণ করে থাকে। বর্তমান পরিশোধন পদ্ধতিতে শুষ্ক মৌসুমে বুড়িগঙ্গার পানি পুরোপুরি দূষণমুক্ত করা না গেলে সেখান থেকে কেন রাজধানীবাসীকে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে? ওয়াসাকে হয় বিকল্প ব্যবস্থার শরণাপন্ন হতে হবে, না হয় বুড়িগঙ্গার পানি পুরোপুরি দূষণমুক্ত অবস্থায় সরবরাহের ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতেই করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ময়লা, পোকায় দূষিত পানি সরবরাহ করা উচিত নয়। ওয়াসা কর্তৃপক্ষের এই বোধটুকু থাকা উচিত, পানি সরবরাহের জন্য রাজধানীবাসীকে নিয়মিত অর্থ প্রদান করতে হয়। পত্রিকার রিপোর্টে দেখা যায়, রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুর, দক্ষিণ শাহজাহানপুর, শহীদবাগ, মোমেনবাগ, শান্তিবাগ, মালিবাগ ও মৌচাকসহ বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পাইপলাইনে সরবরাহকৃত পানিতে ময়লা ছাড়াও লাল ও হলুদ রঙের পোকা পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কিন্তু ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের এতে কোনো বোধোদয় হয় না। ফলে এ সময় এলাকার বাসিন্দাদের খাবার পানির জন্য বাইরের বা বোতলজাত পানির ওপর নির্ভর করতে হয়। ঢাকা ওয়াসার পাইপলাইনে সরবরাহকৃত যেসব এলাকার পানিতে ময়লা-আবর্জনা ও পোকা পাওয়া যাচ্ছে সেসব এলাকায় অবিলম্বে পানি সরবরাহ বন্ধ রেখে জরুরি ভিত্তিতে দূষণমুক্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থার নেওয়া হোক। সরবরাহকৃত পানি জনস্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কি-না, সেটা দেখার দায়িত্ব নিশ্চয়ই ওয়াসা কর্তৃপক্ষের।
No comments