বিলেতে ধর্মঘট-কল্যাণরাষ্ট্রগুলো কি মৃত্যুপথযাত্রী? by জোবাইদা নাসরীন
গত ৩০ নভেম্বর ইংল্যান্ডে এ সময়ের সবচেয়ে বড় ধর্মঘট হয়েছে। বলা হচ্ছে, ১৯২৬ সালের পর ইংল্যান্ডে এটাই ছিল সবচেয়ে বড় ধর্মঘট। কয়েক দশকের অনুপস্থিতির পর শ্রমজীবী মানুষের প্রতিরোধে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত এই ধর্মঘট। শ্রমজীবী মানুষের যে শক্তি, তারই প্রকাশ ঘটেছে এই ধর্মঘটে। একের পর এক ইউনিয়ন ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দিয়েছে। প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিজীবী মানুষ ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন।
হাজার হাজার শ্রমিক বিভন্ন শহরে রাজপথে নেমে এসেছেন। ব্রিটেনের নারীশ্রমিকদের এটি সর্ববৃহৎ ধর্মঘট। জানা গেছে, ৩০ নভেম্বর ধর্মঘটকারী শ্রমিকদের দুই-তৃতীয়াংশই ছিল নারী। কারণ, নতুন প্রস্তাবিত পেনশন-নীতির কারণে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবেন। নিম্নমজুরি শ্রমিক পেশাজীবীদের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ, শ্বেতাঙ্গ ও এশীয় শ্রমিকেরা ধর্মঘটে একসঙ্গে। শিক্ষার্থী, পেনশনভোগী ও বেসরকারি খাতের শ্রমিক এবং অকুপাই আন্দোলনের কর্মীরাও এই ধর্মঘটী শ্রমিকদের সঙ্গে এক কাতারে শামিল। ১৯৭৯ সালের পর ব্রিটেনের শিল্প খাতে এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের প্রতিবাদ। ২৯টি ট্রেড ইউনিয়নের সরকারি কর্মী ধর্মঘটের সমর্থনে এক হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা মেইল করে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস স্থগিতের খবর এবং নিজেদের ধর্মঘটে অংশগ্রহণের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। গার্ডিয়ানসহ অন্যান্য পত্রিকায় এই ধর্মঘটের প্রস্তুতি স্বরূপ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, পোস্টার বানানোর ছবি ছাপা হয়েছে কয়েক দিন ধরে। সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছে কয়েক দফায়। বিবিসি সারা দিন ধরেই বিভিন্ন এলাকার ধর্মঘটের খবর প্রচার করছে, প্রচার করছে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের প্রতিক্রিয়াও। পাল্টা শোনা যাচ্ছে, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং সাধারণ ধর্মঘটকারীদের প্রতিবাদী স্বর।
‘সেভ আওয়ার পেনশন’ এই দাবিকে ঘিরেই মূলত ধর্মঘট। তবে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও কিছু দাবি। যুক্তরাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত পেনশন সংস্কার নীতির মধ্যে আছে ২০১৪-১৫ সালের মধ্যে পেনশন স্কিমে দেওয়া টাকা ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন পাউন্ডে উন্নীত করা, অবসরকালীন বয়সকে রাষ্ট্রীয় পেনশন বয়স হিসেবে নির্ধারণ করা, মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রতিবছর পেনশন যে হারে বাড়ত, সেটা থেকে সরে আসা। ফাইনাল স্যালারি স্কিম থেকে জনগণকে অ্যাভারেজ ক্যারিয়ারে স্কিমে নিয়ে আসা। তবে এই প্রস্তাবিত পেনশন স্কিমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকারি চাকরিজীবী এবং স্থানীয় সরকারে কাজ করা কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিভিন্ন মেট্রো, যেগুলো স্থানীয় সরকারের আওতাধীন, সেগুলো এই স্কিমের আওতায় আছেন তারাও এই ধর্মঘটকে সমর্থন দিয়েছে। বলা হচ্ছে, গত ৩০ বছরের মধ্যে যোগাযোগ শ্রমিকদের এটাই সবচেয়ে বড় ধর্মঘট। শিক্ষকদের ধর্মঘটের কারণে এই দিন ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের প্রায় ৭৬ শতাংশ স্কুলই বন্ধ ছিল, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকেরা রোগী দেখেননি। ইংল্যান্ড ও ওয়েরলসের ৩২ শতাংশ স্থানীয় সরকারের কর্মীরা কাজে যাননি। হিথ্রো বিমানবন্দরে লোকের অভাবে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিবকে গিয়ে কাজ করতে হয়েছে। ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এত বড় ধর্মঘট সত্যিই বিরল।
পেনশন রক্ষা ছাড়াও ধর্মঘটের আরও কারণ রয়েছে। বর্তমানে সরকার ৩ দশমিক ২ শতাংশ অতিরিক্ত কর সরকারি কর্মচারীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। এর মানে হলো, লাখ লাখ পাউন্ড ইংল্যান্ডের অভ্যন্তরে সরকার খরচ করেনি। খরচ করেছে অন্য কোথাও, যার হিসাব সরকার জনগণকে দিচ্ছে না। বরং তাদের উল্টো বলছে বেশি কর দিতে। ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা বলছেন, তাঁরা প্রতি মাসে সরকারকে বাড়তি টাকা দেওয়ার পরিবর্তে একটি দিনই বাছাই করেছেন এই আন্দোলনের জন্য।
গত এক বছরে ইউরোপের রাজনীতি বিশ্লেষণে দেখা যায় যে গ্রিস, ফ্রান্স পর্তুগাল ও স্পেনে সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের এমন সাধারণ ধর্মঘট হয়েছে এবং কোনো দেশে এখনো তা অব্যাহত আছে। গত ২৪ নভেম্বর পাবলিক সার্ভিসে সুযোগ-সুবিধা কমানোর প্রতিবাদে ট্রেনচালক থেকে শুরু করে হাসপাতালের স্টাফ পর্যন্ত হাজার হাজার লোক পর্তুগালে দ্বিতীয় সাধারণ ধর্মঘট করে। গত বছর লন্ডনে বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে যে আন্দোলন হয়েছিল, এই ধর্মঘট সেটিরই ধারাবাহিকতা এবং স্পিরিটও একই ধরনের ছিল। দুটোরই মূল শক্তি সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। এই ধর্মঘটের ব্যানারগুলোতে লেখা ‘ওয়ার্কার্স ইউনাইটেড নেভার দ্য ডিপিটেড’ থেকেই জনগণের শক্তি বিষয়টি বোঝা যায়।
পর্তুগাল ও ব্রিটেনের এই ধর্মঘট হলো সরকারের বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী সিভিল সার্ভিসে সুবিধা কমানোর বিরুদ্ধে। গত বছরের বর্ধিত বেতনের বিরুদ্ধে, বাজেট থেকে শিক্ষা বরাদ্দ কমানো এবং কয়েকটি পেশায় সরকারের অনুদান কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লন্ডনেই গত ৯ নভেম্বর সংঘটিত হয়েছিল বিশাল ছাত্র বিক্ষোভ। বিভিন্ন দেশে চলতে থাকা অকুপাই আন্দোলন এবং বর্তমানে সিভিল সার্ভেন্টদের পেনশনকেন্দ্রিক আন্দোলন একটা নতুন দিকের ইঙ্গিত করছে। ব্যয় সংকোচন, নয়া উদারনীতিবাদের বিরুদ্ধে এসব তৎপরতা। সরকারি কর্মীদের পেনশন কমানোই এই ধর্মঘটের মূল স্ফুলিঙ্গ তৈরি করলেও এই ধর্মঘট শুধু পেনশনকেন্দ্রিকই নয়, এর পেছনে বড় বিষয় রয়েছে, তা হলো চলমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ। ওয়েলফেয়ার দেশগুলোর জন্য এটি এক বড় ধাক্কা।
এই ধর্মঘটই শেষ নয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের ধর্মঘট ও আন্দোলন চলবে ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে। এই ধর্মঘটকে ডেভিড ক্যামেরন এটিকে ধর্মঘটকারীদের একটি ‘দায়িত্বহীন’ কাজ হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও ৩০ লাখ ধর্মঘটকারীদের প্রতিবাদ এবং দাবিকে কি এত সহজেই তিনি এড়িয়ে যেতে পারবেন? আমেরিকা, ইউরোপে চলমান আন্দোলন, ধর্মঘট, প্রতিবাদ যখন ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে দেশে এবং পুঁজিবাদী ওয়েলফেয়ার রাষ্ট্রগুলো কেঁপে কেঁপে উঠছে সাধারণ মানুষের নড়াচড়ায়, প্রতিরোধের স্ফুলিঙ্গে, তখন বোঝা যায়, কিছু একটা হতে যাচ্ছে দুনিয়াজুড়ে। দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে শ্রমজীবী মানুষ ফিরে আসছে প্রতিবাদে, প্রতিরোধে। কল্যাণরাষ্ট্রগুলোর মৃত্যুযন্ত্রণা দেখা যাচ্ছে। দাপুটে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও কি মৃত্যুপথযাত্রী?
জোবাইদা নাসরীন: সহকারী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পিএইচডি গবেষক, ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য।
zobaidanasreen@gmail.com
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা মেইল করে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস স্থগিতের খবর এবং নিজেদের ধর্মঘটে অংশগ্রহণের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। গার্ডিয়ানসহ অন্যান্য পত্রিকায় এই ধর্মঘটের প্রস্তুতি স্বরূপ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, পোস্টার বানানোর ছবি ছাপা হয়েছে কয়েক দিন ধরে। সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছে কয়েক দফায়। বিবিসি সারা দিন ধরেই বিভিন্ন এলাকার ধর্মঘটের খবর প্রচার করছে, প্রচার করছে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের প্রতিক্রিয়াও। পাল্টা শোনা যাচ্ছে, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং সাধারণ ধর্মঘটকারীদের প্রতিবাদী স্বর।
‘সেভ আওয়ার পেনশন’ এই দাবিকে ঘিরেই মূলত ধর্মঘট। তবে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও কিছু দাবি। যুক্তরাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত পেনশন সংস্কার নীতির মধ্যে আছে ২০১৪-১৫ সালের মধ্যে পেনশন স্কিমে দেওয়া টাকা ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন পাউন্ডে উন্নীত করা, অবসরকালীন বয়সকে রাষ্ট্রীয় পেনশন বয়স হিসেবে নির্ধারণ করা, মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রতিবছর পেনশন যে হারে বাড়ত, সেটা থেকে সরে আসা। ফাইনাল স্যালারি স্কিম থেকে জনগণকে অ্যাভারেজ ক্যারিয়ারে স্কিমে নিয়ে আসা। তবে এই প্রস্তাবিত পেনশন স্কিমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকারি চাকরিজীবী এবং স্থানীয় সরকারে কাজ করা কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিভিন্ন মেট্রো, যেগুলো স্থানীয় সরকারের আওতাধীন, সেগুলো এই স্কিমের আওতায় আছেন তারাও এই ধর্মঘটকে সমর্থন দিয়েছে। বলা হচ্ছে, গত ৩০ বছরের মধ্যে যোগাযোগ শ্রমিকদের এটাই সবচেয়ে বড় ধর্মঘট। শিক্ষকদের ধর্মঘটের কারণে এই দিন ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের প্রায় ৭৬ শতাংশ স্কুলই বন্ধ ছিল, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকেরা রোগী দেখেননি। ইংল্যান্ড ও ওয়েরলসের ৩২ শতাংশ স্থানীয় সরকারের কর্মীরা কাজে যাননি। হিথ্রো বিমানবন্দরে লোকের অভাবে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিবকে গিয়ে কাজ করতে হয়েছে। ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এত বড় ধর্মঘট সত্যিই বিরল।
পেনশন রক্ষা ছাড়াও ধর্মঘটের আরও কারণ রয়েছে। বর্তমানে সরকার ৩ দশমিক ২ শতাংশ অতিরিক্ত কর সরকারি কর্মচারীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। এর মানে হলো, লাখ লাখ পাউন্ড ইংল্যান্ডের অভ্যন্তরে সরকার খরচ করেনি। খরচ করেছে অন্য কোথাও, যার হিসাব সরকার জনগণকে দিচ্ছে না। বরং তাদের উল্টো বলছে বেশি কর দিতে। ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা বলছেন, তাঁরা প্রতি মাসে সরকারকে বাড়তি টাকা দেওয়ার পরিবর্তে একটি দিনই বাছাই করেছেন এই আন্দোলনের জন্য।
গত এক বছরে ইউরোপের রাজনীতি বিশ্লেষণে দেখা যায় যে গ্রিস, ফ্রান্স পর্তুগাল ও স্পেনে সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের এমন সাধারণ ধর্মঘট হয়েছে এবং কোনো দেশে এখনো তা অব্যাহত আছে। গত ২৪ নভেম্বর পাবলিক সার্ভিসে সুযোগ-সুবিধা কমানোর প্রতিবাদে ট্রেনচালক থেকে শুরু করে হাসপাতালের স্টাফ পর্যন্ত হাজার হাজার লোক পর্তুগালে দ্বিতীয় সাধারণ ধর্মঘট করে। গত বছর লন্ডনে বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে যে আন্দোলন হয়েছিল, এই ধর্মঘট সেটিরই ধারাবাহিকতা এবং স্পিরিটও একই ধরনের ছিল। দুটোরই মূল শক্তি সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। এই ধর্মঘটের ব্যানারগুলোতে লেখা ‘ওয়ার্কার্স ইউনাইটেড নেভার দ্য ডিপিটেড’ থেকেই জনগণের শক্তি বিষয়টি বোঝা যায়।
পর্তুগাল ও ব্রিটেনের এই ধর্মঘট হলো সরকারের বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী সিভিল সার্ভিসে সুবিধা কমানোর বিরুদ্ধে। গত বছরের বর্ধিত বেতনের বিরুদ্ধে, বাজেট থেকে শিক্ষা বরাদ্দ কমানো এবং কয়েকটি পেশায় সরকারের অনুদান কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লন্ডনেই গত ৯ নভেম্বর সংঘটিত হয়েছিল বিশাল ছাত্র বিক্ষোভ। বিভিন্ন দেশে চলতে থাকা অকুপাই আন্দোলন এবং বর্তমানে সিভিল সার্ভেন্টদের পেনশনকেন্দ্রিক আন্দোলন একটা নতুন দিকের ইঙ্গিত করছে। ব্যয় সংকোচন, নয়া উদারনীতিবাদের বিরুদ্ধে এসব তৎপরতা। সরকারি কর্মীদের পেনশন কমানোই এই ধর্মঘটের মূল স্ফুলিঙ্গ তৈরি করলেও এই ধর্মঘট শুধু পেনশনকেন্দ্রিকই নয়, এর পেছনে বড় বিষয় রয়েছে, তা হলো চলমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ। ওয়েলফেয়ার দেশগুলোর জন্য এটি এক বড় ধাক্কা।
এই ধর্মঘটই শেষ নয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের ধর্মঘট ও আন্দোলন চলবে ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে। এই ধর্মঘটকে ডেভিড ক্যামেরন এটিকে ধর্মঘটকারীদের একটি ‘দায়িত্বহীন’ কাজ হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও ৩০ লাখ ধর্মঘটকারীদের প্রতিবাদ এবং দাবিকে কি এত সহজেই তিনি এড়িয়ে যেতে পারবেন? আমেরিকা, ইউরোপে চলমান আন্দোলন, ধর্মঘট, প্রতিবাদ যখন ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে দেশে এবং পুঁজিবাদী ওয়েলফেয়ার রাষ্ট্রগুলো কেঁপে কেঁপে উঠছে সাধারণ মানুষের নড়াচড়ায়, প্রতিরোধের স্ফুলিঙ্গে, তখন বোঝা যায়, কিছু একটা হতে যাচ্ছে দুনিয়াজুড়ে। দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে শ্রমজীবী মানুষ ফিরে আসছে প্রতিবাদে, প্রতিরোধে। কল্যাণরাষ্ট্রগুলোর মৃত্যুযন্ত্রণা দেখা যাচ্ছে। দাপুটে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও কি মৃত্যুপথযাত্রী?
জোবাইদা নাসরীন: সহকারী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পিএইচডি গবেষক, ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য।
zobaidanasreen@gmail.com
No comments