সুন্দরবনের সর্বনাশ by বিপ্লব রহমান
বাগেরহাটের পশুর নদের তীরে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে এর বিষাক্ত কালো ধোঁয়া আচ্ছন্ন করে ফেলবে সুন্দরবন এলাকার\নির্মলআকাশ।চিমনিদিয়েউগরানোছাইবিস্তীর্ণএলাকারবাতাসেভেসেঘটা\মারাত্মকদূষণ।কারখানাটির কার্বন, পারদ, সিসা, আর্সেনিকসহ নানা বর্জ্য সরাসরি দূষিত করবে নদীনালার পানিকে। ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাবে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবনের সব সৌন্দর্য।
একে একে মারা পড়বে সব গাছপালা। বিশ্ববিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বনের সব পশুপাখি, জলজ প্রাণীও শেষ হয়ে যাবে।\ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক দুই হাজার ৬৪০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে সুন্দরবনে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটবে বলে আশঙ্কা করছে পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন।
সংগঠনগুলো বলছে, সরকার পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে সুন্দরবনের মাত্র ৯ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ায় বনের গাছগাছালি, পশুপাখি, মাছসহ সব ধরনের জীব-বৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিদ্যুৎকেন্দ্রর গরম পানি, কয়লা পোড়ানো ছাই ও কালো ধোঁয়া সুন্দরবনের সব জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস করে ফেলবে।
অন্যদিকে সরকার বলছে, সব ধরনের পরিবেশগত দিক রক্ষা করেই বাগেরহাটে ওই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য ক্ষতি হওয়ার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নেতা ড. আবদুল মতিন কালের কণ্ঠকে বলেন, সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীব-বৈচিত্র্য বাংলাদেশের একটি গর্ব। কিন্তু সরকার সুন্দরবনের পরিবেশগত দিক বিবেচনা না করে সেখানে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে এর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বনের ওপর। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে সুন্দরবনের গাছপালাসহ সব ধরনের জীব-বৈচিত্র্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। ড. মতিন বলেন, 'আমরাও চাই, ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপিত হোক।
কিন্তু পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে এটি সুন্দরবনের মাত্র ৯ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বসানো হচ্ছে। আমরা চাই, আইন মেনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের অন্তত ১৫ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হোক। পাশাপাশি আমরা দাবি করছি, ইউনেস্কোঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনকে প্রাধান্য দিয়ে সরকার এই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করুক।'
সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস মুভমেন্টও সম্প্রতি এক গোলটেবিল আলোচনায় অনুরূপ দাবি জানিয়েছে।
এদিকে বাপার এক সরেজমিন সমীক্ষা প্রতিবেদনে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলা হয়, ৫০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ফলে অন্তত ৩৭ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড, ১০ হাজার টন সালফার ডাই-অক্সাইড, ১০ হাজার ২০০ টন নাইট্রোজেন অক্সাইড, ২২০ টন হাইড্রো কার্বন, ৭২০ টন কার্বন মনো-অক্সাইড, ১৭০ পাউন্ড পারদ, ২২৫ পাউন্ড আর্সেনিক, ১১৪ পাউন্ড সিসাসহ অন্যান্য বিপুল পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপুল পরিমাণ ছাই ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ বাতাস, ভূ-পৃষ্ঠ ও ভূ-গর্ভস্থ পানি দূষণ করে। এসব দিক বিবেচনায় রেখে বাগেরহাট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উপযুক্ত শোধনাগার না থাকলে তা বৃহত্তর সুন্দরবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মংলা বন্দর দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানির ক্ষেত্রেও পরিবেশগত দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। সরাসরি পশুর নদে তরল বর্জ্য ফেলা হলে রাতারাতি চিংড়ি ও শুশুকসহ সব ধরনের জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটবে। দীর্ঘমেয়াদে মারা যাবে সুন্দরবনের গাছগাছালি ও বাঘ, হরিণসহ সব ধরনের পশুপাখি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল কালাম আজাদ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র আদৌ পরিবেশগত কোনো বিপর্যয় ঘটাবে না। পরিবেশগত আইন মেনে যথাযথভাবেই ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বর্জ্য সঠিকভাবে শোধন করা হবে। এটি সুন্দরবনের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।'
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মনোয়ারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, বাগেরহাটে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয় অনুমতি চেয়েছে। কিন্তু এ জন্য এখনো তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, 'মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিস্তারিত সমীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলে সব কিছু বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।'
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ওই প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনে আদৌ কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে কি না তা নিয়ে একাধিক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বরাবরই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আশ্বস্ত করা হয়।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের জাতীয় তাপ বিদ্যুৎ করপোরেশন (এনটিপিসি) যৌথভাবে এই প্রকল্প পরিচালনা করছে। গত জুলাই মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার লুবাছড়ায়। এ জন্য অধিগ্রহণ করা হবে প্রায় এক হাজার ৮০০ একর জমি। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য যে জমি অধিগ্রহণ করা হবে, এর বেশির ভাগই ব্যক্তিমালিকাধীন চিংড়ি ঘের, কৃষিজমি ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের জমি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গরান বনভূমি সুন্দরবন। এই বনভূমি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত। ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে সুন্দরবনকে স্বীকৃতি দেয়। দুর্লভ রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানা জাতের পাখি, চিত্রা ও মায়া হরিণ, কুমির, সাপ, শুশুক, কচ্ছপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত এই বনভূমি। জরিপ অনুয়ায়ী এই বনে বাংলাদেশ অংশে প্রায় ৫০০ বাঘ ও ৩০ হাজার চিত্রা হরিণ রয়েছে।
সংগঠনগুলো বলছে, সরকার পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে সুন্দরবনের মাত্র ৯ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ায় বনের গাছগাছালি, পশুপাখি, মাছসহ সব ধরনের জীব-বৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিদ্যুৎকেন্দ্রর গরম পানি, কয়লা পোড়ানো ছাই ও কালো ধোঁয়া সুন্দরবনের সব জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস করে ফেলবে।
অন্যদিকে সরকার বলছে, সব ধরনের পরিবেশগত দিক রক্ষা করেই বাগেরহাটে ওই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য ক্ষতি হওয়ার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নেতা ড. আবদুল মতিন কালের কণ্ঠকে বলেন, সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীব-বৈচিত্র্য বাংলাদেশের একটি গর্ব। কিন্তু সরকার সুন্দরবনের পরিবেশগত দিক বিবেচনা না করে সেখানে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে এর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বনের ওপর। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে সুন্দরবনের গাছপালাসহ সব ধরনের জীব-বৈচিত্র্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। ড. মতিন বলেন, 'আমরাও চাই, ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপিত হোক।
কিন্তু পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে এটি সুন্দরবনের মাত্র ৯ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বসানো হচ্ছে। আমরা চাই, আইন মেনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের অন্তত ১৫ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হোক। পাশাপাশি আমরা দাবি করছি, ইউনেস্কোঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনকে প্রাধান্য দিয়ে সরকার এই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করুক।'
সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস মুভমেন্টও সম্প্রতি এক গোলটেবিল আলোচনায় অনুরূপ দাবি জানিয়েছে।
এদিকে বাপার এক সরেজমিন সমীক্ষা প্রতিবেদনে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলা হয়, ৫০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ফলে অন্তত ৩৭ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড, ১০ হাজার টন সালফার ডাই-অক্সাইড, ১০ হাজার ২০০ টন নাইট্রোজেন অক্সাইড, ২২০ টন হাইড্রো কার্বন, ৭২০ টন কার্বন মনো-অক্সাইড, ১৭০ পাউন্ড পারদ, ২২৫ পাউন্ড আর্সেনিক, ১১৪ পাউন্ড সিসাসহ অন্যান্য বিপুল পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপুল পরিমাণ ছাই ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ বাতাস, ভূ-পৃষ্ঠ ও ভূ-গর্ভস্থ পানি দূষণ করে। এসব দিক বিবেচনায় রেখে বাগেরহাট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উপযুক্ত শোধনাগার না থাকলে তা বৃহত্তর সুন্দরবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মংলা বন্দর দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানির ক্ষেত্রেও পরিবেশগত দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। সরাসরি পশুর নদে তরল বর্জ্য ফেলা হলে রাতারাতি চিংড়ি ও শুশুকসহ সব ধরনের জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটবে। দীর্ঘমেয়াদে মারা যাবে সুন্দরবনের গাছগাছালি ও বাঘ, হরিণসহ সব ধরনের পশুপাখি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল কালাম আজাদ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র আদৌ পরিবেশগত কোনো বিপর্যয় ঘটাবে না। পরিবেশগত আইন মেনে যথাযথভাবেই ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বর্জ্য সঠিকভাবে শোধন করা হবে। এটি সুন্দরবনের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।'
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মনোয়ারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, বাগেরহাটে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয় অনুমতি চেয়েছে। কিন্তু এ জন্য এখনো তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, 'মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিস্তারিত সমীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলে সব কিছু বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।'
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ওই প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনে আদৌ কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে কি না তা নিয়ে একাধিক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বরাবরই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আশ্বস্ত করা হয়।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের জাতীয় তাপ বিদ্যুৎ করপোরেশন (এনটিপিসি) যৌথভাবে এই প্রকল্প পরিচালনা করছে। গত জুলাই মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার লুবাছড়ায়। এ জন্য অধিগ্রহণ করা হবে প্রায় এক হাজার ৮০০ একর জমি। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য যে জমি অধিগ্রহণ করা হবে, এর বেশির ভাগই ব্যক্তিমালিকাধীন চিংড়ি ঘের, কৃষিজমি ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের জমি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গরান বনভূমি সুন্দরবন। এই বনভূমি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত। ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে সুন্দরবনকে স্বীকৃতি দেয়। দুর্লভ রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানা জাতের পাখি, চিত্রা ও মায়া হরিণ, কুমির, সাপ, শুশুক, কচ্ছপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত এই বনভূমি। জরিপ অনুয়ায়ী এই বনে বাংলাদেশ অংশে প্রায় ৫০০ বাঘ ও ৩০ হাজার চিত্রা হরিণ রয়েছে।
No comments