ঢাকায় ডিজিটাল এশিয়ার মিলনমেলা
ঢাকায় শুরু হয়েছে এশিয়া অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সম্মেলন ও প্রদর্শনী 'ই-এশিয়া ২০১১'। প্রায় ২ হাজার আইসিটি ব্যক্তিত্ব, বরেণ্য প্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তির মিলনমেলা হয়ে উঠেছে ঢাকা। সম্মেলনের পর্দা নামছে আজ। লিখেছেন হাসান জাকিরএশিয়ার বিভিন্ন দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি [আইসিটি] খাত, প্রযুক্তিগত সেবা ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরার অন্যতম বড় আয়োজন 'ই-এশিয়া ২০১১'।
২০০৬ সালে শুরু হওয়া ই-এশিয়ার পঞ্চমবারের এ অনুষ্ঠানে সর্বপ্রথম বিভিন্ন কাজ বা প্রকল্পে সম্মাননা প্রদান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন ঘিরে পুরো রাজধানী শহর নতুন করে সেজেছে। বিভিন্ন মোড়, সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও প্রতিষ্ঠানের সামনে ই-এশিয়ায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুনে রাজধানী ঢাকা যেন নতুনরূপ পেয়েছে। অনুষ্ঠানস্থল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ঘিরে তা পেয়েছে নতুন মাত্রা।
ই-এশিয়া শুরুর গল্প :ভারতের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসডিএমএসই-এশিয়ার মূল আয়োজক হলেও শুরুটা হয়েছিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া তথ্যপ্রযুক্তির এ আসরটি পরে তিনটি আয়োজন সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে মালয়েশিয়া এবং ২০০৯ সালে শ্রীলংকায়। ২০১০ সালে ফিলিপাইনে সম্মেলনটি আয়োজনের কথা থাকলেও বিশেষ কারণে হতে পারেনি। বাংলাদেশে ই-এশিয়া আয়োজনের মূল বিষয়টি আলোচনায় আসে ২০০৯ সালে শ্রীলংকায়। সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত তৎকালীন মুখ্য সচিব আবদুল করিমের নেতৃত্বে অংশ নেওয়া একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে ই-এশিয়া আয়োজনের আগ্রহ জানায়। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিএসডিএমএসের প্রতিনিধি ঢাকায় এসে ভেন্যু ও অন্যান্য সুবিধা বিবেচনা করে বাংলাদেশে ই-এশিয়া আয়োজনের ব্যাপারে সম্মতি জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফসল এই ই-এশিয়া। বিজ্ঞান ও তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি [আইসিটি] মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল [বিসিসি] এ আসরের আয়োজন করেছে।
আয়োজনে যা রয়েছে :এবারের ই-এশিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্য ও সক্ষমতা বহির্বিশ্বের প্রতিনিধিদের সামনে উপস্থাপন, দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর পথ খোঁজা এবং প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নে এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করার বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয়ে ৩০টি সেমিনার ও ৪টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের ১৫০টি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রদর্শনীতে মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, জাপান, নেদারল্যান্ডস ও থাইল্যান্ডের পাঁচটি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দেশের প্রকল্প ও সেবা প্রদর্শনের জন্য রয়েছে আলাদা স্টল। অংশগ্রহণকারীরা তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সলিউশন, ই-গভর্নমেন্ট সলিউশন, আইটি ট্রেনিংসহ তাদের পণ্য ও সেবা তুলে ধরছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন_ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ওয়ান স্টপ সার্ভিস, ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র, আউটসোর্সিং ও সম্ভাবনা, অনলাইনে কেনাকাটা, টেলিমেডিসিন, ই-পুর্জিসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা তুলে ধরা হয়েছে।
পাঁচটি লক্ষ্যে ই-এশিয়া :ই-এশিয়ার এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়গুলো হলো সক্ষমতার উন্নয়ন [বিল্ডিং ক্যাপাসিটি], জনমুখী যোগাযোগ [কানেক্টিং পিপল], নাগরিক সেবা [সার্ভিং সিটিজেন্স] এবং অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি [ড্রাইভিং ইকোনমি] ও বাধা অপসারণ [ব্রেকিং বেরিয়ার্স]। থিমের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এ বছরই প্রথম বিভিন্ন সেবা ও প্রকল্পের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেলিব্রেটি হলে বিজয়ী ২০টি সেবা ও প্রকল্পকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর আগে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন জমা নেওয়া হয়। বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া ও ইউরোপীয় অঞ্চলের সাতটি দেশের প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কারের জন্য ২০৭টি প্রাথমিক আবেদন জমা পড়ে। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চলমান প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠান বাছাই এবং মনোনয়ন পর্ব সমন্বয় করে বিশেষজ্ঞ আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড। ২১ সদস্যের জুরি বোর্ডে ছিলেন বাংলাদেশ, ভারত, উগান্ডা, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সামাজিক গবেষক ও আইনপ্রণেতা বিশেষজ্ঞরা। টেলিসেন্টার ডটঅর্গ ফাউন্ডেশনের ড. বশির হামাদ সাড্রাক, কানাডার মাইকেল রবার্টস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের [আইবিএ] অধ্যাপক ফারহাত আনোয়ার প্রমুখ জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সর্বশেষ ৩৭টি প্রকল্প ও সেবা চূড়ান্ত মনোনয়ন পায়। এর মধ্য ২০ প্রতিষ্ঠানকে বিজয়ী ঘোষণা ও পুরস্কৃত করা হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যক্তিত্বের পদচারণায় মুখর ঢাকা :নামে ই-এশিয়া কিংবা ডিজিটাল এশিয়া সম্মেলন ও প্রদর্শনী হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও প্রতিনিধিদের পদচারণায় আন্তর্জাতিক ডিজিটাল মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে ই-এশিয়া সম্মেলন। সম্মেলন সাফল্যমণ্ডিত করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইনটেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জন ই ডেভিস এবং ফ্রিল্যান্সিং সাইট ওডেস্কের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান ম্যাট কুপার। বিশেষ দুটি সেমিনারে অংশ নিয়েছেন তারা। এ ছাড়া এসেছেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার হেলথ সিস্টেম সাপোর্ট বিভাগের প্রধান তরুণ সিম, ইউনিভার্সিটি অব টারতু এস্তোনিয়ার অধ্যাপক জ্যাক হ্যালব্রোক, মালয়েশিয়ার ওপেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য তানশ্রী আনুয়ার আলি, এনইসি করপোরেশনের প্রধান ব্যবস্থাপক সিনহা কুকিতা, কানাডার 'দি জার্নাল অব কমিউনিটি ইনফরমেটিক্স রিসার্চ ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান সম্পাদক মাইকেল গাস্টেইন, ভারতের ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ভিএনআর পিল্লাই, টিচিং কোয়ালিটি ইম্প্রুভমেন্ট সেকেন্ডারি শিক্ষা প্রকল্পের পরামর্শক ড. ডেবোরাহ ওয়েবান, কোরিয়ার শিক্ষা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরিচালক সাংহুয়ান জাং, চীনের রগান হ্যারিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী ড. রগার ডবি্লউ হ্যারিস, অ্যাপনিক টেকনিক্যাল ট্রেনিং অফিসার নুরুল ইসলাম রোমান, ইউনিভার্সিটি সিয়ানস মালয়েশিয়ার প্রফেসর রোজহান এম ইদরুস, যুক্তরাজ্যের টিম সিমরুর ট্রেনিং প্রজেক্ট ম্যানেজার সেসিল গোল্ডস্টেইন, সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পল্লব সাহা, ইউএনডিপির প্রতিনিধি সেরিফ টোকালি, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্চু স্টিমের সিনিয়র উপদেষ্টা এড ফ্রাংকলিন, ইউনেস্কো প্রতিনিধি গং চল চ্যাংসহ শতাধিক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। সেমিনারে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও আলোচনা করছেন।
দর্শনার্থীদের জন্য : সম্মেলন চলাকালে দর্শনার্থীরা যাতে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে এ জন্য অনুষ্ঠান চলাকালে পুরো প্রাঙ্গণ দ্রুতগতির ওয়াইফাই ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে। প্রবেশ টিকিট, আইডি কার্ড বা ভিজিটিং কার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে যারাই সম্মেলন প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে পারবেন তারা রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই সেমিনারে অংশ নিতে পারবেন। এ ছাড়া আগতদের নিরাপত্তা, খাবার সুবিধা ও প্রয়োজনীয় আরও সেবার দিকে খেয়াল রেখেছেন আয়োজকরা।
ইন্টারনেটে সরাসরি প্রচার : বিশ্বব্যাপী ই-এশিয়া ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন আয়োজকরা। তারা জানান, িি.িব-ধংরধ.ড়ৎম ওয়েবসাইট ছাড়াও িি.িপড়সলধমধঃ.পড়স, িি.িফৎরশ.ঃা ঠিকানার ওয়েবসাইট থেকে সম্মেলনের সব আয়োজন সরাসরি প্রচার করা হচ্ছে। ফলে সরাসরি উপস্থিত না হয়েও অনেকেই সম্মেলনের আয়োজন উপভোগ করতে পারছেন। সেমিনার চলাকালে ওয়েবে প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করা যাচ্ছে।
তথ্য সহায়তায় :তুহিন মাহমুদ
ই-এশিয়া শুরুর গল্প :ভারতের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসডিএমএসই-এশিয়ার মূল আয়োজক হলেও শুরুটা হয়েছিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া তথ্যপ্রযুক্তির এ আসরটি পরে তিনটি আয়োজন সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে মালয়েশিয়া এবং ২০০৯ সালে শ্রীলংকায়। ২০১০ সালে ফিলিপাইনে সম্মেলনটি আয়োজনের কথা থাকলেও বিশেষ কারণে হতে পারেনি। বাংলাদেশে ই-এশিয়া আয়োজনের মূল বিষয়টি আলোচনায় আসে ২০০৯ সালে শ্রীলংকায়। সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত তৎকালীন মুখ্য সচিব আবদুল করিমের নেতৃত্বে অংশ নেওয়া একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে ই-এশিয়া আয়োজনের আগ্রহ জানায়। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিএসডিএমএসের প্রতিনিধি ঢাকায় এসে ভেন্যু ও অন্যান্য সুবিধা বিবেচনা করে বাংলাদেশে ই-এশিয়া আয়োজনের ব্যাপারে সম্মতি জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফসল এই ই-এশিয়া। বিজ্ঞান ও তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি [আইসিটি] মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল [বিসিসি] এ আসরের আয়োজন করেছে।
আয়োজনে যা রয়েছে :এবারের ই-এশিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্য ও সক্ষমতা বহির্বিশ্বের প্রতিনিধিদের সামনে উপস্থাপন, দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর পথ খোঁজা এবং প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নে এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করার বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয়ে ৩০টি সেমিনার ও ৪টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের ১৫০টি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রদর্শনীতে মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, জাপান, নেদারল্যান্ডস ও থাইল্যান্ডের পাঁচটি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দেশের প্রকল্প ও সেবা প্রদর্শনের জন্য রয়েছে আলাদা স্টল। অংশগ্রহণকারীরা তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সলিউশন, ই-গভর্নমেন্ট সলিউশন, আইটি ট্রেনিংসহ তাদের পণ্য ও সেবা তুলে ধরছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন_ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ওয়ান স্টপ সার্ভিস, ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র, আউটসোর্সিং ও সম্ভাবনা, অনলাইনে কেনাকাটা, টেলিমেডিসিন, ই-পুর্জিসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা তুলে ধরা হয়েছে।
পাঁচটি লক্ষ্যে ই-এশিয়া :ই-এশিয়ার এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়গুলো হলো সক্ষমতার উন্নয়ন [বিল্ডিং ক্যাপাসিটি], জনমুখী যোগাযোগ [কানেক্টিং পিপল], নাগরিক সেবা [সার্ভিং সিটিজেন্স] এবং অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি [ড্রাইভিং ইকোনমি] ও বাধা অপসারণ [ব্রেকিং বেরিয়ার্স]। থিমের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এ বছরই প্রথম বিভিন্ন সেবা ও প্রকল্পের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেলিব্রেটি হলে বিজয়ী ২০টি সেবা ও প্রকল্পকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর আগে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন জমা নেওয়া হয়। বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া ও ইউরোপীয় অঞ্চলের সাতটি দেশের প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কারের জন্য ২০৭টি প্রাথমিক আবেদন জমা পড়ে। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চলমান প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠান বাছাই এবং মনোনয়ন পর্ব সমন্বয় করে বিশেষজ্ঞ আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড। ২১ সদস্যের জুরি বোর্ডে ছিলেন বাংলাদেশ, ভারত, উগান্ডা, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সামাজিক গবেষক ও আইনপ্রণেতা বিশেষজ্ঞরা। টেলিসেন্টার ডটঅর্গ ফাউন্ডেশনের ড. বশির হামাদ সাড্রাক, কানাডার মাইকেল রবার্টস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের [আইবিএ] অধ্যাপক ফারহাত আনোয়ার প্রমুখ জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সর্বশেষ ৩৭টি প্রকল্প ও সেবা চূড়ান্ত মনোনয়ন পায়। এর মধ্য ২০ প্রতিষ্ঠানকে বিজয়ী ঘোষণা ও পুরস্কৃত করা হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যক্তিত্বের পদচারণায় মুখর ঢাকা :নামে ই-এশিয়া কিংবা ডিজিটাল এশিয়া সম্মেলন ও প্রদর্শনী হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও প্রতিনিধিদের পদচারণায় আন্তর্জাতিক ডিজিটাল মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে ই-এশিয়া সম্মেলন। সম্মেলন সাফল্যমণ্ডিত করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইনটেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জন ই ডেভিস এবং ফ্রিল্যান্সিং সাইট ওডেস্কের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান ম্যাট কুপার। বিশেষ দুটি সেমিনারে অংশ নিয়েছেন তারা। এ ছাড়া এসেছেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার হেলথ সিস্টেম সাপোর্ট বিভাগের প্রধান তরুণ সিম, ইউনিভার্সিটি অব টারতু এস্তোনিয়ার অধ্যাপক জ্যাক হ্যালব্রোক, মালয়েশিয়ার ওপেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য তানশ্রী আনুয়ার আলি, এনইসি করপোরেশনের প্রধান ব্যবস্থাপক সিনহা কুকিতা, কানাডার 'দি জার্নাল অব কমিউনিটি ইনফরমেটিক্স রিসার্চ ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান সম্পাদক মাইকেল গাস্টেইন, ভারতের ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ভিএনআর পিল্লাই, টিচিং কোয়ালিটি ইম্প্রুভমেন্ট সেকেন্ডারি শিক্ষা প্রকল্পের পরামর্শক ড. ডেবোরাহ ওয়েবান, কোরিয়ার শিক্ষা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরিচালক সাংহুয়ান জাং, চীনের রগান হ্যারিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী ড. রগার ডবি্লউ হ্যারিস, অ্যাপনিক টেকনিক্যাল ট্রেনিং অফিসার নুরুল ইসলাম রোমান, ইউনিভার্সিটি সিয়ানস মালয়েশিয়ার প্রফেসর রোজহান এম ইদরুস, যুক্তরাজ্যের টিম সিমরুর ট্রেনিং প্রজেক্ট ম্যানেজার সেসিল গোল্ডস্টেইন, সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পল্লব সাহা, ইউএনডিপির প্রতিনিধি সেরিফ টোকালি, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্চু স্টিমের সিনিয়র উপদেষ্টা এড ফ্রাংকলিন, ইউনেস্কো প্রতিনিধি গং চল চ্যাংসহ শতাধিক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। সেমিনারে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও আলোচনা করছেন।
দর্শনার্থীদের জন্য : সম্মেলন চলাকালে দর্শনার্থীরা যাতে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে এ জন্য অনুষ্ঠান চলাকালে পুরো প্রাঙ্গণ দ্রুতগতির ওয়াইফাই ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে। প্রবেশ টিকিট, আইডি কার্ড বা ভিজিটিং কার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে যারাই সম্মেলন প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে পারবেন তারা রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই সেমিনারে অংশ নিতে পারবেন। এ ছাড়া আগতদের নিরাপত্তা, খাবার সুবিধা ও প্রয়োজনীয় আরও সেবার দিকে খেয়াল রেখেছেন আয়োজকরা।
ইন্টারনেটে সরাসরি প্রচার : বিশ্বব্যাপী ই-এশিয়া ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন আয়োজকরা। তারা জানান, িি.িব-ধংরধ.ড়ৎম ওয়েবসাইট ছাড়াও িি.িপড়সলধমধঃ.পড়স, িি.িফৎরশ.ঃা ঠিকানার ওয়েবসাইট থেকে সম্মেলনের সব আয়োজন সরাসরি প্রচার করা হচ্ছে। ফলে সরাসরি উপস্থিত না হয়েও অনেকেই সম্মেলনের আয়োজন উপভোগ করতে পারছেন। সেমিনার চলাকালে ওয়েবে প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করা যাচ্ছে।
তথ্য সহায়তায় :তুহিন মাহমুদ
No comments