'মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতাকে স্বাগত'

মিয়ানমারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতাকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির এই সফর দীর্ঘকাল একঘরে থাকা দেশটিকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেবে বলে সু চি সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মিয়ানমার সফররত হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে এক বৈঠকে গতকাল শুক্রবার সু চি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাতে সু চির ইয়াঙ্গুনের বাড়িতে নৈশভোজের পর গতকাল সকালে হিলারি ও সু চি আবার বৈঠকে মিলিত


হন। বৈঠকটি হয়েছে সু চির বাড়িতে। এ বাড়িতে সু চি প্রায় ২০ বছর গৃহবন্দি ছিলেন। গত ৫০ বছরে এই প্রথম কোনো জ্যেষ্ঠ মার্কিন কূটনীতিক মিয়ানমার সফর করলেন। ১৯৫৫ সালে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফস্টার ডুলেস মিয়ানমার (বার্মা) সফর করেছিলেন।
বৈঠকে সু চি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত হওয়ায় আমরা খুশি। আমাদের আশা, যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা মিয়ানমারের গণতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সু চি আরও বলেন, হিলারি ক্লিনটনের এ সফর উভয় দেশের জন্য ঐতিহাসিক। ইয়াঙ্গুনে লেকের পাশের বাড়িতে হিলারির সঙ্গে দেড় ঘণ্টাব্যাপী আনুষ্ঠানিক ওই বৈঠক করেন সু চি।
গতকালের বৈঠকের পর হিলারি ও সু চি বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মেলান। এরপর তারা বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। সু চি বলেন, আমরা একসঙ্গে সামনে এগিয়ে গেলে গণতন্ত্রের পথ থেকে ফিরে আসতে হবে না। মিয়ানমার এখনও গণতন্ত্রের পথে নেই। আমাদের আশা, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতায় এ পথে শিগগিরই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। সু চি মিয়ানমারের সেনাসমর্থিত সরকারকে আইনের শাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরও কাজ করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া আমাদের নিশ্চিত হতে হবে_ আর কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। সু চি আরও বলেন, তিনি দেশের কল্যাণে সরকার, বিরোধী দল এবং যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কাজ করবেন। সু চির সঙ্গে বৈঠকের পর মিয়ানমারের সংখ্যালঘু আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা হিলারির। এএফপি, আল জাজিরা।
সু চি বলেন, এর মধ্য দিয়েই বোঝা যায় আমাদের প্রতি পুরো বিশ্বের সমর্থন রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ চীনের সঙ্গে আমাদের ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে আমি মনে করি। এদিকে মিয়ানমারের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক স্থাপনে নেওয়া উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হং লি গত বুধবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, আমরা মনে করি মিয়ানমার ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে উভয় দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে।
সাবেক সামরিক জান্তার দমন-পীড়নের কারণে মিয়ানমার দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একঘরে হয়ে থাকলেও চীনের সঙ্গে দেশটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আর মিয়ানমারে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে চীন অন্যতম।

No comments

Powered by Blogger.