পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ মানুষকে তাঁর হুকুম অমান্য করার স্বাধীনতা দিয়েছেন
১৪৬. ছাআস্রিফু আ'ন আয়া-তিইয়াল্লাযীনা ইয়াতাকাব্বারূনা ফিল আরদ্বি বিগাইরিল হাক্কি; ওয়া ইয়ারাও কুল্লা আয়াতিন লা-ইউ'মিনূ বিহা; ওয়া ইয়ারাও ছাবীলার্ রুশদি লা-ইয়াত্তাখিযূহু ছাবীলা; ওয়া ইয়ারাও ছাবীলাল গায়্যি ইয়াত্তাখিযূহু ছাবীলা; যা-লিকা বিআন্নাহুম কায্যাবূ বিআয়া-তিনা ওয়া কা-নূ আ'নহা গাফিলীন।১৪৭. ওয়াল্লাযীনা কায্যাবূ বিআয়া-তিনা ওয়া লিক্বা-য়িল আ-খিরাতি, হাবিত্বাত্ আ'মা-লুহুম; হাল ইউজ্যাওনা ইল্লা মা কা-নূ ইয়া'মালূন।
১৪৮. ওয়াত্তাখাযা ক্বাওমু মূছা মিম্ বা'দিহি মিন হুলিয়্যিহিম ই'জলান জাছাদাল্লাহূ খুওয়া-র্; আলাম ইয়ারাও আন্নাহূ লা-ইউকালি্লমুহুম ওয়া লা ইয়াহ্দীহিম ছাবীলা; ইত্তাখাযূহু ওয়া কা-নূ যা-লিমীন। [সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১৪৬-১৪৮]
অনুবাদ : ১৪৬. পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার করে তাদের আমি আমার আয়াতগুলো থেকে বিমুখ করে রাখব। তারা যদি সব রকমের আয়াত দেখতে পায়, তবু ইমান আনবে না। তারা যদি হেদায়েতের সরল পথ দেখতে পায়, তবে তাকে নিজের পথ হিসেবে গ্রহণ করবে না। আর যদি গোমরাহির পথ দেখতে পায়, তবে সেটাকেই নিজের পথ বানাবে। এমনটা ঘটবে এ কারণে যে তারা আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং সেগুলো থেকে উদাসীন রয়েছে।
১৪৭. যারা আমার আয়াতগুলোকে এবং আখিরাতে জবাবদিহি করার ব্যাপারটাকে অস্বীকার করেছে, তাদের সব কাজকর্ম নিষ্ফল হয়ে গেছে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের বদলা হিসেবেই তো এমন ফল পাবে।
১৪৮. মুসার সম্প্রদায়ের লোকরা তার অনুপস্থিতিতে (যখন তিনি তুর পাহাড়ে চলে গিয়েছিলেন) তাদের স্বর্ণালংকার দিয়ে একটি বাছুরের মূর্তি বানাল। এটা তো ছিল একটা প্রাণহীন মূর্তি, যা থেকে গরুর ডাকের মতো শব্দ বের হতো। তারা তো এটাও দেখল না যে এটা না পারে তাদের সঙ্গে কথা বলতে, না পারে তাদের কোনো পথ দেখাতে। অথচ তারা সেটাকে নিজেদের মাবুদ বানিয়ে ফেলল। আসলেই এরা ছিল জালিম।
ব্যাখ্যা : ১৪৬ ও ১৪৭ নম্বর আয়াতে অহংকারী ও ফাসেকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে এবং তারা নিজেদের বিশ্বাস ও ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে নিজেদের জীবনের যে পরিণতি ডেকে আনবে, সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। প্রথমোক্ত আয়াতটিতে বলা হয়েছে, 'পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার প্রকাশ করে, তাদের আমি আমার আয়াতগুলোর শিক্ষা থেকে বিমুখ করে রাখব।' এই বক্তব্যের দ্বারা কারো মনে এমন খটকা জাগতে পারত যে আল্লাহ তায়ালা নিজেই যখন তাদের নিজের নিদর্শনগুলো থেকে ফিরিয়ে রেখেছেন। তখন তাদের কী অপরাধ? এই খটকার নিরসন করা হয়েছে পরবর্তী বাক্যটি দিয়ে। বলা হয়েছে, কেউ যখন নিজ ইচ্ছায় অহংকার ও অবাধ্যতার পথ বেছে নেয় তখন আমি জগতের স্বাভাবিক নিয়ম এবং মানুষের স্বাধীনতার নীতি অক্ষুণ্ন্ন রাখার জন্যই আমি সেই পথই তার জন্য স্থির করে দিই, যা সে নিজের ইচ্ছায় বা নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রহণ করে নিয়েছে। আল্লাহ বলছেন, সে যেহেতু আমার নিদর্শনগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতেই চাইছে, তাই আমি তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে বাধ্য করি না। আমি তো মানুষকে তার ইচ্ছার স্বাধীনতা দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছি। এই স্বাধীনতার জন্যই তো মানুষের পাপ-পুণ্যের হিসাব এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার বাধ্যবাধ্যকতা। মানুষের জন্য আল্লাহ যে শাস্তি ও পুরস্কার রেখেছেন তা সে নিজের স্বাধীন ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কর্মের জন্যই ভোগ করবে। ১৪৮ নম্বর আয়াতে যে বাছুরের মূর্তি বানানোর কাহিনীটি বলা হয়েছে, সেটি মুসা (আ.) ৪০ দিনের জন্য ইতিকাফে চলে যাওয়ার সুযোগে তারা বানিয়েছিল। ছামেরি নামক এক স্বর্ণকার এ কাজের উদ্যোগী ছিল। মুসা (আ.)-এর অনুপস্থিতিতে তারা এ বাছুর মূর্তির পূজা শুরু করে দিয়েছিল। এ বিষয়টি সুরা বাকারায় এবং সুরা তোয়াহায় আরো বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১৪৬. পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার করে তাদের আমি আমার আয়াতগুলো থেকে বিমুখ করে রাখব। তারা যদি সব রকমের আয়াত দেখতে পায়, তবু ইমান আনবে না। তারা যদি হেদায়েতের সরল পথ দেখতে পায়, তবে তাকে নিজের পথ হিসেবে গ্রহণ করবে না। আর যদি গোমরাহির পথ দেখতে পায়, তবে সেটাকেই নিজের পথ বানাবে। এমনটা ঘটবে এ কারণে যে তারা আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং সেগুলো থেকে উদাসীন রয়েছে।
১৪৭. যারা আমার আয়াতগুলোকে এবং আখিরাতে জবাবদিহি করার ব্যাপারটাকে অস্বীকার করেছে, তাদের সব কাজকর্ম নিষ্ফল হয়ে গেছে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের বদলা হিসেবেই তো এমন ফল পাবে।
১৪৮. মুসার সম্প্রদায়ের লোকরা তার অনুপস্থিতিতে (যখন তিনি তুর পাহাড়ে চলে গিয়েছিলেন) তাদের স্বর্ণালংকার দিয়ে একটি বাছুরের মূর্তি বানাল। এটা তো ছিল একটা প্রাণহীন মূর্তি, যা থেকে গরুর ডাকের মতো শব্দ বের হতো। তারা তো এটাও দেখল না যে এটা না পারে তাদের সঙ্গে কথা বলতে, না পারে তাদের কোনো পথ দেখাতে। অথচ তারা সেটাকে নিজেদের মাবুদ বানিয়ে ফেলল। আসলেই এরা ছিল জালিম।
ব্যাখ্যা : ১৪৬ ও ১৪৭ নম্বর আয়াতে অহংকারী ও ফাসেকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে এবং তারা নিজেদের বিশ্বাস ও ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে নিজেদের জীবনের যে পরিণতি ডেকে আনবে, সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। প্রথমোক্ত আয়াতটিতে বলা হয়েছে, 'পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার প্রকাশ করে, তাদের আমি আমার আয়াতগুলোর শিক্ষা থেকে বিমুখ করে রাখব।' এই বক্তব্যের দ্বারা কারো মনে এমন খটকা জাগতে পারত যে আল্লাহ তায়ালা নিজেই যখন তাদের নিজের নিদর্শনগুলো থেকে ফিরিয়ে রেখেছেন। তখন তাদের কী অপরাধ? এই খটকার নিরসন করা হয়েছে পরবর্তী বাক্যটি দিয়ে। বলা হয়েছে, কেউ যখন নিজ ইচ্ছায় অহংকার ও অবাধ্যতার পথ বেছে নেয় তখন আমি জগতের স্বাভাবিক নিয়ম এবং মানুষের স্বাধীনতার নীতি অক্ষুণ্ন্ন রাখার জন্যই আমি সেই পথই তার জন্য স্থির করে দিই, যা সে নিজের ইচ্ছায় বা নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রহণ করে নিয়েছে। আল্লাহ বলছেন, সে যেহেতু আমার নিদর্শনগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতেই চাইছে, তাই আমি তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে বাধ্য করি না। আমি তো মানুষকে তার ইচ্ছার স্বাধীনতা দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছি। এই স্বাধীনতার জন্যই তো মানুষের পাপ-পুণ্যের হিসাব এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার বাধ্যবাধ্যকতা। মানুষের জন্য আল্লাহ যে শাস্তি ও পুরস্কার রেখেছেন তা সে নিজের স্বাধীন ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কর্মের জন্যই ভোগ করবে। ১৪৮ নম্বর আয়াতে যে বাছুরের মূর্তি বানানোর কাহিনীটি বলা হয়েছে, সেটি মুসা (আ.) ৪০ দিনের জন্য ইতিকাফে চলে যাওয়ার সুযোগে তারা বানিয়েছিল। ছামেরি নামক এক স্বর্ণকার এ কাজের উদ্যোগী ছিল। মুসা (আ.)-এর অনুপস্থিতিতে তারা এ বাছুর মূর্তির পূজা শুরু করে দিয়েছিল। এ বিষয়টি সুরা বাকারায় এবং সুরা তোয়াহায় আরো বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments