মন্দা কাটছে স্থানীয় বিনিয়োগে-অক্টোবরে সাত হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধন-টেক্সটাইল খাতে বিনিয়োগ আসছে সবচেয়ে বেশি by আবুল কাশেম

স্থানীয় বিনিয়োগ নিবন্ধনে মন্দা কাটতে শুরু করেছে। অক্টোবর মাসে ১৭২ শিল্প ইউনিটে সাত হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধন করেছে বিনিয়োগ বোর্ড। টাকার অঙ্কে অক্টোবর মাসে বিনিয়োগ নিবন্ধনের পরিমাণ আগের দুই মাসের সমষ্টির দ্বিগুণ। আর একক খাত হিসেবে টেঙ্টাইল খাতে বিনিয়োগ আসছে সবচেয়ে বেশি।জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে ১২৭টি ইউনিটে চার হাজার ৯১২ কোটি টাকা, আগস্ট মাসে ১৩১টি


ইউনিটে দুই হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ও সেপ্টেম্বর মাসে ১০৬টি ইউনিটে মাত্র এক হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধন করে বিনিয়োগ বোর্ড। সব মিলিয়ে অর্থবছরের চার মাসে মোট ৫৩৬ ইউনিটে ১৬ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে টেঙ্টাইল খাতে ২১২টি ইউনিটে দুই হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে।
বিনিয়োগ বোর্ডের খাতওয়ারি বিনিয়োগ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে কৃষিভিত্তিক শিল্পে মোট ৫২টি ইউনিটে দুই হাজার ৪০৪ কোটি টাকা, ফুড ও এলাইড শিল্পে ২৭টি ইউনিটে ৩১৩ কোটি টাকা, প্রিন্টিং ও পাবলিশিং খাতে ১১ ইউনিটে ২৩৭ কোটি টাকা, চামড়া শিল্পে সাত ইউনিটে ২৯ কোটি টাকা, রাসায়নিক শিল্পে ৯৬টি ইউনিটে এক হাজার ৪০২ কোটি টাকা, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে ৯৭টি ইউনিটে দুই হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা, সেবা খাতে ৩০টি ইউনিটে তিন হাজার ৮০৯ কোটি টাকা ও অন্যান্য শিল্পে চারটি ইউনিটে দুই হাজার ৬৮৪ কোটি টাকার প্রস্তাব নিবন্ধন হয়েছে। তবে অর্থবছরের চার মাসে গ্লাস ও সিরামিক শিল্পে কোনো প্রস্তাব পায়নি বিনিয়োগ বোর্ড।
আর চলতি অর্থবছরের মধ্যে অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধন হয়েছে। এ মাসে কৃষিভিত্তিক শিল্পের ১৯টি ইউনিটে ৪৯১ কোটি টাকা, ফুড ও এলাইড শিল্পের পাঁচটি ইউনিটে ৬৯ কোটি টাকা, টেঙ্টাইল শিল্পের ৭২ ইউনিটে ৮২৬ কোটি টাকা, প্রিন্টিং ও পাবলিশিং শিল্পের এক ইউনিটে ৪৬ কোটি টাকা, রাসায়নিক শিল্পের ২৮টি ইউনিটে ৩৮৩ কোটি টাকা, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে ৩০টি ইউনিটে এক হাজার ৩৮ কোটি টাকা, সেবা খাতের ১৩ ইউনিটে দুই হাজার ২৮২ কোটি টাকা ও অন্যান্য শিল্পের তিনটি ইউনিটে ২৫৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে।
বিনিয়োগ বোর্ডের স্থানীয় বিনিয়োগ বিভাগের পরিচালক তৌহিদুর রহমান জানান, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের অংশীদারত্ব বাড়ছে। ফলে এই অতিরিক্ত চাহিদা বিবেচনায় নিয়েই এগোচ্ছেন টেঙ্টাইল শিল্পের বিনিয়োগকারীরা। এ ছাড়া এসব খাতে বিনিয়োগে সরকারের তরফ থেকেও নানা ধরনের প্রণোদনা রয়েছে। উদ্যোক্তারা সে সুবিধাও নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ টেঙ্টাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামীন বলেন, অনেকেই টেঙ্টাইল খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন। এ জন্য তাঁরা বিনিয়োগের নিবন্ধন নিচ্ছেন। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় প্রকৃত বিনিয়োগে যেতে পারছেন না।

No comments

Powered by Blogger.