নীতিহীন শিক্ষা :আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা-শিক্ষাঙ্গন by শম্পা ইফতেখার
ফার্মগেট এলাকায় এলেই মনে হয় হাতের নাগালে মেডিকেল, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দুয়ার মেলে বসে আছে। যথারীতি সেই খোলা দ্বারে স্বপ্নমাখা চোখ নিয়ে পা রাখে বিত্তশালী বা মধ্যবিত্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী নবীন শিক্ষার্থীরা। সেই দুয়ারের অন্তরালে অর্থপিপাসু ব্যবসায়ী চোখ_ যারা জানে একটা প্রশ্নপত্র ফাঁসের বদৌলতে কীভাবে বদলে যাবে তাদের জীবনধারা।
তাই বোধকরি কোচিং ব্যবসায়ী শিক্ষাবিদের পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্ন ফাঁস নীতিবিবর্জিত কোনো অন্যায় মনে করেন না। শুধু ভর্তির প্রশ্নপত্র নয়, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কীভাবে যেন পেয়ে যান তারা। নিশ্চয়ই আলাদিনের প্রদীপের ভূত নেই তাদের হাতে, কিন্তু রয়েছে বিশাল এক চক্র, যেখানে ব্যবসায়ীর সঙ্গে হাতে হাত রেখে চলছে নীতিহীন কিছু শিক্ষক। কেন এই নীতিহীনতা?
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, শিক্ষা মানুষকে জানা থেকে অজানায় নিয়ে যায়; তার সুপ্ত বৃত্তির বিকাশ ঘটায়_ একজন আদর্শ ও পূর্ণাঙ্গ মানুষ পাই এই শিক্ষা তথা সুশিক্ষা দ্বারা। আজ মনে হয় সুশিক্ষার কদর নেই। জ্ঞানী শিক্ষক সবাই_ যিনি যে বিষয়টি পড়ান, সে বিষয়ে তিনি যথেষ্ট জানেন_ এই বিশ্বাস আমার দৃঢ়। কিন্তু নৈতিকতা বোধ, শিক্ষক হিসেবে আমাদের যে সামাজিক দায়বদ্ধতা তা পালনে বা মানতে পিছপা আজ আধুনিক শিক্ষকরা। এখানে একজন কোচিং ব্যবসায়ী, পরিমল বা মাদ্রাসা শিক্ষক সমগ্র শিক্ষক জাতির পরিমাপক নয় বা হতেও পারে না। তবে সুস্পষ্টভাবে সুশিক্ষার ঘাটতি রয়েছে।
অনেক দুঃখজনক হলে সত্য, স্বনামখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি এবং শিক্ষকতায় মূল মানদণ্ড হলো সর্বোচ্চ ভালো ফল। তাই ভর্তির শুরুতে কোচিং নামক খামারে প্রস্তুতি নেওয়া; তারপর প্রয়োজনবোধে প্রশ্নপত্র ক্রয় নগদ অর্থের বিনিময়ে। তারপর যদি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে_ শুরু হয় অন্য এক পথচলা। আকাঙ্ক্ষিত ফলপ্রত্যাশী এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষাজীবনের শুরুতেই প্রতিটি শিক্ষকের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দকে মাথায় রেখে চলতে হয়। কারণ নম্বর দেওয়ার সেই ঐশ্বরিক ক্ষমতা শিক্ষকের। তাই বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় যারা শিক্ষকতা করার স্বপ্ন দেখেন, তারা ছাত্রাবস্থায় কিছুটা হলেও নীতিহীনভাবে প্রশ্রয় দেন তার শিক্ষাগুরুকে_ যিনি নিজেও হয়তো একই পন্থায় শিক্ষক হয়েছেন। নীতিহীনতার শুরু এখানেই।
মানসম্মত শিক্ষাদান নিয়ে যথেষ্ট তর্ক-বিতর্ক হয়। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর যে বিশাল সংখ্যা দেখি, তাদের সবাই কি মানসম্মত শিক্ষা পায়? তাই যদি হতো শিক্ষামন্ত্রী কোচিং সেন্টার বন্ধের উদ্যোগ নিতেন না। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গবেষণায় ফলাফল অনুসারে ২৮ ভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের পড়ানোর মান ভালো নয়। কেমন শিক্ষার্থী পাচ্ছি আমরা? শিক্ষা প্রক্রিয়ার একপ্রান্তে শিক্ষক, অন্যপ্রান্তে শিক্ষার্থী। আমার ছয় বছরের শিক্ষক জীবনে যাদের শ্রেণীকক্ষে শিক্ষা দিয়েছি_ তারা সবাই পরীক্ষা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী_ যারা বুঝে কীভাবে পাস করা যায়, কিন্তু জ্ঞানের গভীরতা বা জানার ইচ্ছা শূন্যের কোঠায়। দু'একজন ব্যতিক্রম থাকেই, তবেই তাদের লক্ষ্য পাস করা চাই_ গৎবাঁধা পড়া বা কিছু ক্ষেত্রে করুণার বদৌলতে। তাই শিক্ষার্থীদের জানা থেকে অজানায় নিতে পারি না। আর মানবীয় গুণের বিকাশ_ তা তিন মাসের সেমিস্টার, চার-পাঁচটা কোর্সের ক্লাস টেস্ট, মিডটার্ম, অ্যাসাইনমেন্ট ফাইনাল_ এসব গোলকচক্রে অধরাই থেকে যায়।
শিক্ষার্থীদের দোষ দেওয়া যাবে না। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের হাইব্রিড করার অনন্ত প্রচেষ্টার ফল এটা। তথাকথিত সচেতন অভিভাবকরা সন্তানের 'এ' প্লাস নিশ্চিত করার আশায় ছুটে বেড়ান কোচিং নামক ব্যবস্থায় শিক্ষকরা তাদের যে আদর্শ ঢ়ষধরহ ষরারহম আর ংরসঢ়ষব ঃযরহশরহম তা বর্জন করতে নূ্যনতম দ্বিধাবোধ করেন। আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষকের যে বেতন তাতে তার খামারি হওয়া ছাড়া উপায়ও থাকে না। তাই হয়তো আদর্শতার স্থান নিয়েছে বিকৃত লালসা আর সীমাহীন লোভ।
শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের কার্যকর পদক্ষেপ আশু জরুরি। আমাদের দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাদান পূর্ববর্তী প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। কিছু দিন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সুযোগ থাকলেও রয়েছে প্রশিক্ষকের অভাব। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার সুযোগ সীমিত। যদিও শিক্ষকতার মান বিকাশে গবেষণার বিকল্প নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সুযোগের অপব্যবহার শিক্ষকদের নীতিহীনতার নির্দেশক। গবেষণার নামে বহু বছর বিদেশ থাকা, ক্লাসে অনিয়মিত উপস্থিতি_ সবই হতাশাব্যঞ্জক।
শেষ করব মহাভারতের গল্প দিয়ে। পাণ্ডবগুরু দ্রোণ ক্ষত্রিয় ছাড়া অস্ত্র চালনা শিক্ষা দেন না। তাই শূদ্র বলে ফিরিয়ে দেন একলব্যকে। একনিষ্ঠ একলব্য বনের মধ্যেই দ্রোণের মূর্তি স্থাপন করে চর্চা করেন অস্ত্র পরিচালনা; অর্জন করেন পারদর্শিতা। ঘটনাক্রমে বনে আসে পাণ্ডব দল। তাদের সঙ্গে থাকা কুকুর শরবিদ্ধ হয়ে শব্দহীন হয়ে পড়ে, কিন্তু মৃত্যু হয় না প্রাণীটির। অর্জুন হতবাক হয়ে দ্রোণের কাছে প্রশ্ন রাখেন_ এই অভূতপূর্ব শিক্ষা কাকে দিয়েছেন তিনি? রহস্য উদ্ঘাটনে বের হয়ে আসে দ্রোণমূর্তি সামনে ধ্যানরত একলব্যের সাধনা। ক্ষত্রিয় শিষ্য অর্জুনের কাছে ছোট হতে চানটি মহান সেই গুরু। চাইলেন গুরুদক্ষিণা একলব্যের কাছে তারই তর্জনী, যা ছাড়া অস্ত্র চালনা অসম্ভব।
আমরা আমাদের শিক্ষায় দ্রোণাচার্য চাই না_ চাই আদর্শ শিক্ষক। কোচিং সেন্টারের হুমড়ি খাওয়া সার্টিফিকেট প্রত্যাশী শিক্ষার্থী নয়_ চাই একলব্যের মতো একনিষ্ঠ জ্ঞানার্থী।
শম্পা ইফতেখার :শিক্ষক, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, শিক্ষা মানুষকে জানা থেকে অজানায় নিয়ে যায়; তার সুপ্ত বৃত্তির বিকাশ ঘটায়_ একজন আদর্শ ও পূর্ণাঙ্গ মানুষ পাই এই শিক্ষা তথা সুশিক্ষা দ্বারা। আজ মনে হয় সুশিক্ষার কদর নেই। জ্ঞানী শিক্ষক সবাই_ যিনি যে বিষয়টি পড়ান, সে বিষয়ে তিনি যথেষ্ট জানেন_ এই বিশ্বাস আমার দৃঢ়। কিন্তু নৈতিকতা বোধ, শিক্ষক হিসেবে আমাদের যে সামাজিক দায়বদ্ধতা তা পালনে বা মানতে পিছপা আজ আধুনিক শিক্ষকরা। এখানে একজন কোচিং ব্যবসায়ী, পরিমল বা মাদ্রাসা শিক্ষক সমগ্র শিক্ষক জাতির পরিমাপক নয় বা হতেও পারে না। তবে সুস্পষ্টভাবে সুশিক্ষার ঘাটতি রয়েছে।
অনেক দুঃখজনক হলে সত্য, স্বনামখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি এবং শিক্ষকতায় মূল মানদণ্ড হলো সর্বোচ্চ ভালো ফল। তাই ভর্তির শুরুতে কোচিং নামক খামারে প্রস্তুতি নেওয়া; তারপর প্রয়োজনবোধে প্রশ্নপত্র ক্রয় নগদ অর্থের বিনিময়ে। তারপর যদি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে_ শুরু হয় অন্য এক পথচলা। আকাঙ্ক্ষিত ফলপ্রত্যাশী এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষাজীবনের শুরুতেই প্রতিটি শিক্ষকের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দকে মাথায় রেখে চলতে হয়। কারণ নম্বর দেওয়ার সেই ঐশ্বরিক ক্ষমতা শিক্ষকের। তাই বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় যারা শিক্ষকতা করার স্বপ্ন দেখেন, তারা ছাত্রাবস্থায় কিছুটা হলেও নীতিহীনভাবে প্রশ্রয় দেন তার শিক্ষাগুরুকে_ যিনি নিজেও হয়তো একই পন্থায় শিক্ষক হয়েছেন। নীতিহীনতার শুরু এখানেই।
মানসম্মত শিক্ষাদান নিয়ে যথেষ্ট তর্ক-বিতর্ক হয়। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর যে বিশাল সংখ্যা দেখি, তাদের সবাই কি মানসম্মত শিক্ষা পায়? তাই যদি হতো শিক্ষামন্ত্রী কোচিং সেন্টার বন্ধের উদ্যোগ নিতেন না। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গবেষণায় ফলাফল অনুসারে ২৮ ভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের পড়ানোর মান ভালো নয়। কেমন শিক্ষার্থী পাচ্ছি আমরা? শিক্ষা প্রক্রিয়ার একপ্রান্তে শিক্ষক, অন্যপ্রান্তে শিক্ষার্থী। আমার ছয় বছরের শিক্ষক জীবনে যাদের শ্রেণীকক্ষে শিক্ষা দিয়েছি_ তারা সবাই পরীক্ষা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী_ যারা বুঝে কীভাবে পাস করা যায়, কিন্তু জ্ঞানের গভীরতা বা জানার ইচ্ছা শূন্যের কোঠায়। দু'একজন ব্যতিক্রম থাকেই, তবেই তাদের লক্ষ্য পাস করা চাই_ গৎবাঁধা পড়া বা কিছু ক্ষেত্রে করুণার বদৌলতে। তাই শিক্ষার্থীদের জানা থেকে অজানায় নিতে পারি না। আর মানবীয় গুণের বিকাশ_ তা তিন মাসের সেমিস্টার, চার-পাঁচটা কোর্সের ক্লাস টেস্ট, মিডটার্ম, অ্যাসাইনমেন্ট ফাইনাল_ এসব গোলকচক্রে অধরাই থেকে যায়।
শিক্ষার্থীদের দোষ দেওয়া যাবে না। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের হাইব্রিড করার অনন্ত প্রচেষ্টার ফল এটা। তথাকথিত সচেতন অভিভাবকরা সন্তানের 'এ' প্লাস নিশ্চিত করার আশায় ছুটে বেড়ান কোচিং নামক ব্যবস্থায় শিক্ষকরা তাদের যে আদর্শ ঢ়ষধরহ ষরারহম আর ংরসঢ়ষব ঃযরহশরহম তা বর্জন করতে নূ্যনতম দ্বিধাবোধ করেন। আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষকের যে বেতন তাতে তার খামারি হওয়া ছাড়া উপায়ও থাকে না। তাই হয়তো আদর্শতার স্থান নিয়েছে বিকৃত লালসা আর সীমাহীন লোভ।
শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের কার্যকর পদক্ষেপ আশু জরুরি। আমাদের দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাদান পূর্ববর্তী প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। কিছু দিন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সুযোগ থাকলেও রয়েছে প্রশিক্ষকের অভাব। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার সুযোগ সীমিত। যদিও শিক্ষকতার মান বিকাশে গবেষণার বিকল্প নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সুযোগের অপব্যবহার শিক্ষকদের নীতিহীনতার নির্দেশক। গবেষণার নামে বহু বছর বিদেশ থাকা, ক্লাসে অনিয়মিত উপস্থিতি_ সবই হতাশাব্যঞ্জক।
শেষ করব মহাভারতের গল্প দিয়ে। পাণ্ডবগুরু দ্রোণ ক্ষত্রিয় ছাড়া অস্ত্র চালনা শিক্ষা দেন না। তাই শূদ্র বলে ফিরিয়ে দেন একলব্যকে। একনিষ্ঠ একলব্য বনের মধ্যেই দ্রোণের মূর্তি স্থাপন করে চর্চা করেন অস্ত্র পরিচালনা; অর্জন করেন পারদর্শিতা। ঘটনাক্রমে বনে আসে পাণ্ডব দল। তাদের সঙ্গে থাকা কুকুর শরবিদ্ধ হয়ে শব্দহীন হয়ে পড়ে, কিন্তু মৃত্যু হয় না প্রাণীটির। অর্জুন হতবাক হয়ে দ্রোণের কাছে প্রশ্ন রাখেন_ এই অভূতপূর্ব শিক্ষা কাকে দিয়েছেন তিনি? রহস্য উদ্ঘাটনে বের হয়ে আসে দ্রোণমূর্তি সামনে ধ্যানরত একলব্যের সাধনা। ক্ষত্রিয় শিষ্য অর্জুনের কাছে ছোট হতে চানটি মহান সেই গুরু। চাইলেন গুরুদক্ষিণা একলব্যের কাছে তারই তর্জনী, যা ছাড়া অস্ত্র চালনা অসম্ভব।
আমরা আমাদের শিক্ষায় দ্রোণাচার্য চাই না_ চাই আদর্শ শিক্ষক। কোচিং সেন্টারের হুমড়ি খাওয়া সার্টিফিকেট প্রত্যাশী শিক্ষার্থী নয়_ চাই একলব্যের মতো একনিষ্ঠ জ্ঞানার্থী।
শম্পা ইফতেখার :শিক্ষক, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি
No comments