কারো কাছ থেকে সহানুভূতি, কারো কাছে ঘৃণা

কারো কাছ থেকে পাচ্ছেন সহানুভূতি, কারো কাছ থেকে ঘৃণা। তবে একটা বিষয়ে একমত সাবেক-বর্তমান সব ক্রিকেটার। সালমান বাট, মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমেরকে ম্যাচ পাতানোর দায়ে জেলে যেতে হওয়ায় সেটি ভবিষ্যতের জন্য কাজ করবে সতর্ক সংকেত হিসেবে।ভারতের কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারের কথাটিই শুনুন না, 'আমি বলব না যে এই জেলে দেওয়ার শাস্তির ফলে ম্যাচ পাতানো বন্ধ হবে। তবে এর একটি বড় প্রভাব পড়বে নিশ্চিতভাবে। আগে এ ধরনের অপরাধের জন্য ক্রিকেট খেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতো। তারা হয়তো ভাবত, না খেললেই বা কী! এখন একই অপরাধের জন্য জেলে যেতে হওয়ায়, সেটি করার আগে অনেকবার চিন্তা করবে ক্রিকেটাররা।


' পাকিস্তানের ইমরান খান এই ত্রয়ীকে দেখছেন সমাজের অবক্ষয়ের শিকার হিসেবে, 'এ খেলোয়াড়রা দেখেছে যে, দুর্নীতিগ্রস্তরাই তাদের সমাজের শীর্ষে উঠে যাচ্ছে। এ কারণে তারা ভেবেছে, তারাও পার পেয়ে যাবে।' এ শাস্তিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বদলে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি, 'এবার যদি পুরো সিস্টেম বদলায়! কারণ জাতি হিসেবে এ দিনটি আমাদের জন্য লজ্জাজনক এবং বিব্রতকর। যাই হোক না কেন, আমার হৃদয় ওই তিন ক্রিকেটারের পরিবারের পাশেই আছে। বুঝতে পারছি কী কঠিন সময়ই না ওরা কাটাচ্ছে!' আরেক কিংবদন্তি জহির আব্বাসের বিস্ময় কাটছেই না, 'আমাদের জন্য এটি কালো এক দিন। কে কবে ভেবেছিল, কোনো ক্রিকেটারকে কখনো জেলে যেতে হবে!'
এই শাস্তির মাধ্যমে উদাহরণ তৈরি হলো বলে শহীদ আফ্রিদির মত, 'শুধু পাকিস্তানে না, সব দেশেই এই ম্যাচ পাতানো হয়। অন্যান্য দেশের ক্রিকেট বোর্ড সেটি চেপে যায়। এই যে তিন ক্রিকেটারের জেল হয়ে গেল, সেটি সবার জন্যই শিক্ষা। দল, জাতি এবং খেলা হিসেবে ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করল এটি। আশা করি ভবিষ্যতের ক্রিকেটারদের জন্য এর মাধ্যমে একটি উদাহরণ তৈরি হলো।' তিনজনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সখ্য থাকলেও অপরাধী হিসেবে যথার্থ শাস্তি পেয়েছেন বলেই এ অলরাউন্ডারের দাবি, 'এই তিনজনই আমার ছোট ভাইয়ের মতো। আমি টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর সালমানকে অধিনায়ক করার জন্য সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু তারা যা করেছে, তার কোনো অজুহাত নেই। এটি খুব খুব খারাপ।' ম্যাচ পাতানোর বিপক্ষে বরাবরের সোচ্চার রশিদ লতিফ তো আরো শাস্তির সুপারিশ করেছেন, 'এ শাস্তি ওদের প্রাপ্য। এখন পাকিস্তান সরকার ও ক্রিকেট বোর্ডের উচিত তাদের শাস্তি দেওয়া। কারণ এ খেলাটি কারো দ্বারাই কলঙ্কিত হতে পারে না।'
সহানুভূতি থাকলেও উচিত শাস্তি হয়েছে বলে মত ইন্তিখাব আলমেরও, 'ছেলেদের জন্য আমার খারাপ লাগছে। কিন্তু তারা যা করেছে, এর শাস্তি পেতেই হবে। তারা তাদের পরিবার ও জাতিকে ছোট করেছে।' রমিজ রাজার কণ্ঠেও প্রায় অভিন্ন সুর, 'ওই তিন ক্রিকেটার ও তাদের পরিবারের জন্য এটি মেনে নেওয়া কঠিন। কিন্তু খেলাটি থেকে এই ম্যাচ পাতানোর কলুষতা দূর করার জন্য এমন বিচারই হওয়ার কথা। ভবিষ্যতে যাদের সামনে এসবে জড়ানোর সুযোগ আসবে, তাদের জন্য এটি সতর্ক সংকেত।' ইংল্যান্ড সফরে পাকিস্তানে কোচ ওয়াকার ইউনিসের কণ্ঠে সহানুভূতি, 'কখনো ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারিনি ওরা এসবে জড়িত। জানলে হয়তো বিষয়টি এত দূর গড়াত না। ওদের জন্য আমার মায়াই হচ্ছে।' ক্রিকইনফো/এএফপি/রয়টার্স

No comments

Powered by Blogger.