গরু বিক্রির টাকাই কাল হলো হৃদয়ের গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে মাকে হত্যা : মৃত্যুর মুখে বাবাও by বেলাল হোসেন
‘পাশের ফুফাতো বোনের বাড়িতে ঘুমানোর পর ফজরের আজান শুনে নিজ ঘরে চলে আসি। এসেই দেখি মা ঘরের মধ্যে শুয়ে আছে। কিন্তু কোনো কথা বলে না। মা মা বলে ডাকি তাও শোনে না। ছোট্ট বোন ঘরে বসে কান্না করছে। দেখি বাবাও ঘরে নেই। লোকমুখে শুনে পাশের বাগানে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি বাবার চোখ-মুখ গামছা আর হাত-পা দড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা। ওরা মার কাপড় গলায় পেঁচিয়ে মাকে হত্যা করে। বাবার মুখে গামছা বেঁধে পেটাতে পেটাতে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। শোয়ার ঘরের মাত্র ৫০-৬০ ফুট পূর্বে গাছগাছালির একটি বাগান রয়েছে।
আর বাগানটির সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করতেন বাবা। বাবার হাতে গড়া সেই প্রিয় বাগানেরই একটি গাছের সঙ্গে তাকে দড়ি দিয়ে পিছমোড়া বেঁধে রাখা হয়। এমনকি সেখানেও তাকে লাঠি দিয়ে পেটানোর পর বাবার মৃত্যু ভেবে ডাকাতরা চলে যায়। এখন আমাগোর দু’ভাই-বোনের কি হইবো। কাকে আমরা মা বইল্যা ডাকবো। আমার মার লাশ কি পুলিশে নিয়া কাটবো। বাবার কি হইবো। বাবা কি সুস্থ হইবো
নাকি মার মতো মইর্যা যাইবো— এসব বলে অঝোরে কান্না করে যাচ্ছিল স্থানীয় ছোনকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র অবুঝ শিশু হৃদয়।’ এ সময় মায়ের লাশের পাশেই বসেছিল তারই ছোট বোন অঞ্জনা। স্থানীয় ব্র্যাক স্কুলে পড়ে। সেও কেবল সবার দিকে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। মাঝে মধ্যে ভাইয়ের সঙ্গে কান্নাও করছিল।
কোরবানির ৪টি গরু বিক্রির টাকা লুটে নিতেই ডাকাতের হাতে প্রাণ হারান তাদের মা মোছাম্মত্ ফুলমালা ওরফে ফুলেরা (৪৪) আর গুরুতর আহত হন বাবা ফজলার খাঁ। গতকাল ভোর রাতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের রহিমা-নওশের আলী ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন চণ্ডিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সকালেই ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এছাড়া আহত ফজলার খাঁকে (৫৫) শেরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, নিজের কোনো জায়গা জমি নেই। অন্যের জমিতে একটি ছোট্ট ঘর করে প্রায় ৬-৭ বছর ধরে দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ফুলমালা ও ফজলার খাঁ বসবাস করে আসছেন। আর তাদের সংসার চলত ফজলারের দিনমজুরির টাকায়। দড়িহাঁসড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্থানীয় মাহফুজার রহমানের মালিকানাধীন ‘মাস্টার নার্সারি’ নামে একটি বাগানে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করেন ফজলার খাঁ। এ থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে দুটি ষাড় গরু কেনেন। অপরদিকে শিক্ষককের কাছ থেকে দুটি গরু বর্গা নিয়ে পালন করে আসছিলেন।
নিহতের ভাগ্নে কহির উদ্দিন ও হাসমত আলী জানান, ৪টি গরুর মধ্যে গত শনিবার চান্দাইকোনা হাটে বর্গা নেয়া দুটি গরু ৩৫ হাজার টাকা ও বুধবার স্থানীয় ছোনকাহাটে নিজের দুটি গরু ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এ টাকাই মামা-মামীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষক মাহফুজার রহমান জানান, বর্গা বাবদ টাকা ফজলার খাঁ গরু বিক্রির পরই তাকে দিয়ে দেন। অবশিষ্ট টাকা তার ঘরেই সম্ভবত একটি বাক্সের ভেতর রেখেছিলেন। ঘটনার পর ওই বাক্সটিও ঘরের বাইরে ভাঙা পাওয়া গেছে।
নিহতের আত্মীয়স্বজনরা জানান, গরু বিক্রির টাকা লুটে নিতেই ডাকাতরা রাতের আঁধারে ফজলার ঘরে হানা দিয়েছে। এ সময় ডাকাত দল ফুলমালাকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ও ফজলারকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ডাকাতরা চলে যায়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চলছে। তবে আহত ফজলারের সঙ্গে কথা না বলে সুনির্দিষ্ট করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তিনি সুস্থ হলে তার সঙ্গে কথা বলার পরই কেবল হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়া যাবে।
নাকি মার মতো মইর্যা যাইবো— এসব বলে অঝোরে কান্না করে যাচ্ছিল স্থানীয় ছোনকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র অবুঝ শিশু হৃদয়।’ এ সময় মায়ের লাশের পাশেই বসেছিল তারই ছোট বোন অঞ্জনা। স্থানীয় ব্র্যাক স্কুলে পড়ে। সেও কেবল সবার দিকে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। মাঝে মধ্যে ভাইয়ের সঙ্গে কান্নাও করছিল।
কোরবানির ৪টি গরু বিক্রির টাকা লুটে নিতেই ডাকাতের হাতে প্রাণ হারান তাদের মা মোছাম্মত্ ফুলমালা ওরফে ফুলেরা (৪৪) আর গুরুতর আহত হন বাবা ফজলার খাঁ। গতকাল ভোর রাতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের রহিমা-নওশের আলী ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন চণ্ডিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সকালেই ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এছাড়া আহত ফজলার খাঁকে (৫৫) শেরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, নিজের কোনো জায়গা জমি নেই। অন্যের জমিতে একটি ছোট্ট ঘর করে প্রায় ৬-৭ বছর ধরে দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ফুলমালা ও ফজলার খাঁ বসবাস করে আসছেন। আর তাদের সংসার চলত ফজলারের দিনমজুরির টাকায়। দড়িহাঁসড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্থানীয় মাহফুজার রহমানের মালিকানাধীন ‘মাস্টার নার্সারি’ নামে একটি বাগানে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করেন ফজলার খাঁ। এ থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে দুটি ষাড় গরু কেনেন। অপরদিকে শিক্ষককের কাছ থেকে দুটি গরু বর্গা নিয়ে পালন করে আসছিলেন।
নিহতের ভাগ্নে কহির উদ্দিন ও হাসমত আলী জানান, ৪টি গরুর মধ্যে গত শনিবার চান্দাইকোনা হাটে বর্গা নেয়া দুটি গরু ৩৫ হাজার টাকা ও বুধবার স্থানীয় ছোনকাহাটে নিজের দুটি গরু ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এ টাকাই মামা-মামীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষক মাহফুজার রহমান জানান, বর্গা বাবদ টাকা ফজলার খাঁ গরু বিক্রির পরই তাকে দিয়ে দেন। অবশিষ্ট টাকা তার ঘরেই সম্ভবত একটি বাক্সের ভেতর রেখেছিলেন। ঘটনার পর ওই বাক্সটিও ঘরের বাইরে ভাঙা পাওয়া গেছে।
নিহতের আত্মীয়স্বজনরা জানান, গরু বিক্রির টাকা লুটে নিতেই ডাকাতরা রাতের আঁধারে ফজলার ঘরে হানা দিয়েছে। এ সময় ডাকাত দল ফুলমালাকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ও ফজলারকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ডাকাতরা চলে যায়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চলছে। তবে আহত ফজলারের সঙ্গে কথা না বলে সুনির্দিষ্ট করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তিনি সুস্থ হলে তার সঙ্গে কথা বলার পরই কেবল হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়া যাবে।
No comments