উচিত বিচার হয়েছে :কাইয়ুম

ক দশকেরও বেশি সময় পার হয়েছে। ক্রিকেটে পাতানো ম্যাচের ঘটনা তখনও অনেকের কাছে আশ্চর্য এক ব্যাপার ছিল; কিন্তু ভদ্রলোকের এই খেলায় যে অপরাধ ঢুকে পড়েছে এবং সে অপরাধীদের যে শাস্তি হওয়া দরকার_ সেটা তদন্ত করে প্রথমবারের মতো সুপারিশ করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পাকিস্তানি বিচারপতি মালিক মোহাম্মদ কাইয়ুম। সম্প্রতি ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত অপরাধী পাকিস্তানের তিন ক্রিকেটার লন্ডনের কোর্টে শাস্তি পেয়েছেন। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বিচার প্রথম শুরু করা কাইয়ুম তাই লন্ডন আদালতের এ রায়ে বেশ খুশি।


তিনি মনে করেন, মাজিদ, বাট, আসিফ এবং আমের তাদের প্রাপ্যটা পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাক ক্রিকেট বোর্ড তার সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করলে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে এখন এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। ৬৬ বছর বয়সী কাইয়ুম বর্তমানে হজ পালনের জন্য মক্কায় রয়েছেন। তবে ক্রিকেট ইতিহাসের আলোচিত বিচারে ঠিকই মনোযোগ ছিল তার। লন্ডনের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্টে দেওয়া রায়ের নানা দিক বিশ্লেষণ করে মতামতও দিয়েছেন, 'পাকিস্তানের ক্রিকেটের জন্য খুবই দুঃখের একটি দিন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, ক্রিকেট ইতিহাসে ম্যাচ ফিক্সিংয় সন্দেহে প্রথম শাস্তি পেল তিন পাকিস্তানি। এ তিন ক্রিকেটার পাকিস্তানের জন্য দুর্নাম বয়ে এনেছে। তাদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাদের সেটা প্রাপ্য। সৌদি আরবের একটি দৈনিককে তিনি আরও জানান, টিভিতে সব সময়ই তিনি এ বিচার কাজের অগ্রগতির খবর রাখতেন। তার মতে, তিনজনেরই প্রকৃত বিচার হয়েছে, 'এই প্রথমবারের মতো ফিক্সিংয়ের জন্য কেউ শাস্তি পেল। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে শাস্তি দিয়ে বিচারপতি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবেও মনে করি সুবিচার হয়েছে। মোহাম্মদ আমের এ অপরাধের সঙ্গে মাত্র যুক্ত হয়েছে। তাকে ছয় মাসের সাজা দেওয়া ঠিক আছে। আরও একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেল, মাজহার মাজিদের সঙ্গে ক্রিকেটারদের যোগসূত্রটা ছিল সালমান বাটের মাধ্যমে। প্রত্যাশিতভাবেই তাদের শাস্তিটা বেশি হয়েছে।' তার অনুধাবন, পাকিস্তানে তরুণ ক্রিকেটারদের সঠিকভাবে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয় না, 'খেলোয়াড়রা অতি দ্রুত অর্থ, খ্যাতি ও গ্গ্নামারের চক্করে পড়ে যায়। বিষয়টা খুবই বিপজ্জনক। তরুণ বয়সে অধিকাংশ মানুষই জানে না কীভাবে এসব সামলাতে হয়। শিক্ষার অভাবে এমন হচ্ছে।' তিনি আরও জানান, পিসিবি কর্মকর্তা তার সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের সদিচ্ছা কখনও দেখায়নি, 'আমি দম্ভোক্তি করছি না, যদি তারা আমার সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করত তাহলে আজ তাদের এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতো না। তবে আমি মনে করি না যে, ম্যাচ ফিক্সিং শুধু পাকিস্তানেই হয়। যখন আমি তদন্ত করেছিলাম তখন দেখেছি, অনেক দেশের ক্রিকেটাররা এর সঙ্গে জড়িত। তবে ধরা খেল শুধু পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা।' উল্লেখ্য, তার রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০০০ সালের মে মাসে সেলিম মালিককে আজীবন ক্রিকেট থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তিনি ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, ইজাজ আহমেদসহ বেশ কয়েকজন পাক ক্রিকেটারকে কয়েক বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছিলেন; কিন্তু পিসিবি তার এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি।

No comments

Powered by Blogger.