কোরবানির পশুর সাজসজ্জা
বগুড়ার আজমত বেপারি দুটি ষাঁড় এনেছেন গাবতলী হাটে। ধবধবে সাদা ষাঁড়গুলোকে বিশেষভাবে রেখেছেন সামিয়ানার নিচে। গতকাল দুপুরে ওহিদ নামের এক যুবক শ্যাম্পু দিয়ে গরুটিকে গোসল করাচ্ছিল। একপাশ ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যজন তোয়ালে দিয়ে মুছে দিচ্ছে গরুর শরীর। পশমগুলো শুকিয়ে আসার পর তাতে ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে সুগন্ধ পাউডার। করা হয়েছে স্প্রে। এরপর একটি মালা, চাঁদা, শিং কভার পরিয়ে যেন নওশা সাজে সাজানো হলো গরুটিকে। কী ব্যাপার ভাই গরুটিকে এত খাতির যত্ন কেন জানতে চাইতেই আজমত বেপারি বলেন, সাদা গরুতো ময়লা গায়ে থাকলে খারাপ দেখায়। তাছাড়া সাজানো হলে দামও ভালো পাওয়া যায়।
এভাবেই একটু বেশি দাম পাওয়ার আশায় হাটে হাটে গরুগুলোকে মালা, শিং কভার ও চাঁদা পরিয়ে সাজানো হচ্ছে। আর এ সুযোগে কিছু মানুষ মৌসুমি কাজ করে কিছু পয়সা কামাচ্ছেন। গরু সাজানির পাশাপাশি গরুর গোসল দেয়া, গরুকে পানি খাওয়ানো, রান্না করা জাউ, খৈল, ভুসিসহ অন্যান্য খাবারও পাওয়া যাচ্ছে মৌসুমি হকারদের কাছে।
গাবতলী হাটে গরু সাজানি বিক্রি ও গরু সাজানোর কাজ করেন মোহাম্মদ কালু। তিনি জানান, একটি গরু সাজাতে একশ’ থেকে তিনশ’ টাকা পর্যন্ত নেন তারা। গোসল দিতে নেন দুইশ’ টাকা। গরুর সাজানিতে ব্যবহার করেন শিং কভার, চাঁদা, মালাসহ অনেক কিছু। হাটের পাশেই খুপড়ি দোকানগুলোতে বসেছে গরু সাজানোর নানা সরঞ্জাম। সেখানে রঙিন দড়ি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, মালা ২০ থেকে ১৫০ টাকা, শিং কভার ২০
থেকে ৮০ টাকা, ঘুংঘুর ৫০ থেকে ১০০ টাকা, লাঠি ৫ থেকে ১০ টাকা দামে বিক্রি হয়। কিশোর মজনু ও মোহসিন হাটে ঘুরে ঘুরে গরুর সাজানি বিক্রি করে। তারা জানায়, এসব বিক্রি করে দিনে প্রায় এক হাজার টাকা আয় হয়। আজ ও আগামী কাল আরেকটু বেশি আয় করার আশা তাদের।
প্রতিবছরই কোরবানির সময় পশুর হাটগুলোতে দেখা যায়, নতুন গামছা ও দামি তোয়ালে দিয়ে গরু ছাগলের শরীর মুছে চকচকে রাখা হচ্ছে। কালো রঙের গরুগুলোকে চুলের কলপ দিয়ে আরও আকর্ষণীয় করা হয়। অন্য রঙের গরুগুলোর গায়েও মাখা হয় মানানসই রঙ। সবই গরুটির প্রকৃত রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। গরুর গায়ে স্প্রে করা হয় দেশি-বিদেশি সেন্ট। সাজানি থেকে বাদ পড়ে না লেজ, মাথা, শিং কোনো কিছুই। গলায় জড়ানো হয় রঙ বেরঙের মালা। শিংয়ে পরানো হয় শিং কভার। বেপারিদের ভাষায় গরুর ‘মেকআপ’ লাগালে দামও একটু বেশি পাওয়া যায়। নয়াবাজার ও গনি মিয়ার হাটসহ কিছু হাটে বেপারিদেরও কেউ কেউ সাদা লুঙ্গি, সাদা পাঞ্জাবি পরে হাটে আসেন। এরই মধ্যে গবাদিপশুর হাটগুলোর সামনে বড় বড় তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। করা হয়েছে আলোকসজ্জা। মরিচ বাতির আলোর ঝলকানিতে আলোকিত গরুর হাটের আশপাশের এলাকা।
গাবতলী গরুর হাটকে ঘিরে গবাদিপশু সাজানোর শতাধিক দোকান রয়েছে। এসব দোকানে সবধরনের সাজানি পাওয়া যায়। জাফর স্টোরের আবু জাফর জানান, তার কাছে গরু সাজানির শত পদের পণ্য আছে। সারাবছর এসব সামগ্রী বিক্রি হয় না। কোরবানির মৌসুমে দুই তিন দিনেই সারাবছরের ব্যবসা করেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব সাজানি নিয়ে আসেন পাইকাররা। তারা আরও একটু সুন্দর করার জন্য ঘুংঘুরসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম যুক্ত করেন। একই তথ্য জানালেন হেলাল নামের আরও এক দোকানি।
গরুর হাটে স্থানীয় দোকান ও হকারদের কাছে মালা, গরু ও মোষের শিংয়ে দেয়ার জন্য কাপড়ের শিং কভার, নকশি করা কাপড়ের রুমাল, বেঁধে রাখার দড়ি, মুখা—এক কথায় গরু সাজানোর যাবতীয় পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
গাবতলী হাটের গরু সাজানির দোকানদার মতি মিয়া জানান, এ মৌসুমে লাখখানেক টাকার সাজানি বিক্রির আশা করছি। এখন শুধু হাটের ব্যাপারিরা কিনছেন। দৈনিক আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকার সাজানি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের দুই দিন আগ থেকে খুচরা ক্রেতারাও কিনবেন। অনেকে একটি মালা, মুখা, দড়ি নিয়ে এক দেড়শ’ টাকাও দিয়ে দেন। তাই ঈদের আগের কয়েক দিনে ভালো ব্যবসার আশা করছেন।
সাজানি বিক্রিতে গাবতলী হাটে অতিপরিচিত নাম আবদুল মান্নান মিয়া। তিনি গাবতলী গরুর হাটের ভেতরে একটি বাঁশের লাঠিতে সাজানি নিয়ে ফেরি করে বিক্রি করেন। তিনি জানান, ‘ঈদের আগে আগে বড় লোকেরা গরু কিনবার আইলে সাজাইয়া দিলে বখশিশ পাওন যায় ভালোই।’ কেউ কেউ পঞ্চাশ থেকে ৫শ’ টাকাও বখশিশ দেন বলে তিনি জানান।
গাবতলী হাটের এক প্রান্তে রয়েছে গবাদিপশুর খাদ্যের আড়ত্। এরই মধ্যে জমজমাট হয়ে উঠেছে এ ব্যবসা। সাভার, মানিকগঞ্জ, গাজিপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ও চর থেকে সবুজ ঘাস সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন গাবতলীতে। আড়তে প্রতি আঁটি দূর্বা, কাঁচা ধানের গাছসহ বিভিন্ন ঘাস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। কেউ আবার আড়ত্ থেকে ঘাসের আঁটি নিয়ে হাটের মধ্যে ফেরি করে বেড়ান। ঘাসের পাশাপাশি খড়ের ব্যবসাও জমজমাট। এক মুঠা পরিমাণ খড় ১০ টাকা দামে এবং প্রতিশ’ ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। খড় ব্যবসায়ী রতন জানান সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজিপুর, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তারা এ খড় কিনে এনেছেন। শিশু রুবেল বিক্রি করেন কাঁঠাল পাতা। ২০ থেকে ৫০ টাকা দামে খাসির জন্য এ পাতা কিনে নেন লোকজন।
শুধু গাবতলীতেই নয় ঘাস, খড়, কাঁঠালপাতা এগুলো নগরীর মহল্লায় মহল্লায় পাওয়া যাচ্ছে। গবাদিপশুকে পানি পান করানোর জন্য বেশ কয়েকজন মহিলা খৈল, ভুসি নিয়ে বসেছেন বাজারের বিভিন্ন প্রান্তে। গতকাল সকালে শাহজানাপুর মৈত্রি সংঘ মাঠের কাছে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে দেখা গেছে খড়ের বিশাল স্তূপ বসিয়েছেন বিক্রেতারা। আজকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন গলি ও মহল্লায় কাঁঠালপাতা, আমপাতা থেকে শুরু করে খড়, খৈল, ঘাসসহ গরু ছাগলের সব খাবারই পাওয়া যাবে বলে জানান বিক্রেতারা।
গাবতলী হাটে গরু সাজানি বিক্রি ও গরু সাজানোর কাজ করেন মোহাম্মদ কালু। তিনি জানান, একটি গরু সাজাতে একশ’ থেকে তিনশ’ টাকা পর্যন্ত নেন তারা। গোসল দিতে নেন দুইশ’ টাকা। গরুর সাজানিতে ব্যবহার করেন শিং কভার, চাঁদা, মালাসহ অনেক কিছু। হাটের পাশেই খুপড়ি দোকানগুলোতে বসেছে গরু সাজানোর নানা সরঞ্জাম। সেখানে রঙিন দড়ি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, মালা ২০ থেকে ১৫০ টাকা, শিং কভার ২০
থেকে ৮০ টাকা, ঘুংঘুর ৫০ থেকে ১০০ টাকা, লাঠি ৫ থেকে ১০ টাকা দামে বিক্রি হয়। কিশোর মজনু ও মোহসিন হাটে ঘুরে ঘুরে গরুর সাজানি বিক্রি করে। তারা জানায়, এসব বিক্রি করে দিনে প্রায় এক হাজার টাকা আয় হয়। আজ ও আগামী কাল আরেকটু বেশি আয় করার আশা তাদের।
প্রতিবছরই কোরবানির সময় পশুর হাটগুলোতে দেখা যায়, নতুন গামছা ও দামি তোয়ালে দিয়ে গরু ছাগলের শরীর মুছে চকচকে রাখা হচ্ছে। কালো রঙের গরুগুলোকে চুলের কলপ দিয়ে আরও আকর্ষণীয় করা হয়। অন্য রঙের গরুগুলোর গায়েও মাখা হয় মানানসই রঙ। সবই গরুটির প্রকৃত রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। গরুর গায়ে স্প্রে করা হয় দেশি-বিদেশি সেন্ট। সাজানি থেকে বাদ পড়ে না লেজ, মাথা, শিং কোনো কিছুই। গলায় জড়ানো হয় রঙ বেরঙের মালা। শিংয়ে পরানো হয় শিং কভার। বেপারিদের ভাষায় গরুর ‘মেকআপ’ লাগালে দামও একটু বেশি পাওয়া যায়। নয়াবাজার ও গনি মিয়ার হাটসহ কিছু হাটে বেপারিদেরও কেউ কেউ সাদা লুঙ্গি, সাদা পাঞ্জাবি পরে হাটে আসেন। এরই মধ্যে গবাদিপশুর হাটগুলোর সামনে বড় বড় তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। করা হয়েছে আলোকসজ্জা। মরিচ বাতির আলোর ঝলকানিতে আলোকিত গরুর হাটের আশপাশের এলাকা।
গাবতলী গরুর হাটকে ঘিরে গবাদিপশু সাজানোর শতাধিক দোকান রয়েছে। এসব দোকানে সবধরনের সাজানি পাওয়া যায়। জাফর স্টোরের আবু জাফর জানান, তার কাছে গরু সাজানির শত পদের পণ্য আছে। সারাবছর এসব সামগ্রী বিক্রি হয় না। কোরবানির মৌসুমে দুই তিন দিনেই সারাবছরের ব্যবসা করেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব সাজানি নিয়ে আসেন পাইকাররা। তারা আরও একটু সুন্দর করার জন্য ঘুংঘুরসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম যুক্ত করেন। একই তথ্য জানালেন হেলাল নামের আরও এক দোকানি।
গরুর হাটে স্থানীয় দোকান ও হকারদের কাছে মালা, গরু ও মোষের শিংয়ে দেয়ার জন্য কাপড়ের শিং কভার, নকশি করা কাপড়ের রুমাল, বেঁধে রাখার দড়ি, মুখা—এক কথায় গরু সাজানোর যাবতীয় পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
গাবতলী হাটের গরু সাজানির দোকানদার মতি মিয়া জানান, এ মৌসুমে লাখখানেক টাকার সাজানি বিক্রির আশা করছি। এখন শুধু হাটের ব্যাপারিরা কিনছেন। দৈনিক আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকার সাজানি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের দুই দিন আগ থেকে খুচরা ক্রেতারাও কিনবেন। অনেকে একটি মালা, মুখা, দড়ি নিয়ে এক দেড়শ’ টাকাও দিয়ে দেন। তাই ঈদের আগের কয়েক দিনে ভালো ব্যবসার আশা করছেন।
সাজানি বিক্রিতে গাবতলী হাটে অতিপরিচিত নাম আবদুল মান্নান মিয়া। তিনি গাবতলী গরুর হাটের ভেতরে একটি বাঁশের লাঠিতে সাজানি নিয়ে ফেরি করে বিক্রি করেন। তিনি জানান, ‘ঈদের আগে আগে বড় লোকেরা গরু কিনবার আইলে সাজাইয়া দিলে বখশিশ পাওন যায় ভালোই।’ কেউ কেউ পঞ্চাশ থেকে ৫শ’ টাকাও বখশিশ দেন বলে তিনি জানান।
গাবতলী হাটের এক প্রান্তে রয়েছে গবাদিপশুর খাদ্যের আড়ত্। এরই মধ্যে জমজমাট হয়ে উঠেছে এ ব্যবসা। সাভার, মানিকগঞ্জ, গাজিপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ও চর থেকে সবুজ ঘাস সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন গাবতলীতে। আড়তে প্রতি আঁটি দূর্বা, কাঁচা ধানের গাছসহ বিভিন্ন ঘাস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। কেউ আবার আড়ত্ থেকে ঘাসের আঁটি নিয়ে হাটের মধ্যে ফেরি করে বেড়ান। ঘাসের পাশাপাশি খড়ের ব্যবসাও জমজমাট। এক মুঠা পরিমাণ খড় ১০ টাকা দামে এবং প্রতিশ’ ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। খড় ব্যবসায়ী রতন জানান সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজিপুর, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তারা এ খড় কিনে এনেছেন। শিশু রুবেল বিক্রি করেন কাঁঠাল পাতা। ২০ থেকে ৫০ টাকা দামে খাসির জন্য এ পাতা কিনে নেন লোকজন।
শুধু গাবতলীতেই নয় ঘাস, খড়, কাঁঠালপাতা এগুলো নগরীর মহল্লায় মহল্লায় পাওয়া যাচ্ছে। গবাদিপশুকে পানি পান করানোর জন্য বেশ কয়েকজন মহিলা খৈল, ভুসি নিয়ে বসেছেন বাজারের বিভিন্ন প্রান্তে। গতকাল সকালে শাহজানাপুর মৈত্রি সংঘ মাঠের কাছে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে দেখা গেছে খড়ের বিশাল স্তূপ বসিয়েছেন বিক্রেতারা। আজকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন গলি ও মহল্লায় কাঁঠালপাতা, আমপাতা থেকে শুরু করে খড়, খৈল, ঘাসসহ গরু ছাগলের সব খাবারই পাওয়া যাবে বলে জানান বিক্রেতারা।
No comments