মানবাধিকারকর্মীদের আশঙ্কা-ভবঘুরে আইন পুলিশকে স্বেচ্ছাচারী করে তুলবে by শরীফা বুলবুল
'ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন-২০১১' আইনটিকে অমানবিক এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মী ও বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, এ আইনে পুলিশকে ভয়াবহ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাই আইনটি প্রয়োগকারী সংস্থাকে স্বেচ্ছাচার করে তুলতে পারে। আইনটি বৈষম্যমূলক আচরণকে বৈধতা প্রদান এবং বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন সমর্থন করবে। গত ২৪ আগস্ট মন্ত্রিসভায় পাস করা হয় 'ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন-২০১১'।
অবিলম্বে পুরো আইনটি প্রকাশ এবং পুনর্বিচেনার দাবি জানিয়ে তারা বলেছেন, এই আইনে সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে আটক করার পরিধি অনেক বিস্তৃত এবং অপব্যবহারের সুযোগও প্রচুর। ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষত নারী, পথশিশু, ভিক্ষুক ও
নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের জীবনধারণের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করবে।
এ প্রসঙ্গে 'নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী খুশি কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এ আইনে দরিদ্র ব্যক্তিকে অপরাধী হিসাবে দেখানো হয়েছে যা খুবই অমানবিক ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। যে প্রক্রিয়ায় এই আইনটি করা হয়েছে তা অমানবিক ও অগণতান্ত্রিকও বটে।'
আইন সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট নুর খান বলেন, 'এই আইনে ভবঘুরের সংজ্ঞায় বলা হয়, যে ব্যক্তির বসবাসের বা রাতযাপনের সুনির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই অথবা যিনি উদ্দেশ্যহীনভাবে অথবা রাস্তায় ঘোরাফেরা করে জনসাধারণকে বিরক্ত করেন অথবা যিনি নিজে কারো প্ররোচনায় ভিক্ষাবৃত্তিতে লিপ্ত হন, তিনি ভবঘুরে বলে গণ্য হবেন। নিরাশ্রয় ব্যক্তিদেরকে পুনর্বাসন করার ব্যবস্থাটি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে পুলিশের কাছে! তা হলে সারা বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। গণতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে এ ধরনের আইন অনেকটাই অগণতান্ত্রিক।' তিনি বলেন, 'আইনে ভিক্ষুকদের ভবঘুরে সমতুল্য গণ্য করা হয়েছে, যদিও তাদের অনেকের নিজস্ব আবাসন এবং পারিবারিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।'
ব্র্যাক এইচআরএলএসের পরিচালক ড. ফস্টিনা পেরেইরা বলেন, 'যে অস্বচ্ছতার মাধ্যমে এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে তার বিষয়ে আমরা শুধু গভীর উদ্বেগ প্রকাশই করছি না, উপরন্তু আইনটি পড়ে দরিদ্র জনগণের প্রতি যে অপমানজনক ও বিদ্বেষমূলক মানসিকতা প্রকাশ পাচ্ছে তার বিষয়েও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক উপায়ে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে এই আইনের পুনঃপর্যালোচনার দাবি জানাচ্ছি।'
অ্যাডভোকেট খন্দকার শাহরিয়ার শাকির বলেন, 'ভবঘুরে হওয়া কোনো অপরাধ নয়। অথচ কোনো একটা জায়গায় নিয়ে ভবঘুরেদের বাধ্যগতভাবে কাজ করানো হচ্ছে। আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট এমন আইনকে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক বলে নাকচ করে দিয়েছেন। এ অবৈধ ব্যবস্থা আমাদের আইনি ব্যবস্থা থেকে উচ্ছেদ করা উচিত।'
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বাংলাদেশে অধিকাংশ আইনই ধনীবান্ধব এবং দরিদ্রবিরুদ্ধ। এমনটি হওয়া উচিত নয়। একে গণমুখী করতে হবে। প্রতিটি আইনের ভেতরেই আমলাদের প্রভাব এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে। আমলাদের যে ক্ষমতা তা দেখানোর জন্য যে গ্রাউন্ড দরকার, তার জন্য এ আইন। এ আইনটি এভাবে থাকতে পারবে না। এটি পরিবর্তন হতেই হবে। আমি এই আইন সংশোধনের জোর দাবি জানাচ্ছি। কারণ সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের অধিকারের বিষয়টি সরকারকে বিবেচনায় রাখতে হবে।'
নিরাশ্রয় ব্যক্তিদের জীবনধারণের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করবে।
এ প্রসঙ্গে 'নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী খুশি কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এ আইনে দরিদ্র ব্যক্তিকে অপরাধী হিসাবে দেখানো হয়েছে যা খুবই অমানবিক ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। যে প্রক্রিয়ায় এই আইনটি করা হয়েছে তা অমানবিক ও অগণতান্ত্রিকও বটে।'
আইন সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট নুর খান বলেন, 'এই আইনে ভবঘুরের সংজ্ঞায় বলা হয়, যে ব্যক্তির বসবাসের বা রাতযাপনের সুনির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই অথবা যিনি উদ্দেশ্যহীনভাবে অথবা রাস্তায় ঘোরাফেরা করে জনসাধারণকে বিরক্ত করেন অথবা যিনি নিজে কারো প্ররোচনায় ভিক্ষাবৃত্তিতে লিপ্ত হন, তিনি ভবঘুরে বলে গণ্য হবেন। নিরাশ্রয় ব্যক্তিদেরকে পুনর্বাসন করার ব্যবস্থাটি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে পুলিশের কাছে! তা হলে সারা বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। গণতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে এ ধরনের আইন অনেকটাই অগণতান্ত্রিক।' তিনি বলেন, 'আইনে ভিক্ষুকদের ভবঘুরে সমতুল্য গণ্য করা হয়েছে, যদিও তাদের অনেকের নিজস্ব আবাসন এবং পারিবারিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।'
ব্র্যাক এইচআরএলএসের পরিচালক ড. ফস্টিনা পেরেইরা বলেন, 'যে অস্বচ্ছতার মাধ্যমে এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে তার বিষয়ে আমরা শুধু গভীর উদ্বেগ প্রকাশই করছি না, উপরন্তু আইনটি পড়ে দরিদ্র জনগণের প্রতি যে অপমানজনক ও বিদ্বেষমূলক মানসিকতা প্রকাশ পাচ্ছে তার বিষয়েও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক উপায়ে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে এই আইনের পুনঃপর্যালোচনার দাবি জানাচ্ছি।'
অ্যাডভোকেট খন্দকার শাহরিয়ার শাকির বলেন, 'ভবঘুরে হওয়া কোনো অপরাধ নয়। অথচ কোনো একটা জায়গায় নিয়ে ভবঘুরেদের বাধ্যগতভাবে কাজ করানো হচ্ছে। আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট এমন আইনকে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক বলে নাকচ করে দিয়েছেন। এ অবৈধ ব্যবস্থা আমাদের আইনি ব্যবস্থা থেকে উচ্ছেদ করা উচিত।'
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বাংলাদেশে অধিকাংশ আইনই ধনীবান্ধব এবং দরিদ্রবিরুদ্ধ। এমনটি হওয়া উচিত নয়। একে গণমুখী করতে হবে। প্রতিটি আইনের ভেতরেই আমলাদের প্রভাব এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে। আমলাদের যে ক্ষমতা তা দেখানোর জন্য যে গ্রাউন্ড দরকার, তার জন্য এ আইন। এ আইনটি এভাবে থাকতে পারবে না। এটি পরিবর্তন হতেই হবে। আমি এই আইন সংশোধনের জোর দাবি জানাচ্ছি। কারণ সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের অধিকারের বিষয়টি সরকারকে বিবেচনায় রাখতে হবে।'
No comments