থমকে আছে মহাসড়ক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এমনিতেই ভাঙাচোরা, তার ওপর যত্রতত্র গরুর হাট, বাজার ও বাসস্ট্যান্ড ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ছে জেলা সড়কগুলোতেও। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর সড়কগুলো ছিল তুলনামূলক ফাঁকা। কিন্তু রাজধানী পেরোতেই গাড়ি আর গাড়ি। সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়েছে দীর্ঘ যানজট। সরেজমিন ঘুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিশাল অংশ প্রায় স্থবির দেখা গেছে।
এমনিতেই ভাঙাচোরা রাস্তা, তার ওপর যত্রতত্র গরুর হাট, বাজার আর বাসস্ট্যান্ড—এ সবকিছু গাড়ির গতি আরও থমকে দিয়েছে। চার ঘণ্টার পথ পার হতে লাগছে কমপক্ষে আট ঘণ্টা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টমচর গ্রামের আবু তাহের রাজধানীর মায়াকানন এলাকায় মেয়ের বাসায় আসছিলেন ঈদের বাজার নিয়ে। তিনি বলেন, ‘হজরের আজানের সময় লক্ষ্মীপুরেত্তন রওনা দিছি। অন মাগরিবের ওয়াক্ত, যাত্রাবাড়ী হার হইতারিনো।’ মেয়েকে একনজর দেখে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা ৭০ বছর বয়সী তাহেরের। কিন্তু রাস্তার অবস্থা দেখে ঈদের আগে আর বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছেন না তিনি।
জেলা সড়কও স্থবির: সায়েদাবাদ অতিক্রম করে গাড়িগুলো যাত্রাবাড়ীর দিকে যেতেই শুরু হয় ভাঙা সড়কের উৎপাত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাঙাচোরা অংশ গাড়ির গতি বারবার কমিয়ে দেয়। ঝাঁকুনি খেতে খেতে বাস কিছুদূর এগোলে সামনে কাঁচপুর সেতু। সেখানে যানজটে আটকা পড়ে ছিল বাসগুলো।
ঘণ্টা দুয়েক সময় নিয়ে কাঁচপুর সেতু পেরিয়েই যানজটের নতুন চেহারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশের জেলা সড়কগুলো থেকে গাড়ি এসে মহাসড়কে ঢুকতে গিয়ে নতুন বিপত্তি দেখা গেল। মহাসড়কে যানবাহন ঢুকতে না পেরে জেলা সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
মেঘনা সেতু ও দাউদকান্দি সেতুর টোল প্লাজার সামনেও গাড়ির দীর্ঘ সারি। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার আনারপুর, ভাটেরচর ও বালুয়াকান্দি এলাকায় মহাসড়ক আর জেলা সড়কের যানজট মিলেমিশে একাকার। ওই এলাকার অনেক বাস জেলা সড়ক থেকে মহাসড়কে উঠতে গিয়ে তৈরি করছিল বিশৃঙ্খল অবস্থা। হাইওয়ে পুলিশ ওই এলাকায় যানজট ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও বারবার ব্যর্থ হয়।
যাত্রীদের রাজধানী ছেড়ে যেতেই শুধু ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না। রাজধানীর দিকে আসার পথেও মহাসড়কে দেখা গেল চরম নৈরাজ্য। গজারিয়ার আনারপুর থেকে সোনারগাঁ পর্যন্ত রাস্তায় ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের দীর্ঘ সারি। রাজধানীতে প্রবেশের জন্য দিনের বেলাই এই যানগুলো মহাসড়ক দখল করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালী থেকে আসা বাস ও মাইক্রোবাসগুলো থেমে থাকা ট্রাকগুলো পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল।
ছয় স্থানে যানজট: হাইওয়ে পুলিশের বিবেচনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের প্রধান ছয়টি স্থান হচ্ছে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, শনির আখড়া হয়ে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, কুমিল্লার গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা ও সীতাকুণ্ড।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া অংশে গতকাল ভোর চারটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তীব্র যানজটে নাকাল হয়েছে ঈদে ঘরমুখী হাজার হাজার যাত্রী। অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়ে নারী ও শিশু যাত্রীরা।
সিলেটের উদ্দেশে রওনা হওয়া হানিফ পরিবহনের চালক রমজান মিয়ার বক্তব্য, ঢাকা থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ যেতে লাগে তিন থেকে চার ঘণ্টা। আর কাঁচপুর থেকে সিলেট ১৪০ কিলোমিটার যেতে লাগছে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট আরিফ হোসেন খান দীর্ঘ যানজটের বিষয়ে বলেন, মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়নি। কুমিল্লার গৌরীপুর অংশে ভাঙা ও সরু রাস্তার কারণে সৃষ্ট যানজটের প্রভাব পড়েছে ওই অংশে।
দাউদকান্দি প্রতিনিধি জানান, গতকাল ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চান্দিনা সদর থেকে মেঘনা সেতুর পূর্ব পাশ পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ যানজট ছিল।
নরসিংদী পৌরসভার মেয়র লোকমান হোসেনকে হত্যার ঘটনায় গত বুধবার সকাল থেকে নরসিংদীতে হরতাল চলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই সড়কে চলাচল করা গাড়িগুলো সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্যবহার শুরু করে। এতে বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কের ৪০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। এর রেশ ধরে শুক্রবার ভোর থেকে যানজট কুমিল্লার চান্দিনা সদর থেকে মেঘনা-গোমতী সেতু এলাকা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার এলাকায় অব্যাহত থাকে। আবার রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে দাউদকান্দি টোল প্লাজা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট ছিল।
ইউনিক পরিবহনের বাসযাত্রী ইবনেহার আক্তার জানান, চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে পাঁচ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে ১০ ঘণ্টা লেগেছে। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশিদ বলেন, গত বুধবার মাধাইয়া এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কারণে এক পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় এবং হরতালের কারণে সিলেট মহাসড়কের যানবাহন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্যবহার করায় যানবাহনের যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা এখনো কাটেনি।
সোনারগাঁ প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতু থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটারজুড়ে কাল যানজট আরও বেড়েছে। সকাল আটটা থেকে রাত পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি লক্ষ করা গেছে।
চট্টগ্রামগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী নাসিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর আসার পথে কমপক্ষে পাঁচটি স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট ও যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। এ ছাড়া কিছু কিছু যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি হওয়ার কারণেও যানজট বেশি হচ্ছে।
তবে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার বিশ্বাস আফজল হোসেন জানান, মহাসড়কে পুলিশের চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই। কারণ, পোশাকধারী পুলিশের পেছনে ক্যামেরা নিয়ে সাদা পোশাকের পুলিশ দায়িত্ব পালন করে।
জেলা সড়কও স্থবির: সায়েদাবাদ অতিক্রম করে গাড়িগুলো যাত্রাবাড়ীর দিকে যেতেই শুরু হয় ভাঙা সড়কের উৎপাত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাঙাচোরা অংশ গাড়ির গতি বারবার কমিয়ে দেয়। ঝাঁকুনি খেতে খেতে বাস কিছুদূর এগোলে সামনে কাঁচপুর সেতু। সেখানে যানজটে আটকা পড়ে ছিল বাসগুলো।
ঘণ্টা দুয়েক সময় নিয়ে কাঁচপুর সেতু পেরিয়েই যানজটের নতুন চেহারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশের জেলা সড়কগুলো থেকে গাড়ি এসে মহাসড়কে ঢুকতে গিয়ে নতুন বিপত্তি দেখা গেল। মহাসড়কে যানবাহন ঢুকতে না পেরে জেলা সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
মেঘনা সেতু ও দাউদকান্দি সেতুর টোল প্লাজার সামনেও গাড়ির দীর্ঘ সারি। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার আনারপুর, ভাটেরচর ও বালুয়াকান্দি এলাকায় মহাসড়ক আর জেলা সড়কের যানজট মিলেমিশে একাকার। ওই এলাকার অনেক বাস জেলা সড়ক থেকে মহাসড়কে উঠতে গিয়ে তৈরি করছিল বিশৃঙ্খল অবস্থা। হাইওয়ে পুলিশ ওই এলাকায় যানজট ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও বারবার ব্যর্থ হয়।
যাত্রীদের রাজধানী ছেড়ে যেতেই শুধু ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না। রাজধানীর দিকে আসার পথেও মহাসড়কে দেখা গেল চরম নৈরাজ্য। গজারিয়ার আনারপুর থেকে সোনারগাঁ পর্যন্ত রাস্তায় ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের দীর্ঘ সারি। রাজধানীতে প্রবেশের জন্য দিনের বেলাই এই যানগুলো মহাসড়ক দখল করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালী থেকে আসা বাস ও মাইক্রোবাসগুলো থেমে থাকা ট্রাকগুলো পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল।
ছয় স্থানে যানজট: হাইওয়ে পুলিশের বিবেচনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের প্রধান ছয়টি স্থান হচ্ছে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, শনির আখড়া হয়ে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, কুমিল্লার গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা ও সীতাকুণ্ড।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া অংশে গতকাল ভোর চারটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তীব্র যানজটে নাকাল হয়েছে ঈদে ঘরমুখী হাজার হাজার যাত্রী। অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়ে নারী ও শিশু যাত্রীরা।
সিলেটের উদ্দেশে রওনা হওয়া হানিফ পরিবহনের চালক রমজান মিয়ার বক্তব্য, ঢাকা থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ যেতে লাগে তিন থেকে চার ঘণ্টা। আর কাঁচপুর থেকে সিলেট ১৪০ কিলোমিটার যেতে লাগছে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট আরিফ হোসেন খান দীর্ঘ যানজটের বিষয়ে বলেন, মহাসড়কের গজারিয়া অংশের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়নি। কুমিল্লার গৌরীপুর অংশে ভাঙা ও সরু রাস্তার কারণে সৃষ্ট যানজটের প্রভাব পড়েছে ওই অংশে।
দাউদকান্দি প্রতিনিধি জানান, গতকাল ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চান্দিনা সদর থেকে মেঘনা সেতুর পূর্ব পাশ পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার এলাকায় ভয়াবহ যানজট ছিল।
নরসিংদী পৌরসভার মেয়র লোকমান হোসেনকে হত্যার ঘটনায় গত বুধবার সকাল থেকে নরসিংদীতে হরতাল চলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই সড়কে চলাচল করা গাড়িগুলো সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্যবহার শুরু করে। এতে বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কের ৪০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। এর রেশ ধরে শুক্রবার ভোর থেকে যানজট কুমিল্লার চান্দিনা সদর থেকে মেঘনা-গোমতী সেতু এলাকা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার এলাকায় অব্যাহত থাকে। আবার রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে দাউদকান্দি টোল প্লাজা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট ছিল।
ইউনিক পরিবহনের বাসযাত্রী ইবনেহার আক্তার জানান, চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে পাঁচ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে ১০ ঘণ্টা লেগেছে। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশিদ বলেন, গত বুধবার মাধাইয়া এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কারণে এক পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় এবং হরতালের কারণে সিলেট মহাসড়কের যানবাহন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্যবহার করায় যানবাহনের যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা এখনো কাটেনি।
সোনারগাঁ প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতু থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটারজুড়ে কাল যানজট আরও বেড়েছে। সকাল আটটা থেকে রাত পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি লক্ষ করা গেছে।
চট্টগ্রামগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী নাসিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর আসার পথে কমপক্ষে পাঁচটি স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট ও যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। এ ছাড়া কিছু কিছু যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি হওয়ার কারণেও যানজট বেশি হচ্ছে।
তবে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার বিশ্বাস আফজল হোসেন জানান, মহাসড়কে পুলিশের চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই। কারণ, পোশাকধারী পুলিশের পেছনে ক্যামেরা নিয়ে সাদা পোশাকের পুলিশ দায়িত্ব পালন করে।
No comments