অপহরণের পর নৃশংসভাবে শিশু হত্যা by রেজওয়ান আহমদ
অপহরণকারীদের
চিনে ফেলায় শেষ পর্যন্ত মুক্তিপণ না নিয়েই নির্মমভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা
হয়েছে সিলেটের ৯ বছরের শিশু আবু সাঈদকে। শনিবার রাত ১১টায় নগরীর কুমারপাড়া
এলাকায় এক পুলিশ কনস্টেবলের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার বস্তাবন্দি
লাশ। এ ঘটনায় কনস্টেবল এবাদুর রহমানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাঈদ
শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। সে নগরীর
দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪নং বাসার মতিন মিয়ার ছেলে। বুধবার স্কুল থেকে ফেরার
পথে তাকে অপহরণ করা হয়। এরপর তার বাবা ও মামার কাছে ফোনে ৫ লাখ টাকা
মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
সাঈদকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন কনস্টেবল এবাদুর। তিনি রোববার বিকালে সিলেট মহানগর হাকিম আদালত-১-এর বিচারক শাহেদুল করিমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, এবাদুর, গেদা ও আবদুর রকিব এই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের হোতা। তারা সবকিছু স্বীকার করেছে। এ ছাড়া অপহরণের সময় তাদের সঙ্গে আরও দু’জন ছিল বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে একজন মুহিবুল ইসলাম মাসুম আওয়ামী ওলামা লীগের নেতা। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মো. রহমত উল্লাহ আরও জানান, এবাদুর ও গেদা একসময় সাঈদদের বাসার পাশেই থাকত। সাঈদ তাদের মামা বলে ডাকত। অপহরণের পর এবাদুর ও গেদা মুক্তিপণ নিয়ে সাঈদকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সাঈদকে ছেড়ে দিলে সে তাদের পরিচয় ফাঁস করে দেবে, এ ভয়ে তাকে হত্যা করা হয়। বুধবার অপহরণের পরদিনই সাঈদকে হত্যা করা হয় বলে ঘাতকরা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেছেন সাঈদের বাবা আবদুল মতিন। শিশু অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কনস্টেবল এবাদুর রহমানকে (নং ৯৩৯) বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির সদস্যরা রাতেই ঘটনাস্থল থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করেন। সিআইডির পরিদর্শক শামীমুর রহমান জানান, একটি পাটের ও ৬টি প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ানো ছিল সাঈদের মরদেহ। শিশুটির গলায় প্রায় দুই হাত লম্বা একটি রশি লাগানো ছিল। গলায় রশির দাগ মিলেছে। শিশুটির গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন। শনিবার রাত দেড়টার দিকে সাঈদের মরদেহ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
রোববার ময়নাতদন্ত শেষে সাঈদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। লাশ বাসায় নেয়া হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তার মা বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। তাকে সান্ত্বনা জানাতে গিয়ে অনেকেই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। রোববারই সাঈদের মরদেহ দাফনের জন্য সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাসিলা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাদ আসর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সাঈদ দ্বিতীয়। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাসিলায়। সাঈদকে অপহরণের পর তার বাবা ও মামার কাছে ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন মামা জয়নাল আবেদীন। তিনি জানান, অপহরণের পর তাকে ও সাঈদের বাবাকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পাঁচ লাখ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা দুই লাখ টাকা দাবি করে। বৃহস্পতিবার রাতে টাকা নিয়ে তাদের শাহজালাল (রহ.) দরগায় যেতে বলে অপহরণকারীরা। দরগায় যাওয়ার পর অপহরণকারীরা আবার ফোন করে এয়ারপোর্ট সড়কের বাইশটিলা এলাকায় যেতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর পুলিশ ও র্যাবকে কেন বিষয়টি জানানো হল তার জন্য অপহরণকারীরা ফোনেই ক্ষোভ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে তারা সাঈদকে খুন করার হুমকি দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। সাঈদের বড় মামা আশরাফুজ্জামান আজিম জানান, গত শুক্রবার কনস্টেবল এবাদুরের সঙ্গে তার দেখা হয়। এ সময় তিনি সাঈদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেন এবং তাকে উদ্ধারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। কিন্তু এবাদুরের বিষয়ে সন্দেহ জাগায় পুলিশ তার মোবাইল ফোন কল ট্র্যাক করতে শুরু করে। আর এভাবেই অপহরণকারীদের শনাক্ত করা হয়। পুলিশ জানায়, যে মোবাইল ফোন দিয়ে সাঈদের বাবা ও মামার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, সেটি ট্র্যাক করে জানা যায়, একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করছে অপহরণকারীরা। পরে অপহরণকারীদের মোবাইল সেট ট্র্যাক করে তাদের শনাক্ত করে পুলিশ। উদ্ধার অভিযানে নামা পুলিশের টিম নগরীর আম্বরখানায় একটি মোবাইল ফোনের দোকানে অভিযান চালায়। ওই দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, বুধবার বিকালে মোবাইল সেটটি কেনেন বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল এবাদুর। পরে শনিবার সন্ধ্যায় কনস্টেবল এবাদুরকে কোতোয়ালি থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ঘটনাটি অস্বীকার করেন। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি অপরাধ স্বীকার করেন। এবাদুর জানান, সাঈদ তার বাসায় আছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের একটি দল এবাদুরের বাসার দিকে রওনা হয়। পথে এবাদুর পুলিশকে জানায় সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ তার কুমারপাড়া ঝেরঝেরি পাড়ার সবুজ ৩৭নং বাসার একটি কক্ষ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় সাঈদের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় এবাদুরের স্ত্রী সিনথিয়া নির্ঝর তানিয়া বাসায় ছিলেন। তিনি কুমারপাড়ার স্বপ্নঝাড়া বিউটি পার্লার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। এবাদুরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত র্যাবের কথিত সোর্স গেদা মিয়া ও জেলা ওলামা লীগ নেতা আবদুর রকিবকে গ্রেফতার করা হয়।
সাঈদকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন কনস্টেবল এবাদুর। তিনি রোববার বিকালে সিলেট মহানগর হাকিম আদালত-১-এর বিচারক শাহেদুল করিমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, এবাদুর, গেদা ও আবদুর রকিব এই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের হোতা। তারা সবকিছু স্বীকার করেছে। এ ছাড়া অপহরণের সময় তাদের সঙ্গে আরও দু’জন ছিল বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে একজন মুহিবুল ইসলাম মাসুম আওয়ামী ওলামা লীগের নেতা। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মো. রহমত উল্লাহ আরও জানান, এবাদুর ও গেদা একসময় সাঈদদের বাসার পাশেই থাকত। সাঈদ তাদের মামা বলে ডাকত। অপহরণের পর এবাদুর ও গেদা মুক্তিপণ নিয়ে সাঈদকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সাঈদকে ছেড়ে দিলে সে তাদের পরিচয় ফাঁস করে দেবে, এ ভয়ে তাকে হত্যা করা হয়। বুধবার অপহরণের পরদিনই সাঈদকে হত্যা করা হয় বলে ঘাতকরা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেছেন সাঈদের বাবা আবদুল মতিন। শিশু অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কনস্টেবল এবাদুর রহমানকে (নং ৯৩৯) বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির সদস্যরা রাতেই ঘটনাস্থল থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করেন। সিআইডির পরিদর্শক শামীমুর রহমান জানান, একটি পাটের ও ৬টি প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ানো ছিল সাঈদের মরদেহ। শিশুটির গলায় প্রায় দুই হাত লম্বা একটি রশি লাগানো ছিল। গলায় রশির দাগ মিলেছে। শিশুটির গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন। শনিবার রাত দেড়টার দিকে সাঈদের মরদেহ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
রোববার ময়নাতদন্ত শেষে সাঈদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। লাশ বাসায় নেয়া হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তার মা বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। তাকে সান্ত্বনা জানাতে গিয়ে অনেকেই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। রোববারই সাঈদের মরদেহ দাফনের জন্য সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাসিলা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাদ আসর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সাঈদ দ্বিতীয়। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাসিলায়। সাঈদকে অপহরণের পর তার বাবা ও মামার কাছে ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন মামা জয়নাল আবেদীন। তিনি জানান, অপহরণের পর তাকে ও সাঈদের বাবাকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পাঁচ লাখ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা দুই লাখ টাকা দাবি করে। বৃহস্পতিবার রাতে টাকা নিয়ে তাদের শাহজালাল (রহ.) দরগায় যেতে বলে অপহরণকারীরা। দরগায় যাওয়ার পর অপহরণকারীরা আবার ফোন করে এয়ারপোর্ট সড়কের বাইশটিলা এলাকায় যেতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর পুলিশ ও র্যাবকে কেন বিষয়টি জানানো হল তার জন্য অপহরণকারীরা ফোনেই ক্ষোভ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে তারা সাঈদকে খুন করার হুমকি দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। সাঈদের বড় মামা আশরাফুজ্জামান আজিম জানান, গত শুক্রবার কনস্টেবল এবাদুরের সঙ্গে তার দেখা হয়। এ সময় তিনি সাঈদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেন এবং তাকে উদ্ধারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। কিন্তু এবাদুরের বিষয়ে সন্দেহ জাগায় পুলিশ তার মোবাইল ফোন কল ট্র্যাক করতে শুরু করে। আর এভাবেই অপহরণকারীদের শনাক্ত করা হয়। পুলিশ জানায়, যে মোবাইল ফোন দিয়ে সাঈদের বাবা ও মামার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, সেটি ট্র্যাক করে জানা যায়, একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করছে অপহরণকারীরা। পরে অপহরণকারীদের মোবাইল সেট ট্র্যাক করে তাদের শনাক্ত করে পুলিশ। উদ্ধার অভিযানে নামা পুলিশের টিম নগরীর আম্বরখানায় একটি মোবাইল ফোনের দোকানে অভিযান চালায়। ওই দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, বুধবার বিকালে মোবাইল সেটটি কেনেন বিমানবন্দর থানার কনস্টেবল এবাদুর। পরে শনিবার সন্ধ্যায় কনস্টেবল এবাদুরকে কোতোয়ালি থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ঘটনাটি অস্বীকার করেন। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি অপরাধ স্বীকার করেন। এবাদুর জানান, সাঈদ তার বাসায় আছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের একটি দল এবাদুরের বাসার দিকে রওনা হয়। পথে এবাদুর পুলিশকে জানায় সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ তার কুমারপাড়া ঝেরঝেরি পাড়ার সবুজ ৩৭নং বাসার একটি কক্ষ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় সাঈদের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় এবাদুরের স্ত্রী সিনথিয়া নির্ঝর তানিয়া বাসায় ছিলেন। তিনি কুমারপাড়ার স্বপ্নঝাড়া বিউটি পার্লার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। এবাদুরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত র্যাবের কথিত সোর্স গেদা মিয়া ও জেলা ওলামা লীগ নেতা আবদুর রকিবকে গ্রেফতার করা হয়।
No comments