‘মায়ের কোলে সব আবর্জনা কেন?’

সিলেটে গতকাল ‘আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস’ উপলক্ষে সুরমা নদীকে
দূষণমুক্ত রাখতে আবর্জনামুক্ত অভিযানের আয়োজন করা হয়। এ অভিযানের
আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও কয়েকটি পরিবেশবাদী
সংগঠন। ছবিটি সুরমা নদীর চাঁদনীঘাট এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো
নদীতীরে একটি মঞ্চ। আশপাশে সাঁটানো কয়েকটি ফেস্টুন। মঞ্চ থেকে একটি প্রশ্ন ঘোষণা আকারে প্রচার করা হয়, ‘নদী মাতা যার, তাকে বলে নদীমাতৃক। নদীকে তাই মায়ের মতো মানতে হবে। তাহলে মায়ের কোলে সব আবর্জনা কেন?’ এমন প্রশ্নের উত্তর দিতেই যেন চলল প্রায় আড়াই ঘণ্টার এক কর্মযজ্ঞ। হাতের কাছে যত ধরনের আবর্জনা পাওয়া গেছে, তা তুলে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে পরে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণ দলের কাছে পৌঁছানো হয়। গতকাল শনিবার এভাবেই সুরমা নদীর সিলেট নগরের চাঁদনীঘাট এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উদ্যাপন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনসহ (বাপা) সিলেটের কয়েকটি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন।
আয়োজকেরা জানান, সিলেট নগরের যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সুরমা নদীতে দূষণের মাত্রা বেশি দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসে তাই নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত রাখার সচেতনতায় বাপার আহ্বানে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রোটারি ক্লাব, সুরমা রিভার কিপার ও সুরমাপারের সামাজিক সংগঠন জালালাবাদ সূর্যমুখী যুব সংঘের সদস্যরা গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় নদীতীরে জড়ো হয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির সূচনা করেন।
কর্মসূচির শুরুতে নদীতীরের মঞ্চ থেকে নদী রক্ষার সচেতনতায় নানা ধরনের প্রচারণা চালানো হয়। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব এবং বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিমের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পরই শতাধিক তরুণ-তরুণী অংশ নেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে। সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্য শাখার ১৫ জন শ্রমিক তাঁদের সহায়তা করেন। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলে এ কাজ।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুধু সুরমাতীরের চাঁদনীঘাটে হওয়ার কথা ছিল। অবশ্য তরুণদের উৎসাহে চাঁদনীঘাট থেকে কোতোয়ালি থানা এবং সিলেট সার্কিট হাউসের সামনে নদীতীরও আবর্জনামুক্ত করা হয়। সিটি করপোরেশনের বর্জ্য শাখা সূত্র জানায়, নদীতীর থেকে সংগ্রহ করা আবর্জনা তিনটি ট্রাকে অপসারণ করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.