মসজিদ ধর্মীয় স্থান নয়, চাইলেই গুঁড়িয়ে দেয়া যায় : বিজেপি নেতা
মসজিদ কোনো ধর্মীয় স্থানই নয়, তাই ইচ্ছা হলে গুঁড়িয়ে দেয়াই যায়! এমন অদ্ভুত মন্তব্য করছেন বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী। তার এ মন্তব্যের জেরে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। আসামে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে ফৌজদারি আইনে মামলা। তবে এতেও নিজের ভুল স্বীকার করতে রাজি নন সুব্রামানিয়াম স্বামী। তার দাবি, তার বক্তব্যের সপক্ষে তার কাছে নাকি প্রমাণও আছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানান, শুক্রবার রাতে গুয়াহাটিতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে এই বিজেপি নেতা বলেন, ‘মসজিদ ও গির্জা মোটেও কোনো ধর্মস্থান নয়। এটা সাধারণ একটা ভবন মাত্র। যে কোনো সময় চাইলেই মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া যায়। আমার সঙ্গে কেউ সহমত না হলে আমি বিতর্কে যেতে রাজি।’ তিনি বলেন, সৌদি আরবের মানুষদের কাছ থেকে এ তথ্য আমি পেয়েছি।’ ওই দিন আরেকটি অনুষ্ঠানে বিজেপির এই নেতা হিন্দুবাদী সংগঠন আরএসএসের সঙ্গে সুর মিলিয়ে দাবি করেন সব ভারতীয় মুসলমান আদতে হিন্দু। বিজেপি নেতার এ মন্তব্যের বিরুদ্ধে শনিবার গোটা আসামজুড়েই একাধিক সংগঠন বিক্ষোভ করেছে। রাস্তায় দাহ করা হয় সুব্রামানিয়াম স্বামীর কুশপুত্তলিকা।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ (বি) ও ১৫৩ (এ) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস)। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। কেএমএসএসের সভাপতি অখিল গগৌর অভিযোগ, ‘বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বিজেপি এ রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে স্বামীর এ বিতর্ক সেই ষড়যন্ত্রের অংশমাত্র। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আসাম সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি এ রাজ্যে তার প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।’ আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও স্বামী ও বিজেপির সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আসামের অনুভূতির ওপর এ ধরনের আঘাত হানার অনেক মূল্য দিতে হবে বিজেপিকে।’ এদিকে, বিতর্কিত মন্তব্যের আসামের রাজ্য বিজেপিও সুব্রামানিয়ামের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘এ মন্তব্য স্বামীর ব্যক্তিগত, এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে এই বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে চিঠি লিখব।’
No comments