দাবি একটাই, দেশে মোরা শান্তি চাই by বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
গত সোমবার পিতাকে পুত্র ১০০ পর্ব শেষ হয়েছে। নিজের কাছেও কেমন খালি খালি লাগছে। এর মধ্যেই কিছু পাঠক জিজ্ঞেস করেছে, নয়া দিগন্তে কি লেখা শেষ করলেন? এখনো তেমনটা ভাবছি না। আর বেশি দিন লিখতে পারব কি না জানি না। আজ ১৩ দিন মতিঝিলের ফুটপাথে পড়ে আছি। দাবি খুব বেশি কিছু না, দেশের এই ভয়াবহ দুরবস্থার প্রতিকারে প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসুন। সরাসরি বেগম খালেদা জিয়ার সাথেই আলোচনায় বসতে হবেÑ তেমন বলছি না; সমস্যা সমাধানে যার সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন তার সাথেই করুন। মানুষের জানমাল হেফাজতের পদপে নিন। কোনো রাজনৈতিক সমস্যা লাঠিসোটা, কামান-বন্দুক দিয়ে অতীতে সমাধান হয়নি; এখনো হবে নাÑ আমার সারা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্বাস রেখে বলতে পারি। আর কেউ আমায় জোর করে কোনো কিছু বিশ্বাস করাতে পারবে জীবনের শেষ দিকে এসে, এটা মনে হয় না। কড়কড়ে বাস্তবের সামনে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। এক মাসের ওপর অবরোধÑ এভাবে এত সময় দেশের গলা টিপে রাখলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাবে, তাতে সমস্ত জাতি এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। বেগম খালেদা জিয়ার স্বামী জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে একজন প্রথম কাতারের বীরসেনানি। যে যত গালাগাল করুন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে তার অবস্থান সূর্যের কাছাকাছি আলোকময়। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে কলুষিত বা কলঙ্কিত করা মানে মুক্তিযুদ্ধকেই খাটো করার শামিল। যেমনÑ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা বা অবদানকে অস্বীকার করা স্বীকৃতিহীন সন্তানের জন্মের মতো বেদনাদায়ক। জীবনের শেষ দিকে এসে এমন কড়কড়ে বাস্তব সত্যকে উপলব্ধি করে অবাক হচ্ছি। বঙ্গবন্ধু মনে করেছিলেন, কোনো বাঙালি তার বুকে গুলি চালাতে পারবে না। ষড়যন্ত্র যে তার বিরুদ্ধে হচ্ছিল, এটা তিনি জানতেন এবং মানতেন। কিন্তু তার বিশ্বাস ছিল তাকে হত্যা করতে বাঙালি, বাংলা ভাষাভাষীর বাইরে কাউকে লাগবে; কিন্তু বাস্তবে তা লাগেনি। আমিও অনেক েেত্র হোঁচট খাই, বিদ্যাবুদ্ধি তেমন নেই, তাই যেখানে যখন যা দেখি তা থেকেই শেখার চেষ্টা করি। মতিঝিলের ফুটপাথে শীতের রাতে এভাবে পড়ে না থাকলে আমিও কি এত কিছু বুঝতে পারতাম। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম। হানাদারদের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনা অস্ত্র কারো কোনো অনুমতি না নিয়ে পিতার আহ্বানে পায়ের সামনে বিছিয়ে দিয়ে কাঙাল হয়েছিলাম। প্রতি পদে পদে নির্যাতন, বঞ্চনা আর বঞ্চনা। সে যে কী চরিত্র হনন, যে জ্ঞানবুদ্ধি আছে তাতে তেমন বোঝার মতা ছিল না। তার পরও বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সব কিছু ছেড়ে-ছুড়ে এক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলাম। কেন যেন বলেছিলাম, খুনিরা কামাল, জামাল, রাসেলকে হত্যা করতে পারলেও বঙ্গবন্ধুকে নির্বংশ করতে পারেনি। আমি তার চতুর্থ সন্তান। পিতৃহত্যার বদলা আমরা নেবোই নেবো। আমরা ওই সময় প্রতিরোধ গড়ে না তুললে আজকের আওয়ামী লীগ কবরে থাকত। প্রধানমন্ত্রী নিরাপদে দেশে ফিরতে পারতেন না। কিন্তু আমাদের কষ্টের কোনো মূল্য হয়নি। আমাদের কষ্টই যে তার দাঁড়ানোর ভিত রচনা করেছে, তা তারা আজ আর মনে করতে পারেন না। আজ স্তাবকের মাঝে বসে অনেক আওয়ামী নেতার আমাদের পথের কাঁটা মনে হতেই পারে। অত বড় সংগ্রাম করে এরশাদকে হটিয়েও ’৯১ সালে আওয়ামী লীগ মতায় যেতে পারেনি। সকালে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে বিকেলে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে মোহাম্মদ নাসিমের সভায় অংশ নিয়ে পরদিন পিরোজপুরের পাড়েরহাট সভা করেছি। সেই রাতেই ৩টায় টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে মাওয়ায় এসে সূর্য দেখেছি। জানি, আজ সেসবের কোনো মূল্য বা সম্মান নেই। কিন্তু তার পরও তো কিছু সীমা থাকে। সীমা লঙ্ঘনকারীকে দয়াময় প্রভু পছন্দ করেন না। আজ ১৩ দিন ফুটপাথে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি হিসেবে নয়, একজন রাজনীতিবিদ হিসেবেও নয়; একেবারে নির্ভেজাল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অবস্থান নিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার আমলে একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধার নিরাপদে রাস্তায় থাকার সুযোগ থাকবে না, তা কোনো দিন ভাবতে পারিনি। অনেকেই বলতেন, আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের সবার কাছে প্রিয়। আমরা আপনার রাজনীতি না করলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনাকে মাথায় রাখি। কোথায় সে সম্মান? কত বড়গলা করে কত লোক বলছে, শান্তিপূর্ণ রাজনীতিকে আমরা সহায়তা করব। এর চাইতে শান্তিপূর্ণ রাজনীতি বাংলাদেশে অতীতে হয়েছে? আর কখনো হবে? টুঙ্গীপাড়ার আওয়ামী লীগ নেতা শেখ লায়েক আলী বিশ্বাসের ছেলে মতিঝিলের ওসি একেবারে জল্লাদ তস্করের মতো এসে কতবার আমার বাঁশ-কাঠ নিয়ে গেছে, বাতাস ফেরানোর জন্য চটের বেড়া সন্তর্পণে চোরের মতো খুলে নিয়েছে। পুলিশের কাজ চোর ধরা। এখানে দেখছি চোরকে সহায়তা করতে পুলিশি পাহারাÑ এ কেমন দেশ? সভ্য সমাজে আমরা মুখ দেখাতে পারব? স্বাধীনতার পর থেকে একজন গরিব মানুষ লাল মিয়া, সব সময় যার দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস, খুবই অসুস্থ। তাকে মিথ্যে বলে দূরে নিয়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে পরদিন চালান করে দিয়েছে। অভিযোগÑ বাংলার বাণীর সামনে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করা এবং ভালোভাবে কথাবার্তা না বলায় তাকে চালান করা হলোÑ এটা কোন ইনসাফ? গরিব মানুষ ভালোভাবে কিছু বলতে না পারলেই তাকে কারাগারে যেতে হবে? আর যা লেখা হয়েছে তা তো মোটেই সত্য নয়। লাল মিয়া একেবারেই নির্বিবাদী মানুষ। এই ৪৫ বছরে তাকে কোনো দিন ডিউটিতে অনুপস্থিত দেখিনি, কারো সাথে কটুকথা বলেনি। সে জানেই না কটুকথা কাকে বলে। আল্লাহর নিয়ামত কুশিমনি আমাদের বুকে এসে যেমন কাঁদতে শেখেনি, তেমনি লাল মিয়া শক্ত বলতে পারে না। সত্যিই এসব করে লাভ কী? এখানে বসার আগে আমার বিশ্বাস ছিল, যতণ জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আছেন ততণ অন্তত রাতের বেলায় আমাকে বিরক্ত করা হবে না। কিন্তু তাই যখন হচ্ছে তখন মনে তো প্রশ্ন জাগেই, যদিও কোনো উত্তর খুঁজে পাই না। ১৬ বছর নির্বাসনে কাটিয়ে ’৯০-এর ১৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরেছিলাম, বিমানবন্দরে লাখ লাখ লোক হয়েছিল। বেশি দিন বাইরে থাকতে পারিনি। দেশের অনেক চোর-ডাকাতও যখন মুক্ত তখন ১৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সকালের দিকে যখন শত শত পুলিশ গ্রেফতার করতে আসে, তখন তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, দেশে সরকার আছে নাকি সামরিক শাসন জারি হয়েছে? তারা বলেছিলেন, সরকার আছে। তাদের বলেছিলাম, আমাকে গ্রেফতার করতে হলে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিতে হবে। এখানকার এসপি অথবা ওসিকে আনতে হবে। তাদের আমি চিনি না। তাই আমি যাদের চিনি সেই দলীয় লোকদের আনতে হবে। তারা যখন স্বীকৃতি দেবে যে ইনি ঝিনাইদহের এসপি, ইনি ওসি। তারা বলবেন আপনারা সরকারি লোক তখন অবশ্যই আমাকে গ্রেফতার করতে পারবেন। ঠিক তেমনি সত্যিই যদি পুলিশ আমাদের কোনো জিনিসপত্র জব্দ করতে ইচ্ছে করে আইনানুগভাবে জিনিসপত্র নিয়ে সিজার লিস্ট দিতে পারতেন। মোটেই কোনো চোরের মতো আচরণ করতেন না। বড় খারাপ লাগে, বড় বিস্ময় লাগে।
আজ যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন, আর যদি এমন ঘটনা ঘটত, কোনো দাবি নিয়ে রাস্তায় এভাবে বসতাম, নিশ্চয়ই তিনি বলতেন, আমার কাদের দাবি করেছে আলোচনা করতে। ঠিক আছে ও আমাকে প্রথম অস্ত্র দিয়েছে। দেখি ও কী বলে। বঙ্গবন্ধু যে দিন টাঙ্গাইলে গিয়েছিলেন, সে দিন টাঙ্গাইল পার্ক ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের জনসভায় বলেছিলেন, কাদের পল্টনে চারজনকে গুলি করে শাস্তি দিয়েছে। যারা লুটতরাজ করে, যারা হত্যা করে তাদের আরো এক হাজার জনকে ও যদি শাস্তি দিত তাহলেও আমার ধন্যবাদ পেত। এত মর্যাদা দিতেন বলেই তো তার পায়ের সামনে সমস্ত অস্ত্র বিছিয়ে দিয়েছিলাম। জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে তিনিও বলতেন কাদের ভাই বলেছেন তার সম্মানে অবরোধ স্থগিত করি। আজ কে শোনে কার কথা? একসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভীষণ যতœ করেছেন। বাইরের বাতাস লাগলে কষ্ট হয়, তার জন্য হাতমোজা, মাফলার থাকার পরও কিনে দিতেন। তার বাড়িতে গেলে কতবার চুন তেল গরম করে দিয়েছেন। ’৯১-এর নির্বাচনের পরে রংপুরের হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেড়ে দেয়া আসনে উপনির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে প্রচারে গিয়েছিলাম। একটানা বেশ কয়েক দিন ছিলাম। রংপুর সার্কিট হাউজের ওপরতলায় ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, সোজাসুজি নিচে জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিরোধী দলের নেত্রীকে খাবার দাওয়াত করেছিলেন। মোসাদ্দেক আলী ফালু প্রধানমন্ত্রীর সাথে খাবারের কথা বলছিলেন, তখন জননেত্রী মোসাদ্দেক আলী ফালুকে বলেছিলেন, বজ্র নির্বাচনী সভায় বাইরে আছে। ও আসার আগে আমি খাবো না। বজ্র কে ফালু জানত না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও জানতেন না। জননেত্রীর শ্বশুরের নাম আবদুল কাদের মিয়া, তাই তিনি আমায় কাদের নামে না ডেকে বজ্র নামে ডাকেন। সে দিনই হয়তো তারা প্রথম জেনেছিলেন আমার নাম বজ্র, যা প্রকৃতিতে আকাশ থেকে পড়ে। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে শীতের রাতে তার অজান্তে প্রতিদিন পুলিশ আমার আশ্রয় ভেঙে দিচ্ছে এটা বিশ্বাস করতে মন সায় দেয় না। সর্বশেষ বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের চেয়েও বড় আশ্চর্য, শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ আদায় করতে গেলে মতিঝিল থানার পুলিশ আমার পায়খানার চটের বেড়াসহ সব কিছু নিয়ে গেছে। হুজুর মওলানা ভাসানীর কাছে বসলে তিনি বলতেন মুসলিম লীগের চোরেরা আমার পেসাব পায়খানার বদনা চুরি করেছে। ভারত পাকিস্তান বিভক্তির পর পর দাঙ্গাকবলিত নোয়াখালীতে মহাত্মা গান্ধীর ছাগল চুরি করে খেয়ে ফেলেছিল। এবার দেখছি আমার চকি-চৌকাঠ, বিছানাপত্র, এমনকি পায়খানার বেড়ার চট চুরি করছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাস্তায় বসে এসব আচরণে মর্মাহত না হয়ে পারি না। কিন্তু এত সবের পরেও যদি নেতা-নেত্রীদের চৈতন্যোদয় হয়, দেশে শান্তি আসে, তাতেই আমার শান্তি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তায় অবস্থানে থাকায় সেখানে যেতে পারিনি। দলের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানটিকে মতিঝিলের ফুটপাথেই নিয়ে এসেছিল, অভাবনীয় লোক সমাগম হয়েছিল। তাতে প্রধান অতিথি হিসেবে জগদ্বিখ্যাত চিকিৎসক সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী উপস্থিত হয়েছিলেন। বিশেষ অতিথি মানবতার শ্রেষ্ঠসেবক ডাক্তারকুলের গর্ব জাফরুল্লা চৌধুরী ও আমার প্রিয়তম ভাতিজা সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার উপস্থিত ছিলেন। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও যে তারা উপস্থিত হবেন তা ভাবতে পারিনি। এর আগে যারা সংহতি প্রকাশ করতে এসেছিলেন তাদের কাউকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া সংহতি জানাতে তার দলের দুই নেতা সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজাম ও নাজিম উদ্দিনকে পাঠিয়েছিলেন। সব শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লোকজন আসতে প্রতিনিয়ত বাধা দেয়া হচ্ছে। তারপরও জনতার বিপুল উৎসাহ আমাদের যারপরনাই উৎসাহিত করেছে। আমার ৩২ বছরের ছায়াসঙ্গী, ব্যক্তিগত সচিব ফরিদ আহমেদ, কম্পিউটার অপারেটর আলমগীর হোসেন, ছাত্রনেতা কাওসার জামান খান, যুবনেতা আবদুর রাজ্জাক, টিপু সুলতান ও রোকনকে গ্রেফতার করে জেলে পোরা হয়েছে। এসব আলামত দেখে কী বুঝব? শান্তিপূর্ণভাবে শান্তির জন্য আন্দোলন করলেও মতাবানদের আপত্তি বড়ই বেদনাদায়ক।
রাস্তার পাশে বসে ভাবা যায় না, লেখা যায় না। বঙ্গবন্ধুকে উপল করে দুই বছর ‘পিতাকে পুত্র’ লিখেছি। বলেছিলাম ভাই-বোন, চাচা-চাচীকে নিয়ে আগামীতে ভাববো। অবস্থানে আছি, দয়াময় প্রভু যদি শান্তি দেন, নিশ্চয় সে দিকে এগোবো।
গত সোমবার পিতাকে পুত্র ১০০ পর্ব শেষ হয়েছে। নিজের কাছেও কেমন খালি খালি লাগছে। এর মধ্যেই কিছু পাঠক জিজ্ঞেস করেছে, নয়া দিগন্তে কি লেখা শেষ করলেন? এখনো তেমনটা ভাবছি না। আর বেশি দিন লিখতে পারব কি না জানি না। আজ ১৩ দিন মতিঝিলের ফুটপাথে পড়ে আছি। দাবি খুব বেশি কিছু না, দেশের এই ভয়াবহ দুরবস্থার প্রতিকারে প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসুন। সরাসরি বেগম খালেদা জিয়ার সাথেই আলোচনায় বসতে হবেÑ তেমন বলছি না; সমস্যা সমাধানে যার সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন তার সাথেই করুন। মানুষের জানমাল হেফাজতের পদপে নিন। কোনো রাজনৈতিক সমস্যা লাঠিসোটা, কামান-বন্দুক দিয়ে অতীতে সমাধান হয়নি; এখনো হবে নাÑ আমার সারা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্বাস রেখে বলতে পারি। আর কেউ আমায় জোর করে কোনো কিছু বিশ্বাস করাতে পারবে জীবনের শেষ দিকে এসে, এটা মনে হয় না। কড়কড়ে বাস্তবের সামনে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। এক মাসের ওপর অবরোধÑ এভাবে এত সময় দেশের গলা টিপে রাখলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাবে, তাতে সমস্ত জাতি এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। বেগম খালেদা জিয়ার স্বামী জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে একজন প্রথম কাতারের বীরসেনানি। যে যত গালাগাল করুন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে তার অবস্থান সূর্যের কাছাকাছি আলোকময়। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে কলুষিত বা কলঙ্কিত করা মানে মুক্তিযুদ্ধকেই খাটো করার শামিল। যেমনÑ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা বা অবদানকে অস্বীকার করা স্বীকৃতিহীন সন্তানের জন্মের মতো বেদনাদায়ক। জীবনের শেষ দিকে এসে এমন কড়কড়ে বাস্তব সত্যকে উপলব্ধি করে অবাক হচ্ছি। বঙ্গবন্ধু মনে করেছিলেন, কোনো বাঙালি তার বুকে গুলি চালাতে পারবে না। ষড়যন্ত্র যে তার বিরুদ্ধে হচ্ছিল, এটা তিনি জানতেন এবং মানতেন। কিন্তু তার বিশ্বাস ছিল তাকে হত্যা করতে বাঙালি, বাংলা ভাষাভাষীর বাইরে কাউকে লাগবে; কিন্তু বাস্তবে তা লাগেনি। আমিও অনেক েেত্র হোঁচট খাই, বিদ্যাবুদ্ধি তেমন নেই, তাই যেখানে যখন যা দেখি তা থেকেই শেখার চেষ্টা করি। মতিঝিলের ফুটপাথে শীতের রাতে এভাবে পড়ে না থাকলে আমিও কি এত কিছু বুঝতে পারতাম। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম। হানাদারদের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনা অস্ত্র কারো কোনো অনুমতি না নিয়ে পিতার আহ্বানে পায়ের সামনে বিছিয়ে দিয়ে কাঙাল হয়েছিলাম। প্রতি পদে পদে নির্যাতন, বঞ্চনা আর বঞ্চনা। সে যে কী চরিত্র হনন, যে জ্ঞানবুদ্ধি আছে তাতে তেমন বোঝার মতা ছিল না। তার পরও বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সব কিছু ছেড়ে-ছুড়ে এক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলাম। কেন যেন বলেছিলাম, খুনিরা কামাল, জামাল, রাসেলকে হত্যা করতে পারলেও বঙ্গবন্ধুকে নির্বংশ করতে পারেনি। আমি তার চতুর্থ সন্তান। পিতৃহত্যার বদলা আমরা নেবোই নেবো। আমরা ওই সময় প্রতিরোধ গড়ে না তুললে আজকের আওয়ামী লীগ কবরে থাকত। প্রধানমন্ত্রী নিরাপদে দেশে ফিরতে পারতেন না। কিন্তু আমাদের কষ্টের কোনো মূল্য হয়নি। আমাদের কষ্টই যে তার দাঁড়ানোর ভিত রচনা করেছে, তা তারা আজ আর মনে করতে পারেন না। আজ স্তাবকের মাঝে বসে অনেক আওয়ামী নেতার আমাদের পথের কাঁটা মনে হতেই পারে। অত বড় সংগ্রাম করে এরশাদকে হটিয়েও ’৯১ সালে আওয়ামী লীগ মতায় যেতে পারেনি। সকালে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে বিকেলে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে মোহাম্মদ নাসিমের সভায় অংশ নিয়ে পরদিন পিরোজপুরের পাড়েরহাট সভা করেছি। সেই রাতেই ৩টায় টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে মাওয়ায় এসে সূর্য দেখেছি। জানি, আজ সেসবের কোনো মূল্য বা সম্মান নেই। কিন্তু তার পরও তো কিছু সীমা থাকে। সীমা লঙ্ঘনকারীকে দয়াময় প্রভু পছন্দ করেন না। আজ ১৩ দিন ফুটপাথে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি হিসেবে নয়, একজন রাজনীতিবিদ হিসেবেও নয়; একেবারে নির্ভেজাল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অবস্থান নিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার আমলে একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধার নিরাপদে রাস্তায় থাকার সুযোগ থাকবে না, তা কোনো দিন ভাবতে পারিনি। অনেকেই বলতেন, আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের সবার কাছে প্রিয়। আমরা আপনার রাজনীতি না করলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনাকে মাথায় রাখি। কোথায় সে সম্মান? কত বড়গলা করে কত লোক বলছে, শান্তিপূর্ণ রাজনীতিকে আমরা সহায়তা করব। এর চাইতে শান্তিপূর্ণ রাজনীতি বাংলাদেশে অতীতে হয়েছে? আর কখনো হবে? টুঙ্গীপাড়ার আওয়ামী লীগ নেতা শেখ লায়েক আলী বিশ্বাসের ছেলে মতিঝিলের ওসি একেবারে জল্লাদ তস্করের মতো এসে কতবার আমার বাঁশ-কাঠ নিয়ে গেছে, বাতাস ফেরানোর জন্য চটের বেড়া সন্তর্পণে চোরের মতো খুলে নিয়েছে। পুলিশের কাজ চোর ধরা। এখানে দেখছি চোরকে সহায়তা করতে পুলিশি পাহারাÑ এ কেমন দেশ? সভ্য সমাজে আমরা মুখ দেখাতে পারব? স্বাধীনতার পর থেকে একজন গরিব মানুষ লাল মিয়া, সব সময় যার দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস, খুবই অসুস্থ। তাকে মিথ্যে বলে দূরে নিয়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে পরদিন চালান করে দিয়েছে। অভিযোগÑ বাংলার বাণীর সামনে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করা এবং ভালোভাবে কথাবার্তা না বলায় তাকে চালান করা হলোÑ এটা কোন ইনসাফ? গরিব মানুষ ভালোভাবে কিছু বলতে না পারলেই তাকে কারাগারে যেতে হবে? আর যা লেখা হয়েছে তা তো মোটেই সত্য নয়। লাল মিয়া একেবারেই নির্বিবাদী মানুষ। এই ৪৫ বছরে তাকে কোনো দিন ডিউটিতে অনুপস্থিত দেখিনি, কারো সাথে কটুকথা বলেনি। সে জানেই না কটুকথা কাকে বলে। আল্লাহর নিয়ামত কুশিমনি আমাদের বুকে এসে যেমন কাঁদতে শেখেনি, তেমনি লাল মিয়া শক্ত বলতে পারে না। সত্যিই এসব করে লাভ কী? এখানে বসার আগে আমার বিশ্বাস ছিল, যতণ জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আছেন ততণ অন্তত রাতের বেলায় আমাকে বিরক্ত করা হবে না। কিন্তু তাই যখন হচ্ছে তখন মনে তো প্রশ্ন জাগেই, যদিও কোনো উত্তর খুঁজে পাই না। ১৬ বছর নির্বাসনে কাটিয়ে ’৯০-এর ১৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরেছিলাম, বিমানবন্দরে লাখ লাখ লোক হয়েছিল। বেশি দিন বাইরে থাকতে পারিনি। দেশের অনেক চোর-ডাকাতও যখন মুক্ত তখন ১৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সকালের দিকে যখন শত শত পুলিশ গ্রেফতার করতে আসে, তখন তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, দেশে সরকার আছে নাকি সামরিক শাসন জারি হয়েছে? তারা বলেছিলেন, সরকার আছে। তাদের বলেছিলাম, আমাকে গ্রেফতার করতে হলে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিতে হবে। এখানকার এসপি অথবা ওসিকে আনতে হবে। তাদের আমি চিনি না। তাই আমি যাদের চিনি সেই দলীয় লোকদের আনতে হবে। তারা যখন স্বীকৃতি দেবে যে ইনি ঝিনাইদহের এসপি, ইনি ওসি। তারা বলবেন আপনারা সরকারি লোক তখন অবশ্যই আমাকে গ্রেফতার করতে পারবেন। ঠিক তেমনি সত্যিই যদি পুলিশ আমাদের কোনো জিনিসপত্র জব্দ করতে ইচ্ছে করে আইনানুগভাবে জিনিসপত্র নিয়ে সিজার লিস্ট দিতে পারতেন। মোটেই কোনো চোরের মতো আচরণ করতেন না। বড় খারাপ লাগে, বড় বিস্ময় লাগে।
আজ যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন, আর যদি এমন ঘটনা ঘটত, কোনো দাবি নিয়ে রাস্তায় এভাবে বসতাম, নিশ্চয়ই তিনি বলতেন, আমার কাদের দাবি করেছে আলোচনা করতে। ঠিক আছে ও আমাকে প্রথম অস্ত্র দিয়েছে। দেখি ও কী বলে। বঙ্গবন্ধু যে দিন টাঙ্গাইলে গিয়েছিলেন, সে দিন টাঙ্গাইল পার্ক ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের জনসভায় বলেছিলেন, কাদের পল্টনে চারজনকে গুলি করে শাস্তি দিয়েছে। যারা লুটতরাজ করে, যারা হত্যা করে তাদের আরো এক হাজার জনকে ও যদি শাস্তি দিত তাহলেও আমার ধন্যবাদ পেত। এত মর্যাদা দিতেন বলেই তো তার পায়ের সামনে সমস্ত অস্ত্র বিছিয়ে দিয়েছিলাম। জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে তিনিও বলতেন কাদের ভাই বলেছেন তার সম্মানে অবরোধ স্থগিত করি। আজ কে শোনে কার কথা? একসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভীষণ যতœ করেছেন। বাইরের বাতাস লাগলে কষ্ট হয়, তার জন্য হাতমোজা, মাফলার থাকার পরও কিনে দিতেন। তার বাড়িতে গেলে কতবার চুন তেল গরম করে দিয়েছেন। ’৯১-এর নির্বাচনের পরে রংপুরের হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেড়ে দেয়া আসনে উপনির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে প্রচারে গিয়েছিলাম। একটানা বেশ কয়েক দিন ছিলাম। রংপুর সার্কিট হাউজের ওপরতলায় ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, সোজাসুজি নিচে জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিরোধী দলের নেত্রীকে খাবার দাওয়াত করেছিলেন। মোসাদ্দেক আলী ফালু প্রধানমন্ত্রীর সাথে খাবারের কথা বলছিলেন, তখন জননেত্রী মোসাদ্দেক আলী ফালুকে বলেছিলেন, বজ্র নির্বাচনী সভায় বাইরে আছে। ও আসার আগে আমি খাবো না। বজ্র কে ফালু জানত না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও জানতেন না। জননেত্রীর শ্বশুরের নাম আবদুল কাদের মিয়া, তাই তিনি আমায় কাদের নামে না ডেকে বজ্র নামে ডাকেন। সে দিনই হয়তো তারা প্রথম জেনেছিলেন আমার নাম বজ্র, যা প্রকৃতিতে আকাশ থেকে পড়ে। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে শীতের রাতে তার অজান্তে প্রতিদিন পুলিশ আমার আশ্রয় ভেঙে দিচ্ছে এটা বিশ্বাস করতে মন সায় দেয় না। সর্বশেষ বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের চেয়েও বড় আশ্চর্য, শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ আদায় করতে গেলে মতিঝিল থানার পুলিশ আমার পায়খানার চটের বেড়াসহ সব কিছু নিয়ে গেছে। হুজুর মওলানা ভাসানীর কাছে বসলে তিনি বলতেন মুসলিম লীগের চোরেরা আমার পেসাব পায়খানার বদনা চুরি করেছে। ভারত পাকিস্তান বিভক্তির পর পর দাঙ্গাকবলিত নোয়াখালীতে মহাত্মা গান্ধীর ছাগল চুরি করে খেয়ে ফেলেছিল। এবার দেখছি আমার চকি-চৌকাঠ, বিছানাপত্র, এমনকি পায়খানার বেড়ার চট চুরি করছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাস্তায় বসে এসব আচরণে মর্মাহত না হয়ে পারি না। কিন্তু এত সবের পরেও যদি নেতা-নেত্রীদের চৈতন্যোদয় হয়, দেশে শান্তি আসে, তাতেই আমার শান্তি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তায় অবস্থানে থাকায় সেখানে যেতে পারিনি। দলের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানটিকে মতিঝিলের ফুটপাথেই নিয়ে এসেছিল, অভাবনীয় লোক সমাগম হয়েছিল। তাতে প্রধান অতিথি হিসেবে জগদ্বিখ্যাত চিকিৎসক সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী উপস্থিত হয়েছিলেন। বিশেষ অতিথি মানবতার শ্রেষ্ঠসেবক ডাক্তারকুলের গর্ব জাফরুল্লা চৌধুরী ও আমার প্রিয়তম ভাতিজা সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার উপস্থিত ছিলেন। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও যে তারা উপস্থিত হবেন তা ভাবতে পারিনি। এর আগে যারা সংহতি প্রকাশ করতে এসেছিলেন তাদের কাউকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া সংহতি জানাতে তার দলের দুই নেতা সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজাম ও নাজিম উদ্দিনকে পাঠিয়েছিলেন। সব শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লোকজন আসতে প্রতিনিয়ত বাধা দেয়া হচ্ছে। তারপরও জনতার বিপুল উৎসাহ আমাদের যারপরনাই উৎসাহিত করেছে। আমার ৩২ বছরের ছায়াসঙ্গী, ব্যক্তিগত সচিব ফরিদ আহমেদ, কম্পিউটার অপারেটর আলমগীর হোসেন, ছাত্রনেতা কাওসার জামান খান, যুবনেতা আবদুর রাজ্জাক, টিপু সুলতান ও রোকনকে গ্রেফতার করে জেলে পোরা হয়েছে। এসব আলামত দেখে কী বুঝব? শান্তিপূর্ণভাবে শান্তির জন্য আন্দোলন করলেও মতাবানদের আপত্তি বড়ই বেদনাদায়ক।
রাস্তার পাশে বসে ভাবা যায় না, লেখা যায় না। বঙ্গবন্ধুকে উপল করে দুই বছর ‘পিতাকে পুত্র’ লিখেছি। বলেছিলাম ভাই-বোন, চাচা-চাচীকে নিয়ে আগামীতে ভাববো। অবস্থানে আছি, দয়াময় প্রভু যদি শান্তি দেন, নিশ্চয় সে দিকে এগোবো।
No comments