রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার তাগিদ বিশ্বব্যাংকের
বাংলাদেশকে
মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা জরুরি বলে
মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস
প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন। একই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দীর্ঘ
মেয়াদে বৈদেশিক ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি। গতকাল বাংলাদেশ
ব্যাংকের কনফারেন্স রুমে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে বৈঠক শেষে
সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর
রহমান, বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হাসান জামান ও লিড ইকোনমিস্ট সালমান
জায়দি, কান্ট্রি ডিরেক্টর জোহানেস জাটসহ ৬ জন প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ
ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. আবুল কাসেম, আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এস কে
সুর চৌধুরী ও নাজনীন সুলতানা, চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাডভাইজার আল্লাহ মালিক
কাজেমী, নির্বাহী পরিচালক মো. আহসান উল্লাহ, চিফ ইকোনমিস্ট ড. বিরূপাক্ষ
পাল ও সিবিএসপি সেলের মহাব্যবস্থাপক জোয়ারদার ইসরাইল হোসেনসহ ব্যাংকের
অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। অ্যানেট ডিক্সন সাংবাদিকদের
জানান, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আরও কথা
হয়েছে বেসরকারি খাতের অর্থায়ন প্রসঙ্গ নিয়েও। এছাড়া সরকারের সঙ্গে আমাদের
আলোচনা হয়েছে। সরকার বলেছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ফলে তা
অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির স্বার্থে ও অর্থনৈতিক
উন্নয়নে চলমান পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশকে বের হয়ে আসতে হবে। ব্যবসার পরিবেশ
নিশ্চিত করতে সরকারকে পরামর্শ দেবে বিশ্বব্যাংক। তিনি বলেন, বেসরকারি
খাতের উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ বাড়তে বাংলাদেশ ব্যাংকের
পদক্ষেপগুলোতে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আমি মনে করি। এক
প্রশ্নের উত্তরে অ্যানেট ডিক্সন বলেন, বিশ্বব্যাংকের চলমান প্রকল্পের বিষয়ে
আমাদের আলোচনা হয়েছে। নতুন কোন প্রকল্প নিয়ে কাজ করা যায় কি না সে বিষয়টা
খুঁজে দেখছি। এ সময় বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা ও
অংশীদারিত্বমূলক কাজের বিষয়গুলো দেখার জন্যও বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানান
তিনি। বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও জানান, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে
মুদ্রানীতি, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করেছে
বাংলাদেশ ব্যংক। সব কাজেই বিশ্বব্যাংক সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এর আগে সভায়
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক খাতে
অর্জিত সাফল্য ও সাম্প্রতিক অগ্রগতির একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র উপস্থাপন করা
হয়। গভর্নর ক্ষুদ্র ঋণখাত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশবান্ধব অর্থনীতিতে
বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি, বিশ্বব্যাংকের
সহায়তায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে
অর্জিত সাফল্যও উল্লেখ করা হয়। গভর্নর উল্লিখিত কর্মকাণ্ডে বিশ্বব্যাংকের
সহায়ক ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সভায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তায়
প্রস্তাবিত ফাইনান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্টের আওতায় উৎপাদনশীল খাতে
দীর্ঘ মেয়াদে অর্থায়নসহ বিভিন্ন উপাদানসমূহ আলোচনা করা হয়। বিশ্বব্যাংকের
ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্ষুদ্রঋণসহ আর্থিক খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে সন্তোষ
প্রকাশ করেন।
No comments