দুঃসহ বেদনার সেই দিন আজ
রাতের
গভীর অন্ধকারের চেয়ে ভয়াবহ ছিল সেই ভোর। সি্নগ্ধ সকালে সুন্দর
সাজানো-গোছানো সবুজ পিলখানা রক্তাক্ত হয়ে ওঠে। দানবের বুলেটে লুুটাপুটি খায়
মানবতা। কিছুসংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল রক্তপিপাসু জওয়ানের বুলেটে প্রাণ হারান ৫৭
সেনা কর্মকর্তা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর
সদর দপ্তরে ঘটে দেশের ইতিহাসে এক বিষাদময় ঘটনা। জওয়ানদের নির্মম বুলেট কেড়ে
নেয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনের প্রাণ। এমন খবরে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ।
গোটা দুনিয়ায় খবরের শিরোনাম হয় বাংলাদেশ। আজ সেই শোক আর বেদনার দিন।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন এমন ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন, ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ আসামির মধ্যে ১৪ জন পলাতক এবং একজন বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা ১৩৮ জনের পক্ষে জেল আপিল এবং রাষ্ট্রপক্ষে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করা হয়। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
গত ১৮ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় আসামিপক্ষে করা আপিল এবং রাষ্ট্রপক্ষে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। এরই মধ্যে নিম্ন আদালতে ১৬৪ ধারায় ৫৩৮ আসামির দেওয়া জবানবন্দি ও অভিযোগ (চার্জ) রাষ্ট্রপক্ষে হাইকোর্টে পড়ে শোনানো হয়েছে।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সমকালকে বলেন, যে গতিতে পিলখানা হত্যা মামলার আপিলের শুনানি চলছে, তাতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ হওয়ার আশা করছি। আইনের বিধানঅনুযায়ী আসামিরা উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। রাইফেলস সপ্তাহ ঘিরে উৎসবের আমেজ ছিল গোটা পিলখানায়। যথারীতি পিলখানার দরবার হলে বসেছিল বার্ষিক দরবার। সারা দেশ থেকে আসা বিডিআরের জওয়ান, জেসিও, এনসিওসহ বিপুলসংখ্যক সদস্যে তখন পরিপূর্ণ গোটা দরবার হল। দরবার হলের মঞ্চে ছিলেন তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমদসহ বিডিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বার্ষিক দরবার, সে এক আনন্দমুখর আলোকিত পরিবেশ। কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টে যায় পরিবেশ। বিপথগামী বিডিআর জওয়ানরা দরবার হলে ঢুকে মহাপরিচালকের সামনে তাদের নানা দাবি নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। সিপাহি মাঈন ডিজির সামনে তাক করে বন্দুকের নল। আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে এই ঘাতক গুলি চালাতে না পারলেও অপর জওয়ানরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে জীবনের কোলাহল স্তব্ধ হয় ৭৪টি পরিবারের। মৃত্যু-উল্লাসে ঘাতকরা দিশেহারা। খোঁড়া হয় গণকবর। আর তাতে সেনা কর্মকর্তাদের মাটিচাপা দেওয়া হয়।
মেজর তানভীর হায়দার নূরের বাবা নূর মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, 'দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ হবে, আশা করি। কী করলে মনের ভেতরে ছেলে হারানোর শোক কমে শান্তি আসবে_ তা জানা নেই। সেই স্মৃতি মনে এলেই কষ্ট পাই। আবার তা ভুলে যেতেও পারি না।'এ ঘটনায় লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক নবজ্যোতি খিসা। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর হয়। ২০১০ সালের ১২ জুলাই পিলখানা হত্যা মামলায় ৮২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয় সিআইডি।
কর্মসূচি :আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় বনানী সামরিক কবরস্থানে সকাল ৯টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবির মহাপরিচালকসহ অনেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ ছাড়া বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলেরও পুষ্পস্তবক অর্পণের কথা রয়েছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শহীদদের স্মরণে কাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজিবি সদর দপ্তরে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন এমন ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন, ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ আসামির মধ্যে ১৪ জন পলাতক এবং একজন বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা ১৩৮ জনের পক্ষে জেল আপিল এবং রাষ্ট্রপক্ষে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করা হয়। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
গত ১৮ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় আসামিপক্ষে করা আপিল এবং রাষ্ট্রপক্ষে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। এরই মধ্যে নিম্ন আদালতে ১৬৪ ধারায় ৫৩৮ আসামির দেওয়া জবানবন্দি ও অভিযোগ (চার্জ) রাষ্ট্রপক্ষে হাইকোর্টে পড়ে শোনানো হয়েছে।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সমকালকে বলেন, যে গতিতে পিলখানা হত্যা মামলার আপিলের শুনানি চলছে, তাতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ হওয়ার আশা করছি। আইনের বিধানঅনুযায়ী আসামিরা উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। রাইফেলস সপ্তাহ ঘিরে উৎসবের আমেজ ছিল গোটা পিলখানায়। যথারীতি পিলখানার দরবার হলে বসেছিল বার্ষিক দরবার। সারা দেশ থেকে আসা বিডিআরের জওয়ান, জেসিও, এনসিওসহ বিপুলসংখ্যক সদস্যে তখন পরিপূর্ণ গোটা দরবার হল। দরবার হলের মঞ্চে ছিলেন তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমদসহ বিডিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বার্ষিক দরবার, সে এক আনন্দমুখর আলোকিত পরিবেশ। কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টে যায় পরিবেশ। বিপথগামী বিডিআর জওয়ানরা দরবার হলে ঢুকে মহাপরিচালকের সামনে তাদের নানা দাবি নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। সিপাহি মাঈন ডিজির সামনে তাক করে বন্দুকের নল। আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে এই ঘাতক গুলি চালাতে না পারলেও অপর জওয়ানরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে জীবনের কোলাহল স্তব্ধ হয় ৭৪টি পরিবারের। মৃত্যু-উল্লাসে ঘাতকরা দিশেহারা। খোঁড়া হয় গণকবর। আর তাতে সেনা কর্মকর্তাদের মাটিচাপা দেওয়া হয়।
মেজর তানভীর হায়দার নূরের বাবা নূর মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, 'দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ হবে, আশা করি। কী করলে মনের ভেতরে ছেলে হারানোর শোক কমে শান্তি আসবে_ তা জানা নেই। সেই স্মৃতি মনে এলেই কষ্ট পাই। আবার তা ভুলে যেতেও পারি না।'এ ঘটনায় লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক নবজ্যোতি খিসা। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর হয়। ২০১০ সালের ১২ জুলাই পিলখানা হত্যা মামলায় ৮২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয় সিআইডি।
কর্মসূচি :আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় বনানী সামরিক কবরস্থানে সকাল ৯টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবির মহাপরিচালকসহ অনেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ ছাড়া বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলেরও পুষ্পস্তবক অর্পণের কথা রয়েছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শহীদদের স্মরণে কাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজিবি সদর দপ্তরে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
No comments