ইবিতে বাসচাপায় ছাত্র নিহত : আগুন ভাংচুর
কুষ্টিয়া
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বাসচাপায় এক ছাত্র নিহত হওয়ার
ঘটনার জের ধরে রোববার গোটা ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বেলা ১১টায়
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুর
রহমান টিটু নিহত হওয়ার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ও ভাড়া করা ৩০টি বাসে
আগুন দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে তারা প্রশাসনিক ভবন ও ভিসির বাসভবনে হামলা করে
ব্যাপক ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ থেকে পুলিশ গিয়ে
ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
সংঘর্ষ বেধে যায়। এসময় শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে।
পুলিশ তাদের থামাতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে ৬ জন
গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে
সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ছাত্রদের এবং আজ সোমবার সকাল ১০টার
মধ্যে ছাত্রীদের আবাসিক হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে
ক্যাম্পাসে রোববারের ঘটনা তদন্তে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রোববার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র তৌহিদুর রহমান টিটু ক্যাম্পাসের ঝিনাইদহগামী একটি বাসে উঠেন। পরে তিনি বাস থেকে নামার চেষ্টা করেন। এ সময় পেছন থেকে ‘সাগর’ নামে একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে তার গলা ছিড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। নিহত টিটু ১১-১২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরে।
ঘটনার পর পরই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা মেইন গেট ও কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর শুরু করেন। পরে খবর পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন হল ও ক্লাস রুম থেকে শিক্ষার্থীরা এসে বিক্ষোভে যোগ দেন। মুহূর্তেই পরিস্থিতি ভয়াবহতায় রূপ নেয়। প্রথমে তারা মেইন গেটের পাশে থাকা ক্যাম্পাসের ভাড়া করা বাসে আগুন দেন। পরে তারা মেডিকেল ভবনের পাশে বাসস্ট্যান্ডে থাকা বাসগুলোতেও আগুন দেন। আগুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এবং ভাড়া করা মিলে ৩০টি বাস পুড়ে যায়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবন, অনুষদ ভবন, আইন অনুষদ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবন, টিএসসিসহ প্রায় সব ভবনে ভাংচুর চালায়। পরে তারা লাঠিসোটা নিয়ে ক্যাম্পাসে ও কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে।
দুপুর আড়াইটার দিকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র সজলকে ভিসির বাংলোতে নিয়ে পুলিশ পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ফের ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শিক্ষার্থীরা। তারা ভিসির বাংলোতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং শিক্ষকদের আবাসিক এলাকা ডরমেটরি ভবন, অডিটরিয়াম ভাংচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহতদের প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র এবং পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা যায়, নিহত ছাত্রের লাশ তিন ঘণ্টা যাবত পড়ে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টররিয়াল বডি বা প্রশাসনের কোনো কর্তাব্যক্তি ঘটনাস্থলে আসেনি। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে মিটিং করে লাশ নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাশ মহেশপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। জানাজা শেষে সন্ধ্যায় লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ‘নিহত ছাত্রের লাশ তার স্বজনের নিকটে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে সহয়তা প্রদান করা হবে।’ এদিকে চালককে গ্রেফতার এবং বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তদন্ত কমিটি গঠন : ছাত্র টিটুর মৃত্যু ও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী ঘটনাসমূহের তদন্তে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ২১ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. রুহুল কুদ্দুস মো. সালেহ, জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড.আবদুস শাহিদ মিয়া, গ্রীন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ইকবাল হোছাইন, শাপলা ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিন ও উপ-রেজিস্ট্রার আবদুল লতিফ।
কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহে পরিবহন ধর্মঘট : ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস ভাংচুর, অগ্নি সংযোগের ঘটনায় ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সোমবার সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের যানবাহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সন্ধ্যায় মাইকযোগে জেলা শহরে এ ঘোষণা প্রচার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স সময় এন্টারপ্রাইজের মালিক ঝিনাইদহ পৌর মেয়র ও জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর অভিযোগ, ছাত্র নিহত হওয়ার পরে ক্যাম্পাসে বাস ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ ও তাণ্ডবের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইন্ধন দিয়েছে। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় এ ধরনের ঘটনার পেছনে জামায়াত-শিবিরের হাত রয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় ১৩ জন শ্রমিক নিখোঁজ এবং ৪ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ৩৭টি বাস পুড়িয়ে দেয়া হলেও কর্তৃপক্ষ পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যদের ঢুকতে দেয়নি। মালিকদের ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রোববার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র তৌহিদুর রহমান টিটু ক্যাম্পাসের ঝিনাইদহগামী একটি বাসে উঠেন। পরে তিনি বাস থেকে নামার চেষ্টা করেন। এ সময় পেছন থেকে ‘সাগর’ নামে একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে তার গলা ছিড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। নিহত টিটু ১১-১২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরে।
ঘটনার পর পরই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা মেইন গেট ও কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর শুরু করেন। পরে খবর পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন হল ও ক্লাস রুম থেকে শিক্ষার্থীরা এসে বিক্ষোভে যোগ দেন। মুহূর্তেই পরিস্থিতি ভয়াবহতায় রূপ নেয়। প্রথমে তারা মেইন গেটের পাশে থাকা ক্যাম্পাসের ভাড়া করা বাসে আগুন দেন। পরে তারা মেডিকেল ভবনের পাশে বাসস্ট্যান্ডে থাকা বাসগুলোতেও আগুন দেন। আগুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এবং ভাড়া করা মিলে ৩০টি বাস পুড়ে যায়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবন, অনুষদ ভবন, আইন অনুষদ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবন, টিএসসিসহ প্রায় সব ভবনে ভাংচুর চালায়। পরে তারা লাঠিসোটা নিয়ে ক্যাম্পাসে ও কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে।
দুপুর আড়াইটার দিকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র সজলকে ভিসির বাংলোতে নিয়ে পুলিশ পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ফের ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শিক্ষার্থীরা। তারা ভিসির বাংলোতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং শিক্ষকদের আবাসিক এলাকা ডরমেটরি ভবন, অডিটরিয়াম ভাংচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহতদের প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র এবং পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা যায়, নিহত ছাত্রের লাশ তিন ঘণ্টা যাবত পড়ে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টররিয়াল বডি বা প্রশাসনের কোনো কর্তাব্যক্তি ঘটনাস্থলে আসেনি। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে মিটিং করে লাশ নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাশ মহেশপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। জানাজা শেষে সন্ধ্যায় লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ‘নিহত ছাত্রের লাশ তার স্বজনের নিকটে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে সহয়তা প্রদান করা হবে।’ এদিকে চালককে গ্রেফতার এবং বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তদন্ত কমিটি গঠন : ছাত্র টিটুর মৃত্যু ও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী ঘটনাসমূহের তদন্তে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ২১ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. রুহুল কুদ্দুস মো. সালেহ, জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড.আবদুস শাহিদ মিয়া, গ্রীন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ইকবাল হোছাইন, শাপলা ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিন ও উপ-রেজিস্ট্রার আবদুল লতিফ।
কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহে পরিবহন ধর্মঘট : ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস ভাংচুর, অগ্নি সংযোগের ঘটনায় ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সোমবার সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের যানবাহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সন্ধ্যায় মাইকযোগে জেলা শহরে এ ঘোষণা প্রচার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স সময় এন্টারপ্রাইজের মালিক ঝিনাইদহ পৌর মেয়র ও জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর অভিযোগ, ছাত্র নিহত হওয়ার পরে ক্যাম্পাসে বাস ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ ও তাণ্ডবের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইন্ধন দিয়েছে। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় এ ধরনের ঘটনার পেছনে জামায়াত-শিবিরের হাত রয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় ১৩ জন শ্রমিক নিখোঁজ এবং ৪ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ৩৭টি বাস পুড়িয়ে দেয়া হলেও কর্তৃপক্ষ পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যদের ঢুকতে দেয়নি। মালিকদের ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
No comments