বাঁচতে হলে জানতে হবে by এএইচএম মনিরুজ্জোহা
আজ বিশ্ব এইডস দিবস। বর্তমান বিশ্বের
সবচেয়ে ভয়াবহ রোগ এইডস। তাই এইচআইভি/এইডস সম্পর্কে নিজে সচেতন থাকা এবং
সমাজের অন্যদের জানানো এবং সহযোগিতা করার জন্য রোগটি সম্পর্কে জানতে হবে,
বুঝতে হবে। এ লক্ষ্যে সরকার গ্লোবাল ফান্ডের অর্থায়নে ‘বাঁচতে হলে জানতে
হবে’ শিরোনামে ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে দুঃখের
বিষয় হল, কী জানতে হবে তা জানানো হয় না বিজ্ঞাপনে, সম্ভবত সামাজিক
বিধিনিষেধের জন্যই এমনটা হয়।
দেশে এইচআইভি/এইডস চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত সীমিত। এ রোগ মোকাবেলায় এখনও বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হয়নি দক্ষ জনবল গড়ে তোলাও। দেশে এইডস চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে কিছু এনজিও।
দেশে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি প্রথম শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। বহির্বিশ্বের তুলনায় দেশে এইডসের প্রাদুর্ভাব কম হলেও এ ঘাতক রোগ সম্পর্কে অসতর্ক হওয়ার সুযোগ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির আনুমানিক সংখ্যা ৯ হাজার আর এ পর্যন্ত এইডসে মারা গেছে ৪৭২ জন। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ মানুষ এইচআইভি বহন করছে। জাতীয় এইচআইভি ও বিহেভিয়ার সার্ভিল্যান্সের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এইচআইভির বিস্তার শতকরা ১ ভাগের কম, কিন্তু সিরিঞ্জ ও সুচের মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে এ হার শতকরা ৭ থেকে ১০ ভাগ। সমকামী বহুগামী ব্যক্তি, যৌন কর্মীদের এইডসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
এইডসের প্রধান লক্ষণগুলো হল : ১. রোগীর দেহের ওজন শতকরা ১০ ভাগেরও বেশি কমে যাওয়া, ২. একটানা দীর্ঘদিন জ্বরে ভোগা, ৩. কখনও কখনও থেকে থেকে জ্বর হওয়া, ৪. দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত থাকা, ৫. ওষুধ সেবনেও ডায়রিয়া না কমা, ৬. গলা ও মুখে ঘা হওয়া, ৭. শুকনা কাশিসহ ঘনঘন সর্দি হওয়া, ৮. ত্বকে নিলচে বেগুনি দানা দেখা দেয়া, যা মিলিয়ে যায় না, ৯. লসিকাগ্রন্থী ফুলে যাওয়া, ১০. দেহে চুলকানিসহ চর্মরোগ দেখা দেয়, ১১. মাঝে মাঝে যক্ষ্মা, সিফিলিস ও গনোরিয়া হওয়া, ১২. স্মৃতিশক্তি বিলোপ পাওয়া, ১৩. গলায় জ্বালাপোড়া, ১৪. ক্ষুধা মন্দা, ১৫. শরীরে স্থায়ীভাবে ক্লান্তি দেখা দেয়া, ১৬. জরায়ুর মুখে ক্যান্সার ইত্যাদি। উপরোক্ত লক্ষণগুলো অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এইচআইভি আত্রান্তের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত। এজন্য প্রধান দুটি পরীক্ষা হল- ১. এলাইজা টেস্ট (এ পরীক্ষায় ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে এবং ২. ওয়েস্টার্ন ব্লক টেস্ট, যা পজিটিভ এলিজা টেস্টকে নিশ্চিত করে।
আমাদের দেশে প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে সাধারণত এলাইজা ও র্যাপিড টেস্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ টেস্ট বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বারডেম হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, আইসিডিডিআরবি এবং কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়েস্টার্ন ব্লক টেস্ট করা হয়ে থাকে।
এইচআইভি যেভাবে ছড়ায় না (এইচআইভি/এইডসের ঝুঁকি বা ভয় নেই) : ১. সাধারণ মেলামেশায়, যেমন হাত মেলালে, কোলাকুলি করলে বা চুমু খেলে, ২. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির সেবা-যতœ করলে, ৩. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির ঘাম, মুখের লালা, বমি বা মলমূত্র স্পর্শ করলে, ৪. একই প্লেটে খাবার খেলে বা একই গ্লাসে পানি পান করলে, ৫. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির সঙ্গে একই ক্লাসে পড়াশোনা করলে বা একই অফিসে কাজ করলে, ৬. একই টয়লেট ব্যবহার করলে, ৭. একই পুকুরে গোসল করলে বা তার সঙ্গে ভাগাভাগি করে একই স্নানাগার ব্যবহার করলে, ৮. মশা, মাছি, কীটপতঙ্গের কামড়ের মাধ্যমে, ৯. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির হাতে তৈরি করা খাবার খেলে, ১০. কাপড়-চোপড়, গামছা, তোয়ালে, রুমাল, বিছানার চাদর ব্যবহার করলে। তাই কারও এইডস হলেই তাকে অস্পৃশ্য ধরে নিয়ে তার সঙ্গে স্বাভাবিক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া উচিত নয়।
বাংলাদেশে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল- যেসব ব্যক্তি এইচআইভি পজিটিভ, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা। কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে একজন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি তার মানসিক সমস্যা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়ে থাকে। একজন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির যেসব মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হল : বিষণ্নতা, অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা, অস্থিরতা, হতাশা, রাগ, মৃত্যুভীতি, নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, এইচআইভি পরীক্ষার ফলাফল মেনে না নেয়া, অন্যের ওপর দোষারোপ করা, আত্মহত্যা প্রবণতা ইত্যাদি। এইচআইভি পরীক্ষার ফলাফল যদি পজিটিভ হয়, সেক্ষেত্রে ফলাফল রোগীকে জানানোর সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই একজন কাউন্সেলরের মাধ্যমে রিপোর্ট প্রদান করা প্রয়োজন। মনোবিজ্ঞানী ও কাউন্সেলররা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ব্যক্তির মানসিক সমস্যা কমাতে, ইতিবাচক জীবনযাপন করতে এবং মনোবল দৃঢ় করতে রোগীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিকে উপেক্ষা না করে যদি সহমর্মিতা ও সহযোগিতা করা হয়, তাহলে সেও সমাজের অন্যান্য মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। সমাজে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপান করার অধিকার তারও রয়েছে। আশার কথা, জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচআইভি/এইডস সংক্রমণ প্রতিরোধের লড়াইয়ে ব্যাপক
অগ্রগতি হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত শিশু ও পূর্ণ বয়স্কদের মধ্যে এইডসের সংক্রমণ ৩৩ শতাংশ কমেছে।
এ রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা তথা সাবধানতা অবলম্বন করা। এইচআইভি/এইডস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আমাদের তা প্রতিরোধ করতে হবে। ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধকে জোরদার করে এইচআইভি ও এইডস থেকে যেমন দূরে থাকতে হবে, তেমনি আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে দেশকে এ ঘাতক রোগ থেকে মুক্ত রাখার প্রয়াস চালাতে হবে।
এইচআইভি/এইডস বিষয়ে গবেষণা, এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি, এইডস আক্রান্তদের শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসার জন্য অর্থের বরাদ্দ বাড়ানো, তাদের বৃহত্তর সামাজিক পরিসরে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা, কাজে যুক্ত করা, ব্যক্তি হিসেবে তাদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা, তাদের বিষয়ে কোনো নীতিমালা প্রণয়ন বা কোনো কর্মসূচি গ্রহণে তাদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ- এসব বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে।
এএইচএম মনিরুজ্জোহা : সহযোগী অধ্যাপক, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ, ঢাকা
দেশে এইচআইভি/এইডস চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত সীমিত। এ রোগ মোকাবেলায় এখনও বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হয়নি দক্ষ জনবল গড়ে তোলাও। দেশে এইডস চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে কিছু এনজিও।
দেশে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি প্রথম শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। বহির্বিশ্বের তুলনায় দেশে এইডসের প্রাদুর্ভাব কম হলেও এ ঘাতক রোগ সম্পর্কে অসতর্ক হওয়ার সুযোগ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির আনুমানিক সংখ্যা ৯ হাজার আর এ পর্যন্ত এইডসে মারা গেছে ৪৭২ জন। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ মানুষ এইচআইভি বহন করছে। জাতীয় এইচআইভি ও বিহেভিয়ার সার্ভিল্যান্সের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এইচআইভির বিস্তার শতকরা ১ ভাগের কম, কিন্তু সিরিঞ্জ ও সুচের মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে এ হার শতকরা ৭ থেকে ১০ ভাগ। সমকামী বহুগামী ব্যক্তি, যৌন কর্মীদের এইডসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
এইডসের প্রধান লক্ষণগুলো হল : ১. রোগীর দেহের ওজন শতকরা ১০ ভাগেরও বেশি কমে যাওয়া, ২. একটানা দীর্ঘদিন জ্বরে ভোগা, ৩. কখনও কখনও থেকে থেকে জ্বর হওয়া, ৪. দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত থাকা, ৫. ওষুধ সেবনেও ডায়রিয়া না কমা, ৬. গলা ও মুখে ঘা হওয়া, ৭. শুকনা কাশিসহ ঘনঘন সর্দি হওয়া, ৮. ত্বকে নিলচে বেগুনি দানা দেখা দেয়া, যা মিলিয়ে যায় না, ৯. লসিকাগ্রন্থী ফুলে যাওয়া, ১০. দেহে চুলকানিসহ চর্মরোগ দেখা দেয়, ১১. মাঝে মাঝে যক্ষ্মা, সিফিলিস ও গনোরিয়া হওয়া, ১২. স্মৃতিশক্তি বিলোপ পাওয়া, ১৩. গলায় জ্বালাপোড়া, ১৪. ক্ষুধা মন্দা, ১৫. শরীরে স্থায়ীভাবে ক্লান্তি দেখা দেয়া, ১৬. জরায়ুর মুখে ক্যান্সার ইত্যাদি। উপরোক্ত লক্ষণগুলো অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এইচআইভি আত্রান্তের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত। এজন্য প্রধান দুটি পরীক্ষা হল- ১. এলাইজা টেস্ট (এ পরীক্ষায় ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে এবং ২. ওয়েস্টার্ন ব্লক টেস্ট, যা পজিটিভ এলিজা টেস্টকে নিশ্চিত করে।
আমাদের দেশে প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে সাধারণত এলাইজা ও র্যাপিড টেস্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ টেস্ট বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বারডেম হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, আইসিডিডিআরবি এবং কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়েস্টার্ন ব্লক টেস্ট করা হয়ে থাকে।
এইচআইভি যেভাবে ছড়ায় না (এইচআইভি/এইডসের ঝুঁকি বা ভয় নেই) : ১. সাধারণ মেলামেশায়, যেমন হাত মেলালে, কোলাকুলি করলে বা চুমু খেলে, ২. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির সেবা-যতœ করলে, ৩. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির ঘাম, মুখের লালা, বমি বা মলমূত্র স্পর্শ করলে, ৪. একই প্লেটে খাবার খেলে বা একই গ্লাসে পানি পান করলে, ৫. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির সঙ্গে একই ক্লাসে পড়াশোনা করলে বা একই অফিসে কাজ করলে, ৬. একই টয়লেট ব্যবহার করলে, ৭. একই পুকুরে গোসল করলে বা তার সঙ্গে ভাগাভাগি করে একই স্নানাগার ব্যবহার করলে, ৮. মশা, মাছি, কীটপতঙ্গের কামড়ের মাধ্যমে, ৯. এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির হাতে তৈরি করা খাবার খেলে, ১০. কাপড়-চোপড়, গামছা, তোয়ালে, রুমাল, বিছানার চাদর ব্যবহার করলে। তাই কারও এইডস হলেই তাকে অস্পৃশ্য ধরে নিয়ে তার সঙ্গে স্বাভাবিক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া উচিত নয়।
বাংলাদেশে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল- যেসব ব্যক্তি এইচআইভি পজিটিভ, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা। কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে একজন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি তার মানসিক সমস্যা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়ে থাকে। একজন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির যেসব মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হল : বিষণ্নতা, অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা, অস্থিরতা, হতাশা, রাগ, মৃত্যুভীতি, নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, এইচআইভি পরীক্ষার ফলাফল মেনে না নেয়া, অন্যের ওপর দোষারোপ করা, আত্মহত্যা প্রবণতা ইত্যাদি। এইচআইভি পরীক্ষার ফলাফল যদি পজিটিভ হয়, সেক্ষেত্রে ফলাফল রোগীকে জানানোর সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই একজন কাউন্সেলরের মাধ্যমে রিপোর্ট প্রদান করা প্রয়োজন। মনোবিজ্ঞানী ও কাউন্সেলররা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ব্যক্তির মানসিক সমস্যা কমাতে, ইতিবাচক জীবনযাপন করতে এবং মনোবল দৃঢ় করতে রোগীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিকে উপেক্ষা না করে যদি সহমর্মিতা ও সহযোগিতা করা হয়, তাহলে সেও সমাজের অন্যান্য মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। সমাজে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপান করার অধিকার তারও রয়েছে। আশার কথা, জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচআইভি/এইডস সংক্রমণ প্রতিরোধের লড়াইয়ে ব্যাপক
অগ্রগতি হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত শিশু ও পূর্ণ বয়স্কদের মধ্যে এইডসের সংক্রমণ ৩৩ শতাংশ কমেছে।
এ রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা তথা সাবধানতা অবলম্বন করা। এইচআইভি/এইডস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আমাদের তা প্রতিরোধ করতে হবে। ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধকে জোরদার করে এইচআইভি ও এইডস থেকে যেমন দূরে থাকতে হবে, তেমনি আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে দেশকে এ ঘাতক রোগ থেকে মুক্ত রাখার প্রয়াস চালাতে হবে।
এইচআইভি/এইডস বিষয়ে গবেষণা, এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি, এইডস আক্রান্তদের শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসার জন্য অর্থের বরাদ্দ বাড়ানো, তাদের বৃহত্তর সামাজিক পরিসরে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা, কাজে যুক্ত করা, ব্যক্তি হিসেবে তাদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা, তাদের বিষয়ে কোনো নীতিমালা প্রণয়ন বা কোনো কর্মসূচি গ্রহণে তাদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ- এসব বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে।
এএইচএম মনিরুজ্জোহা : সহযোগী অধ্যাপক, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ, ঢাকা
No comments