জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে সর্বাধিক অবদান বাংলাদেশে
বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আসার দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ভারত, পরের অবস্থানেই রয়েছে চীন। অপরদিকে বিশ্বে রেমিট্যান্স খাত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। কেননা, বাংলাদেশের গড় জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে (জিডিপি) ১০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখে এ খাত। এ হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। ফিচ নামের একটি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। এ খবর দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস। রেমিট্যান্স তালিকায় ভারত শীর্ষে আসার পেছনে কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশে অবস্থানরত ভারতীয়দের মধ্যে দক্ষ কর্মীর হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া নজরদারির কারণে অবৈধ পথে অর্থ পাঠানোর তুলনায় বৈধ পথে অর্থ পাঠানো বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেশটিতে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে। পক্ষান্তরে বিপুল পরিমাণ বিদেশী শ্রমিকও কাজ করছে ভারত ও চীনের বাজারে। ২০১৩ সালে ভারত থেকে বিদেশী শ্রমিকরা নিজ দেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৬৪০ কোটি ডলার। চীন থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রায় ৪৪০ কোটি ডলার। অপরদিকে বিদেশে অবস্থানরত ভারত ও চীনের কর্মীরা যে পরিমাণ রেমিট্যান্স নিজ দেশে পাঠিয়েছেন, তার পরিমাণ যথাক্রমে ৬,৩০০ কোটি ডলার ও ৫,৫০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশেরও বিপুল কর্মী ও শ্রমিক বিদেশে কাজ করছেন। তাদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ বাংলাদেশের গড় জাতীয় প্রবৃদ্ধির ১০ শতাংশেরও বেশি। ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার শ্রমিকদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ দেশ দু’টির জিডিপির ১০ শতাংশের কিছুটা কম। ভিয়েতনামের জিডিপিতেও বড় ভূমিকা রাখছে রেমিট্যান্স। ফিচ জানিয়েছে, এ দেশগুলোর প্রচুর সস্তা অদক্ষ শ্রমিক তুলনামূলকভাবে উপকার বয়ে এনেছে। দেশগুলোর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স। তবে ফিচ জানিয়েছে, যে সব দেশ থেকে রেমিট্যান্স আসে, সে সব দেশে ভিসা কড়াকড়ি বা অভিবাসন-বিরোধী মনোভাব গড়ে উঠলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ বা শ্রীলঙ্কার মতো দেশ। কেননা, এসব দেশের রেমিট্যান্সের উৎসসমূহের মধ্যে ব্যাপক ঘাটতি বিদ্যমান। আর যদি রেমিট্যান্স গুটিকয়েক উৎসের ওপর নির্ভরশীল হয়, তাহলে এ ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাবে। যেমন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মোট রেমিট্যান্সের যথাক্রমে ৫৯% ও ৫৬% আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। তাই মধ্যপ্রাচ্যে হঠাৎ অভিবাসন-বিরোধী নীতি বা ভিসাপ্রাপ্তির ওপর কড়াকড়ি আরোপ হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এ দু’টি দেশ। মধ্যপ্রাচ্যে এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশী-শ্রমিক বিরোধী মনোভাব গড়ে উঠেছিল। তখন সাময়িকভাবে বাংলাদেশের শ্রমিকদের চাহিদাও কমে গিয়েছিল। তবে সামপ্রতিক মাসগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক চাহিদা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ভিয়েতনামের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি কম। কেননা, দেশটির রেমিট্যান্স একক বা গুটিকয়েক উৎসের ওপর নির্ভরশীল নয়। রেটিং এজেন্সিগুলো জানাচ্ছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সামনের বছরগুলোতে রেমিট্যান্স উৎসে বৈচিত্র্য আসতে পারে।
No comments