জগ্লুল আহমেদের মর্মান্তিক মৃত্যু- সন্ধান মেলেনি ঘাতক বাসের, তদন্ত কমিটি
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। সেই সঙ্গে অজ্ঞাত বাসচালককে আসামি করে কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ঘাতক চালক ও বাসটিকে শনাক্ত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশিষ্ট এ সাংবাদিকের মৃত্যুতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ অব্যাহত রয়েছে। আজ জানাজা শেষে তার লাশ আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে। জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর ছেলে নাবিদ আহমেদ চৌধূরী জানিয়েছেন, সকাল ১১টায় বনানী জামে মসজিদে প্রথম জানাজা হবে। দ্বিতীয় জানাজা হবে বাদ আসর জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে। জানাজা শেষে নিহতের লাশ আজিমপুর কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনার কারণ নির্ধারণ, দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণ ও প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা প্রণয়নে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিআরটিএ পরিচালক যুগ্ম সচিব মশিউর রহমানকে প্রধান করে করা কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার ইমতিয়াজ আহমদ, ডিটিসিএ’র নগর পরিকল্পনাবিদ নাহমাদুল হাসান ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের (উত্তর) ট্রাফিক কর্মকর্তা খন্দকার মাহবুবুর রহমান।
ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামক দত্ত জানিয়েছেন, আজ জানাজার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে তদন্ত কমিটি। এ সময় তারা আশপাশের লোকদের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে বাসটি শনাক্ত করার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরামর্শ দেবেন। সেই সঙ্গে কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটলো এর কারণ নির্ণয় করবেন।
গতকাল সকাল ৯টায় নাবিদ আহমেদ চৌধূরী বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় অজ্ঞাত বাসের চালককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বলেন, বাস ও চালককে শনাক্ত করতে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে। যে কোন সময় তা শনাক্ত হতে পারে। অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে বাস ও বাসচালককে শনাক্ত করতে পথচারী-প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতা চেয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাস ও বাসচালক সম্পর্কে কোন তথ্য পেলে ডিএমপি’র এ বিভাগে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
বিশিষ্ট এ সাংবাদিকের মৃত্যুতে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইমেরেটাস হাসান শাহরিয়ার, কমলওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার সভাপতি ফরিদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশ্লেষক জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুতে সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক ও তার আত্মার শান্তি কামনা করা হয় এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কূটনীতি বিষয়ক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদির বিশ্লেষক এ বরেণ্য সাংবাদিক শুধু সাংবাদিকতার জগতেই নন, একজন বড় মাপের মানুষ হিসেবেও ছিলেন অনুকরণীয়।
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: মাধবপুরের কৃতী সন্তান জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুতে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে মাধবপুর অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রোববার বিকালে অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সভা হয়। সভায় নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি অলিদ মিয়া, সহ-সভাপতি শামীম চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহাম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক রাজীব দেব রায় রাজু, যুগ্ম সম্পাদক সাবিবর হাসান, আলমগীর কবির, অর্থ সম্পাদক এসএইচ উজ্জল, দপ্তর সম্পাদক হৃদয় পাঠান উজ্জল, প্রচার সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জয়, সাংবাদিক আশরাফ ছিদ্দিকী জুয়েল, আনিসুর রহমান মুক্তার, আবুল কালাম শাহীন, ফয়েজ আহাম্মেদ প্রমুখ।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক বাসচালকের শাস্তি দাবি করে গতকাল মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন সাংবাদিকরা। দুপুর ১২টায় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন জেলা সদরে কর্মরত সাংবাদিকরা। পরে একই স্থানে দুর্ঘটনার প্রতিবাদের প্রেস ক্লাব সভাপতি এমএ সালামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সৈয়দ উমেদ আলী, সৈয়দ মহসীন পারভেজ, নুরুল ইসলাম শেফুল, নজরুল ইসলাম মুহিব, আনহার আহমদ শামশাদ, হাসানাত কামাল, আজাদুর রহমান ও মাসুদ আহমদ প্রমুখ। বক্তারা এই গুণী সাংবাদিকের এমন করুণ মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
গত শনিবার রাত প্রায় ৮টায় রাজধানীর কাওরানবাজার এলাকায় সোনারগাঁও মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জগ্লুল আহমেদ চৌধূরী। তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার পিয়াইম গ্রামে। তার পিতা নাসিরউদ্দিন চৌধূরী যুক্তফ্রন্ট সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন। জগ্লুল আহমেদ চৌধূরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক জগ্লুল আহমেদ চৌধূরী ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছিলেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৮-৮৯ সালে অবিভক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ছিলেন তিনি। তার স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে।
দাওয়াত পেলেই ছুটে আসতেন হবিগঞ্জে
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, অত্যন্ত বিনয়ী জগলুল আহমেদ চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের পিয়াইম গ্রামে। তার বাবা নাছির উদ্দিন চৌধুরী যুক্তফ্রন্ট সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন। তার চাচাতো ভাই মরহুম মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী তৎকালীন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন। হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মারুফ উদ্দিন চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরীও তার আপন চাচাতো ভাই। জগলুল আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে হবিগঞ্জের সাংবাদিকদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের যে কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাওয়া মাত্রই ছুটে আসতেন তিনি। হবিগঞ্জ থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক স্বাধীকার পত্রিকার এক যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে জগলুল আহমেদ চৌধুরীকে ‘স্বাধিকার পদক’ দেয়া হয়। হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাব থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। প্রথিতযশা এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে হবিগঞ্জের সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামক দত্ত জানিয়েছেন, আজ জানাজার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে তদন্ত কমিটি। এ সময় তারা আশপাশের লোকদের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে বাসটি শনাক্ত করার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরামর্শ দেবেন। সেই সঙ্গে কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটলো এর কারণ নির্ণয় করবেন।
গতকাল সকাল ৯টায় নাবিদ আহমেদ চৌধূরী বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় অজ্ঞাত বাসের চালককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বলেন, বাস ও চালককে শনাক্ত করতে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে। যে কোন সময় তা শনাক্ত হতে পারে। অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে বাস ও বাসচালককে শনাক্ত করতে পথচারী-প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতা চেয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাস ও বাসচালক সম্পর্কে কোন তথ্য পেলে ডিএমপি’র এ বিভাগে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
বিশিষ্ট এ সাংবাদিকের মৃত্যুতে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইমেরেটাস হাসান শাহরিয়ার, কমলওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার সভাপতি ফরিদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশ্লেষক জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুতে সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক ও তার আত্মার শান্তি কামনা করা হয় এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কূটনীতি বিষয়ক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদির বিশ্লেষক এ বরেণ্য সাংবাদিক শুধু সাংবাদিকতার জগতেই নন, একজন বড় মাপের মানুষ হিসেবেও ছিলেন অনুকরণীয়।
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: মাধবপুরের কৃতী সন্তান জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুতে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে মাধবপুর অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রোববার বিকালে অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সভা হয়। সভায় নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি অলিদ মিয়া, সহ-সভাপতি শামীম চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহাম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক রাজীব দেব রায় রাজু, যুগ্ম সম্পাদক সাবিবর হাসান, আলমগীর কবির, অর্থ সম্পাদক এসএইচ উজ্জল, দপ্তর সম্পাদক হৃদয় পাঠান উজ্জল, প্রচার সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জয়, সাংবাদিক আশরাফ ছিদ্দিকী জুয়েল, আনিসুর রহমান মুক্তার, আবুল কালাম শাহীন, ফয়েজ আহাম্মেদ প্রমুখ।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : জগ্লুল আহমেদ চৌধূরীর মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক বাসচালকের শাস্তি দাবি করে গতকাল মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন সাংবাদিকরা। দুপুর ১২টায় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন জেলা সদরে কর্মরত সাংবাদিকরা। পরে একই স্থানে দুর্ঘটনার প্রতিবাদের প্রেস ক্লাব সভাপতি এমএ সালামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সৈয়দ উমেদ আলী, সৈয়দ মহসীন পারভেজ, নুরুল ইসলাম শেফুল, নজরুল ইসলাম মুহিব, আনহার আহমদ শামশাদ, হাসানাত কামাল, আজাদুর রহমান ও মাসুদ আহমদ প্রমুখ। বক্তারা এই গুণী সাংবাদিকের এমন করুণ মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
গত শনিবার রাত প্রায় ৮টায় রাজধানীর কাওরানবাজার এলাকায় সোনারগাঁও মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জগ্লুল আহমেদ চৌধূরী। তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার পিয়াইম গ্রামে। তার পিতা নাসিরউদ্দিন চৌধূরী যুক্তফ্রন্ট সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন। জগ্লুল আহমেদ চৌধূরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক জগ্লুল আহমেদ চৌধূরী ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছিলেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৮-৮৯ সালে অবিভক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ছিলেন তিনি। তার স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে।
দাওয়াত পেলেই ছুটে আসতেন হবিগঞ্জে
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, অত্যন্ত বিনয়ী জগলুল আহমেদ চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের পিয়াইম গ্রামে। তার বাবা নাছির উদ্দিন চৌধুরী যুক্তফ্রন্ট সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন। তার চাচাতো ভাই মরহুম মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী তৎকালীন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন। হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মারুফ উদ্দিন চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরীও তার আপন চাচাতো ভাই। জগলুল আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে হবিগঞ্জের সাংবাদিকদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের যে কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাওয়া মাত্রই ছুটে আসতেন তিনি। হবিগঞ্জ থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক স্বাধীকার পত্রিকার এক যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে জগলুল আহমেদ চৌধুরীকে ‘স্বাধিকার পদক’ দেয়া হয়। হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাব থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। প্রথিতযশা এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে হবিগঞ্জের সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
No comments