মালালার সেই দুই সহপাঠীর কথা
তালেবান জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার জেরে সারা বিশ্বে পরিচিতি পান মালালা ইউসুফজাই। পাকিস্তানের নারীশিক্ষা আন্দোলনের এ কিশোরী কর্মী রীতিমতো তারকা বনে গেছেন। কিন্তু একই দিন গুলিবিদ্ধ হওয়া তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই সহপাঠীর কথা আজও অনেকের কাছেই অজানা। মালালার সেই দুই সহপাঠী কাইনাত রিয়াজ ও শাজিয়া রমজান। গত বছর যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের আটলান্টিক কলেজ থেকে বৃত্তি পান তাঁরা। তবে পাকিস্তানের প্রত্যন্ত সোয়াত এলাকা থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরের দক্ষিণ ওয়েলসে পাড়ি জমানোটা সহজ ছিল না। ২০১২ সালের অক্টোবরের সেই দিনটিতে বাড়ি ফিরছিলেন মালালা ও তাঁর সহপাঠীরা। একপর্যায়ে এক তালেবান জঙ্গি লাফিয়ে তাঁদের স্কুলবাসে ওঠে। লোকটা জানতে চায় মালালা কে।
কয়েক মুহূর্তের মধ্যে লোকটা তাকে চিনতে পারে। তখনই অস্ত্র বের করে মালালার মাথা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সেদিন শাজিয়ার ঘাড়ে ও কাইনাতের হাতেও গুলি লাগে। কাইনাত বলেন, ‘গুলি লাগার পর লুটিয়ে পড়া রক্তাক্ত মালালার স্মৃতি আজও ভুলিনি। এখনো রক্ত দেখলেই সেই দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে।’ তিন বান্ধবীরই পড়াশোনা করার উচ্চাশা ছিল। তাঁদের অনুপ্রেরণা জোগাতেন মালালা। মালালার বন্ধুদের অনেক লেখাপড়া শিখে বড় মানুষ হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। তবে ওয়েলসে আসার পর প্রথম প্রথম ইংরেজি বলা ও সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো নিয়ে কিছু সমস্যায় পড়তে হতো তাঁদের। শাজিয়া বললেন, ‘পরিবার ছেড়ে এত দূরে থাকাও আরেকটা সমস্যা।...বাবা, মা কিংবা ভাইয়ের সান্নিধ্য কতটা প্রয়োজন তা হয়তো সবাই বুঝবে না। তবে এখানে পড়াশোনা খুবই উন্নত।’ তালেবানের হুমকি সত্ত্বেও আগামী বড়দিনের ছুটিতে দেশে ফেরার ইচ্ছা দুই বান্ধবীর। স্বজনদের সঙ্গে ছুটি উপভোগ শেষে আবার ফিরে আসবেন ওয়েলসে। কিন্তু পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফেরার পর সেখানেই থেকে যাবেন তাঁরা। দাঁড়াবেন নিজ দেশের নারীদের পাশে। সূত্র: বিবিসি
No comments