অস্ত্র চোরাচালানের ট্রানজিট চট্টগ্রাম
অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের ট্রানজিট রুট
হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে চট্টগ্রাম। সীমান্তবর্তী দেশগুলো থেকে আইনশৃংখলা
রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অস্ত্র আসছে সড়ক ও সমুদ্র পথে। আর এখান
থেকে চোরাকারবারীদের মাধ্যমে তা পৌঁছে যাচ্ছে সন্ত্রাসীদের কাছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, দেশের পার্বত্য অঞ্চলে যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী
সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে ওইসব গ্রুপের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশের সন্ত্রাসী
গ্রুপগুলোর সম্পর্ক রয়েছে। উভয়ের সোগসাজশে দেশে নানাভাবে ঢুকছে অবৈধ
অস্ত্র। এর বাইরে এলজি বন্দুকসহ বেশ ক’টি দেশীয় অস্ত্র তৈরি হচ্ছে
কক্সবাজারের মহেশখালী, রামু এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িসহ বিভিন্ন
স্থানে। একাধিকবার এসব উপজেলায় অস্ত্র তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে
সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। নগরীর কয়েকটি ওয়ার্কসপেও
দেশীয় অস্ত্র তৈরি হচ্ছে বলে গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য পেয়েছে। দেশে সবচেয়ে
চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্রের চালানটি ধরা পড়ে বিগত চারদলীয় জোট সরকারের
আমলে আনোয়ারার সিইউএফএল জেটিঘাটে। এ ঘটনায় জড়িত ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন
আদালত। চট্টগ্রামকে ব্যবহার করে এসব অস্ত্র ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন
উলফার জন্য আনা হয়েছিল। গত দশ মাসে বড় ধরনের অভিযান ছাড়াই নগর পুলিশ উদ্ধার
করেছে ছোট বড় ৫২টি অস্ত্র। এসব ঘটনায় ১৬ থানায় মামলা হয়েছে ৯২টি। নগরী ও
জেলা মিলে চট্টগ্রামে চার হাজারের অধিক সন্ত্রাসী রয়েছে। তার মধ্যে পুলিশের
তালিকায় রয়েছে দুই হাজার সন্ত্রাসীর নাম। এর মধ্যে জেলা পুলিশের তালিকায়
রয়েছে ৭৭৫ সন্ত্রাসী। এ সন্ত্রাসীদের কাছে ৪০ হাজারের অধিক অবৈধ অস্ত্র
রয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। চট্টগ্রামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বৈধ অস্ত্র
রয়েছে ৩ হাজার ৭৪১টি। এরমধ্যে নগরীতে রয়েছে ১ হাজার ২৭৮টি। নগর পুলিশের
তালিকায় ১৮০ অস্ত্র ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে। এদের মধ্যে ক’জন কারাগারে আটক
থাকলেও অধিকাংশই রয়েছে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার জানান, সন্ত্রাসীদের কাছে বড় অস্ত্রের চেয়ে সহজে বহনযোগ্যতার কারণে ছোট অস্ত্রের চাহিদা বেশি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রের ক্রেতা-বিক্রেতাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে বৈধ অস্ত্র রয়েছে ৩ হাজার ৭৪১টি। তার মধ্যে নগরীতে রয়েছে ১ হাজার ২৭৮টি। বৈধ অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বন্দুক ৩ হাজার ১১৯টি, রাইফেল ২০৮টি, রিভলবার ২৫২টি ও পিস্তল ১৬২টি। নগরীতে বৈধ ১ হাজার ২৭৫টি অস্ত্রের মধ্যে ২শ’ অস্ত্রের খোঁজ মিলছে না। বিভিন্ন সময়ে এসব বৈধ অস্ত্রও অবৈধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি বৈধ অস্ত্র সন্ত্রাসীদের ভাড়া দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অস্ত্র উদ্ধার ও মামলা : চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে নগরীর ১৬টি থানায় অস্ত্র আইনে ৯২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারও অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী গ্রেফতারের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করে। থানায় দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০টি, ফেব্র“য়ারিতে ৬টি, মার্চে ৫টি, এপ্রিলে ১১টি, মে ৬টি, জুনে ১৫টি, জুলাইয়ে ১৪টি, আগস্টে ৩টি, সেপ্টেম্বরে ১১টি, অক্টোবরে ১১টি অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের অভিযান : একে-৪৭, একে-২২ কিংবা এম-১৬। এসব শক্তিশালী মারণাস্ত্র এখন সন্ত্রাসীদের হাতে। এসব অস্ত্র হাত বদল হয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে অপহরণ, খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ লোকজনকে জিম্মি করার কাজে। নগর গোয়েন্দা পুলিশ বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে গত ১০ মাসে ছোট বড় ৫২টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এর বাইরেও র্যাব-৭, নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ড নদী ও সাগরে অভিযান চালিয়ে বেশ ক’টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতে একই সঙ্গে অস্ত্র চোরাচালানের ট্রানজিট হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে বন্দর নগরী।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৮ নভেম্বর দুটি এলজিসহ কর্ণফুলী থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আবুল কাশেম নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ী। ২০ জুলাই রাতে হাটহাজারী উপজেলার লাঙ্গলমোড়া এলাকা থেকে একটি এসএমজি, দুটি ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাব। গত ২১ জানুয়ারি সিআরবি এলাকায় অস্ত্র বিক্রির সময় রাশেদুল ইসলাম রুবেলকে আমেরিকার তৈরি ৭.৬৫ বোরের পিস্তল ও দুই রাউন্ড কার্তুজসহ গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ২২ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানা পুলিশ আমেরিকার তৈরি ৭.৬৫ বোরের পিস্তলসহ মনজুর আলম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ১০ সেপ্টেম্বর শাহ আমানত সেতু এলাকায় আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তির শরীর তল্লাশি করে পাওয়া যায় দুটি এলজি। তার বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালীতে। স্থানীয়ভাবে তৈরি করা অস্ত্র বিক্রির জন্য নগরীতে আনা হচ্ছিল বলে সে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এছাড়াও সম্প্র্রতি র্যাব-৭ রাউজান উপজেলার পূর্বগুজরা বড় ঠাকুর এলাকায় পৃথক দুটি অভিযানে একে-৪৭ রাইফেলসহ দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে।
সিএমপির তালিকাভুক্ত ১৮০ অস্ত্র ব্যবসায়ী : চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের তালিকায় ১৮০ অস্ত্র ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে। এরমধ্যে ৬৯ জনই অন্য জেলার বাসিন্দা। এরা দেশী এবং বিদেশী অস্ত্রের ব্যবসা করছে এবং সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। তালিকাভুক্তদের ক’জন কারাগারে আটক থাকলেও অধিকাংশই রয়েছে বাইরে। পুলিশের তালিকাভুক্ত অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোতোয়ালি থানায় রয়েছে ৩২ জনের মধ্যে ১২ জনই অন্য জেলার, বাকলিয়ায় ১১ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৫ জন, চকবাজারে ৪ জনের মধ্যে অন্য জেলার ২ জন, পাঁচলাইশে ১২ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৭ জন, খুলশীতে ৯ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৪ জন, বায়েজিদে ৩৮ জনের মধ্যে অন্য জেলার ১৩ জন, চান্দগাঁওতে ১২ জনের মধ্যে অন্য জেলার ২ জন, ডবলমুরিংয়ে ৮ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৩ জন, হালিশহরে ৪ জন, পাহাড়তলিতে ১৯ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৭ জন, আকবরশাহে ৪ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৩ জন, বন্দরে ১০ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৬ জন, ইপিজেডে ২ জন, পতেঙ্গায় ৭ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৩ জন এবং কর্ণফুলীতে ৯ জনের মধ্যে অন্য জেলার ২ জন।
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার জানান, সন্ত্রাসীদের কাছে বড় অস্ত্রের চেয়ে সহজে বহনযোগ্যতার কারণে ছোট অস্ত্রের চাহিদা বেশি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রের ক্রেতা-বিক্রেতাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে বৈধ অস্ত্র রয়েছে ৩ হাজার ৭৪১টি। তার মধ্যে নগরীতে রয়েছে ১ হাজার ২৭৮টি। বৈধ অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বন্দুক ৩ হাজার ১১৯টি, রাইফেল ২০৮টি, রিভলবার ২৫২টি ও পিস্তল ১৬২টি। নগরীতে বৈধ ১ হাজার ২৭৫টি অস্ত্রের মধ্যে ২শ’ অস্ত্রের খোঁজ মিলছে না। বিভিন্ন সময়ে এসব বৈধ অস্ত্রও অবৈধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি বৈধ অস্ত্র সন্ত্রাসীদের ভাড়া দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অস্ত্র উদ্ধার ও মামলা : চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে নগরীর ১৬টি থানায় অস্ত্র আইনে ৯২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারও অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী গ্রেফতারের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করে। থানায় দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০টি, ফেব্র“য়ারিতে ৬টি, মার্চে ৫টি, এপ্রিলে ১১টি, মে ৬টি, জুনে ১৫টি, জুলাইয়ে ১৪টি, আগস্টে ৩টি, সেপ্টেম্বরে ১১টি, অক্টোবরে ১১টি অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের অভিযান : একে-৪৭, একে-২২ কিংবা এম-১৬। এসব শক্তিশালী মারণাস্ত্র এখন সন্ত্রাসীদের হাতে। এসব অস্ত্র হাত বদল হয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে অপহরণ, খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ লোকজনকে জিম্মি করার কাজে। নগর গোয়েন্দা পুলিশ বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে গত ১০ মাসে ছোট বড় ৫২টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এর বাইরেও র্যাব-৭, নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ড নদী ও সাগরে অভিযান চালিয়ে বেশ ক’টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতে একই সঙ্গে অস্ত্র চোরাচালানের ট্রানজিট হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে বন্দর নগরী।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৮ নভেম্বর দুটি এলজিসহ কর্ণফুলী থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আবুল কাশেম নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ী। ২০ জুলাই রাতে হাটহাজারী উপজেলার লাঙ্গলমোড়া এলাকা থেকে একটি এসএমজি, দুটি ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাব। গত ২১ জানুয়ারি সিআরবি এলাকায় অস্ত্র বিক্রির সময় রাশেদুল ইসলাম রুবেলকে আমেরিকার তৈরি ৭.৬৫ বোরের পিস্তল ও দুই রাউন্ড কার্তুজসহ গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ২২ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানা পুলিশ আমেরিকার তৈরি ৭.৬৫ বোরের পিস্তলসহ মনজুর আলম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ১০ সেপ্টেম্বর শাহ আমানত সেতু এলাকায় আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তির শরীর তল্লাশি করে পাওয়া যায় দুটি এলজি। তার বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালীতে। স্থানীয়ভাবে তৈরি করা অস্ত্র বিক্রির জন্য নগরীতে আনা হচ্ছিল বলে সে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এছাড়াও সম্প্র্রতি র্যাব-৭ রাউজান উপজেলার পূর্বগুজরা বড় ঠাকুর এলাকায় পৃথক দুটি অভিযানে একে-৪৭ রাইফেলসহ দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে।
সিএমপির তালিকাভুক্ত ১৮০ অস্ত্র ব্যবসায়ী : চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের তালিকায় ১৮০ অস্ত্র ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে। এরমধ্যে ৬৯ জনই অন্য জেলার বাসিন্দা। এরা দেশী এবং বিদেশী অস্ত্রের ব্যবসা করছে এবং সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। তালিকাভুক্তদের ক’জন কারাগারে আটক থাকলেও অধিকাংশই রয়েছে বাইরে। পুলিশের তালিকাভুক্ত অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোতোয়ালি থানায় রয়েছে ৩২ জনের মধ্যে ১২ জনই অন্য জেলার, বাকলিয়ায় ১১ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৫ জন, চকবাজারে ৪ জনের মধ্যে অন্য জেলার ২ জন, পাঁচলাইশে ১২ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৭ জন, খুলশীতে ৯ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৪ জন, বায়েজিদে ৩৮ জনের মধ্যে অন্য জেলার ১৩ জন, চান্দগাঁওতে ১২ জনের মধ্যে অন্য জেলার ২ জন, ডবলমুরিংয়ে ৮ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৩ জন, হালিশহরে ৪ জন, পাহাড়তলিতে ১৯ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৭ জন, আকবরশাহে ৪ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৩ জন, বন্দরে ১০ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৬ জন, ইপিজেডে ২ জন, পতেঙ্গায় ৭ জনের মধ্যে অন্য জেলার ৩ জন এবং কর্ণফুলীতে ৯ জনের মধ্যে অন্য জেলার ২ জন।
No comments