সিভিল সার্জন মোজাহারের বেপরোয়া দুর্নীতি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদ্য বদলি হওয়া সিভিল
সার্জন ডা. মোজাহার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বদলি বাণিজ্য থেকে পথ্য সরবরাহ এবং জেলার বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে ভয়ভীতি
দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ
থেকেও ঘুষ নিয়েছেন নগদে। খেয়েছেন ফ্রি খাবার। পথ্য সরবরাহে একাধিক
ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ দিয়েছেন যে বেশি টাকা দিয়েছে তাকে। এ
নিয়ে কয়েকজন ঠিকাদার তার নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের
কাছে। ঠিকাদাররা এখন টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিচ্ছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডা. মোজাহার হোসেন। যুগান্তরকে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা। বর্তমান সিভিল সার্জন পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তৈরি করে ছড়াচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগের অনুলিপি এসেছে যুগান্তরের কাছেও। এতে দেখা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও ৪ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের পথ্য সরবরাহের জন্য ১৯ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় কোটি টাকার এ কাজে ২৫টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেন। এসময় ডা. মোজাহার ঘোষণা দেন যে বেশি (ঘুষ) দেবে তাকেই কাজ দেবেন তিনি। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চলতি ঠিকাদারদের কাছ থেকে দুই লাখ করে এবং সদর হাসপাতালের ঠিকাদারের কাছ থেকে ৫ লাখ করে টাকা ঘুষ নেন।
এক ঠিকাদার যুগান্তরকে বলেন, সদর হাসপাতালের পথ্য সরবরাহের কাজ দেবেন বলে আমার কাছ থেকে তিন মাস আগে টাকা নিয়েছেন। ১৩ নভেম্বর সকালে ডা. মোজাহার গোপনে সদর হাসপাতালের পথ্য সরবরাহের কার্যাদেশ দেন উদয় এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। ওইদিন সকালে কাজ দেয়া হলেও বিকালে আমি ফোন করলে তিনি বলেন, চিন্তা করবেন না আমি আপনাকেই কাজ দেব। একই অভিযোগ শিবগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের এক সাবেক ঠিকাদারেরও। তিনি বলেন, এভাবে আমাদের বোকা বানিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গোপনে চলে যান নওগাঁ। ডা. মোজাহার হোসেন অনিয়মের মাধ্যমে রাজশাহীর একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের। ঠিকাদাররা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে দিনক্ষণ দিয়ে আর টাকা ফেরত দিচ্ছেন না তিনি।
একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি এমএলএসএসর চাকরি দিয়েছেন ডা. মোজাহার।
জানতে চাইলে বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. আলাউদ্দিনযুগান্তরকে বলেন, পথ্য সরবরাহের টেন্ডারে অনিয়মের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। কীভাবে কাজ দেয়া হয়েছে সেগুলো পুনঃমূল্যায়নের জন্য তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। অনিয়ম ধরা পড়লে কার্যাদেশ বাতিল করে পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হবে।
১৯ আগস্ট ৪ স্যানিটারি ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি করেন ডা. মোজাহার। এদের একজন শিবগঞ্জের তাজকেরাতুন নেসা। তিনি জানান, বৃদ্ধা শাশুড়ির সেবাযত্নের জন্য সদরে থাকার অনুরোধ করি সাবেক সিভিল সার্জনকে। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে বদলি বাতিলের জন্য তিনি আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। শেষে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর তিনি বদলি আদেশ বাতিল করেন। বাকি ৩ জনের কাছ থেকেও তিনি টাকা নেন বদলি আদেশ বাতিলে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের উদয়ন মোড়ের শাজাহান হোটেলের মালিক বলেন, সাবেক সিভিল সার্জনের নাস্তাসহ সব খাবারই আমাদের হোটেল থেকে যেত। কখনো টাকা দিতেন কখনো দিতেন না। একদিন দুপুরে খাবারের সঙ্গে ডাল না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সিভিল সার্জন অভিযান চালান হোটেলে। তিনি আরও বলেন, মাসে ৫০ হাজার টাকা করে মাসোহারার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আমাদের হোটেলের খাবারের মান ভালো বলে আমরা তার প্রস্তাবে রাজি হতে পারিনি। তারপরও তাকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল।
নিজের বদলির আদেশ পাওয়ার পর ডা. মোজাহার হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মডার্ন, আল হেরা, জনসেবা ও নুরজাহান ক্লিনিক থেকে ১ লাখ টাকা করে আদায় করেন। লাইসেন্স বাতিলের ভয় দেখিয়ে এ টাকা নেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন।
বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সক্রিয় সদস্য ডা. মোজাহার হোসেন ছাত্রজীবনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে লোভনীয় এই পদে থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা অবৈধভাবে কামাই করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে নওগাঁ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে পদোন্নতি বাগিয়ে নেন বিএনপির এ সক্রিয় নেতা। ১৯ অক্টোবর নওগাঁ-১ এমপি ও মন্ত্রী এমাজউদ্দিন প্রামাণিককে ম্যানেজ করে বদলি হয়ে যান নিজের জেলা নওগাঁয়। মান্দা উপজেলায় ডা. মোজাহার হোসেনের বাড়ি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডা. মোজাহার হোসেন। যুগান্তরকে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা। বর্তমান সিভিল সার্জন পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তৈরি করে ছড়াচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগের অনুলিপি এসেছে যুগান্তরের কাছেও। এতে দেখা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও ৪ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের পথ্য সরবরাহের জন্য ১৯ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় কোটি টাকার এ কাজে ২৫টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেন। এসময় ডা. মোজাহার ঘোষণা দেন যে বেশি (ঘুষ) দেবে তাকেই কাজ দেবেন তিনি। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চলতি ঠিকাদারদের কাছ থেকে দুই লাখ করে এবং সদর হাসপাতালের ঠিকাদারের কাছ থেকে ৫ লাখ করে টাকা ঘুষ নেন।
এক ঠিকাদার যুগান্তরকে বলেন, সদর হাসপাতালের পথ্য সরবরাহের কাজ দেবেন বলে আমার কাছ থেকে তিন মাস আগে টাকা নিয়েছেন। ১৩ নভেম্বর সকালে ডা. মোজাহার গোপনে সদর হাসপাতালের পথ্য সরবরাহের কার্যাদেশ দেন উদয় এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। ওইদিন সকালে কাজ দেয়া হলেও বিকালে আমি ফোন করলে তিনি বলেন, চিন্তা করবেন না আমি আপনাকেই কাজ দেব। একই অভিযোগ শিবগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের এক সাবেক ঠিকাদারেরও। তিনি বলেন, এভাবে আমাদের বোকা বানিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গোপনে চলে যান নওগাঁ। ডা. মোজাহার হোসেন অনিয়মের মাধ্যমে রাজশাহীর একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের। ঠিকাদাররা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে দিনক্ষণ দিয়ে আর টাকা ফেরত দিচ্ছেন না তিনি।
একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি এমএলএসএসর চাকরি দিয়েছেন ডা. মোজাহার।
জানতে চাইলে বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. আলাউদ্দিনযুগান্তরকে বলেন, পথ্য সরবরাহের টেন্ডারে অনিয়মের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। কীভাবে কাজ দেয়া হয়েছে সেগুলো পুনঃমূল্যায়নের জন্য তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। অনিয়ম ধরা পড়লে কার্যাদেশ বাতিল করে পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হবে।
১৯ আগস্ট ৪ স্যানিটারি ইন্সপেক্টরকে একযোগে বদলি করেন ডা. মোজাহার। এদের একজন শিবগঞ্জের তাজকেরাতুন নেসা। তিনি জানান, বৃদ্ধা শাশুড়ির সেবাযত্নের জন্য সদরে থাকার অনুরোধ করি সাবেক সিভিল সার্জনকে। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে বদলি বাতিলের জন্য তিনি আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। শেষে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর তিনি বদলি আদেশ বাতিল করেন। বাকি ৩ জনের কাছ থেকেও তিনি টাকা নেন বদলি আদেশ বাতিলে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের উদয়ন মোড়ের শাজাহান হোটেলের মালিক বলেন, সাবেক সিভিল সার্জনের নাস্তাসহ সব খাবারই আমাদের হোটেল থেকে যেত। কখনো টাকা দিতেন কখনো দিতেন না। একদিন দুপুরে খাবারের সঙ্গে ডাল না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সিভিল সার্জন অভিযান চালান হোটেলে। তিনি আরও বলেন, মাসে ৫০ হাজার টাকা করে মাসোহারার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আমাদের হোটেলের খাবারের মান ভালো বলে আমরা তার প্রস্তাবে রাজি হতে পারিনি। তারপরও তাকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল।
নিজের বদলির আদেশ পাওয়ার পর ডা. মোজাহার হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মডার্ন, আল হেরা, জনসেবা ও নুরজাহান ক্লিনিক থেকে ১ লাখ টাকা করে আদায় করেন। লাইসেন্স বাতিলের ভয় দেখিয়ে এ টাকা নেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন।
বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সক্রিয় সদস্য ডা. মোজাহার হোসেন ছাত্রজীবনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে লোভনীয় এই পদে থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা অবৈধভাবে কামাই করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে নওগাঁ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে পদোন্নতি বাগিয়ে নেন বিএনপির এ সক্রিয় নেতা। ১৯ অক্টোবর নওগাঁ-১ এমপি ও মন্ত্রী এমাজউদ্দিন প্রামাণিককে ম্যানেজ করে বদলি হয়ে যান নিজের জেলা নওগাঁয়। মান্দা উপজেলায় ডা. মোজাহার হোসেনের বাড়ি।
No comments