তাহলে হেলমেটের কাজ কী?
ফিল হিউজের দুঃখজনক মৃত্যু প্রশ্নবিদ্ধ করেছে হেলমেটের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে। মাথায় হেলমেট থাকার পরও কীভাবে সে দিন শন অ্যাবটের বাউন্সার হিউজকে এমন মারাত্মক আঘাত করল সেই প্রশ্ন এখন সবার। ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের মাথার শতভাগ নিরাপত্তা যে বর্তমান নকশার হেলমেট দিয়ে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, সেটাও প্রমাণ হয়ে গেছে হিউজের এই দুঃসহ পরিণতির মধ্য দিয়ে। সেদিন শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচটিতে হিউজ এমন একটি নকশার হেলমেট পরেছিলেন, যা তাঁর মাথার নিচের দিকের অংশের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। অ্যাবটের বাউন্সারটি সরাসরি গিয়ে আঘাত করে হিউজের কানের নিচের অংশে। অনেকে হিউজের আঘাতটিতে ‘বিরল’ বা ‘ব্যতিক্রম’ বললেও বর্তমান ক্রিকেটে প্রচলিত হেলমেটের নকশার দুর্বলতার ব্যাপারটিই প্রকাশ্য হয়ে উঠছে বারবার।
হেলমেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্য হেলমেটের নকশার এই দুর্বলতার জন্য দায়ী করছেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের ‘ঐতিহ্য-প্রীতি’র বাতিককেই। তারকা ক্রিকেটারদের কাছে হেলমেট প্রস্তুতকারীরা অনেক সময় নতুন নতুন নকশা উপস্থাপন করলেও তাঁরা সব সময়ই নাকি পুরোনো নকশার প্রতিই পক্ষপাত প্রদর্শন করে এসেছেন। ক্রিকেটারদের অনীহার কারণেই বহু গবেষণালব্ধ নকশার হেলমেট বাজারে আনতে পারেনি প্রস্তুতকারীরা। ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যালবিওন লিমিটেডের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের ঐতিহ্য প্রীতির কারণেই আমরা হেলমেটের নতুন নকশা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে আছি। ক্রিকেটে নতুন কিছু গ্রহণ করার প্রবণতাটা অনেক কম। এই বিনিয়োগটা বেসবল ও সাইক্লিংয়ের মতো খেলার সরঞ্জামাদির পেছনে করাটাই আমাদের কাছে বেশি লাভজনক। কারণ, এই খেলাগুলো নতুন প্রযুক্তির ব্যাপারে ক্রিকেটের মতো রক্ষণশীল নয়।’
২০০৯ সালে একটি ওয়ানডে ম্যাচে নতুন ধরনের একটি হেলমেট পরে মাঠে নেমেছিলেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ব্রিস ম্যাকগ্রেইন। অ্যালবিওন কোম্পানির তৈরি হেলমেটটি ছিল গবেষণালব্ধ নকশার ওপর ভিত্তি করে বানানো। ওটা ব্যবহার করে ম্যাকগ্রেইন ও অন্যান্য ক্রিকেটাররা মতামত দেওয়ার পরই অ্যালবিওন তা বাজারে ছাড়ত। নতুন ওই নকশাটি ম্যাকগ্রেইনের বেশ পছন্দ হয়। পুরো মাথার সুরক্ষা বিধান করা ওই হেলমেটটি কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাজারে আনতে পারেনি অ্যালবিওন। ম্যাকগ্রেইনের পছন্দ হলেও তা পছন্দ হয়নি ‘ঐতিহ্যপন্থী’ অন্যান্য ক্রিকেটারদের। ম্যাকগ্রেইন তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘আমি ওটা পরে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের বিদ্রূপের শিকার হই। আমার সতীর্থরাও অদ্ভুত নকশার হেলমেটটি না পরার অনুরোধ করেছিল। শুনেছি, টেলিভিশন ধারাভাষ্যকাররা নাকি আমাকে “রোবোকপ” অভিধা দিয়েছিলেন।’
বেশির ভাগ ক্রিকেটার পছন্দ না করার জন্যই নাকি ওই নকশাটি বাজারে আনতে পারেনি অ্যালবিওন। অথচ অনেক গবেষণা করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ সুরক্ষার ব্যবস্থাই ছিল ওই নকশায়।
এ ব্যাপারে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির ভূমিকাও কম গোলমেলে নয়। ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইসিসির ভূমিকাটা নাকি কখনোই জোরালো নয়। মাত্র গত বছর আইসিসি ক্রিকেট হেলমেটের ব্যাপারে একটি বিশেষ নিরাপত্তা মান নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। এই বিশেষ নিরাপত্তা মানের ব্যাপারটি হলো হেলমেটের গ্রিল-সংক্রান্ত। এতে প্রস্তুতকারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ফাঁকা অংশ দিয়ে বল যেন কোনোভাবেই ব্যাটসম্যানের মুখাবয়বকে আঘাত করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২০১৩ সালে গ্রহণ করা এই সুপারিশটি ছিল গত ১৫ বছরে এ-সংক্রান্ত প্রথম কোনো সিদ্ধান্ত। ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইসিসি যে কতটা উদাসীন, তার একটা বড় উদাহরণ হতে পারে এই তথ্যটি।
হিউজের মৃত্যু এ ব্যাপারে আইসিসিকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে। সংস্থাটির সাবেক সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া এই দুঃখজনক ঘটনার পর দাবি তুলেছেন, ক্রিকেটের সুরক্ষা-সরঞ্জামাদির পুনর্মূল্যায়নের। বলেছেন, ‘হিউজের ঘটনা এ ব্যাপারটি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছে।’ সূত্র: রয়টার্স।
হেলমেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্য হেলমেটের নকশার এই দুর্বলতার জন্য দায়ী করছেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের ‘ঐতিহ্য-প্রীতি’র বাতিককেই। তারকা ক্রিকেটারদের কাছে হেলমেট প্রস্তুতকারীরা অনেক সময় নতুন নতুন নকশা উপস্থাপন করলেও তাঁরা সব সময়ই নাকি পুরোনো নকশার প্রতিই পক্ষপাত প্রদর্শন করে এসেছেন। ক্রিকেটারদের অনীহার কারণেই বহু গবেষণালব্ধ নকশার হেলমেট বাজারে আনতে পারেনি প্রস্তুতকারীরা। ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যালবিওন লিমিটেডের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের ঐতিহ্য প্রীতির কারণেই আমরা হেলমেটের নতুন নকশা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে আছি। ক্রিকেটে নতুন কিছু গ্রহণ করার প্রবণতাটা অনেক কম। এই বিনিয়োগটা বেসবল ও সাইক্লিংয়ের মতো খেলার সরঞ্জামাদির পেছনে করাটাই আমাদের কাছে বেশি লাভজনক। কারণ, এই খেলাগুলো নতুন প্রযুক্তির ব্যাপারে ক্রিকেটের মতো রক্ষণশীল নয়।’
২০০৯ সালে একটি ওয়ানডে ম্যাচে নতুন ধরনের একটি হেলমেট পরে মাঠে নেমেছিলেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ব্রিস ম্যাকগ্রেইন। অ্যালবিওন কোম্পানির তৈরি হেলমেটটি ছিল গবেষণালব্ধ নকশার ওপর ভিত্তি করে বানানো। ওটা ব্যবহার করে ম্যাকগ্রেইন ও অন্যান্য ক্রিকেটাররা মতামত দেওয়ার পরই অ্যালবিওন তা বাজারে ছাড়ত। নতুন ওই নকশাটি ম্যাকগ্রেইনের বেশ পছন্দ হয়। পুরো মাথার সুরক্ষা বিধান করা ওই হেলমেটটি কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাজারে আনতে পারেনি অ্যালবিওন। ম্যাকগ্রেইনের পছন্দ হলেও তা পছন্দ হয়নি ‘ঐতিহ্যপন্থী’ অন্যান্য ক্রিকেটারদের। ম্যাকগ্রেইন তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘আমি ওটা পরে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের বিদ্রূপের শিকার হই। আমার সতীর্থরাও অদ্ভুত নকশার হেলমেটটি না পরার অনুরোধ করেছিল। শুনেছি, টেলিভিশন ধারাভাষ্যকাররা নাকি আমাকে “রোবোকপ” অভিধা দিয়েছিলেন।’
বেশির ভাগ ক্রিকেটার পছন্দ না করার জন্যই নাকি ওই নকশাটি বাজারে আনতে পারেনি অ্যালবিওন। অথচ অনেক গবেষণা করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ সুরক্ষার ব্যবস্থাই ছিল ওই নকশায়।
এ ব্যাপারে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির ভূমিকাও কম গোলমেলে নয়। ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইসিসির ভূমিকাটা নাকি কখনোই জোরালো নয়। মাত্র গত বছর আইসিসি ক্রিকেট হেলমেটের ব্যাপারে একটি বিশেষ নিরাপত্তা মান নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। এই বিশেষ নিরাপত্তা মানের ব্যাপারটি হলো হেলমেটের গ্রিল-সংক্রান্ত। এতে প্রস্তুতকারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ফাঁকা অংশ দিয়ে বল যেন কোনোভাবেই ব্যাটসম্যানের মুখাবয়বকে আঘাত করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২০১৩ সালে গ্রহণ করা এই সুপারিশটি ছিল গত ১৫ বছরে এ-সংক্রান্ত প্রথম কোনো সিদ্ধান্ত। ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইসিসি যে কতটা উদাসীন, তার একটা বড় উদাহরণ হতে পারে এই তথ্যটি।
হিউজের মৃত্যু এ ব্যাপারে আইসিসিকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে। সংস্থাটির সাবেক সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া এই দুঃখজনক ঘটনার পর দাবি তুলেছেন, ক্রিকেটের সুরক্ষা-সরঞ্জামাদির পুনর্মূল্যায়নের। বলেছেন, ‘হিউজের ঘটনা এ ব্যাপারটি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছে।’ সূত্র: রয়টার্স।
No comments