টোকিও-সিউল তীব্র মন কষাকষি
জাপানীরা বলে তাকেশিমো। কোরীয়রা বলে ডোকাডো। আর পাশ্চাত্যে এটি লিয়ানকোর্ট রকস্ নামে পরিচিত। এ হলো সাগরতলের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে বহু বছর আগে জাপান সাগরের বুকে জেগে ওঠা পাথুরে দ্বীপ। দু’টি বড় ও আশেপাশে ছোট ছোট বেশ কিছু টুকরো নিয়ে গঠিত।
সব মিলিয়ে আয়তন ১৯ হেক্টরের বেশি নয়। জাপানের মূল ভূখ- থেকে এই দ্বীপমালা প্রায় ২১০ কিলোমিটার দূরে। কোরিয়া থেকেও তাই। কিন্তু এই ক্ষুদ্র দ্বীপের মালিকানা নিয়ে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বিরোধ চলছে। হালে তা এমন তীব্ররূপ নিয়েছে যে, কোথাকার পানি শেষ পর্যন্ত কোথায় গড়ায়, কে জানে।
দ্বীপটি তেল, গ্যাস ও অন্যান্য খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। সুতরাং এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তবে বিরোধের কারণ যতটা না অর্থনৈতিক তার চেয়ে বেশি জাতীয়তাবাদী অহমবোধ এবং এ ব্যাপারে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এ নিয়ে যেভাবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বিরোধ চলছে অনেক সময় তা ছেলেমানুষী ঝগড়ার পর্যায়ে পড়ে যায়। দ্বীপটি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসনের অধীন। কিন্তু জাপান এর মালিকানা দাবি করে। এই বিরোধ রীতিমত সঙ্কটের রূপ ধারণ করেছিল ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে যখন জাপানের কোস্টগার্ডের একটি দল নিকটবর্তী সাগরতল জরিপ করতে এলে তাদের বাধা দেয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া গানবোট পাঠিয়ে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছিল। শেষে আমেরিকার হস্তক্ষেপে উভয়পক্ষ যুদ্ধংদেহী অবস্থান থেকে সরে আসে এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এবার দ্বীপের মালিকানা বিরোধটা এত বিচ্ছিরি আকার ধারণ করেছে যে কোন পক্ষই নিজের জাত্যাভিমানি অবস্থান থেকে সরে আসতে রাজি নয়। আগস্টের প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লী মাইসুং বাক সে দেশের প্রথম নেতা হিসেবে এই বিতর্কিত দ্বীপ সফরে গিয়ে জাপানের উদ্দেশে একটা লাল সংকেত পাঠিয়ে দেন। এতে জাপানীরা ক্ষুব্ধ তো হয়েই ছিল। পরের দিন আরেক ঘটনায় তাদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। সেদিন লন্ডন অলিম্পিকের ফুটবলে ব্রোঞ্জ পদকের লড়াইয়ে জাপানকে হারিয়ে দেয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার এক খেলোয়াড় ‘ডোকডো আমাদের ভূখ-’ এই লেখা সংবলিত একটি ব্যানার মাঠের মাঝখানে উঁচিয়ে ধরে। অলিম্পিকে রাজনীতি টেনে আনার জন্য ওখানে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও দেশে অন্যভাবে পুরস্কৃত হয়।
ওদিকে প্রেসিডেন্ট লী ডোকডো দ্বীপ থেকে দেশে ফিরে জাপানের উদ্দেশে আরেক চপেটাঘাত মেরে বসেন। বলা নেই কওয়া নেই তিনি ঘোষণা দেন যেÑসম্রাট আকিহিতো কখনও দক্ষিণ কোরিয়া সফরে আসতে চাইলে তাঁকে প্রথমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ও তার আগে এই উপদ্বীপে জাপানের ঔপনিবেশিক শাসনের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। জাপানীরা এটাকে তাঁদের সম্রাটের অপমান হিসেবে দেখে এবং সেদেশের আইনসভায় দ্বীপটির ওপর জাপানের দাবি পুনরায় জোর দিয়ে তুলে ধরা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো আরেক স্পর্শকাতর বিষয় টেনে এনে দক্ষিণ কোরীয়দের ক্ষেপিয়ে দেন। তিনি বলেন, দখলদারিত্বের সময় জাপানী সেনাবাহিনী কোরীয় মহিলাদের যৌনকর্মে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছিল এমন কোন প্রমাণ নেই।
এভাবে দু’দেশের মধ্যে ঝগড়া ও তিক্ততা বেড়ে চলছে। ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে গড়িয়েছে যে ডোকডো দ্বীপের কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার পরিকল্পনার অভিযোগ করে জাপানী প্রধানমন্ত্রী নোডা দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট লীকে চিঠি পাঠালে লী তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। শেষ পর্যন্ত অনেক কা- করে তা নোডার কাছে ফেরত যায়।
জাপান হলো দক্ষিণ কোরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। এ দেশটার সঙ্গে ভবিষ্যত সম্পর্ক ভাল রাখতে দক্ষিণ কোরিয়া সর্বদাই সচেষ্ট থাকে। কিন্তু এ ধরনের আচরণ ওরা এখন করছে কেন, জাপানীদের মনে এটাই প্রশ্ন। দ্বীপের মালিকানা দাবির স্বপক্ষে দু’পক্ষেরই দালিলিক প্রমাণ আছে বলে দাবি করে থাকে উভয়পক্ষ এবং সেসব দলিল নাকি শত শত বছরের পুরনো। যদিও সেগুলোর মধ্যে অস্পষ্টতাও আছে যথেষ্ট। সাম্প্রতিক রেকর্ডও কম গোলমেলে নয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জাপান তার অধিকৃত কোরীয় ভূখ-ের অধিকাংশই মিত্রবাহিনীর সঙ্গে ১৯৫১ সালে শান্তিচুক্তিবলে ছেড়ে দেয়। তবে আলোচ্য দ্বীপটি ছেড়ে দেয়া ভূখ-ের মধ্যে ছিল না বলে টোকিও দাবি করে। কোরীয়রা আবার সেটা মানতে নারাজ। ১৯৫২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া একতরফাভাবে দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে এবং দু’বছর পর সৈন্য পাঠিয়ে তা দখল করে নেয়।
টোকিও এই দখলদারিকে বেআইনী আখ্যা দেয় এবং পরবর্তী কয়েক দশক ধরে প্রস্তাব দিয়ে আসছে যে আন্তর্জাতিক আদালতে সালিশীর মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হোক। সিউল তাতে রাজি হয়নি। এমনকি সম্প্রতিও সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
জাপানের কাছে ডোকডোর মালিকানা ইস্যুটি বড় কোন ইস্যু নয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে তা মস্ত বড় বিষয়। দ্বীপটিকে তারা জাপানের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে দেখে। ভূখ-গত ইস্যু ছাড়াও ডোকডো তাদের কাছে জাপানের ৩৬ বছরের দখলদারির ইতিহাসের প্রতীক। এই দ্বীপের ওপর জাপানের মালিকানা দাবির কথা শুনলেই দক্ষিণ কোরিয়া মনে করে জাপান যে তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত নয় এটাই তার প্রমাণ। কৃতকর্মের একটা হলো দখলদারির অধ্যায়ে কোরীয় মেয়েদেরকে সামরিক পতিতালয়ে জোর করে ঢোকানো। প্রেসিডেন্ট লীর সম্প্রতি ঐ দ্বীপ সফরের একটা উদ্দেশ্য ছিল টোকিওকে একটা শিক্ষা দেয়া। এ ব্যাপারে তাঁর ওপর দেশের সাংবিধানিক আদালতেরও চাপ ছিল।
মোট কথা দ্বীপটি নিয়ে দক্ষিণ কোরীয়দের মধ্যে একটা জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা ও উদ্দীপনা চলছে। দ্বীপটি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের অহঙ্কার ও ইজ্জতের প্রতীক। এ ব্যাপারে জাপানের সঙ্গে দেশটি যে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে তা থেকে সহজ পরিত্রাণ নেই বলে মনে হয়। ম
চলমান ডেস্ক
সূত্র : নিউজউইক
দ্বীপটি তেল, গ্যাস ও অন্যান্য খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। সুতরাং এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তবে বিরোধের কারণ যতটা না অর্থনৈতিক তার চেয়ে বেশি জাতীয়তাবাদী অহমবোধ এবং এ ব্যাপারে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এ নিয়ে যেভাবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বিরোধ চলছে অনেক সময় তা ছেলেমানুষী ঝগড়ার পর্যায়ে পড়ে যায়। দ্বীপটি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসনের অধীন। কিন্তু জাপান এর মালিকানা দাবি করে। এই বিরোধ রীতিমত সঙ্কটের রূপ ধারণ করেছিল ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে যখন জাপানের কোস্টগার্ডের একটি দল নিকটবর্তী সাগরতল জরিপ করতে এলে তাদের বাধা দেয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া গানবোট পাঠিয়ে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছিল। শেষে আমেরিকার হস্তক্ষেপে উভয়পক্ষ যুদ্ধংদেহী অবস্থান থেকে সরে আসে এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এবার দ্বীপের মালিকানা বিরোধটা এত বিচ্ছিরি আকার ধারণ করেছে যে কোন পক্ষই নিজের জাত্যাভিমানি অবস্থান থেকে সরে আসতে রাজি নয়। আগস্টের প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লী মাইসুং বাক সে দেশের প্রথম নেতা হিসেবে এই বিতর্কিত দ্বীপ সফরে গিয়ে জাপানের উদ্দেশে একটা লাল সংকেত পাঠিয়ে দেন। এতে জাপানীরা ক্ষুব্ধ তো হয়েই ছিল। পরের দিন আরেক ঘটনায় তাদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। সেদিন লন্ডন অলিম্পিকের ফুটবলে ব্রোঞ্জ পদকের লড়াইয়ে জাপানকে হারিয়ে দেয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার এক খেলোয়াড় ‘ডোকডো আমাদের ভূখ-’ এই লেখা সংবলিত একটি ব্যানার মাঠের মাঝখানে উঁচিয়ে ধরে। অলিম্পিকে রাজনীতি টেনে আনার জন্য ওখানে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও দেশে অন্যভাবে পুরস্কৃত হয়।
ওদিকে প্রেসিডেন্ট লী ডোকডো দ্বীপ থেকে দেশে ফিরে জাপানের উদ্দেশে আরেক চপেটাঘাত মেরে বসেন। বলা নেই কওয়া নেই তিনি ঘোষণা দেন যেÑসম্রাট আকিহিতো কখনও দক্ষিণ কোরিয়া সফরে আসতে চাইলে তাঁকে প্রথমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ও তার আগে এই উপদ্বীপে জাপানের ঔপনিবেশিক শাসনের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। জাপানীরা এটাকে তাঁদের সম্রাটের অপমান হিসেবে দেখে এবং সেদেশের আইনসভায় দ্বীপটির ওপর জাপানের দাবি পুনরায় জোর দিয়ে তুলে ধরা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো আরেক স্পর্শকাতর বিষয় টেনে এনে দক্ষিণ কোরীয়দের ক্ষেপিয়ে দেন। তিনি বলেন, দখলদারিত্বের সময় জাপানী সেনাবাহিনী কোরীয় মহিলাদের যৌনকর্মে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছিল এমন কোন প্রমাণ নেই।
এভাবে দু’দেশের মধ্যে ঝগড়া ও তিক্ততা বেড়ে চলছে। ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে গড়িয়েছে যে ডোকডো দ্বীপের কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার পরিকল্পনার অভিযোগ করে জাপানী প্রধানমন্ত্রী নোডা দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট লীকে চিঠি পাঠালে লী তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। শেষ পর্যন্ত অনেক কা- করে তা নোডার কাছে ফেরত যায়।
জাপান হলো দক্ষিণ কোরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। এ দেশটার সঙ্গে ভবিষ্যত সম্পর্ক ভাল রাখতে দক্ষিণ কোরিয়া সর্বদাই সচেষ্ট থাকে। কিন্তু এ ধরনের আচরণ ওরা এখন করছে কেন, জাপানীদের মনে এটাই প্রশ্ন। দ্বীপের মালিকানা দাবির স্বপক্ষে দু’পক্ষেরই দালিলিক প্রমাণ আছে বলে দাবি করে থাকে উভয়পক্ষ এবং সেসব দলিল নাকি শত শত বছরের পুরনো। যদিও সেগুলোর মধ্যে অস্পষ্টতাও আছে যথেষ্ট। সাম্প্রতিক রেকর্ডও কম গোলমেলে নয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জাপান তার অধিকৃত কোরীয় ভূখ-ের অধিকাংশই মিত্রবাহিনীর সঙ্গে ১৯৫১ সালে শান্তিচুক্তিবলে ছেড়ে দেয়। তবে আলোচ্য দ্বীপটি ছেড়ে দেয়া ভূখ-ের মধ্যে ছিল না বলে টোকিও দাবি করে। কোরীয়রা আবার সেটা মানতে নারাজ। ১৯৫২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া একতরফাভাবে দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে এবং দু’বছর পর সৈন্য পাঠিয়ে তা দখল করে নেয়।
টোকিও এই দখলদারিকে বেআইনী আখ্যা দেয় এবং পরবর্তী কয়েক দশক ধরে প্রস্তাব দিয়ে আসছে যে আন্তর্জাতিক আদালতে সালিশীর মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হোক। সিউল তাতে রাজি হয়নি। এমনকি সম্প্রতিও সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
জাপানের কাছে ডোকডোর মালিকানা ইস্যুটি বড় কোন ইস্যু নয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে তা মস্ত বড় বিষয়। দ্বীপটিকে তারা জাপানের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে দেখে। ভূখ-গত ইস্যু ছাড়াও ডোকডো তাদের কাছে জাপানের ৩৬ বছরের দখলদারির ইতিহাসের প্রতীক। এই দ্বীপের ওপর জাপানের মালিকানা দাবির কথা শুনলেই দক্ষিণ কোরিয়া মনে করে জাপান যে তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত নয় এটাই তার প্রমাণ। কৃতকর্মের একটা হলো দখলদারির অধ্যায়ে কোরীয় মেয়েদেরকে সামরিক পতিতালয়ে জোর করে ঢোকানো। প্রেসিডেন্ট লীর সম্প্রতি ঐ দ্বীপ সফরের একটা উদ্দেশ্য ছিল টোকিওকে একটা শিক্ষা দেয়া। এ ব্যাপারে তাঁর ওপর দেশের সাংবিধানিক আদালতেরও চাপ ছিল।
মোট কথা দ্বীপটি নিয়ে দক্ষিণ কোরীয়দের মধ্যে একটা জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা ও উদ্দীপনা চলছে। দ্বীপটি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের অহঙ্কার ও ইজ্জতের প্রতীক। এ ব্যাপারে জাপানের সঙ্গে দেশটি যে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে তা থেকে সহজ পরিত্রাণ নেই বলে মনে হয়। ম
চলমান ডেস্ক
সূত্র : নিউজউইক
No comments