অথ তোফায়েল-মতি সমাচার ॥ চায়ের কাপে তুফান by আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা এবং দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিত্ব গ্রহণের অফার পেয়েও মন্ত্রী হননি। আমার মতে কাজটা তিনি ঠিক করেননি। এই ছোট্ট ব্যাপারটা নিয়ে এখন চায়ের কাপে তুফান সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। বলা হয়েছে, ‘প্রথম আলোর’ সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি মন্ত্রিত্ব নেননি এবং এই
পরামর্শ গ্রহণের জন্য তিনি মন্ত্রিত্বের অফার প্রত্যাখ্যান করার আগে মতিউর রহমানের সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হয়েছিলেন। খবরটি প্রচারিত হওয়ার পরই মতিউর রহমান তাঁর কাগজে স্বনামে বিবৃতি ছেপে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তোফায়েল আহমেদের সঙ্গেও এই ব্যাপারে আমার আলাপ হয়েছে। খবরটি আমার জানার পরদিনই তিনি আমাকে ঢাকা থেকে একটি সৌজন্য টেলিফোন কল দিয়েছেন এবং বলেছেন, তাঁর সঙ্গে ‘প্রথম আলো’ সম্পাদকের কোন নৈশভোজ হয়নি এবং খবরটা মিথ্যা রটনা। আমি তার কথা বিশ্বাস করি। কারণ, আওয়ামী লীগের যে মন্ত্রী খবরটা রটিয়েছেন, মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনে তার অযোগ্যতা ও অবহেলায় এবং দায়িত্বহীন কথাবার্তা বলার রেকর্ড রয়েছে। নিজ দলের প্রবীণ নেতাদের সম্পর্কে কথাবার্তা বলার ব্যাপারেও তাঁর মধ্যে সংযম ও ভদ্রতাবোধের অভাব দেখা যায়।
সবচাইতে বড় কথা, আজকাল কোন ব্যাপারে পরামর্শ করতে হলে শারীরিক দেখা-সাক্ষাতের বা লাঞ্চ ও ডিনারে বসার কোন প্রয়োজন আছে কি? টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি আছে কি জন্য? তাছাড়া তোফায়েল আহমেদ অভিজ্ঞ এবং ঝানু রাজনীতিক। বঙ্গবন্ধুর কাছে তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি। তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে জানেন। সেটা ভাল হোক আর মন্দ হোক। তিনি মতিউর রহমানের ব্যক্তিগত বন্ধু হতে পারেন। কিন্তু মতিউর রহমানের বর্তমান ভূমিকা ও চরিত্র জানার পর তাঁর কাছে রাজনৈতিক পরামর্শ গ্রহণ করতে চাইবেন কোন্ দুঃখে?
তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে সঠিক কাজ করেননি (আমার মতে) তা আগেই বলেছি। কিন্তু তিনি দল ছাড়েননি, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কাতারে এখনও আছেন এবং বর্তমানে এমপি পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তাজউদ্দীন কন্যার নির্বাচন প্রচার অভিযানে সহায়তা দানে ব্যস্ত রয়েছেন। যে ছোকরা মন্ত্রী তাঁর সম্পর্কে দায়িত্বহীন উক্তি করেছেন, তাঁর শহীদ পিতার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন তোফায়েল। তিনি এই মন্ত্রীর মতো উটকো বা নতুন রাজনীতিক নন। এই উটকো রাজনীতিক দলের ও নেত্রীর বিপদের দিনে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তোফায়েল পালাননি। বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে অসংখ্যবার জেলজুলুম বরণ করেছেন। তারপর অস্ত্র হাতে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।
তোফায়েল আহমেদের সকল মত ও কাজের আমরা সমর্থন করতে না পারি, কিন্তু দেশের রাজনীতিতে তাঁর অবদান অস্বীকার করি কি করে? আর আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা সম্পর্কে দলেরই এক উটকো নেতা যখন দায়িত্বহীন ও অসত্য কথা বলেন, তখন তাঁকে ডিসিপ্লিন্ড করার দায়িত্ব দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর নয় কি? এই উটকো নেতা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে তখনও সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল প্রবীণ নেতা আবদুল জলিল সম্পর্কে অসম্মানজনক উক্তি করেছেন। [প্রধানমন্ত্রীর উচিত এই ধরনের নব্য নেতাদের মুখে সময় থাকতে লাগাম পরানো। তোফায়েল আহমেদ সম্পর্কে সঙ্গত কারণেই নেত্রীর বিরাগ থাকতে পারে, তাই বলে দলের প্রবীণ নেতারা যাতে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা নেতাদের দ্বারা মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত এবং অপমান না হন, সেদিকে তাঁকে কঠোর দৃষ্টি রাখতে হবে। নইলে এই সুযোগসন্ধানীরা সুযোগ পেলে শেখ হাসিনা সম্পর্কেও অসম্মানজনক উক্তি ও মিথ্যাচার করতে পারে।
তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেননের মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করা দেশের রাজনীতির এই মুহূর্তে কোন বড় ব্যাপার নয়। মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে তাঁরা রাতারাতি দেশবাসীর কাছে হিরো হবেন সে সম্ভাবনাও বর্তমান পরিস্থিতিতে নেই। রাশেদ খান মেনন কোন রাজনৈতিক বিবেচনায় যদি মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে থাকেন তা ভাল কথা। কিন্তু সে সম্পর্কে তিনি যে মন্তব্যটি করেছেন, তা কি হাস্যকর এবং নিজেকেই ছোট করে ফেলা নয়?
মন্ত্রিত্বের শপথ নেয়ার জন্য সকল সভ্য এবং গণতান্ত্রিক দেশেই কেবিনেট সেক্রেটারি অথবা ওই পদমর্যাদার কেউ মনোনীত ব্যক্তিকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান। ভারতে রফি আহমদ কিদোয়াই ছিলেন জওয়াহেরলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিদোয়াই তাঁর এক স্মৃতি কথায় লিখেছেন, নেহরু সরকারের আমলের কেবিনেট সেক্রেটারি তাঁকে মন্ত্রিপদে শপথ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে রাশেদ খান মেনন অবশ্য তোফায়েল আহমেদের মতো আওয়ামী লীগের সদস্য নন; বরং অন্য একটি দলের প্রধান নেতা। তাঁকে মন্ত্রীপদে শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানোর আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে একটু আলাপ করে নিলে ভাল করতেন (আলাপ করেছেন কিনা আমি জানি না)। যদি আলাপ না করে থাকেন তাহলে সৌজন্যবোধের একটু ব্যত্যয় ঘটেছে, কিন্তু গোটাদেশটাই অসভ্য হয়ে যায়নি। মেননের মতো প্রবীণ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিকের পক্ষে রাগ করে অশোভন কথা বলা ঠিক হয়নি। এটাও চায়ের কাপে তুফান তোলার মতো ব্যাপার।
তোফায়েল আহমেদের কথায় ফিরে আসি। যদিও তাঁকে নিয়েও চায়ের কাপে তুফান সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে, তথাপি বিষয়টি তুচ্ছ বলে উড়িয়ে না দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্বের দিকটির প্রতি দৃষ্টি ফেরানো উচিত। এক-এগারোর সময় আওয়ামী লীগের যে চারজন প্রবীণ নেতা ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে বিতর্কিত হয়েছেন, তাঁরা হলেন তোফায়েল আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেন এবং আমির হোসেন আমু। এরা আওয়ামী লীগের নির্বাচন বিজয়ের পর কেউ মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
কিছুকাল পর সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ভাগ্যে শিকা ছেঁড়ে। তিনি রেলমন্ত্রী হন। বর্তমানে তিনি দফতরবিহীন মন্ত্রী। দফতর থাকাকালে তাঁর এক এপিএস ৭০ লাখ টাকাসহ ধরা পড়ার পর তিনি অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেও তাঁর অবস্থা খুব সুখকর নয়। আব্দুর রাজ্জাক প্রয়াত হয়েছেন। আমির হোসেন আমু নিজগুণেই রাজনীতিতে কোণঠাসা। বাকি রইলেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি মন্ত্রিত্ব না পেলেও দলে এবং পার্লামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন। দীর্ঘকাল পর তাঁর রাজনৈতিক ভাগ্য রাহুমুক্ত হতে যাচ্ছিল। তিনি স্বেচ্ছায় মন্ত্রিত্বের অফার প্রত্যাখ্যান করে রাজনীতিতে তাঁর পুনরুত্থান নিশ্চিত করলেন, না নিজেকেই নিজে আবার রাহুর গ্রাসে ঠেলে দিলেন সেটাই এখন প্রধান বিবেচ্য বিষয়। সেজন্যই তাঁকে নিয়ে বর্তমান বিতর্কটিকে এত গুরুত্ব দিচ্ছে।
আমি যখন ঢাকায় ছাত্রজীবন শেষ করে কর্মজীবনে (সাংবাদিকতায়) প্রবেশ করেছি, তখন তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেনন দু’জনেরই অবস্থান ছাত্র রাজনীতির তুঙ্গে। তখনকার অনেক সম্ভাবনাশীল তরুণ নেতার মধ্যে আমি তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেননকে বেছে নিয়েছিলাম বাংলাদেশের ভাবী নেতা হিসেবে। তোফায়েল ছিলেন ছাত্রলীগে এবং মেনন ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নে। পরে ছাত্র ইউনিয়ন ভাগ হয় এবং মেনন পিকিংপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশে বাম রাজনীতির যা অবস্থা, তাতে তাঁর একেবারে প্রান্তিক ধারায় অবস্থান নিয়ে রাশেদ খান মেনন কতটা এগোতে পারবেন সে সম্পর্কে আমার সন্দেহ ছিল। তবে মধ্য বাম বা গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূলধারায় থাকলে তিনি যে রাজনীতির আরও প্রান্তিকতায় চলে যেতেন না এ সম্পর্কে আমার সন্দেহ নেই। এ ক্ষেত্রে নিজের ভবিষ্যত বাছাইয়ের ব্যাপারে তোফায়েল ছিলেন সৌভাগ্যবান। তিনি বঙ্গবন্ধুর মতো বিরাট নেতার সান্নিধ্য পেয়েছেন। জাতীয় রাজনীতির মূলধারায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। গান্ধী-সান্নিধ্যে নেহরুর বিরাট নেতা হয়ে ওঠার মতো মুজিব-সান্নিধ্যে তোফায়েলও বিরাট নেতা হয়ে উঠতে পারতেন।
তোফায়েল বড় নেতা হয়েছেন, কিন্তু নেতৃত্বের যে ক্যারিশমাটিক অবস্থানে তাঁর পৌঁছার কথা ছিল, সেখানে তিনি পৌঁছতে পারেননি। এ জন্য আমার মতে, আওয়ামী রাজনীতিতে তাঁর ডানঘেঁষা মনোভাব, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ট্রেনিং থাকা সত্ত্বেও সাহস করে প্রতিরোধে না নামা এবং নেতৃত্ব না নেয়া (যা তাঁর এবং রাজ্জাকের কাছ থেকে সকলেই আশা করছিল) এবং দলের নেতৃত্বহীনতা ও সঙ্কটের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য অনুসারী হিসেবে এগিয়ে না যাওয়া তাঁকে ’৬৯-এর নায়ক তোফায়েলের চরিত্রে আর দাঁড় করায়নি। তিনি দলের বর্ষীয়ান নেতাদের নেতৃত্বের কোন্দলে জড়িয়ে গেছেন এবং যদু মধু জাতীয় নেতাদের পর্যায়ে নেমে গেছেন। সেখান থেকে নিজের আর উত্তরণ ঘটাতে পারেননি।
কোন রাজনীতিককে বড় নেতা হয়ে ওঠার জন্য ইতিহাস একবারই সুযোগ দেয়। তোফায়েল আহমেদকে ইতিহাস সে সুযোগ দিয়েছে দু’বার। একবার বঙ্গবন্ধু-হত্যার পর যখন আওয়ামী লীগের প্রথম কাতারের অধিকাংশ নেতা, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনিসহ নিহত, বাকিরা ঘাতক মোশতাক সরকারের কাছে নতজানু, তখন দ্বিতীয় কাতারের নেতা এবং অস্ত্র চালনায় শিক্ষাপ্রাপ্ত তোফায়েল আহমেদ ও আবদুর রাজ্জাকের দিকেই বঙ্গবন্ধুর অনুসারীরা নেতৃত্বের আশায় তাকিয়েছিল। শেখ হাসিনা তখন বিদেশে। তাঁর রাজনীতিতে আসার কথাও ওঠেনি।
এ সময় তোফায়েল জেলে গেলেন, নির্যাতিত হলেন। কিন্তু নেতৃত্ব দিতে পারলেন না। দ্বিতীয় কাতারের নেতা প্রথম কাতারে উঠে আসতে পারলেন না। আবদুর রাজ্জাকের বেলাতেও একই কথা। তোফায়েল আহমেদের জীবনে দ্বিতীয় সুযোগ এসেছে ২০০৭ সালে এক-এগারোর সময়। শেখ হাসিনা বন্দী হওয়ার পর দল ছিল প্রকৃতপক্ষে নেতৃত্ববিহীন। ১৯৭৫ সালের মতোই নেতৃত্ব গ্রহণে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও ভীরুতা দেখালেন তোফায়েল আহমেদ ও আবদুর রাজ্জাক দু’জনেই। নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণে সাহস দেখাতে হলো জিল্লুর রহমানের মতো (বর্তমানে রাষ্ট্রপ্রতি) একজন বায়োবৃদ্ধ, সদ্য পতœীবিয়োগে কাতর, অসুস্থ নেতাকে।
অথচ এ সময়েও তোফায়েলকে নির্যাতিত হতে হয়েছে। স্ত্রী, কন্যাসহ তাঁকে দুর্নীতির মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি অভিযুক্ত হয়ে, সেনা কর্তৃপক্ষের নানা হুমকির মুখে টেলি-দর্শকদের সামনে কেঁদেছেন, তবু প্রতিরোধ সংগ্রামে নামেননি। শেখ হাসিনা তাঁর হাতে দলের নেতৃত্বের ভার দেননি? এটা কি কোন যুক্তির কথা? নেতৃত্ব কি কেউ কারও হাতে তুলে দেয়? বঙ্গবন্ধুর হাতে নেতৃত্ব কি কেউ তুলে দিয়েছিল?
এক-এগারোর সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে বিতর্কিত হওয়ার পর তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের এক উটকো নেতাই তখন সেনাপতিদের দূত হয়ে তাদের (সংস্কারপন্থীদের কাছে) কাছে আসতেন এবং সেনাপতিদের কাছে তাঁদের নিয়ে গিয়েছিলেন। তোফায়েল সেনাপতিদের চাপে রাজি হননি। তথাপি দলে তাঁকে হেনস্থা সইতে হয়েছে; আর সেই উটকো নেতা পুরস্কৃত হয়ে বড় বড় কথা বলছে।
আমার প্রশ্ন, উনসত্তরের সেই সাহসী যুবনেতা, একাত্তরের অস্ত্রধারী মুক্তিযোদ্ধা কি কারণে বা কি জন্য ২০০৭ সালে দলের এক উটকো নেতার দ্বারা প্রভাবিত হলেন এবং তাঁর কথায় চালিত হয়েছিলেন? তখনই তাঁর উচিত ছিল উটকো নেতার মুখোস উন্মোচিত করে দেয়া। তিনি বা তাদের চারজনের একজনও তা করেননি।
তোফায়েল আহমেদ এখনও আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতির এক উজ্জ্বল তারকা। কিন্তু এবারেও তিনি ইতিহাসের তৃতীয় দফা সুযোগদান অগ্রাহ্য করলেন। আমি জানি না, এবার মন্ত্রিত্বের অফার প্রত্যাখ্যান করে তিনি একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে পাবেন, নাকি রাজনীতির গগন থেকে ধীরে ধীরে বিদায় নেবেন? যদি বিদায় নেন, সেটা হবে বাংলাদেশের রাজনীতির এক দুঃখজনক ঘটনা (ংধফ ফবসরংব)। আওয়ামী লীগে তাঁর মতো একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ রাজনীতিক ও পার্লামেন্টারিয়ানের এখনও বড় বেশি প্রয়োজন।
[লন্ডন, ১৮ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১২]
তোফায়েল আহমেদের সঙ্গেও এই ব্যাপারে আমার আলাপ হয়েছে। খবরটি আমার জানার পরদিনই তিনি আমাকে ঢাকা থেকে একটি সৌজন্য টেলিফোন কল দিয়েছেন এবং বলেছেন, তাঁর সঙ্গে ‘প্রথম আলো’ সম্পাদকের কোন নৈশভোজ হয়নি এবং খবরটা মিথ্যা রটনা। আমি তার কথা বিশ্বাস করি। কারণ, আওয়ামী লীগের যে মন্ত্রী খবরটা রটিয়েছেন, মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনে তার অযোগ্যতা ও অবহেলায় এবং দায়িত্বহীন কথাবার্তা বলার রেকর্ড রয়েছে। নিজ দলের প্রবীণ নেতাদের সম্পর্কে কথাবার্তা বলার ব্যাপারেও তাঁর মধ্যে সংযম ও ভদ্রতাবোধের অভাব দেখা যায়।
সবচাইতে বড় কথা, আজকাল কোন ব্যাপারে পরামর্শ করতে হলে শারীরিক দেখা-সাক্ষাতের বা লাঞ্চ ও ডিনারে বসার কোন প্রয়োজন আছে কি? টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি আছে কি জন্য? তাছাড়া তোফায়েল আহমেদ অভিজ্ঞ এবং ঝানু রাজনীতিক। বঙ্গবন্ধুর কাছে তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি। তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে জানেন। সেটা ভাল হোক আর মন্দ হোক। তিনি মতিউর রহমানের ব্যক্তিগত বন্ধু হতে পারেন। কিন্তু মতিউর রহমানের বর্তমান ভূমিকা ও চরিত্র জানার পর তাঁর কাছে রাজনৈতিক পরামর্শ গ্রহণ করতে চাইবেন কোন্ দুঃখে?
তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে সঠিক কাজ করেননি (আমার মতে) তা আগেই বলেছি। কিন্তু তিনি দল ছাড়েননি, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কাতারে এখনও আছেন এবং বর্তমানে এমপি পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তাজউদ্দীন কন্যার নির্বাচন প্রচার অভিযানে সহায়তা দানে ব্যস্ত রয়েছেন। যে ছোকরা মন্ত্রী তাঁর সম্পর্কে দায়িত্বহীন উক্তি করেছেন, তাঁর শহীদ পিতার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন তোফায়েল। তিনি এই মন্ত্রীর মতো উটকো বা নতুন রাজনীতিক নন। এই উটকো রাজনীতিক দলের ও নেত্রীর বিপদের দিনে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তোফায়েল পালাননি। বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে অসংখ্যবার জেলজুলুম বরণ করেছেন। তারপর অস্ত্র হাতে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।
তোফায়েল আহমেদের সকল মত ও কাজের আমরা সমর্থন করতে না পারি, কিন্তু দেশের রাজনীতিতে তাঁর অবদান অস্বীকার করি কি করে? আর আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা সম্পর্কে দলেরই এক উটকো নেতা যখন দায়িত্বহীন ও অসত্য কথা বলেন, তখন তাঁকে ডিসিপ্লিন্ড করার দায়িত্ব দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর নয় কি? এই উটকো নেতা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে তখনও সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল প্রবীণ নেতা আবদুল জলিল সম্পর্কে অসম্মানজনক উক্তি করেছেন। [প্রধানমন্ত্রীর উচিত এই ধরনের নব্য নেতাদের মুখে সময় থাকতে লাগাম পরানো। তোফায়েল আহমেদ সম্পর্কে সঙ্গত কারণেই নেত্রীর বিরাগ থাকতে পারে, তাই বলে দলের প্রবীণ নেতারা যাতে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা নেতাদের দ্বারা মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত এবং অপমান না হন, সেদিকে তাঁকে কঠোর দৃষ্টি রাখতে হবে। নইলে এই সুযোগসন্ধানীরা সুযোগ পেলে শেখ হাসিনা সম্পর্কেও অসম্মানজনক উক্তি ও মিথ্যাচার করতে পারে।
তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেননের মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করা দেশের রাজনীতির এই মুহূর্তে কোন বড় ব্যাপার নয়। মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে তাঁরা রাতারাতি দেশবাসীর কাছে হিরো হবেন সে সম্ভাবনাও বর্তমান পরিস্থিতিতে নেই। রাশেদ খান মেনন কোন রাজনৈতিক বিবেচনায় যদি মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে থাকেন তা ভাল কথা। কিন্তু সে সম্পর্কে তিনি যে মন্তব্যটি করেছেন, তা কি হাস্যকর এবং নিজেকেই ছোট করে ফেলা নয়?
মন্ত্রিত্বের শপথ নেয়ার জন্য সকল সভ্য এবং গণতান্ত্রিক দেশেই কেবিনেট সেক্রেটারি অথবা ওই পদমর্যাদার কেউ মনোনীত ব্যক্তিকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান। ভারতে রফি আহমদ কিদোয়াই ছিলেন জওয়াহেরলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিদোয়াই তাঁর এক স্মৃতি কথায় লিখেছেন, নেহরু সরকারের আমলের কেবিনেট সেক্রেটারি তাঁকে মন্ত্রিপদে শপথ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে রাশেদ খান মেনন অবশ্য তোফায়েল আহমেদের মতো আওয়ামী লীগের সদস্য নন; বরং অন্য একটি দলের প্রধান নেতা। তাঁকে মন্ত্রীপদে শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানোর আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে একটু আলাপ করে নিলে ভাল করতেন (আলাপ করেছেন কিনা আমি জানি না)। যদি আলাপ না করে থাকেন তাহলে সৌজন্যবোধের একটু ব্যত্যয় ঘটেছে, কিন্তু গোটাদেশটাই অসভ্য হয়ে যায়নি। মেননের মতো প্রবীণ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিকের পক্ষে রাগ করে অশোভন কথা বলা ঠিক হয়নি। এটাও চায়ের কাপে তুফান তোলার মতো ব্যাপার।
তোফায়েল আহমেদের কথায় ফিরে আসি। যদিও তাঁকে নিয়েও চায়ের কাপে তুফান সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে, তথাপি বিষয়টি তুচ্ছ বলে উড়িয়ে না দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্বের দিকটির প্রতি দৃষ্টি ফেরানো উচিত। এক-এগারোর সময় আওয়ামী লীগের যে চারজন প্রবীণ নেতা ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে বিতর্কিত হয়েছেন, তাঁরা হলেন তোফায়েল আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেন এবং আমির হোসেন আমু। এরা আওয়ামী লীগের নির্বাচন বিজয়ের পর কেউ মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
কিছুকাল পর সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ভাগ্যে শিকা ছেঁড়ে। তিনি রেলমন্ত্রী হন। বর্তমানে তিনি দফতরবিহীন মন্ত্রী। দফতর থাকাকালে তাঁর এক এপিএস ৭০ লাখ টাকাসহ ধরা পড়ার পর তিনি অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেও তাঁর অবস্থা খুব সুখকর নয়। আব্দুর রাজ্জাক প্রয়াত হয়েছেন। আমির হোসেন আমু নিজগুণেই রাজনীতিতে কোণঠাসা। বাকি রইলেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি মন্ত্রিত্ব না পেলেও দলে এবং পার্লামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন। দীর্ঘকাল পর তাঁর রাজনৈতিক ভাগ্য রাহুমুক্ত হতে যাচ্ছিল। তিনি স্বেচ্ছায় মন্ত্রিত্বের অফার প্রত্যাখ্যান করে রাজনীতিতে তাঁর পুনরুত্থান নিশ্চিত করলেন, না নিজেকেই নিজে আবার রাহুর গ্রাসে ঠেলে দিলেন সেটাই এখন প্রধান বিবেচ্য বিষয়। সেজন্যই তাঁকে নিয়ে বর্তমান বিতর্কটিকে এত গুরুত্ব দিচ্ছে।
আমি যখন ঢাকায় ছাত্রজীবন শেষ করে কর্মজীবনে (সাংবাদিকতায়) প্রবেশ করেছি, তখন তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেনন দু’জনেরই অবস্থান ছাত্র রাজনীতির তুঙ্গে। তখনকার অনেক সম্ভাবনাশীল তরুণ নেতার মধ্যে আমি তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেননকে বেছে নিয়েছিলাম বাংলাদেশের ভাবী নেতা হিসেবে। তোফায়েল ছিলেন ছাত্রলীগে এবং মেনন ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নে। পরে ছাত্র ইউনিয়ন ভাগ হয় এবং মেনন পিকিংপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশে বাম রাজনীতির যা অবস্থা, তাতে তাঁর একেবারে প্রান্তিক ধারায় অবস্থান নিয়ে রাশেদ খান মেনন কতটা এগোতে পারবেন সে সম্পর্কে আমার সন্দেহ ছিল। তবে মধ্য বাম বা গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূলধারায় থাকলে তিনি যে রাজনীতির আরও প্রান্তিকতায় চলে যেতেন না এ সম্পর্কে আমার সন্দেহ নেই। এ ক্ষেত্রে নিজের ভবিষ্যত বাছাইয়ের ব্যাপারে তোফায়েল ছিলেন সৌভাগ্যবান। তিনি বঙ্গবন্ধুর মতো বিরাট নেতার সান্নিধ্য পেয়েছেন। জাতীয় রাজনীতির মূলধারায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। গান্ধী-সান্নিধ্যে নেহরুর বিরাট নেতা হয়ে ওঠার মতো মুজিব-সান্নিধ্যে তোফায়েলও বিরাট নেতা হয়ে উঠতে পারতেন।
তোফায়েল বড় নেতা হয়েছেন, কিন্তু নেতৃত্বের যে ক্যারিশমাটিক অবস্থানে তাঁর পৌঁছার কথা ছিল, সেখানে তিনি পৌঁছতে পারেননি। এ জন্য আমার মতে, আওয়ামী রাজনীতিতে তাঁর ডানঘেঁষা মনোভাব, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ট্রেনিং থাকা সত্ত্বেও সাহস করে প্রতিরোধে না নামা এবং নেতৃত্ব না নেয়া (যা তাঁর এবং রাজ্জাকের কাছ থেকে সকলেই আশা করছিল) এবং দলের নেতৃত্বহীনতা ও সঙ্কটের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য অনুসারী হিসেবে এগিয়ে না যাওয়া তাঁকে ’৬৯-এর নায়ক তোফায়েলের চরিত্রে আর দাঁড় করায়নি। তিনি দলের বর্ষীয়ান নেতাদের নেতৃত্বের কোন্দলে জড়িয়ে গেছেন এবং যদু মধু জাতীয় নেতাদের পর্যায়ে নেমে গেছেন। সেখান থেকে নিজের আর উত্তরণ ঘটাতে পারেননি।
কোন রাজনীতিককে বড় নেতা হয়ে ওঠার জন্য ইতিহাস একবারই সুযোগ দেয়। তোফায়েল আহমেদকে ইতিহাস সে সুযোগ দিয়েছে দু’বার। একবার বঙ্গবন্ধু-হত্যার পর যখন আওয়ামী লীগের প্রথম কাতারের অধিকাংশ নেতা, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনিসহ নিহত, বাকিরা ঘাতক মোশতাক সরকারের কাছে নতজানু, তখন দ্বিতীয় কাতারের নেতা এবং অস্ত্র চালনায় শিক্ষাপ্রাপ্ত তোফায়েল আহমেদ ও আবদুর রাজ্জাকের দিকেই বঙ্গবন্ধুর অনুসারীরা নেতৃত্বের আশায় তাকিয়েছিল। শেখ হাসিনা তখন বিদেশে। তাঁর রাজনীতিতে আসার কথাও ওঠেনি।
এ সময় তোফায়েল জেলে গেলেন, নির্যাতিত হলেন। কিন্তু নেতৃত্ব দিতে পারলেন না। দ্বিতীয় কাতারের নেতা প্রথম কাতারে উঠে আসতে পারলেন না। আবদুর রাজ্জাকের বেলাতেও একই কথা। তোফায়েল আহমেদের জীবনে দ্বিতীয় সুযোগ এসেছে ২০০৭ সালে এক-এগারোর সময়। শেখ হাসিনা বন্দী হওয়ার পর দল ছিল প্রকৃতপক্ষে নেতৃত্ববিহীন। ১৯৭৫ সালের মতোই নেতৃত্ব গ্রহণে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও ভীরুতা দেখালেন তোফায়েল আহমেদ ও আবদুর রাজ্জাক দু’জনেই। নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণে সাহস দেখাতে হলো জিল্লুর রহমানের মতো (বর্তমানে রাষ্ট্রপ্রতি) একজন বায়োবৃদ্ধ, সদ্য পতœীবিয়োগে কাতর, অসুস্থ নেতাকে।
অথচ এ সময়েও তোফায়েলকে নির্যাতিত হতে হয়েছে। স্ত্রী, কন্যাসহ তাঁকে দুর্নীতির মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি অভিযুক্ত হয়ে, সেনা কর্তৃপক্ষের নানা হুমকির মুখে টেলি-দর্শকদের সামনে কেঁদেছেন, তবু প্রতিরোধ সংগ্রামে নামেননি। শেখ হাসিনা তাঁর হাতে দলের নেতৃত্বের ভার দেননি? এটা কি কোন যুক্তির কথা? নেতৃত্ব কি কেউ কারও হাতে তুলে দেয়? বঙ্গবন্ধুর হাতে নেতৃত্ব কি কেউ তুলে দিয়েছিল?
এক-এগারোর সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে বিতর্কিত হওয়ার পর তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের এক উটকো নেতাই তখন সেনাপতিদের দূত হয়ে তাদের (সংস্কারপন্থীদের কাছে) কাছে আসতেন এবং সেনাপতিদের কাছে তাঁদের নিয়ে গিয়েছিলেন। তোফায়েল সেনাপতিদের চাপে রাজি হননি। তথাপি দলে তাঁকে হেনস্থা সইতে হয়েছে; আর সেই উটকো নেতা পুরস্কৃত হয়ে বড় বড় কথা বলছে।
আমার প্রশ্ন, উনসত্তরের সেই সাহসী যুবনেতা, একাত্তরের অস্ত্রধারী মুক্তিযোদ্ধা কি কারণে বা কি জন্য ২০০৭ সালে দলের এক উটকো নেতার দ্বারা প্রভাবিত হলেন এবং তাঁর কথায় চালিত হয়েছিলেন? তখনই তাঁর উচিত ছিল উটকো নেতার মুখোস উন্মোচিত করে দেয়া। তিনি বা তাদের চারজনের একজনও তা করেননি।
তোফায়েল আহমেদ এখনও আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতির এক উজ্জ্বল তারকা। কিন্তু এবারেও তিনি ইতিহাসের তৃতীয় দফা সুযোগদান অগ্রাহ্য করলেন। আমি জানি না, এবার মন্ত্রিত্বের অফার প্রত্যাখ্যান করে তিনি একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে পাবেন, নাকি রাজনীতির গগন থেকে ধীরে ধীরে বিদায় নেবেন? যদি বিদায় নেন, সেটা হবে বাংলাদেশের রাজনীতির এক দুঃখজনক ঘটনা (ংধফ ফবসরংব)। আওয়ামী লীগে তাঁর মতো একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ রাজনীতিক ও পার্লামেন্টারিয়ানের এখনও বড় বেশি প্রয়োজন।
[লন্ডন, ১৮ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১২]
No comments