বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-রংপুরে ড. ওয়াজেদ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হোক
রংপুরে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোতে উচ্চশিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু সেগুলোর রয়েছে সীমাহীন সীমাবদ্ধতা। রংপুরে একটি সরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের শিক্ষার ক্ষেত্র অত্যন্ত স্বল্প।
বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের শিক্ষা বিস্তারের জন্য এখানে ডিপেল্গামা কোর্সসহ সব বিষয়ে এমএস কোর্স চালু করা প্রয়োজন।
রংপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনটি কলেজে স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান করানো হয়। কলেজ তিনটি হচ্ছে কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি কলেজ এবং সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিনটিতে চাইলেও ভালোভাবে পাঠদান করানো কঠিন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি এবং পরীক্ষা পদ্ধতির কারণে শিক্ষার্থীরা গাইডবই পড়ে এবং বিদ্যালয়বিমুখ হলেও তাদের একটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা কঠিন কিছু হয় না। ফলে এ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুণগত মান রক্ষা করতে না পারলেও এমএ পাসের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি এবং পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা ব্যতিরেকে প্রকৃত অর্থে শিক্ষার পরিবেশ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসম্ভব।
চার বছর ধরে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অল্প সময়ে অনেকগুলো বিভাগ চালু হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে প্রতিষ্ঠিত হলেও দ্রুত বিকাশমান এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলে স্বপ্নের দ্বার খুলে রাখা আছে রংপুরের গণমানুষের।
বর্তমান যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক পাসকৃত শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ প্রযুক্তিগত বিষয়ের ওপর ডিগ্রি অর্জন করতে চায়। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা অত্যন্ত সীমিত হওয়ার কারণে তাদের যেতে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে একদিকে যেমন পর্যাপ্ত গবেষণাগারের সীমাবদ্ধতা থাকে, তেমনি সেখানকার ব্যয়ও অনেক। সেখানকার শিক্ষার ব্যয় মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে। আমাদের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হলে কারিগরি ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার বিকল্প নেই। রংপুরে যে বিশাল জনপদ সেখানে রংপুরে একটি সাধারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। দেশে প্রযুক্তিনির্ভর এবং কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার স্বার্থে রংপুরে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত সময়ে যখন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি তখনই রংপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন। সেই মর্মে রংপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। প্রায় এক যুগ আগে তিনি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা আরও অধিক মাত্রা লাভ করেছে। আধুনিক এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বর্তমান সরকার যে কাজ করে যাচ্ছে তাতে করেও রংপুরে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
রংপুরবাসীর জন্য দুর্ভাগ্য যে, প্রধানমন্ত্রী যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ রংপুরে গ্রহণ করেছিলেন, ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে চারদলীয় জোট সরকার সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হওয়ার পর বন্ধ করে দেয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে রংপুরবাসীর প্রত্যাশা, যে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগ তিনি নিজে গ্রহণ করেছিলেন সেটির কার্যক্রম তার বর্তমান শাসনামলেই চালু হোক।
রংপুরের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করলেও এখানে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। রংপুরে একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। অনেকে চান এ প্রতিষ্ঠাটিকে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় করা হোক। এই কাজটি করা সঙ্গত হবে না। কারণ, একটি প্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করে আর একটি প্রতিষ্ঠান করার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং একটি নতুন প্রতিষ্ঠান হলে একটি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়বে। এক সময় অনেকে চেয়েছিলেন কারমাইকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা হোক। কিন্তু সে কাজ না করায় একটি বড় কলেজের পাশাপাশি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও পাওয়া গেল।
বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর পরমাণু বিজ্ঞানের জগতে অনন্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া। সর্বজন শ্রদ্ধেয় তিনি। ক্ষমতার বিন্দুতে অবস্থান করেও যিনি নির্মোহ থেকেছেন সবসময়। তার জন্মস্থান রংপুরে। তার প্রতি সম্মানার্থে ও তার নামে রংপুরে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠতে পারে।
রাজনৈতিক বিদ্বেষজনিত কারণে রংপুরের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা একবার উপেক্ষিত হয়েছে। বর্তমান মহাজোট সরকার হতে পারত সেই ক্ষতি পূরণের সরকার। তা হয়নি। গত নির্বাচনের ইশতেহারেও মহাজোট রংপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সরকার তার প্রায় চার বছর অতিক্রম করেছে। রংপুরে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে কোনো প্রচেষ্টা চোখে পড়েনি। আবার যদি এমন সময়ে গিয়ে রংপুরে বিগত সময়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়, তবে তার কাজ আবার বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে না হলে হয়তো এখন পর্যন্ত রংপুরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠত না।
পৃথিবীজুড়ে আজ প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার ব্যাপক চাহিদা। বাংলাদেশে কর্মসংস্থান না হলেও বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানো সম্ভব। রংপুরের জনপদের কথা বিবেচনা করে হোক অথবা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কথা ভেবে হোক কিংবা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা ভেবে হোক আমরা রংপুরে সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি চাই, যে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কাজ শুরু করেছিল। শুধু তাই নয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হোক ড. ওয়াজেদ প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর। একটি ভালো কাজ শুরু করলে যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তা মারা যায় না সেটিও প্রমাণ করা প্রয়োজন। ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিস্তা সেতুর উদ্বোধন করতে আসছেন। আমরা রংপুরবাসী অপেক্ষায় আছি তিনি স্বয়ং যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি রংপুরে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগের ঘোষণা দেবেন। রংপুরের প্রতি বর্তমান মহাজোট সরকার যে সচেতন দৃষ্টি রেখেছে তাতে আশা করি, এই প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষিত হবে না।
লেখকবৃন্দ : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
রংপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনটি কলেজে স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান করানো হয়। কলেজ তিনটি হচ্ছে কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি কলেজ এবং সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিনটিতে চাইলেও ভালোভাবে পাঠদান করানো কঠিন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি এবং পরীক্ষা পদ্ধতির কারণে শিক্ষার্থীরা গাইডবই পড়ে এবং বিদ্যালয়বিমুখ হলেও তাদের একটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা কঠিন কিছু হয় না। ফলে এ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুণগত মান রক্ষা করতে না পারলেও এমএ পাসের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি এবং পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা ব্যতিরেকে প্রকৃত অর্থে শিক্ষার পরিবেশ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসম্ভব।
চার বছর ধরে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অল্প সময়ে অনেকগুলো বিভাগ চালু হয়েছে। দীর্ঘদিন পরে প্রতিষ্ঠিত হলেও দ্রুত বিকাশমান এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলে স্বপ্নের দ্বার খুলে রাখা আছে রংপুরের গণমানুষের।
বর্তমান যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক পাসকৃত শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ প্রযুক্তিগত বিষয়ের ওপর ডিগ্রি অর্জন করতে চায়। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা অত্যন্ত সীমিত হওয়ার কারণে তাদের যেতে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে একদিকে যেমন পর্যাপ্ত গবেষণাগারের সীমাবদ্ধতা থাকে, তেমনি সেখানকার ব্যয়ও অনেক। সেখানকার শিক্ষার ব্যয় মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে। আমাদের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হলে কারিগরি ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার বিকল্প নেই। রংপুরে যে বিশাল জনপদ সেখানে রংপুরে একটি সাধারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। দেশে প্রযুক্তিনির্ভর এবং কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার স্বার্থে রংপুরে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত সময়ে যখন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি তখনই রংপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন। সেই মর্মে রংপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। প্রায় এক যুগ আগে তিনি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা আরও অধিক মাত্রা লাভ করেছে। আধুনিক এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বর্তমান সরকার যে কাজ করে যাচ্ছে তাতে করেও রংপুরে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
রংপুরবাসীর জন্য দুর্ভাগ্য যে, প্রধানমন্ত্রী যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ রংপুরে গ্রহণ করেছিলেন, ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে চারদলীয় জোট সরকার সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হওয়ার পর বন্ধ করে দেয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে রংপুরবাসীর প্রত্যাশা, যে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগ তিনি নিজে গ্রহণ করেছিলেন সেটির কার্যক্রম তার বর্তমান শাসনামলেই চালু হোক।
রংপুরের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করলেও এখানে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। রংপুরে একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। অনেকে চান এ প্রতিষ্ঠাটিকে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় করা হোক। এই কাজটি করা সঙ্গত হবে না। কারণ, একটি প্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করে আর একটি প্রতিষ্ঠান করার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং একটি নতুন প্রতিষ্ঠান হলে একটি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়বে। এক সময় অনেকে চেয়েছিলেন কারমাইকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা হোক। কিন্তু সে কাজ না করায় একটি বড় কলেজের পাশাপাশি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও পাওয়া গেল।
বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর পরমাণু বিজ্ঞানের জগতে অনন্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া। সর্বজন শ্রদ্ধেয় তিনি। ক্ষমতার বিন্দুতে অবস্থান করেও যিনি নির্মোহ থেকেছেন সবসময়। তার জন্মস্থান রংপুরে। তার প্রতি সম্মানার্থে ও তার নামে রংপুরে একটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠতে পারে।
রাজনৈতিক বিদ্বেষজনিত কারণে রংপুরের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা একবার উপেক্ষিত হয়েছে। বর্তমান মহাজোট সরকার হতে পারত সেই ক্ষতি পূরণের সরকার। তা হয়নি। গত নির্বাচনের ইশতেহারেও মহাজোট রংপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সরকার তার প্রায় চার বছর অতিক্রম করেছে। রংপুরে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে কোনো প্রচেষ্টা চোখে পড়েনি। আবার যদি এমন সময়ে গিয়ে রংপুরে বিগত সময়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়, তবে তার কাজ আবার বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে না হলে হয়তো এখন পর্যন্ত রংপুরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠত না।
পৃথিবীজুড়ে আজ প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার ব্যাপক চাহিদা। বাংলাদেশে কর্মসংস্থান না হলেও বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানো সম্ভব। রংপুরের জনপদের কথা বিবেচনা করে হোক অথবা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কথা ভেবে হোক কিংবা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা ভেবে হোক আমরা রংপুরে সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি চাই, যে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কাজ শুরু করেছিল। শুধু তাই নয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হোক ড. ওয়াজেদ প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর। একটি ভালো কাজ শুরু করলে যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তা মারা যায় না সেটিও প্রমাণ করা প্রয়োজন। ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিস্তা সেতুর উদ্বোধন করতে আসছেন। আমরা রংপুরবাসী অপেক্ষায় আছি তিনি স্বয়ং যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি রংপুরে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগের ঘোষণা দেবেন। রংপুরের প্রতি বর্তমান মহাজোট সরকার যে সচেতন দৃষ্টি রেখেছে তাতে আশা করি, এই প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষিত হবে না।
লেখকবৃন্দ : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
No comments