পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি ইউটিউব by কাজী হাফিজ
ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগলের ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউব গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলাদেশে পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। ইউটিউবের একটি আইপি অ্যাড্রেস বন্ধ করলে বিকল্প পথে তা চালু থেকেই যাচ্ছে। এ অবস্থায় করণীয় নির্ধারণে গতকাল ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক
করেছেন মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির কর্মকর্তারা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সচিব সুনীল কান্তি বোস ও বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
আইআইজি অপারেটর ম্যাঙ্গো টেলিসার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মাসুদ কবীর কালের কণ্ঠকে জানান, বৈঠকে মূলত ইউটিউব বাংলাদেশে পুরোপুরি বন্ধে এর কারিগরি দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিটিসিএল সূত্র জানায়, বৈঠকে এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয় যে ইউটিউব বন্ধ করতে গিয়ে কোনোভাবেই গুগল ও জি-মেইল বন্ধ করা যাবে না। তবে ইউটিউবের ডায়নামিক আইপি অ্যাড্রেস সংগ্রহ করে তা ব্লক করতে প্রতিটি আইআইজি অপারেটরকে পর্যবেক্ষণ দল গঠন করে সার্বক্ষণিক কাজ চালাতে হবে।
এ ছাড়া এইচটিটিপিএ, এসএসএল বা প্রক্সি সার্ভারের মাধ্যমে ইউটিউবের ভিডিও ক্লিপ কার্যকরভাবে বন্ধ করা সম্ভব না হলে অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে প্রতিটি আইআইজি অপারেটরকে ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে স্বতন্ত্রভাবে যোগাযোগ করে আলোচিত আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকেও ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে এ অনুরোধ জানানো হবে।
মীর মাসুদ কবীর বলেন, 'আমরা বিষয়টিকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখছি। যে আইপি অ্যাড্রেসের মাধ্যমে ইউটিউব চালু পাওয়া যাচ্ছে তা সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করছি, বুধবারের (আজ) মধ্যে বাংলাদেশে ইউটিউবের প্রায় সব পথ বন্ধ করা সম্ভব হবে।'
মাসুদ কবীর দেশে ইউটিউব বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, 'আমার ধারণা, এতে বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্পষ্ট হয়েছে। এখন বিকল্প পথে এটি দেখার ব্যবস্থা থাকলে তাতে তেমন কিছু যায় আসে না।'
প্রসঙ্গত, 'ইনোসেন্স অব মুসলিমস' নামের একটি বিতর্কিত চলচ্চিত্রকে ঘিরে বিক্ষোভের ঝড় চলছে মুসলিম বিশ্বে। এই ইসলামবিরোধী নিন্দিত চলচ্চিত্রের ভিডিও ক্লিপ কোনো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যাতে বাংলাদেশে ব্যবহারকারীদের নাগালে চলে না আসে, সে লক্ষ্যে বিটিআরসি শনিবার দেশের আইআইজি অপারেটরদের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তা বাস্তবায়নে কারিগরি সমস্যা দেখা দেয়। আইআইজি অপারেটররা জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ থেকে এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটা করতে হলে ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগল বা ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে রাজি করাতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম থেকে কয়েকবার অনুরোধপত্র পাঠানো সত্ত্বেও গুগল কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি। এ অবস্থায় সরকার সোমবার রাতে দেশে ইউটিউব বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করতে আইআইজি অপারেটরদের নির্দেশ দেয়।
No comments