বৃদ্ধ মা-বাবার স্থান বাড়িতেই হোক by শাহীন হাসনাত
সম্প্রতি বয়স্ক মা-বাবার ভরণপোষণ সন্তানরা যেন দেয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আইন সচিব ও সমাজকল্যাণ সচিবকে তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
২৮ মার্চ বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক ও বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এক রিটের শুনানি নিয়ে এ রুল জারি করেন। সন্তানরা যাতে তাদের বয়স্ক মা-বাবাদের ভরণপোষণ করে, সে জন্য আইন প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে ২৭ মার্চ মঙ্গলবার গাজীপুর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল জাহিদ মুকুল রিট আবেদনটি করেন। রিটকারীর আইনজীবী বলেন, মা-বাবা বয়স্ক অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েন। সাধারণত সে সময় তাদের নিজস্ব কোনো আয় থাকে না। সন্তানদের আয়ের ওপর তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। তাদের ভরণপোষণের জন্য আইন প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি মা-বাবার ভরণপোষণের ব্যবস্থা এবং তাদের সঙ্গে সন্তানের বসবাস বাধ্যতামূলক করার বিধান করে জাতীয় সংসদে একটি বেসরকারি বিল উত্থাপন করা হয়েছিল 'পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন-২০১১' নামে। বিলে পিতার অবর্তমানে দাদা-দাদি এবং মাতার অবর্তমানে নানা-নানিরও ভরণপোষণ নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়েছিল। বিলটি উত্থাপন করেন কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মুজিবুল হক। সংসদে উত্থাপিত ওই বেসরকারি বিল ও হাইকোর্টের রিট আদেশটি অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে অসহায়, বৃদ্ধ মা-বাবাদের উপকার হয় এবং তাদের জীবনযাপন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিন্ত হয় এমন আইন প্রণয়ন জরুরি।
একটা সময় পর্যন্ত প্রত্যেক সন্তানের কাছে মা-বাবা খুব কাছের জন হিসেবেই থাকেন। সন্তানের তাবৎ চিন্তা-ভাবনা আবর্তিত হয় মা-বাবাকে ঘিরেই। ভারতীয় উপমহাদেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশে এই চিত্র ছিল খুব স্বাভাবিক। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে প্রবীণ নিবাস বা কোনো বৃদ্ধাশ্রমের প্রচলন ছিল না। সম্পদের হিসেবে দরিদ্র হলেও মান্যতা, শ্রদ্ধা, সম্মান ও পিতা-মাতার প্রতি ভক্তি এবং দায়িত্ববোধ ছিল যথার্থ; গর্ব করার মতো। কিন্তু কালের আবর্তে এখন আর সেই অবস্থা নেই। অহরহ পত্রিকায় খবর বেরোচ্ছে, বৃদ্ধ মা-বাবা সন্তানের হাতে নিগৃহীত এমনকি খুনও হচ্ছে। মা-বাবার প্রতি সন্তানের এমন আচরণ ইসলাম সমর্থন করে না। আল্লাহ ও রাসূলের পরেই রয়েছে মা-বাবার প্রতি ভালোবাসার স্থান। এটা একটি ফজিলতের বিষয়ও বটে। এ সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সাহাবারা আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে ব্যক্তি কে? তিনি (সা.) বললেন, মা-বাবাকে জীবিত পেয়েও তাদের সেবা-যত্ন করে যে জান্নাত খরিদ করেনি।' সব ধর্মেই মা-বাবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও দায়িত্ববোধের কথা শক্তভাবে এসেছে। বিশ্বব্যাপী আজ পরিবার প্রথা ভাঙনের মুখে। অর্থনৈতিক টানাপড়েনসহ নানা কারণেই পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে থাকতে পারছে না। ফলে শেষ বয়সে মা-বাবাকে কাটাতে হচ্ছে অনেকটাই অনাদরে-অবহেলায়। তাদের দেখভালের নিমিত্তে সন্তানের সময়-ফুরসত নেই বিধায় গড়ে উঠছে প্রবীণ নিবাস বা বৃদ্ধাশ্রম। ভাবতে অবাক লাগে সে সন্তানের পৃথিবী এক সময় গড়ে উঠেছিল এই বাবা-মাকে ঘিরেই। এখন সেই আদরের সন্তানই তাকে পাঠাচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে! তার কাছে এক দণ্ড সময় নেই বৃদ্ধ বাবা-মার জন্য! অথচ সন্তানের জন্য দায়িত্ব ছিল মা-বাবাকে দেখভাল করা। তাদের জীবনধারণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কোনো সন্তান থেকেই এ আচরণ কাম্য নয়। কোরআনে কারিমে এবং হাদিসে এটাকে নিষেধ করা হয়েছে। যে সন্তান এই কাজ করবে শরিয়তের দৃষ্টিকোণে সে অপরাধী।
এর আগে গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি মা-বাবার ভরণপোষণের ব্যবস্থা এবং তাদের সঙ্গে সন্তানের বসবাস বাধ্যতামূলক করার বিধান করে জাতীয় সংসদে একটি বেসরকারি বিল উত্থাপন করা হয়েছিল 'পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন-২০১১' নামে। বিলে পিতার অবর্তমানে দাদা-দাদি এবং মাতার অবর্তমানে নানা-নানিরও ভরণপোষণ নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়েছিল। বিলটি উত্থাপন করেন কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মুজিবুল হক। সংসদে উত্থাপিত ওই বেসরকারি বিল ও হাইকোর্টের রিট আদেশটি অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে অসহায়, বৃদ্ধ মা-বাবাদের উপকার হয় এবং তাদের জীবনযাপন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিন্ত হয় এমন আইন প্রণয়ন জরুরি।
একটা সময় পর্যন্ত প্রত্যেক সন্তানের কাছে মা-বাবা খুব কাছের জন হিসেবেই থাকেন। সন্তানের তাবৎ চিন্তা-ভাবনা আবর্তিত হয় মা-বাবাকে ঘিরেই। ভারতীয় উপমহাদেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশে এই চিত্র ছিল খুব স্বাভাবিক। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে প্রবীণ নিবাস বা কোনো বৃদ্ধাশ্রমের প্রচলন ছিল না। সম্পদের হিসেবে দরিদ্র হলেও মান্যতা, শ্রদ্ধা, সম্মান ও পিতা-মাতার প্রতি ভক্তি এবং দায়িত্ববোধ ছিল যথার্থ; গর্ব করার মতো। কিন্তু কালের আবর্তে এখন আর সেই অবস্থা নেই। অহরহ পত্রিকায় খবর বেরোচ্ছে, বৃদ্ধ মা-বাবা সন্তানের হাতে নিগৃহীত এমনকি খুনও হচ্ছে। মা-বাবার প্রতি সন্তানের এমন আচরণ ইসলাম সমর্থন করে না। আল্লাহ ও রাসূলের পরেই রয়েছে মা-বাবার প্রতি ভালোবাসার স্থান। এটা একটি ফজিলতের বিষয়ও বটে। এ সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সাহাবারা আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে ব্যক্তি কে? তিনি (সা.) বললেন, মা-বাবাকে জীবিত পেয়েও তাদের সেবা-যত্ন করে যে জান্নাত খরিদ করেনি।' সব ধর্মেই মা-বাবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও দায়িত্ববোধের কথা শক্তভাবে এসেছে। বিশ্বব্যাপী আজ পরিবার প্রথা ভাঙনের মুখে। অর্থনৈতিক টানাপড়েনসহ নানা কারণেই পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে থাকতে পারছে না। ফলে শেষ বয়সে মা-বাবাকে কাটাতে হচ্ছে অনেকটাই অনাদরে-অবহেলায়। তাদের দেখভালের নিমিত্তে সন্তানের সময়-ফুরসত নেই বিধায় গড়ে উঠছে প্রবীণ নিবাস বা বৃদ্ধাশ্রম। ভাবতে অবাক লাগে সে সন্তানের পৃথিবী এক সময় গড়ে উঠেছিল এই বাবা-মাকে ঘিরেই। এখন সেই আদরের সন্তানই তাকে পাঠাচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে! তার কাছে এক দণ্ড সময় নেই বৃদ্ধ বাবা-মার জন্য! অথচ সন্তানের জন্য দায়িত্ব ছিল মা-বাবাকে দেখভাল করা। তাদের জীবনধারণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কোনো সন্তান থেকেই এ আচরণ কাম্য নয়। কোরআনে কারিমে এবং হাদিসে এটাকে নিষেধ করা হয়েছে। যে সন্তান এই কাজ করবে শরিয়তের দৃষ্টিকোণে সে অপরাধী।
No comments