ব্যাংকে তারল্যসংকট: ১-বিশ্বাস ভঙ্গ, তিন মাসের ঋণ গড়িয়েছে পাঁচ বছরে by মনজুর আহমেদ
বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণগুলো ব্যবসায়ীরা নিয়েছিলেন আমদানি করা নিত্যপণ্য বাজারজাত করতে সর্বোচ্চ তিন মাসের জন্য। কিন্তু বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন তাঁরা। এই হাজার হাজার কোটি টাকা এখন মেয়াদি ঋণ হয়ে আটকে গেছে। আর ব্যাংকগুলোও যাচাই-বাছাই বা ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণ ছাড়াই এই বিপুল অর্থায়ন করে এখন ফেঁসে গেছে।
এসব অর্থায়নই সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোর তারল্য বা নগদ অর্থসংকটের অন্যতম কারণ বলে অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে।
সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা তাঁদের ঋণগুলো ইতিমধ্যে বিভিন্ন মেয়াদের জন্য পুনঃ তফসিল করে নিয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে এখনো এর কাজ চলছে। ফলে স্বল্প মেয়াদে ৯০ দিন কিংবা ১২০ দিনে যে অর্থ ব্যাংকের কাছে ফিরে আসার কথা ছিল, তা এখন মেয়াদের ভিন্নতায় পাঁচ বছর অথবা তারও বেশি সময় ধরে ব্যাংকে আসবে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিকারক একটি প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক থেকে অন্তত ৩০০ কোটি টাকার আস্থার বিপরীতে ঋণ (এলটিআর বা লোন এগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিট) মেয়াদি ঋণে পরিণত করেছে। এখন পাঁচ বছরের মেয়াদে এই ঋণ তিন মাস অন্তর প্রতিষ্ঠানটি কিস্তিতে পরিশোধ করবে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সরেজমিন অনুসন্ধানে এ তথ্য মিলেছে।
এই যে বিপুল পরিমাণ স্বল্প সময়ের অর্থায়ন মেয়াদি ঋণে পরিণত হচ্ছে, এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকিতে বড় ধরনের ব্যর্থতার অভিযোগও উঠেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি ব্যবস্থাপনায় তদারকির চেয়ে ছোট ছোট বিষয়ে তাদের মনোযোগ দিয়ে রেখেছে কয়েক বছর ধরেই। আর ব্যাংকগুলো অতি মুনাফার লোভে কোনো ধরনের পূর্বাভাস বা বিশ্লেষণ না করেই দায়দায়িত্বহীনভাবে ঋণ বিতরণ করে চলেছে।
ঢাকার বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, মৌলভীবাজার, বাবুবাজার, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও আগ্রাবাদে এক মাসের বেশি সময় ধরে খোঁজখবর এবং সরেজমিন অনুসন্ধানে ব্যাংকঋণ অপব্যবহারের বিচিত্র সব তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যাংকের তারল্যসংকটের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে। ব্যবসায়ীরা ব্যাংকে গিয়ে ঋণ পাচ্ছেন না, এমন অভিযোগ এখন সবার জানা। আর্থিক খাতে এই তারল্য-পরিস্থিতি প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা তফসিলি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) পক্ষ থেকে যেসব ব্যাখ্যা বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কখনোই আমদানি পর্যায়ে অর্থায়নে এ ধরনের অপচর্চার কথা আসেনি। প্রথম আলোর নিজস্ব অনুসন্ধান বলছে, এটাই তারল্যসংকটের অন্যতম কারণ।
তারল্যসংকটের কথা উঠলেই সাধারণভাবে বলা হচ্ছে, ব্যাংক খাতে সরকার বড় ঋণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা সংকোচন ব্যবস্থাপনার আওতায় বিধিবদ্ধ (এসএলআর বা স্টেটিউটরি লিক্যুইডিটি রিকয়ারমেন্ট) জমার চেয়ে অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটি টাকার ট্রেজারি বিল বিক্রি করে অর্থ তুলে নেওয়ায় স্থানীয় মুদ্রাবাজারে তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে।
কিন্তু কখনোই আমদানি পণ্য বাজারজাত করতে ব্যাংকঋণে বড় ধরনের এই সমন্বয়হীনতার কথা কেউ বলেনি। বিশেষত, ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠনের কাছে এ তথ্য ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনোযোগও এদিকে নেই। বিভিন্ন ধরনের আমদানি অর্থায়নের কোনো তথ্য-উপাত্তও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নেই বলে জানা গেছে।
তারল্যসংকটের সঙ্গে আমদানি অর্থায়নের সম্পর্ক রয়েছে, এমন সন্দেহ তৈরি হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০ শীর্ষ খেলাপির তালিকা দেখে। এই তালিকায় সপ্তম খেলাপি হচ্ছে চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স। ইলিয়াস ব্রাদার্স মূলত নিত্যপণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের কাছে ২০১১ সালের জুন হিসাবে ১৬ ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ৭২৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা, যার মধ্যে দেড় শতাধিক কোটি টাকা খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন দেখা দেয়, নিত্যপণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এই বিপুল অঙ্কের খেলাপিতে কীভাবে পড়ে?
চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে কথা হয় বর্তমানে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এমইবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শোয়াইব রিয়াদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্য আমদানি করে বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে হয়েছে আমাদের। যে কারণে খেলাপি হয়ে গেছে।’ তবে তিনি জানান, তাঁদের পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে তিনি এখন ব্যবসা বদলের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন। আর ইলিয়াস ব্রাদার্সের বিভিন্ন সম্পদ অর্থে রূপান্তর করে ব্যাংকের দায় পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আমদানি পণ্য বাজারজাত ঋণ: বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানির জন্য ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান অনুসারে ব্যবসায়ীদের এ পর্যায়ে কিছু নগদ অর্থ জমা করতে হয়। নিত্যপণ্যে সাধারণভাবে তা এলসি মূল্যের ১০ শতাংশ। এলসির দলিলপত্র এলে ব্যাংক ব্যবসায়ীকে অর্থ দিতে বলে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ী টাকা দেন না, বরং ব্যাংক কাগজপত্রে সম্মতি দিয়ে দেয় বিদেশের ব্যাংককে। পরে ব্যবসায়ীর অনুরোধে ব্যাংক অর্থায়ন সুবিধা দেয়। এর মধ্যে বর্তমানে এলটিআর বা লোন এগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিট অর্থাৎ ‘বিশ্বাসের ওপর ঋণ’ সর্বাধিক। এই অর্থায়ন করলে ব্যাংকের আওতায় মালামাল থাকে না। আরও আছে লিম বা লোন এগেইনস্ট ইমপোর্টেড মার্চেন্টডাইজ। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের গুদামে মালামাল থাকে। এই দুই ধরনের ঋণ-সুবিধায় অপব্যবহার হচ্ছে বিপুলভাবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, একদল ব্যবসায়ী ৯০ বা ১২০ দিনের এই সুবিধা নিয়ে গুদামে মালামাল রেখে দেন দীর্ঘ সময়। ব্যাংকগুলো এসব আদায়ে তৎপর থাকে না। এ কারণে ব্যাংকের নগদ টাকা আটকে পড়ে ব্যবসায়ীর গুদামে। আর পণ্য গুদামে পড়ে থাকার সুযোগ তৈরি হয় বলে বাজারে মাঝে মাঝে সংকট তৈরি হয়, কখনো দামও বাড়ে।
বিশ্বাসী ঋণে অপচর্চা: রাষ্ট্রমালিকানাধীন চার ব্যাংকের সূত্রে পাওয়া তথ্য থেকে দেখা গেছে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে সরকার ও বেসরকারি খাতের ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি এলটিআর রয়েছে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকে, যার বড় অংশ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। আবার গত ডিসেম্বরের তুলনায় এর পরিমাণ বাড়ছে। এই ঋণের বড় অংশ বেসরকারি খাতের।
অগ্রণী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সূত্রে জানা যায়, তাদের এলটিআর ঋণের ৪০-৫০ ভাগ এখন মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে। বাকি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোরও প্রায় একই অবস্থা।
নিত্যপণ্য ছাড়াও শিল্পের কাঁচামালের ক্ষেত্রে এলটিআর বা লিম সুবিধা দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রেও বড় অঙ্কের ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীকালে যা মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে এমন তথ্য-উপাত্তও মিলেছে অনুসন্ধানে।
এক গ্রাহকের এলটিআর হিসাবে ২০১১ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আটকে ছিল সোনালী ব্যাংকের। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের পর্যায়ে ব্যাংক নিজেদের রক্ষা করতে এই এলটিআরের পুরো অর্থ আদায় করে ফেলে। অবশ্য এটি নিত্যপণ্য নয়, ছিল শিল্পের কাঁচামাল। এই ঋণ হিসাবটিতে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাওনার পরিমাণ ছিল ৭৩৭ কোটি টাকারও বেশি।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর তথ্য মোটামুটিভাবে পাওয়া গেলেও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর এসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া কঠিন। তবে বিভিন্ন সূত্রে কয়েকটি ব্যাংকের এসব খাতের তথ্য-উপাত্ত মিলেছে। তার মধ্যে যেমন—এক্সিম ব্যাংকের এলটিআর (ইসলামী ব্যাংকের ভাষায় এমটিআর বা মুরাবাহা ট্রাস্ট রিসিট) খাতে বকেয়া ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ওপরে, যার মধ্যে বড় অংশ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। এনসিসি ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ১০ ভাগ এলটিআর খাতে বিতরণ হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৭০০ কোটি টাকা, যার সবটাই প্রায় বর্তমানে মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব ব্যাংকের একই চেহারা বলে কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা স্বীকার করেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধান: চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় আমদানি পণ্যের বাজার। মার্চের শেষ ভাগে খাতুনগঞ্জের বাজার ও আগ্রাবাদে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ব্যাংকের শাখাগুলোতে অনুসন্ধানে বিচিত্র সব তথ্য পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ এলটিআরের পরিমাণ পৌনে ২০০ কোটি টাকারও বেশি। তবে শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, মাত্র এক-দুই কোটি টাকা এমটিআর মেয়াদি ঋণ হয়েছে।
অন্যদিকে খাতুনগঞ্জের ন্যাশনাল ব্যাংক শাখায় শতকোটি টাকার এলটিআর মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্র জানায়। খাতুনগঞ্জের সোনালী, মার্কেন্টাইল, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা সবাই আমদানি অর্থায়ন মেয়াদি ঋণে পরিণত হওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেন।
ইসলামী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফরিদুল হক চৌধুরী তাঁদের কোনো এলটিআর মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়নি বলে দৃঢ়তার সঙ্গে মতপ্রকাশ করেন। তবে তিনি সামগ্রিক ব্যাংক খাত সম্পর্কে বলেন, ‘বিচার-বিশ্লেষণ না করে অর্থায়ন করলে এমনটা হতেই পারে।’
যেভাবে নগদ অর্থ আটকে পড়েছে: যেকোনো ব্যাংক তাদের ঋণ বিতরণযোগ্য তহবিল বছরের শুরুতেই বিভিন্নভাবে ভাগ করে থাকে। এর মধ্যে থাকে দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ, মধ্য মেয়াদের ঋণ ও স্বল্প সময়ের ঋণ। স্বল্প সময়ের এই ঋণগুলোর মধ্যে রয়েছে আমদানি পর্যায়ে এসব অর্থায়ন। মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ নির্দিষ্ট সময় শেষে কিস্তিতে ব্যাংকে ফেরত আসবে। আর সরকারের ব্যাংকঋণ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ব্যবস্থাপনার আওতায় অতিরিক্ত অর্থ বাজার থেকে তুলে নেওয়া হলে সেসব হিসাব সবার জানার মধ্যেই থাকে। কিন্তু অস্বচ্ছভাবে স্বল্প সময়ের ঋণগুলো ব্যাংকে না আসায় সেগুলো আবার পুনর্বিনিয়োগে যেতে পারছে না। এ কারণে ব্যাংকগুলোতে প্রলম্বিত তারল্যসংকট তৈরি হচ্ছে।
সরেজমিনে ব্যবসায়ীরাও এগুলো স্বীকার করেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সদস্য এবং বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, এটা সত্য, বড় অঙ্কের আমদানি অর্থায়ন আটকে পড়ায় ব্যাংকের তারল্য-পরিস্থিতিতে চাপ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংক যদি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজার বিশ্লেষণ না করে এবং একই সঙ্গে গ্রাহকের পূর্ববর্তী কয়েক বছরের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন না করে এ ধরনের ঋণ দেয়, তাহলে এ অবস্থাই হবে। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি ব্যবসায়ীরা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তিনি তাঁর হিসাব দেন (এ বিষয়ে পরের প্রতিবেদন থাকছে)।
আমদানি অর্থায়ন সময়মতো ফেরত না আসায় ব্যাংক খাতে তারল্য-ব্যবস্থাপনায় সমস্যা হচ্ছে স্বীকার করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও এনসিসি ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, ছোট ও নতুন গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। তাতে লাভ হতে পারে। কিছু ব্যবসায়ীর কাছে পুরো আমদানি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকা উচিত নয়।
কাল পড়ুন: ঋণ নিয়ে অপচর্চার জেরে পণ্য মজুদ হচ্ছে, দাম বাড়ছে
সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা তাঁদের ঋণগুলো ইতিমধ্যে বিভিন্ন মেয়াদের জন্য পুনঃ তফসিল করে নিয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে এখনো এর কাজ চলছে। ফলে স্বল্প মেয়াদে ৯০ দিন কিংবা ১২০ দিনে যে অর্থ ব্যাংকের কাছে ফিরে আসার কথা ছিল, তা এখন মেয়াদের ভিন্নতায় পাঁচ বছর অথবা তারও বেশি সময় ধরে ব্যাংকে আসবে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিকারক একটি প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক থেকে অন্তত ৩০০ কোটি টাকার আস্থার বিপরীতে ঋণ (এলটিআর বা লোন এগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিট) মেয়াদি ঋণে পরিণত করেছে। এখন পাঁচ বছরের মেয়াদে এই ঋণ তিন মাস অন্তর প্রতিষ্ঠানটি কিস্তিতে পরিশোধ করবে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সরেজমিন অনুসন্ধানে এ তথ্য মিলেছে।
এই যে বিপুল পরিমাণ স্বল্প সময়ের অর্থায়ন মেয়াদি ঋণে পরিণত হচ্ছে, এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকিতে বড় ধরনের ব্যর্থতার অভিযোগও উঠেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি ব্যবস্থাপনায় তদারকির চেয়ে ছোট ছোট বিষয়ে তাদের মনোযোগ দিয়ে রেখেছে কয়েক বছর ধরেই। আর ব্যাংকগুলো অতি মুনাফার লোভে কোনো ধরনের পূর্বাভাস বা বিশ্লেষণ না করেই দায়দায়িত্বহীনভাবে ঋণ বিতরণ করে চলেছে।
ঢাকার বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, মৌলভীবাজার, বাবুবাজার, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও আগ্রাবাদে এক মাসের বেশি সময় ধরে খোঁজখবর এবং সরেজমিন অনুসন্ধানে ব্যাংকঋণ অপব্যবহারের বিচিত্র সব তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যাংকের তারল্যসংকটের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে। ব্যবসায়ীরা ব্যাংকে গিয়ে ঋণ পাচ্ছেন না, এমন অভিযোগ এখন সবার জানা। আর্থিক খাতে এই তারল্য-পরিস্থিতি প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা তফসিলি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) পক্ষ থেকে যেসব ব্যাখ্যা বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কখনোই আমদানি পর্যায়ে অর্থায়নে এ ধরনের অপচর্চার কথা আসেনি। প্রথম আলোর নিজস্ব অনুসন্ধান বলছে, এটাই তারল্যসংকটের অন্যতম কারণ।
তারল্যসংকটের কথা উঠলেই সাধারণভাবে বলা হচ্ছে, ব্যাংক খাতে সরকার বড় ঋণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা সংকোচন ব্যবস্থাপনার আওতায় বিধিবদ্ধ (এসএলআর বা স্টেটিউটরি লিক্যুইডিটি রিকয়ারমেন্ট) জমার চেয়ে অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটি টাকার ট্রেজারি বিল বিক্রি করে অর্থ তুলে নেওয়ায় স্থানীয় মুদ্রাবাজারে তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে।
কিন্তু কখনোই আমদানি পণ্য বাজারজাত করতে ব্যাংকঋণে বড় ধরনের এই সমন্বয়হীনতার কথা কেউ বলেনি। বিশেষত, ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠনের কাছে এ তথ্য ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনোযোগও এদিকে নেই। বিভিন্ন ধরনের আমদানি অর্থায়নের কোনো তথ্য-উপাত্তও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নেই বলে জানা গেছে।
তারল্যসংকটের সঙ্গে আমদানি অর্থায়নের সম্পর্ক রয়েছে, এমন সন্দেহ তৈরি হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০ শীর্ষ খেলাপির তালিকা দেখে। এই তালিকায় সপ্তম খেলাপি হচ্ছে চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স। ইলিয়াস ব্রাদার্স মূলত নিত্যপণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের কাছে ২০১১ সালের জুন হিসাবে ১৬ ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ৭২৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা, যার মধ্যে দেড় শতাধিক কোটি টাকা খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন দেখা দেয়, নিত্যপণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এই বিপুল অঙ্কের খেলাপিতে কীভাবে পড়ে?
চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে কথা হয় বর্তমানে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এমইবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শোয়াইব রিয়াদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্য আমদানি করে বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে হয়েছে আমাদের। যে কারণে খেলাপি হয়ে গেছে।’ তবে তিনি জানান, তাঁদের পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে তিনি এখন ব্যবসা বদলের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন। আর ইলিয়াস ব্রাদার্সের বিভিন্ন সম্পদ অর্থে রূপান্তর করে ব্যাংকের দায় পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আমদানি পণ্য বাজারজাত ঋণ: বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানির জন্য ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান অনুসারে ব্যবসায়ীদের এ পর্যায়ে কিছু নগদ অর্থ জমা করতে হয়। নিত্যপণ্যে সাধারণভাবে তা এলসি মূল্যের ১০ শতাংশ। এলসির দলিলপত্র এলে ব্যাংক ব্যবসায়ীকে অর্থ দিতে বলে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ী টাকা দেন না, বরং ব্যাংক কাগজপত্রে সম্মতি দিয়ে দেয় বিদেশের ব্যাংককে। পরে ব্যবসায়ীর অনুরোধে ব্যাংক অর্থায়ন সুবিধা দেয়। এর মধ্যে বর্তমানে এলটিআর বা লোন এগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিট অর্থাৎ ‘বিশ্বাসের ওপর ঋণ’ সর্বাধিক। এই অর্থায়ন করলে ব্যাংকের আওতায় মালামাল থাকে না। আরও আছে লিম বা লোন এগেইনস্ট ইমপোর্টেড মার্চেন্টডাইজ। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের গুদামে মালামাল থাকে। এই দুই ধরনের ঋণ-সুবিধায় অপব্যবহার হচ্ছে বিপুলভাবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, একদল ব্যবসায়ী ৯০ বা ১২০ দিনের এই সুবিধা নিয়ে গুদামে মালামাল রেখে দেন দীর্ঘ সময়। ব্যাংকগুলো এসব আদায়ে তৎপর থাকে না। এ কারণে ব্যাংকের নগদ টাকা আটকে পড়ে ব্যবসায়ীর গুদামে। আর পণ্য গুদামে পড়ে থাকার সুযোগ তৈরি হয় বলে বাজারে মাঝে মাঝে সংকট তৈরি হয়, কখনো দামও বাড়ে।
বিশ্বাসী ঋণে অপচর্চা: রাষ্ট্রমালিকানাধীন চার ব্যাংকের সূত্রে পাওয়া তথ্য থেকে দেখা গেছে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে সরকার ও বেসরকারি খাতের ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি এলটিআর রয়েছে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকে, যার বড় অংশ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। আবার গত ডিসেম্বরের তুলনায় এর পরিমাণ বাড়ছে। এই ঋণের বড় অংশ বেসরকারি খাতের।
অগ্রণী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সূত্রে জানা যায়, তাদের এলটিআর ঋণের ৪০-৫০ ভাগ এখন মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে। বাকি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোরও প্রায় একই অবস্থা।
নিত্যপণ্য ছাড়াও শিল্পের কাঁচামালের ক্ষেত্রে এলটিআর বা লিম সুবিধা দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রেও বড় অঙ্কের ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীকালে যা মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে এমন তথ্য-উপাত্তও মিলেছে অনুসন্ধানে।
এক গ্রাহকের এলটিআর হিসাবে ২০১১ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আটকে ছিল সোনালী ব্যাংকের। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের পর্যায়ে ব্যাংক নিজেদের রক্ষা করতে এই এলটিআরের পুরো অর্থ আদায় করে ফেলে। অবশ্য এটি নিত্যপণ্য নয়, ছিল শিল্পের কাঁচামাল। এই ঋণ হিসাবটিতে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাওনার পরিমাণ ছিল ৭৩৭ কোটি টাকারও বেশি।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর তথ্য মোটামুটিভাবে পাওয়া গেলেও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর এসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া কঠিন। তবে বিভিন্ন সূত্রে কয়েকটি ব্যাংকের এসব খাতের তথ্য-উপাত্ত মিলেছে। তার মধ্যে যেমন—এক্সিম ব্যাংকের এলটিআর (ইসলামী ব্যাংকের ভাষায় এমটিআর বা মুরাবাহা ট্রাস্ট রিসিট) খাতে বকেয়া ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ওপরে, যার মধ্যে বড় অংশ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। এনসিসি ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ১০ ভাগ এলটিআর খাতে বিতরণ হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৭০০ কোটি টাকা, যার সবটাই প্রায় বর্তমানে মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব ব্যাংকের একই চেহারা বলে কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা স্বীকার করেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধান: চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় আমদানি পণ্যের বাজার। মার্চের শেষ ভাগে খাতুনগঞ্জের বাজার ও আগ্রাবাদে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ব্যাংকের শাখাগুলোতে অনুসন্ধানে বিচিত্র সব তথ্য পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় মেয়াদোত্তীর্ণ এলটিআরের পরিমাণ পৌনে ২০০ কোটি টাকারও বেশি। তবে শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, মাত্র এক-দুই কোটি টাকা এমটিআর মেয়াদি ঋণ হয়েছে।
অন্যদিকে খাতুনগঞ্জের ন্যাশনাল ব্যাংক শাখায় শতকোটি টাকার এলটিআর মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্র জানায়। খাতুনগঞ্জের সোনালী, মার্কেন্টাইল, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা সবাই আমদানি অর্থায়ন মেয়াদি ঋণে পরিণত হওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেন।
ইসলামী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফরিদুল হক চৌধুরী তাঁদের কোনো এলটিআর মেয়াদি ঋণে পরিণত হয়নি বলে দৃঢ়তার সঙ্গে মতপ্রকাশ করেন। তবে তিনি সামগ্রিক ব্যাংক খাত সম্পর্কে বলেন, ‘বিচার-বিশ্লেষণ না করে অর্থায়ন করলে এমনটা হতেই পারে।’
যেভাবে নগদ অর্থ আটকে পড়েছে: যেকোনো ব্যাংক তাদের ঋণ বিতরণযোগ্য তহবিল বছরের শুরুতেই বিভিন্নভাবে ভাগ করে থাকে। এর মধ্যে থাকে দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ, মধ্য মেয়াদের ঋণ ও স্বল্প সময়ের ঋণ। স্বল্প সময়ের এই ঋণগুলোর মধ্যে রয়েছে আমদানি পর্যায়ে এসব অর্থায়ন। মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ নির্দিষ্ট সময় শেষে কিস্তিতে ব্যাংকে ফেরত আসবে। আর সরকারের ব্যাংকঋণ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ব্যবস্থাপনার আওতায় অতিরিক্ত অর্থ বাজার থেকে তুলে নেওয়া হলে সেসব হিসাব সবার জানার মধ্যেই থাকে। কিন্তু অস্বচ্ছভাবে স্বল্প সময়ের ঋণগুলো ব্যাংকে না আসায় সেগুলো আবার পুনর্বিনিয়োগে যেতে পারছে না। এ কারণে ব্যাংকগুলোতে প্রলম্বিত তারল্যসংকট তৈরি হচ্ছে।
সরেজমিনে ব্যবসায়ীরাও এগুলো স্বীকার করেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সদস্য এবং বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, এটা সত্য, বড় অঙ্কের আমদানি অর্থায়ন আটকে পড়ায় ব্যাংকের তারল্য-পরিস্থিতিতে চাপ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংক যদি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজার বিশ্লেষণ না করে এবং একই সঙ্গে গ্রাহকের পূর্ববর্তী কয়েক বছরের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন না করে এ ধরনের ঋণ দেয়, তাহলে এ অবস্থাই হবে। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি ব্যবসায়ীরা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তিনি তাঁর হিসাব দেন (এ বিষয়ে পরের প্রতিবেদন থাকছে)।
আমদানি অর্থায়ন সময়মতো ফেরত না আসায় ব্যাংক খাতে তারল্য-ব্যবস্থাপনায় সমস্যা হচ্ছে স্বীকার করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও এনসিসি ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, ছোট ও নতুন গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। তাতে লাভ হতে পারে। কিছু ব্যবসায়ীর কাছে পুরো আমদানি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকা উচিত নয়।
কাল পড়ুন: ঋণ নিয়ে অপচর্চার জেরে পণ্য মজুদ হচ্ছে, দাম বাড়ছে
No comments