চট্টগ্রাম নগরের প্রবেশপথে টার্মিনাল, যানজট by একরামুল হক

চট্টগ্রাম নগরের দুটি প্রবেশপথ অলংকার ও অক্সিজেন মোড় ব্যবহূত হচ্ছে অস্থায়ী বাস টার্মিনাল হিসেবে। এতে নগরের এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যানজট নিত্যদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামে স্থায়ী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল না থাকায় অলংকার এবং অক্সিজেন মোড় থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি যাওয়া-আসা করে।


ওই দুই মোড়ে সড়কের ওপর শত শত গাড়ি রাখা হয়। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জামালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নগর থেকে অস্থায়ী টার্মিনাল অলংকার ও অক্সিজেন মোড়ে স্থানান্তর হওয়ায় সেখানে যানজট বেড়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মোড়গুলো পার হতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট লেগে যায়। টার্মিনাল না করলে রাস্তা চওড়া করার সুবিধা তো চালক ও যাত্রীরা পাবে না। আমাদের ভোগান্তি তো রয়েই গেল।’
সূত্র জানায়, গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় নগরে আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধের দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর নগরের মুরাদপুর থেকে অস্থায়ী বাস টার্মিনাল তুলে দেওয়া হয়। মুরাদপুর থেকে যেসব বাস চলাচল করত, সেগুলো এখন অক্সিজেন মোড় থেকে চলাচল করছে। অক্সিজেন মোড় থেকে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজানসহ বিভিন্ন স্থানে বাস আসা-যাওয়া করে। একইভাবে অলংকার মোড় থেকে ঢাকা, বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় বাস যাওয়া-আসা করে।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নগরে গাড়ির চাপ কমাতে শহরতলির ফৌজদারহাট ও সেনানিবাসসংলগ্ন চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের বালুছড়া এলাকায় দুটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ দুটি বাস টার্মিনালের পাশেই মধ্যম ও নিম্ন আয়ের লোকজনের জন্য আবাসন-সুবিধা রাখার পরিকল্পনা ছিল। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৮২ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প দুটি চাপা পড়ে যায়।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে দুটি টার্মিনালের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনুভব করছি। কারণ ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই দুটি মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজও চলছে। রাস্তা চওড়া হলে গাড়ির সংখ্যা আরও বহুগুণ বাড়বে, যা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
আবদুচ ছালাম আরও বলেন, ‘গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা ফৌজদারহাটে একটি আন্তজেলা এবং বালুছড়ায় আরেকটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে এই মুহূর্তে সিডিএর অন্তত ২৯টি প্রকল্পের উন্নয়নকাজ চলছে। কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই আমরা বাস টার্মিনাল নির্মাণকাজে হাত দেব, যাতে এই সরকারের মেয়াদে সুফল পাওয়া যায়।’
সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গড়ে প্রতিদিন ২৫ থেকে ২৬ হাজার গাড়ি চলাচল করে। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কেও চলাচল করে ১০ হাজারের বেশি গাড়ি, যার ৬৫ শতাংশ ভারী গাড়ি। অথচ চট্টগ্রাম মহানগরে বড় আকারের কোনো বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নেই।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা রাস্তা বানিয়েছি গাড়ি চলাচলের জন্য। টার্মিনাল করার জন্য নয়। মহাসড়ককে টার্মিনাল বানালে গাড়ির স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হবে।

No comments

Powered by Blogger.