কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই-ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ
দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও ব্যবসা করে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য মূলত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য সাময়িকভাবে কিছু বাড়তি সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে। হয়তো এ ধরনের ক্ষতিপূরণের প্রচেষ্টার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়।
কেননা, ঝুঁকি আছে জেনেও যাঁরা এই বাজারে বিনিয়োগ করেছেন, তাঁদের লোকসানের দায়ভার কেন অন্যদের নিতে হবে? তবে সরকারের দিক থেকে এ ধরনের যৌক্তিক প্রশ্ন তোলার কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। ২০০৯ সাল থেকেই দেশের শেয়ারবাজারকে কৃত্রিমভাবে ফুলিয়ে তুলতে ও বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষকে এখানে টাকা খাটাতে সরকারই বড় ভূমিকা পালন করেছে। তাই কৃত্রিমভাবে ফুলে ওঠা বাজারের অনিবার্য ধসের ফলে যে লাখ লাখ ছোট বিনিয়োগকারী-কারবারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তার দায় সরকার এড়াতে পারে না। আর কথিত ক্ষতিপূরণের বা বলা যায়, কিছু সুবিধা প্রদানের বাধ্যবাধকতা সরকারের ওপরই এসে পড়ে।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে, শেয়ারবাজারে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা নিজস্ব অর্থ বিনিয়োগ করে তার বিপরীতে যাঁরা ঋণসুবিধা নিয়েছেন, কেবল তাঁরাই সুদ মওকুফের সুবিধা পাবেন। আর ঋণগ্রস্ত বা ঋণ ছাড়া উভয় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী প্রাথমিক শেয়ারে আবেদনের (আইপিও) জন্য কোটাসুবিধা পাবেন। ২০১২ ও ২০১৩ সালে যেসব আইপিও আসবে, তার সব কটিতে তাঁদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হবে। বলা যেতে পারে, মোট দাগে এ দুটোই হলো মূল সুবিধা।
আরও একটি বিষয় হচ্ছে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিজের অর্থ যিনি বিনিয়োগ করেছেন, তাঁকেই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বিবেচনা করা হয়েছে। একটা বিষয় অবশ্য পরিষ্কার যে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও তাঁদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা খুব জটিল একটি কাজ। কেননা, এত দিন পর্যন্ত এর কোনো মানদণ্ড ছিল না। আবার ঠিক কীভাবে এই বিনিয়োগকারীরা এসব সুবিধা পাবেন, তা-ও এখন পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি। ফলে, এখন নতুন আরেক জটিলতার মধ্যেই পড়তে হলো শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে। যেমন: মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো গ্রাহকদের যে ঋণ দিয়েছিল, তার বিপরীতে প্রাপ্য সুদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ মওকুফ করতে পারবে। তার মানে এই নয় যে ৫০ শতাংশই মওকুফ করা হবে। এটা বহুলাংশে নির্ভর করবে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। একইভাবে আইপিওতে আবেদনে এসব বিনিয়োগকারী কতটা আগ্রহী হবেন বা হলে ২০ শতাংশ কোটায় প্রকৃতপক্ষে কতজনকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, সেটাও ভেবে দেখার বিষয়।
বস্তুত শেয়ারবাজারে যে দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর ক্ষত তৈরি করা হয়েছে, তা সামান্য কিছু মলমের প্রলেপে সারবে না। এ জন্য প্রয়োজন ছিল একটি ব্যাপকভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও নীতি সমর্থন। ধসের পর বাজারকে পর্যায়ক্রমে স্থিতিশীল হতে এবং বাজারের নিয়মে চলতে দেওয়ার জন্য যে ধরনের নীতিনির্দেশনার প্রয়োজন ছিল, সেগুলোও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি; বরং বিচ্ছিন্নভাবে কিছু প্রণোদনা দিয়ে বাজারকে চাঙা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, একটি সর্বাত্মক পরিকল্পনার আলোকে পুঁজিবাজারের কোনো সংস্কারের চেষ্টা হয়নি; নেওয়া হয়নি আর্থিক বাজারের গভীরতা বাড়ানোর অর্থবহ পদক্ষেপ। পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির সুপারিশের অনেক কিছুই উপেক্ষা করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (এসইসি) যথাযথভাবে পুনর্গঠন করা হয়নি। দায়িত্বে অবহেলার শাস্তি হয়নি একজনেরও। ধরা যায়নি বাজার ঘিরে বড় চক্রান্তকারী কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে। এত সব অপূর্ণতা রেখে কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এই প্রয়াসের কার্যকারিতা তাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে, শেয়ারবাজারে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা নিজস্ব অর্থ বিনিয়োগ করে তার বিপরীতে যাঁরা ঋণসুবিধা নিয়েছেন, কেবল তাঁরাই সুদ মওকুফের সুবিধা পাবেন। আর ঋণগ্রস্ত বা ঋণ ছাড়া উভয় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী প্রাথমিক শেয়ারে আবেদনের (আইপিও) জন্য কোটাসুবিধা পাবেন। ২০১২ ও ২০১৩ সালে যেসব আইপিও আসবে, তার সব কটিতে তাঁদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হবে। বলা যেতে পারে, মোট দাগে এ দুটোই হলো মূল সুবিধা।
আরও একটি বিষয় হচ্ছে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিজের অর্থ যিনি বিনিয়োগ করেছেন, তাঁকেই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বিবেচনা করা হয়েছে। একটা বিষয় অবশ্য পরিষ্কার যে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও তাঁদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা খুব জটিল একটি কাজ। কেননা, এত দিন পর্যন্ত এর কোনো মানদণ্ড ছিল না। আবার ঠিক কীভাবে এই বিনিয়োগকারীরা এসব সুবিধা পাবেন, তা-ও এখন পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি। ফলে, এখন নতুন আরেক জটিলতার মধ্যেই পড়তে হলো শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে। যেমন: মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো গ্রাহকদের যে ঋণ দিয়েছিল, তার বিপরীতে প্রাপ্য সুদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ মওকুফ করতে পারবে। তার মানে এই নয় যে ৫০ শতাংশই মওকুফ করা হবে। এটা বহুলাংশে নির্ভর করবে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। একইভাবে আইপিওতে আবেদনে এসব বিনিয়োগকারী কতটা আগ্রহী হবেন বা হলে ২০ শতাংশ কোটায় প্রকৃতপক্ষে কতজনকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, সেটাও ভেবে দেখার বিষয়।
বস্তুত শেয়ারবাজারে যে দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর ক্ষত তৈরি করা হয়েছে, তা সামান্য কিছু মলমের প্রলেপে সারবে না। এ জন্য প্রয়োজন ছিল একটি ব্যাপকভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও নীতি সমর্থন। ধসের পর বাজারকে পর্যায়ক্রমে স্থিতিশীল হতে এবং বাজারের নিয়মে চলতে দেওয়ার জন্য যে ধরনের নীতিনির্দেশনার প্রয়োজন ছিল, সেগুলোও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি; বরং বিচ্ছিন্নভাবে কিছু প্রণোদনা দিয়ে বাজারকে চাঙা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, একটি সর্বাত্মক পরিকল্পনার আলোকে পুঁজিবাজারের কোনো সংস্কারের চেষ্টা হয়নি; নেওয়া হয়নি আর্থিক বাজারের গভীরতা বাড়ানোর অর্থবহ পদক্ষেপ। পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির সুপারিশের অনেক কিছুই উপেক্ষা করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (এসইসি) যথাযথভাবে পুনর্গঠন করা হয়নি। দায়িত্বে অবহেলার শাস্তি হয়নি একজনেরও। ধরা যায়নি বাজার ঘিরে বড় চক্রান্তকারী কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে। এত সব অপূর্ণতা রেখে কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এই প্রয়াসের কার্যকারিতা তাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
No comments