শেন স্টোন ইসলামের ছায়ায় by জহির উদ্দিন বাবর
ইসলামে আল্লাহ এবং তার সৃষ্ট মানুষের সঙ্গে সরাসরি একটা সম্পর্কের সেতুবন্ধ রয়েছে। এ বিষয়টি খুবই আকর্ষণীয়। ইসলাম এমন একটি দ্বীন সে শিক্ষার মাধ্যমে যে কেউই তার অন্তরে আল্লাহকে বরণ করে নিতে পারেন
কয়েক দশক ধরে পশ্চিমা বিশ্বের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া জগতের খ্যাতিমান অনেক তারকাসহ বিখ্যাত বহু ব্যক্তিত্বের ইসলাম গ্রহণের প্রসঙ্গ ছিল গণমাধ্যমগুলোতে বেশ আকর্ষণীয় খবর। খুব বেশিদিন হয়নি ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের শ্যালিকা লরেন বুথ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এ খবর বিশ্বব্যাপী আলোচনা, বিশেষ করে ইসলাম সম্পর্কে পশ্চিমা বিশ্বের জ্ঞানী-গুণীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। সেই কৌতূহলের উষ্ণতা মিলিয়ে যেতে না যেতেই এবার ইসলাম গ্রহণ করলেন অস্কার বিজয়ী মার্কিন চলচ্চিত্রকার অলিভার স্টোনের ছেলে শেন স্টোন। তার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা সারাবিশ্বেই ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। তার বয়স ২৭ বছর। মার্কিন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ইসলামের ইতিহাসে পড়াশোনা করেছেন। এক ফিল্ম ডিরেক্টর বলেন, 'ধর্ম বিষয়ে তার জানাশোনা বেশ গভীর। আসলে ইসলাম তারাই গ্রহণ করেন যারা মেধাবী এবং বুদ্ধিমান।'
গত ১ ফেব্রুয়ারিতে ইরানে অনুষ্ঠিত হয়েছে 'হলিউড ও চলচ্চিত্র' শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার। এতে যোগ দিতে শেন স্টোন যে সফর করেন ওই সফর তার জীবনের মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছে। হজরত আলীর (রা.) বিচিত্রমুখী চারিত্রিক সৌন্দর্য ও মহান ব্যক্তিত্বে তিনি মুগ্ধ হয়ে তার নাম রেখেছেন 'আলী'। ইহুদি পিতা ও খ্রিস্টান মায়ের সন্তান হয়েও অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি আল্লাহ এবং তার রাসূলের প্রতি ইমান এনে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মুসলমান হওয়ার পর তিনি বলেছেন, 'ইসলামে আল্লাহ এবং তার সৃষ্ট মানুষের সঙ্গে সরাসরি একটা সম্পর্কের সেতুবন্ধ রয়েছে। এ বিষয়টি খুবই আকর্ষণীয়। ইসলাম এমন একটি দ্বীন সে শিক্ষার মাধ্যমে যে কেউই তার অন্তরে আল্লাহকে বরণ করে নিতে পারেন। এ জন্য পুরোহিত বা এ জাতীয় কারও মধ্যস্থতার প্রয়োজন পড়ে না। দ্বীনে ইসলাম হচ্ছে আল্লাহর কালামেরই ধারাবাহিকতা। আল্লাহ ইব্রাহিম (আ.) এবং হজরত মুসাকে (আ.) পাঠিয়েছেন এবং সব ধর্ম ও ধর্মীয় নীতিমালা এক সূত্রে গেঁথে দিয়েছেন।'
আলী স্টোন সামাজিক নীতি-নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার উৎকর্ষ দেখতে পেয়েছেন ইসলামে। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'মুসলিম দেশগুলোতে একটা আধ্যাত্মিকতাপূর্ণ চমৎকার অবস্থা লক্ষ্য করা যায়। এ বেশিষ্ট্যটি মানুষকে আত্মমুখী করে তোলে।' তিনি ভবিষ্যতের দিকে সুদৃষ্টি দিয়ে বলেন, 'আমি আশা করি, আমার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা মার্কিনিদের ইসলামের প্রকৃত স্বরূপ সম্পর্কে জানতে সাহায্য এবং ইসলামের সৌন্দর্যগুলো তাদের সমাজে প্রচার করতে সহযোগিতা করবে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে_ ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তা সুস্পষ্ট করে ফুটিয়ে তোলা।' এক্ষেত্রে শিল্পমাধ্যম, বিশেষ করে চলচ্চিত্রের ভূমিকা খুবই প্রভাবশালী বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আলী স্টোন বলেন, 'আশা করি, বিভিন্ন জাতি ও দেশের সংস্কৃতির মধ্যকার পার্থক্য বা বৈচিত্র্যের দিকে লক্ষ্য না করে বরং তাদের মধ্যে সেতু রচনা করা উচিত মিলগুলোর দিকে তাকিয়ে। বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে অভিন্ন যেসব মিল রয়েছে এর ভিত্তিতে সমাজ জাগিয়ে তুলতে হবে। সমাজের মানুষকে ভালো হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোনো মতাদর্শ সম্পর্কে ভীতি বা আতঙ্ক ছড়ানোর কোনো প্রয়োজন আমাদের নেই। কেবল মনে রাখতে হবে, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ একজন এবং তার অস্তিত্ব রয়েছে।'
আল্লাহর প্রতি ইমান আনলে এক ধরনের মানসিক শক্তি তৈরি হয়। আলী স্টোনের ভাষায়_ 'যে মুহূর্তে ইসলাম গ্রহণ করলাম, একটা মধুর আধ্যাত্মিক অনুভূতি বোধ করলাম। আসলে ওই মুহূর্তে পবিত্র এবং ইতিবাচক একটা শক্তি অর্জন করলাম। মনে হলো যেন আল্লাহর সঙ্গে একটা বিশেষ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হলো।'
মজার ব্যাপার হলো, মার্কিন এ নওমুসলিমের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং হুমকি-ধমকিও দিয়েছে। বাকস্বাধীনতার দাবিদার যুক্তরাষ্ট্র হলিউডের সঙ্গে নওমুসলিম এ চলচ্চিত্রকারের চুক্তিপত্রগুলোর বেশিরভাগই বাতিল করেছে। এমনকি 'গ্রে স্টোন' নামে রূঢ় একটি ফিল্ম তৈরি হচ্ছে বলেও তাকে জানিয়েছে। তাকে মন্দ ও ভয়াবহ লোক হিসেবে সমাজে পরিচয় করানোরও পাঁয়তারা হচ্ছে বলে তিনি জানান। মুসলমান হওয়ার ফলে তার সঙ্গে এ ধরনের আচরণের জবাবে তিনি প্রশান্ত মনে শুধু এ কালেমাটুকু উচ্চারণ করেই আত্মতৃপ্তি বোধ করতে চান_ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।'
zahirbabor@yahoo.com গত ১ ফেব্রুয়ারিতে ইরানে অনুষ্ঠিত হয়েছে 'হলিউড ও চলচ্চিত্র' শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার। এতে যোগ দিতে শেন স্টোন যে সফর করেন ওই সফর তার জীবনের মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছে। হজরত আলীর (রা.) বিচিত্রমুখী চারিত্রিক সৌন্দর্য ও মহান ব্যক্তিত্বে তিনি মুগ্ধ হয়ে তার নাম রেখেছেন 'আলী'। ইহুদি পিতা ও খ্রিস্টান মায়ের সন্তান হয়েও অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি আল্লাহ এবং তার রাসূলের প্রতি ইমান এনে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মুসলমান হওয়ার পর তিনি বলেছেন, 'ইসলামে আল্লাহ এবং তার সৃষ্ট মানুষের সঙ্গে সরাসরি একটা সম্পর্কের সেতুবন্ধ রয়েছে। এ বিষয়টি খুবই আকর্ষণীয়। ইসলাম এমন একটি দ্বীন সে শিক্ষার মাধ্যমে যে কেউই তার অন্তরে আল্লাহকে বরণ করে নিতে পারেন। এ জন্য পুরোহিত বা এ জাতীয় কারও মধ্যস্থতার প্রয়োজন পড়ে না। দ্বীনে ইসলাম হচ্ছে আল্লাহর কালামেরই ধারাবাহিকতা। আল্লাহ ইব্রাহিম (আ.) এবং হজরত মুসাকে (আ.) পাঠিয়েছেন এবং সব ধর্ম ও ধর্মীয় নীতিমালা এক সূত্রে গেঁথে দিয়েছেন।'
আলী স্টোন সামাজিক নীতি-নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার উৎকর্ষ দেখতে পেয়েছেন ইসলামে। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'মুসলিম দেশগুলোতে একটা আধ্যাত্মিকতাপূর্ণ চমৎকার অবস্থা লক্ষ্য করা যায়। এ বেশিষ্ট্যটি মানুষকে আত্মমুখী করে তোলে।' তিনি ভবিষ্যতের দিকে সুদৃষ্টি দিয়ে বলেন, 'আমি আশা করি, আমার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা মার্কিনিদের ইসলামের প্রকৃত স্বরূপ সম্পর্কে জানতে সাহায্য এবং ইসলামের সৌন্দর্যগুলো তাদের সমাজে প্রচার করতে সহযোগিতা করবে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে_ ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তা সুস্পষ্ট করে ফুটিয়ে তোলা।' এক্ষেত্রে শিল্পমাধ্যম, বিশেষ করে চলচ্চিত্রের ভূমিকা খুবই প্রভাবশালী বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আলী স্টোন বলেন, 'আশা করি, বিভিন্ন জাতি ও দেশের সংস্কৃতির মধ্যকার পার্থক্য বা বৈচিত্র্যের দিকে লক্ষ্য না করে বরং তাদের মধ্যে সেতু রচনা করা উচিত মিলগুলোর দিকে তাকিয়ে। বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে অভিন্ন যেসব মিল রয়েছে এর ভিত্তিতে সমাজ জাগিয়ে তুলতে হবে। সমাজের মানুষকে ভালো হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোনো মতাদর্শ সম্পর্কে ভীতি বা আতঙ্ক ছড়ানোর কোনো প্রয়োজন আমাদের নেই। কেবল মনে রাখতে হবে, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ একজন এবং তার অস্তিত্ব রয়েছে।'
আল্লাহর প্রতি ইমান আনলে এক ধরনের মানসিক শক্তি তৈরি হয়। আলী স্টোনের ভাষায়_ 'যে মুহূর্তে ইসলাম গ্রহণ করলাম, একটা মধুর আধ্যাত্মিক অনুভূতি বোধ করলাম। আসলে ওই মুহূর্তে পবিত্র এবং ইতিবাচক একটা শক্তি অর্জন করলাম। মনে হলো যেন আল্লাহর সঙ্গে একটা বিশেষ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হলো।'
মজার ব্যাপার হলো, মার্কিন এ নওমুসলিমের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং হুমকি-ধমকিও দিয়েছে। বাকস্বাধীনতার দাবিদার যুক্তরাষ্ট্র হলিউডের সঙ্গে নওমুসলিম এ চলচ্চিত্রকারের চুক্তিপত্রগুলোর বেশিরভাগই বাতিল করেছে। এমনকি 'গ্রে স্টোন' নামে রূঢ় একটি ফিল্ম তৈরি হচ্ছে বলেও তাকে জানিয়েছে। তাকে মন্দ ও ভয়াবহ লোক হিসেবে সমাজে পরিচয় করানোরও পাঁয়তারা হচ্ছে বলে তিনি জানান। মুসলমান হওয়ার ফলে তার সঙ্গে এ ধরনের আচরণের জবাবে তিনি প্রশান্ত মনে শুধু এ কালেমাটুকু উচ্চারণ করেই আত্মতৃপ্তি বোধ করতে চান_ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।'
No comments